শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র | পাকিস্তান গণপরিষদ | ২ রা মার্চ ১৯৫৬ |
ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তান
ভূমিকা
(২ মার্চ ১৯৫৬)
করুনাময় দয়ালু আল্লাহর নামে
যেহেতু পুরো বিশ্বমন্ডলের সার্বভৌমত্ব একমাত্র মহান আল্লাহর কাছে এবং তার নির্দেশিত পথেই তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা থাকবে পাকিস্তানের জনগনের হাতে
যেহেতু পাকিস্তানের স্থপতি কায়েদ-ই-আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানকে ইসলামিক আদর্শের সামাজিক ন্যায্যতার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা দিয়েছেন
এবং যেহেতু পাকিস্তানের সাধারন জনগনকে প্রতিনিধিত্বকারী নির্বাচিত সংসদ সার্বভৌম স্বাধীন পাকিস্তানের সাংবিধানিক কাঠামো অনুমোদন করেছে
যেখানে জনগনের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা রাষ্ট্র তার ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব ব্যবহার করবে
যেখানে গনতন্ত্র, স্বাধীনতা, সমতা, সহমর্মিতা এবং সামাজিক ন্যায্যতার মূলনীতি ইসলামের আলোকে বিবৃত, তা পরিপূর্নভাবে প্রতিপালিত হবে
যেখানে পবিত্র কোরান ও সুন্নাহ অনুযায়ি পাকিস্তানের মুসলমানরা ব্যক্তিগতভাবে এবং গোষ্ঠিগত ভাবে ইসলামের শিক্ষা ও নির্দেশনা মোতাবেক জীবন যাপন করতে পারবে
যেখানে পর্যাপ্ত বিধি বিধান থাকতে হবে যার সংখ্যালঘুরা মুক্তভাবে প্রকাশ্যে তাদের ধর্ম পালন করবে এবং তাদের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে
যেখানে পাকিস্তানের সাথে বর্তমানে যুক্ত থাকা অঞ্চল সমূহ বা সংযোজিত অঞ্চল গুলো এবং এমন ধরনের অন্যান্য পরবর্তীতে যুক্ত অঞ্চল সমূহ নিয়ে একটি ফেডারেশন গঠিত হবে যেখানে প্রদেশগুলো স্বায়ত্তশাসিত হবে যার ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের উপরে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকবে
যেখানে মৌলিক অধিকার গুলো নিশ্চিত করা হবে যার মধ্যে সমান মর্যাদা ও সুযোগ, আইনগত সাম্যতা, মুক্তচিন্তা, বিশ্বাস, আস্থা, ভাব প্রকাশ, উপাসনা ও একত্র হওয়া এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমতা, যা আইনগত ও সার্বজনীন নৈতিকতার আওতায় থাকবে
সেখানে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে আইনসিদ্ধ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য।
যথায়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে।
যথায়, এই জাতীয় ভূখন্ডের অখন্ডতা, এর স্বাধীনতা এবং এর সকল অধিকার, সার্বভৌমত্তের অধিকার ভূখন্ডে, সমুদ্রে এবং আকাশে সুরক্ষিত থাকবে।
যাতে পাকিস্তানের মানুষের উন্নয় হবে এবং জাতিগত ভাবে সারাবিশ্বের সাথে তারা সম্মানীত হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে শান্তি সমৃদ্ধি এবং মানবতার অবদান রাখবে।
তাই, এমতাবস্থায়, আজ থেকে আমরা পাকিস্তানের জনগন আমাদের সংবিধান অনুযায়ী ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৬; ০৭ রজব ১৩৭৫ আমাদের সংবিধানিক সভায় এই সংবিধান গ্রহন, পালন এবং নিজেদের প্রদান করছি।
অংশ ১
প্রজাতন্ত্র এবং এর আয়ত্ব/অঞ্চল/ভূখন্ড
১। প্রজাতন্ত্র এবং এর অঞ্চল/সীমাঃ (১) পাকিস্তান কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচিত হবে পাকিস্তান ইসলামীক প্রজাতন্ত্র নামে এবং ক্ষুদ্রাকারে পাকিস্তান নামে।
(২) পাকিস্তানের অন্তর্ভু=ঊক্ত অংশসমূহ হবে-
ক) প্রদেশ, পূর্ব পাকিস্তাব ও পশ্চিম পাকিস্তান।
খ) রাজ্যের সীমা সংযোজিত বা সাথে থাকলে তা পাকিস্তান বলে গন্য হবে।
গ) যে সমত অঞ্চল কেন্দীয় শাসনভূকত কিন্তু প্রদেশের অংশ নয়; এবং
ঘ) এরকম আরো অঞ্চল থাকলেও তা পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত।
