শিরোনামঃ ভারতের বিরুদ্ধে জেনারেল ইয়াহিয়ার হুঁশিয়ারী
সুত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান,
তারিখঃ ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার হুঁশিয়ারি ভারত দেশের কোন অংশ দখলের চেষ্টা করলে পাকিস্তান পুরোপুরি যুদ্ধ করবে
.
প্যারিস, ১লা সেপ্টেম্বর (রয়টার)।– আজ এখানে প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, ভারত পাকিস্তানী ভূ খন্ডের কোন অংশ দখলের চেষ্টা করলে পাকিস্তান পুরোপুরি যুদ্ধ করবে। দৈনিক লা ফিগারো পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি বিশ্বকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই যে ভারত যদি মনে করে থাকে তারা বিনা উস্কানিতে আমাদের ভূখন্ডের কোন অংশ দখল করতে পারবে , তাহলে তারা মারাত্মক ভূল করবে।
এর অর্থ হবে যুদ্ধ, পূর্ন যুদ্ধ তাকে আমি ঘৃণা করি। কিন্তু আমাদের দেশকে রক্ষার জন্য আমি তাতে ইতস্ততঃ করবনা। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন যে , পূর্ব পাকিস্তানের সংকটকালে এটা ফাঁস হয়ে গিয়েছে যে, তার দেশের বিরুদ্ধবাদীর পুরোভাগে রয়েছে বৃটেন। পূর্ব পাকিস্তানের সংকটে তিনি ফ্রান্স ও চীনের ভূমিকার প্রসংশা করেন।
তবে অন্যান্য কতিপয় অজ্ঞাত দেশের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন , আইন ও শৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপারে কতিপয় সীমান্ত এলাকা ছাড়া সবকিছু সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
তিনি বলেন আমি বলতে পারি, জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে আমি এখনো দৃঢসংকল্প। আমি আওয়ামী লীগ বাতিল করেছি। কিন্তু প্রদেশের প্রতিনিধিদের আসন আমি বাতিল করিনি। আমি দেশোদ্রোহীদের বিতাড়িত করেছি। ৮৯ জন ডেপুটি জাতীয় পরিষদে আসন গ্রহন করবেন। সীমান্তে গোলযোগও গনতান্ত্রিক পদ্মতি অনুসরণ থেকে আমাকে বিরত রাখতে পারবে না। সীমান্ত পরিস্থিতি মোটেই শান্ত নয়।ভারতীয়রা সৈন্যদের অনুপ্রবেশ ও বিদ্রোহীদের উস্কানী অব্যহত রেখেছে।
এজন্যই উদ্বাস্তুরা বাড়ীঘরে ফিরে আসতে পারছেন না । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যে, ভারতীয়রা উদ্বাস্তুদের রাজনৈতিক পূজি হিসাবে ব্যাবহার করছে। তারা জাতিসংঘ থেকে উদ্বস্তুদের জন্য সাহায্য পাচ্ছে। ভারত অর্থ পাচ্ছে এবং উদ্বাস্তু ফেরত দিচ্ছেনা। উদ্বাস্তু সমস্যা ভারতীয় সমস্যা নয়, আমাদের সমস্য। পূর্ব পাকিস্তানে অভিযান এলাকা থেকে বিদেশী সাংবাদিকদের কেন সরিয়ে রাখা হয়েছিল তা জিজ্ঞেস করলে জেনারেল ইয়াহিয়া তার জবাবে বলেনঃ
আমি তাদেরকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। এই ধরনের সামরিক অভিযান শুরু হলে তার পরিণাম কি হবেয তা কেউ জানে না। আমি একজন সৈনিক হিসাবেই কাজ করছি, একজন আয়েশী রাজনীতিবিদ হিসাবে নয়। পরে অবশ্য আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। যদি কোন সাংবাদিক আওয়ামী লীগের হাতে নিহত হতেন, সেটা আমার খুবই কাজে আসতো। কারন আওয়ামী লিগ কতৃক নির্যাতনের কথা অনেকেই বলাবলি করছেন।