শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পাকিস্তানের ওয়াশিংটন দূতাবাসে বাঙ্গালি কূটনীতিকের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদলিপি | এ এম মুহিত সংকলিত ‘Thoughts in Exile’ | ১৯ এপ্রিল, ১৯৭১ |
একটি প্রতিবাদলিপি
মেসার্স এম এফ বান, মুহিদ চৌধুরি এবং মোশতাক আহমেদ
১৯ মে, ১৯৭১
আমরা ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ থেকে বড় উদ্বেগ ও হতাশা সাথে পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি সরকারের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করে আসছি। হাজার হাজার নিরাপরাধ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা ও স্বায়ত্তশাসনের গণতান্রিক একটি আন্দোলনকে পাশবিকভাবে দমন করার ঘটনায় আমরা হতাবাক। পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা এবং সরকারের এই অমানবিক কারযক্রম চালিয়ে যাওয়ার যে আপাত উদ্দেশ্য, তাতে করে এই সরকারের সাথে কোনরকম সম্পৃক্ততা রাখাটা আমাদের মর্যাদাবোধ ও নৈতিক যথার্থতার পরিপন্থী।
১৯৭১ সালের ১৭ মে তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সভায় পররাষ্ট্র নীতির পূর্ব পাকিস্তানবিষয়ক এশিয়ান ও প্যাসিফিক নীতির সাবকমিটির শুনানিতে উপস্থিত দূতাবাসের সহকারী শিক্ষা অফিসার জনাব এম আর খানের অহেতুক চাকরিচ্যুতি শীর্ষক সারসংক্ষেপে বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানি সরকারের অমর্যাদাপূর্ণ আচরণের আরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। অধিবেশনটি ছিল জনগণের সবার জন্য উন্মুক্ত, যেখানে এম আর খান অংশগ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন সেখানে কেবল একজন দর্শক হিসেবে। তিনি সেখানে কোন বক্তব্য দেন নি এবং তার উপস্থিতিও বিশেষভাবে চোখে পড়ার মত ছিল না। একই অধিবেশনে অন্যান্য পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান দূতাবাসের উপদেষ্টা জনাব আকরাম জাকি।
জনাব খানকে ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে চাকরিচ্যুত করার জন্য দূতাবাসের এই ঘটনা স্থগিত করা ছিল একটি অজুহাতমাত্র
, যা স্পষ্টটতই পাকিস্তান সরকারের এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাঙালিদেরকেও নিপীড়ন করার প্রবণতার প্রমাণ দেয়।
আমরা এই ঘটনাকে একই সঙ্গে অপমানজনক ও পক্ষপাতমূলক হিসেবে বিবেচনা করি, কারণ একই অপরাধের কারণে একজন বাঙালি কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে, কিন্তু কোন পশ্চিম পাকিস্তানিকে নয়, যদি তা আসলেই অপরাধ হয়ে থাকে।