ব্যাখ্যাঃ সংবিধানে পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ অর্থ হবে যা আগে সংবিধানের পূর্বে পূর্ব বাংলা নামে পরিচিত, পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশ পশ্চিম পাকিস্তান নাম ধারন করে পশ্চিম পাকিস্তান অধ্যাদেশ ১৯৫৫ অনুযায়ী।
২। প্রদেশের প্রশাসনঃ যতক্ষন না সংসদ অন্য কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাষ্ট্রপতি, আদেশ ক্রমে ২নং অনুচ্ছেদের (খ), (গ)এবং (ঘ) ধারায় উল্লেখিত এলাকায় সরকারী এবং প্রশাসনিক নীতিমালা প্রনয়ন করতে পারবেন।
অংশ ২
মৌলিক অধিকার
৩. রাষ্ট্রের সঙ্গাঃ এই অংশে, যদি পরিস্থিতি দাবি করে, ‘রাষ্ট্র’ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার, সংসদ, প্রাদেশিক সরকার, প্রাদেশিক আইনসভা, এবং পাকিস্তানের সকল আঞ্চলিক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে।
৪।মৌলিকঅধিকারেরসাথেঅসমঞ্জস্যবাবিরোধপূর্ণআইনবাতিল-
(১) এই ভাগের বিধানাবলীর সাথে অসামঞ্জস্য সকল প্রচলিত আইন বা কোন প্রথা বা আইনের প্রয়োগকৃত রীতি যতটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান-প্রবর্তন হতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হয়ে যাবে।
(২) রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধান প্রদত্ত অধিকার খর্বকারী বা অসমঞ্জস্য কোন আইন প্রণয়ন করবে না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হলে তা এইভাগের কোন বিধানের সাথে যতটা অসামঞ্জস্য পূর্ণ, ততখানি বাতিল হয়ে যাবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই সশস্ত্রবাহিনী বা জনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সৈন্যবাহিনী ও তাদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন বা তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য প্রনীত আইনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
৫। আইনের দৃষ্টিতে সমতা-
(১)সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের আশ্রয় লাভের জন্য সমান অধিকারী।
(২)এই আইন অনুয়ারী কোন ব্যক্তির জীবন বা স্বাধীনতা কে খর্ব করা যাবে না।
৬।অতীতের ঘটনা-সম্পর্কিত অপরাধ বা শাস্তি থেকে সুরক্ষা- অপরাধ সংঘটন কালে বলবৎ ছিল না , এই রকম আইন ভঙ্গ করবার অপরাধে কোন ব্যক্তি কে দোষী সাব্যস্ত করা যাবেনা, অথবা অপরাধ সংঘটন কালে বলবৎ ছিল এই রকম কোন আইন বলে যে দণ্ড দেওয়া যেত, কোন ব্যক্তিকে তারচেয়ে অনেক বেশী বা তার চেয়ে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাবেনা।
৭। গ্রেপ্তারকৃত ও আটকদের রক্ষাকবচ-
(১)গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রেপ্তারের কারণ না জানিয়ে প্রহরায় আটক রাখা যাবেনা এবং উক্ত ব্যক্তিকে তার মনোনীত আইনজীবীর সাথে পরামর্শের ও তার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হতে বঞ্চিত করা যাবেনা।
(২) গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে (গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাকে অতিরিক্ত সময় আটক রাখা যাবেনা।
(৩) এই অনুচ্ছেদের (১) ও (২) দফার কোন কিছুই সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবেনা,
(ক) যিনি বর্তমান সময় সাপেক্ষে বিদেশী শত্রু, অথবা
(খ) যাকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা আটক করা হয়েছে।
(৪) নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইন কোন ব্যক্তিকে তিন মাসের অধিক কাল আটক রাখবার ক্ষমতা প্রদান করবেনা যদি কোন উপযুক্ত উপদেষ্টা পর্ষদ উক্ত তিনমাস অতিবাহিত হবার পূর্বে তাকে কাছে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দানের পর প্রতিবেদন প্রদান না করে থাকেন যে, পর্ষদের মতে উক্ত ব্যক্তিকে অতিরিক্তকাল আটক রাখার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে।
ব্যাখ্যা – এই অনুচ্ছেদের ” উপযুক্ত উপদেষ্টা পর্ষদ” বলতে, একজন ব্যক্তিকে কোন কেন্দ্রীয় আইন বা জাতীয় সংসদের কোন আইনে আটকের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি পর্ষদ অথবা একজন ব্যক্তিকে কোন প্রাদেশিক আইন বা প্রাদেশিক আইনসভার কোন আইনে আটক ক্ষেত্রে, একটি বোর্ড এর জন্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি পর্ষদ বোঝানো হয়েছে।
(৫) নির্বতনমূলকআটকেরবিধান-সংবলিতকোনআইনেরঅধীনপ্রদত্তআদেশঅনুযায়ীকোনব্যক্তিকেআটককরাহলেআদেশদানকারীকর্তৃপক্ষতাকেযথাসম্ভবশীঘ্রআদেশদানেরকারণজ্ঞাপনকরবেএবংউক্তআদেশেরবিরুদ্ধেবক্তব্য-প্রকাশেরজন্যতাকেযতসত্বরসম্ভবসুযোগদানকরবে:
তবেশর্তথাকেযে, আদেশদানকারীকর্তৃপক্ষেরবিবেচনায়তথ্যাদিপ্রকাশজনস্বার্থবিরোধীবলেমনেহলেঅনুরূপকর্তৃপক্ষতাপ্রকাশেঅস্বীকৃতিজ্ঞাপনকরতেপারবে।
৮।বাকস্বাধীনতা – পাকিস্তানেরনিরাপত্তা, বিদেশীরাষ্ট্রসমূহেরসাথেবন্ধুত্বপূর্ণসম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতাওনৈতিকতারস্বার্থেকিংবাআদালত-অবমাননা, মানহানিবাঅপরাধ-সংঘটনেপ্ররোচনাসম্পর্কেআইনেরদ্বারাআরোপিতযুক্তিসঙ্গতবাধানিষেধসাপেক্ষেপ্রত্যেকনাগরিকেরবাকওভাবপ্রকাশেরস্বাধীনতারঅধিকারথাকবে।
৯।সমাবেশেরস্বাধীনতা -জনশৃঙ্খলারস্বার্থেআইনেরদ্বারাআরোপিতযুক্তিসঙ্গতবাধানিষেধসাপেক্ষেশান্তিপূর্ণভাবেওনিরস্ত্রঅবস্থায়সমবেতহবারএবংপ্রত্যেকনাগরিকেরজনসভাওশোভাযাত্রায়যোগদানকরবারঅধিকারথাকবে।
১০।সংগঠনেরস্বাধীনতা-জনশৃঙ্খলাওনৈতিকতারস্বার্থেআইনেরদ্বারাআরোপিতযুক্তিসঙ্গতবাধা-নিষেধসাপেক্ষেসমিতিবাসংঘগঠনকরবারঅধিকারপ্রত্যেকনাগরিকেরথাকবে।
১১।চলাফেরারস্বাধীনতাএবংসম্পত্তিরাখা-হস্তান্তরকরারঅধিকার – জনস্বার্থেআইনেরদ্বারাআরোপিতযুক্তিসঙ্গতবাধানিষেধসাপেক্ষে,প্রত্যেকনাগরিকেরঅধিকারথাকবে-
(ক) পাকিস্তানেরসর্বত্রঅবাধচলাফেরা, এরযেকোনস্থানেবসবাসএবংএর যেকোনঅংশস্থায়ীভাবেবসবাসকরার ;
(খ) ক্রয়করার, অধিকারেরাখাএবংসম্পত্তিহস্তান্তরকরার।
১২।বাণিজ্য, ব্যবসাবাপেশারস্বাধীনতা –আইনেরদ্বারাআরোপিতবাধানিষেধসাপেক্ষেকোনপেশাবাবৃত্তি-গ্রহণেরকিংবাকারবারবাব্যবসায়পরিচালনারজন্যআইনেরদ্বারাকোনযোগ্যতানির্ধারিতহয়েথাকলে অনুরূপযোগ্যতাসম্পন্নপ্রত্যেকনাগরিকেরযেকোনআইনসঙ্গতপেশাবাবৃত্তিগ্রহণেরএবংযেকোনআইনসঙ্গতকারবারবাব্যবসায়পরিচালনারঅধিকারথাকবে:
তবেশর্তথাকেযে, এইঅনুচ্ছেদেরকোনকিছুইনিবৃত্তকরবেনা –
(ক) কোনবাণিজ্যবাপেশানিয়ন্ত্রণকরারঅনুমতিরপদ্ধতি, অথবা
(খ) কেন্দ্রীয়বাএকটি প্রাদেশিকসরকারবাসরকারকর্তৃকনিয়ন্ত্রিতকোনকর্পোরেশনদ্বারানিয়ন্ত্রিতকোনোবাণিজ্য, ব্যবসা, শিল্পবাসেবা , অন্যব্যক্তিরদ্বারাসম্পূর্ণবাআংশিকনিয়ন্ত্রিতবাদদিয়ে।
১৩।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মের যথাযথ সম্মান ইত্যাদি সম্পর্কে রক্ষাকবচ – (১) কোনশিক্ষা-প্রতিষ্ঠানেযোগদানকারীকোনব্যক্তিরনিজস্বধর্ম-সংক্রান্তনাহইলেতাকেকোনধর্মীয়শিক্ষাগ্রহণকিংবাকোনধর্মীয়অনুষ্ঠানবাউপাসনায়অংশগ্রহণবাযোগদানকরতেহবেনা।
(২) কোন ধর্মীয় গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় কে তাদের দ্বারা সম্পূর্ন ভাবে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরকে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা থেকে বিরত রাখা যাবে না।
(৩) জাতি, ধর্ম, বর্ন বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে কোন নাগরিককে রাজস্ব খাতের অধীন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নিতে বাধা দেয়া যাবে না।
(৪) যে কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে, কর রেয়াত বা ছাড়ের ক্ষেত্রে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না।
(৫) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার থাকবে তাদের পছন্দ মাফিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করার, এবং রাষ্ট্র উক্ত ধরনের যে কোন প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দিতে আপত্তি জানাতে পারবে না শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় ব্যবস্থাপনার অধীন হবার কারনে।
১৪। সার্বজনীন স্থানে প্রবেশের ব্যাপারে সমতা- (১) ধর্মীয় প্রয়োজন ব্যতিরেকে স্থাপিত যে কোন সার্বজনীন বিনোদন কেন্দ্র বা অধিষ্ঠান ব্যবহারের ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ন জন্মস্থানের ভিত্তিতে কোন নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না।
(২) এই অনুচ্ছেদের কোন নির্দেশনা নারীদের জন্য বিশেষ বিধান প্রনয়নে বাধা হতে পারবেনা।
১৫। সম্পত্তি অধিকার সুরক্ষা- (১) বৈধ সম্পত্তির মালিকানা থেকে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাবে না।
(২) আইনগত ভাবে ক্ষতিপূরন প্রদান সাপেক্ষে বা ক্ষতিপূরন প্রদান নীতিমালা নির্ধারন সাপেক্ষে,কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে অধিগ্রহন বা দখল করা যাবে না সরকারী কোন কাজে।
(৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না-
(ক) যে কোন প্রচলিত আইন, বা
(খ) জনস্বাস্থ্য, সম্পত্তি ও জনজীবনকে নিরাপদ রাখার জন্য বাধ্যতামলকভাবে অধিগ্রহন বা দখল সংক্রান্ত যে কোন আইন, অথবা
(গ) কারো নিজস্ব সম্পত্তি সীমিত সময়ের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক ব্যবহার সংক্রান্ত যে কোন আইন।
(৪) ধারা (২) এবং (৩) অনুযায়ী, “সম্পত্তি” অর্থ বোঝাবে স্থাবর সম্পত্তিকে, বা কোন বানিজ্যিক বা শিল্পায়নের উদ্যোগকে, বা উক্ত ধরনের কোন উদ্যোগকে।
১৬। দাসত্ব ও জোরপূর্বক শ্রম নিষিদ্ধ- (১) কোন ব্যক্তিই দাস হিসেবে গণ্য হবে না।
(২) সকল ধরণের জোরপূর্বক কর্মে বাধ্য করা নিষিদ্ধ, কিন্তু রাজ্যের সরকারি কাজে বাধ্যতামূলক সেবা প্রয়োজন হতে পারে ।
১৭। কর্তব্য পালনের সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুরক্ষা- (১) পাকিস্তানের সরকারী চাকুরীতে নিয়োগলাভের যোগ্য নাগরিকদের শুধুমাত্র জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বসবাসের বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে বৈষম্য করা যাবে না ।
তবে, শর্ত থাকে যে, সংবিধান দিবস থেকে পনের বছর পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাকিস্তানের সেবায় তাদের পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোন শ্রেণী বা অঞ্চলের ব্যক্তিদের জন্য পদায়ন সংরক্ষিত করা যেতে পারে ।
আরও শর্ত থাকে যে, কোন নির্দিষ্ট সেবার জন্য লিঙ্গের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কিছু কর্মসংস্থান সংরক্ষণ করা যেতে পারে ।
(২) ১নং শর্তে উল্লেখিত কোন কিছুই শ্রেণীভেদে কোন প্রাদেশিক সরকার বা কোন স্থানীয় বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ যে কোন সরকার বা কর্তৃপক্ষের অধীনে নিয়োগ প্রদেশে বসবাসকারী হিসেবে অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে না ।
১৮।স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার স্বাধীনতাঃ আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার স্বার্থে-
(ক) প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম অনুসরণ, পরিচালনা ও প্রচারেরঅধিকার রয়েছে ।
(খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের তাদের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পরিচালনা ওগোপন রাখার অধিকার রয়েছে ।
১৯।ভাষা, লিপি ও সংস্কৃতি সংরক্ষণঃ প্রত্যেক নাগরিকেরই আলাদা ভাষা, লিপি ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের অধিকার রয়েছে ।
২০। অস্পৃশ্যতার বিলোপ সাধনঃ অস্পৃশ্যতার বিলোপ সাধন করা হলো এবং কোনভাবেই এটার অনুশীলন নিষিদ্ধ ও আইনত অপরাধ বলে ঘোষণা করা হলো ।
২১। কোন বিশেষ ধর্মের উদ্দেশ্যে কর আরোপ করার সুরক্ষাঃ কোন ব্যক্তিই নিজের ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের প্রচার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে কর কিংবা চাঁদা দিতে বাধ্য থাকবেন না ।
২২। এই খন্ডের মাধ্যমেঅধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিকারঃ
(১) এই খন্ডের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক নিশ্চয়তা প্রদান করা হলো।
(২) এই খন্ডের মাধ্যমে সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের কোন সরকারি আদেশ, নির্দেশ, হেবিয়াস কর্পাস কিংবা নিম্ন আদালতের প্রতি উচ্চ আদালতের হুকুমনামা, নিষেধাজ্ঞা, স্থিতিবস্থা প্রভৃতিতে যথাযথ রিট আবেদন করার অধিকার নিহিত থাকলো।
(৩) এই ধারার মাধ্যমে স্বীকৃত অধিকার সংবিধানের অনুমতি ছাড়া স্থগিত করা যাবে না ।
(৪) এই ধারার বিধানের সাথে অন্য কোন বিশেষ বিষয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না ।
৩য় খন্ড
রাজ্য পরিচালনার মূলনীতি
২৩। রাজ্যের সংজ্ঞাঃ
(১) এই খন্ডের প্রেক্ষাপটে রাজ্যের অর্থ ২য় খণ্ডের মতই থাকবে ।
(২) এই খন্ডের বিধানের মাধ্যমেই রাজ্য পরিচালিত হবে এবং নীতি প্রণয়ন করবে । তবে, এই বিধানসমূহ কোন আদালতে বলবৎযোগ্য হবে না ।
২৪। মুসলিম ঐক্য ও আন্তর্জাতিক শান্তি বৃদ্ধি বিধানঃ রাজ্য মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও পারস্পরিক বন্ধনকে শক্তিশালী করার জন্য, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার উন্নীত করা, সব জাতির মধ্যে সুনাম ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হবে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তির উৎসাহিত করতে সচেষ্ট হবেন ।
২৫। ইসলামী মূলনীতির প্রচারঃ (১) পাকিস্তানি মুসলমানদের জীবন ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাব পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক পরিচালনার জন্য সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে ।
(২) রাজ্য পাকিস্তানি মুসলমানদের শ্রদ্ধা সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট হবেন ।
(ক) তাদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে সক্রিয় করা যেতে পারে যাতে করে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনের অর্থ তাঁরা বুঝতে সমর্থ হয়,
(খ) পবিত্র কুরআন শেখা বাধ্যতামূলক করা,
(গ) ইসলামী ঐক্য ও নৈতিক মানের উন্নয়ন করা, এবং
(ঘ) যাকাত প্রদান, ওয়াকফ্ ও মসজিদের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা ।
২৬। সংকীর্ণতা ও অন্যান্য অনুরূপ কুসংস্কার নিরুৎসাহিত করাঃ রাজ্য নাগরিকদের মধ্যে জাতিগত, উপজাতীয়, সাম্প্রদায়িক ও প্রাদেশিক সংকীর্ণ কুসংস্কার নিরুৎসাহিত করবে ।
২৭। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষাঃ রাজ্য সংখ্যালঘুদের প্রাদেশিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাজে যথাযথ উপস্থাপন এবং তাদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করবে ।
২৮। সামাজিক উন্নয়ন নীতিমালাঃ রাজ্য সচেষ্ট হবেন –
(ক) বিশেষ এলাকা, অনগ্রসর শ্রেণীর এবং তফসিলি জনগণের শিক্ষা ওঅর্থনৈতিক স্বার্থ বিশেষ যত্নের সাথে এগিয়ে নিতে।
(খ) নিরক্ষরতা অপসারণের লক্ষ্যে সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে বিনামূল্যে ওবাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান ।
গ।কাজের জন্য মানবিক এবং সঙ্গত অবস্থা তৈরি, শিশু ও নারীদের তাদের লিঙ্গ ও বয়স অনুযায়ী অনুপযুক্ত পেশায় নিযুক্ত করা হবে না তা নিশ্চিত করা, এবং কর্মসংস্থানে নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন সুবিধার বিধান করা।
ঘ। বিভিন্ন এলাকার মানুষকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে পাকিস্তানের সেবা সহ সকল প্রকার জাতীয় কার্যক্রমে সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণের জন্যসক্ষম করে তোলা;
ঙ।পতিতাবৃত্তি, জুয়া ও ক্ষতিকর মাদক গ্রহণ প্রতিরোধ; এবং
চ। ঔষধ এবং অমুসলিমদের ক্ষেত্রে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোনভাবে মদ্যপ নেশা প্রতিরোধ।
২৯।মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নঃ রাষ্ট্র সচেষ্ট হবে-
ক। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে, গুটিকতক মানুষের হাতে সম্পদের ঘনত্ব এবং সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকারক উৎপাদন ও বণ্টনের গন্ডিবদ্ধ ক্ষমতা প্রতিরোধ করা,এবং নিয়োগকর্তা ও কর্মীদের, এবং ভাড়াটেদের মধ্যে অধিকারের সুষম সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে; বর্ণ, ধর্মমত, বা জাতি নির্বিশেষে, জনগণের মঙ্গল নিশ্চিত করা।
খ।সকল নাগরিকের জন্য, রাষ্ট্রের উপলব্ধ সম্পদের মধ্যে কাজ প্রদান এবং পর্যাপ্ত জীবিকা সহ যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম ও অবসর এর সুবিধা দেয়া;
গ। বাধ্যতামূলক সামাজিক বীমা বা অন্য কোন উপায়ে পাকিস্তানের সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত সকল ব্যাক্তিকে সামাজিক নিরাপত্তা দেয়া;
ঘ। সে সকল নাগরিকের জন্যবর্ণ, ধর্ম বা জাতি নির্বিশেষে জীবনধারণের মৌলিক উপকরণযেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ত্রাণ যোগান দেয়া, যারা স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে জরা, অসুস্থতা বা বেকারত্ব বাবদ তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে অক্ষম;
ঙ।পাকিস্তান চাকুরীর বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যে সম্মানীর অসমতা একটি গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে কমিয়ে আনা; এবং
চ।যত দ্রুত সম্ভব রিবা দূর করা
৩০। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথিকীকরনঃ রাষ্ট্র যত দ্রুত সম্ভব নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ কে পৃথক করবে।
৩১। পাকিস্তানের জনগণের দ্বারা জাতীয় কর্মকান্ডে সমান অংশগ্রহণের জন্যবিধানাবলী- ১।পাকিস্তানের সব অংশ থেকে জনগণকে দেশের প্রতিরক্ষা সেবায় অংশগ্রহণে সক্রিয় করতে রাষ্ট্র উদ্যোগ গ্রহণ করবে
২।কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্বের সমতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গৃহীত হবে
অংশ চার
সমন্বিত রাষ্ট্র
অধ্যায় ১; কেন্দ্রীয় সরকার
৩২।রাষ্ট্রপতিঃ
১। পাকিস্তানের একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, সংবিধানে যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে, যিনি নির্বাচিত হবেন প্রথম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত বিধানাবলী অনুযায়ী জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচনী দলের দ্বারা।
২। অংশ ২ এ যাকিছুই থাকুক না কেন, একজন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচনের জন্য যোগ্য হবেন না, যদি না তিনি একজন মুসলমান হন; কিংবা যোগ্য হবেন নাঃ
ক। যদি তার বয়স চল্লিশ বছরের কম হয়; অথবা
খ। যদি তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য যোগ্য না হন; অথবা
গ। তিনি পূর্বে ধারা ৩৫ এর অধীন অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হন
৩। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না
৩৩। রাষ্ট্রপতির কার্যকাল- ১। অনুচ্ছেদ ৩৫ এর দফা ৩ এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ে যোগদানের পর ৫ বছর পর্যন্ত কার্যালয়ে বহাল থাকবেন ; তবে শর্ত থাকে যে রাষ্ট্রপতি তার মেয়াদ শেষ হওয়া সত্বেও কার্যালয়ে বহাল থাকবেন যতদিন পর্যন্ত না তার উত্তরসুরী তার পদে যোগদান করবেন।
২। কোন ব্যক্তি দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে বহাল থাকবেন না।
৩। রাষ্ট্রপতি জাতীয় পরিষদের স্পিকার কে সম্বোধন করে নিজ হাতে স্বাক্ষর করে লিখিতভাবে তার পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারবেন
৪। যখন একজন রাষ্ট্রপতির পদ মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণ অথবা তার মেয়াদ শেষ হবার দরুন শুন্য হবে তখন তা অনুচ্ছেদ ৩২ এর দফা ১ অনুসারে যত দ্রুত সভব পূরণ করতে হবে।
৩৪। ইসলামী নীতির প্রচার- ১। রাষ্ট্রপতি পাকিস্থানের সেবায় (সরকারী চাকুরী) কোন লাভজনক পদে অথবা অন্য কোন পদে যেখানে তিনি সেবাদানের বিনিময়ে সম্মানী পাবার অধিকার রাখবেন, এমন কোন পদে বহাল থাকবেন না কিন্তু এই দফায় কিছুই তাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধারন বা পরিচালনা থেকে নিবৃত্ত করবে না।
২। রাষ্ট্রপতি জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য যোগ্য হবেন না; এবং যদি এরূপ কোনো পরিষদের সদস্য কে যদি রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয় তাহলে যেদিন তিনি কার্যালয়ে যোগদান করবেন সেদিন থেকে সেই পরিষদে তার আসন খালি হয়ে যাবে।
৩৫। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন- ১। রাষ্ট্রপতি সংবিধান লঙ্ঘন বা স্থূল অসদাচরণ এর অভিযোগে অভিশংসিত হতে পারেন।
২। এমন কোন অভিযোগ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না যদি জাতীয় পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রপতির অভিশংসনের জন্য ঐ পরিষদের স্পীকারের কাছে অনুবন্ধ উত্থাপনের জন্য প্রজ্ঞপ্তি প্রদান করেন, এবং পরিষদে এমন কোন অনুবন্ধ উত্থাপিত হবে না যতদিন পর্যন্ত না রাষ্ট্রপতিকে এই অনুবন্ধের প্রজ্ঞপ্তি সম্পর্কে অব্বহিত করার পর ১৪ দিন অতিবাহিত হয়।
৩। অভিযোগ পর্যালোচনার সময় রাষ্ট্রপতির উপস্থিত হওয়ার এবং আত্নপক্ষ সমর্থনের অধিকার থাকবে।
৪। যদি, অভিযোগ বিবেচনার পর, মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন তিন চতুর্থাংশ কর্তৃক অভিযোগ প্রতিপাদিত হয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় পরিষদ কর্তৃক একটি অনুবন্ধ গৃহীত হয়, তাহলে যেইদিন অনুবন্ধ গৃহীত হবে সেদিন থেকে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হবে।
৫। যেখানে জাতীয় পরিষদের স্পিকার ধারা ৩৬ এর অধীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন, সেখানে এই ধারার বিধানাবলী এমন পরিবর্তনের সাপেক্ষে কার্যকর হবে যে, দফা ২ এর ক্ষেত্রে স্পিকারের প্রতি সম্বোধন তখন সহকারী স্পিকার বরাবর গণ্য হবে এবং দফা ৪ এর সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির অপসারণ তখন স্পিকারের পদ থেকে স্পিকার কে অপসারণ হিসবে গণ্য হবে, এবং দফা ৪ এ উল্লেখিত অনুবন্ধ গৃহীত হবার পর স্পিকার, রাষ্ট্রপতির কার্যক্রম পরিচালনা থেকে রোহিত হবেন।
৩৬।রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য জাতীয় পরিষদের স্পিকারঃ
১।একটি রাষ্ট্রপতির পদ শুন্য হয়, অথবা যদি রাষ্ট্রপতি পাকিস্তান থেকে অনুপস্থিত থাকেন অথবা অসুস্থতা হেতু বা অন্য কোন কারণে তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হন তাহলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাষ্ট্রপতির কার্যক্রম পরিচালনা করবেন যতদিন পর্যন্ত না রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন অথবা তার দায়িত্বে পুনরায় যোগদান করেন, পরিপ্রেক্ষিত এর যেটাই হোক না কেন।
২। যে মেয়াদের জন্য জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন তিনি সেসময় রাষ্ট্রপতির অনুরূপ সম্মানী এবং সুবিধাদি প্রাপ্তির যোগ্য হবেন কিন্তু তিনি এই সময়ে জাতীর পরিষদের সদস্য অথবা স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং এমন স্পিকার অথবা সদস্যের ন্যায় সম্মানী এবং সুবিধাদি প্রাপ্তির যোগ্য হবেন না।
৩৭। মন্ত্রী পরিষদঃ
১। রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা এবং পরামর্শ দানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি মন্ত্রী পরিষদ থাকবে।
২। যদি মন্ত্রী পরিষদ, মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক কোন পরামর্শ প্রদত্ত হয় তবে কোন পরামর্শ প্রদত্ত হয়েছে কিনা, হলে তা কি এসব নিয়ে কোন আদালতে তদন্ত করা যাবে না।
৩। রাষ্ট্রপতি তার বিবেচনার ভিত্তিতে, জাতীয় পরিষদের সদস্যদের মধ্যে থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন যিনি তার মতে, অধিকাংশ জাতীয় পরিষদের সদস্যদের আস্থার প্রতিভাত করার জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময়।
৪। অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাদের পদে নিযুক্ত এবং পদ হতে অপসারিত হবেন, কিন্তু কোন ব্যক্তি প্রতিমন্ত্রী অথবা উপমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন না যদি না তিনি জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য হন।
৫। প্রতিমন্ত্রীদের সহ মন্ত্রিপরিষদ সম্মিলিতভাবে জাতীয় পরিষদের নিকট দায়বদ্ধ থাকবে।
৬। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অনুসারে তার পদে বহাল হবেন, কিন্তু রাষ্ট্রপতি এই দফার অধীনে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন না, যদি না তিনি সন্তুষ্ট হন যে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পরিষদের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের আস্থার প্রতিফলন ঘটাবেন।
৭। রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব পালনের জন্য ক্ষেত্র অনুযায়ী মন্ত্রিসভা বা উপযুক্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন তবে কেবলমাত্র সেইসব ক্ষেত্র ছাড়া যেখানে তিনি তার বিচক্ষণতা ব্যবহার করে কাজ করতে সংবিধান দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছেনএবং দফা ৬ এর অধীনে ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে। ব্যাখ্যাঃ সন্দেহ পরিহার এর জন্য এতদ্দ্বারা ঘোষণা করা হচ্ছে যে, দফা ৪ এর জন্য উপযুক্ত মন্ত্রী হবেন প্রধানমন্ত্রী।
৮। কোন মন্ত্রী যিনি যে কোন টানা ছয় মাস সময়ের জন্য জাতীয় পরিষদের সদস্য থাকবেন না, তিনি সেই সময়সীমার মেয়াদ শেষে মন্ত্রীত্ব হারাবেন এবং সেই বিধানসভা না ভাঙ্গার আগ পর্যন্ত আবার মন্ত্রী নিযুক্ত হবেন না যদি না তিনি সে পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
৯। এই ধারার কোন কিছুকেই এমনভাবে গণ্য করা যাবে না যা, প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী কে জাতীয় পরিষদ ভেঙে যাওয়ার সময় তাদের পদে অব্যাহত থাকাকে নাকচ করে, বা সেই সময়ে কোন ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাঁধা দেয় বলে প্রতীয়মান হয়।
৩৮। মহান্যায়বিদঃ
১। রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানের জন্য একজন মহান্যায়বিদ নিযুক্ত করবেন, যিনি রাষ্ট্রপতির নির্দেশে দায়িত্বে বহাল হবেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত কর্তব্য সম্পাদন করবেন।
২। কোন ব্যক্তি পাকিস্তানের মহান্যায়বিদ পদে নিয়োগ প্রাপ্তির জন্য যোগ্য হবেন না,যদি না তিনি সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির যোগ্য হন, কিন্তু কোন ব্যক্তি মহান্যায়বিদ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন না যদি না তিনি বর্তমানে সর্বোচ্চ আদালত বা উচ্চ আদালতের একজন বিচারক হন বা ইতিপূর্বে হয়ে থাকেন।
৩। সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য পাকিস্তানের সকল আদালতে পরিদর্শক হিসেবে প্রবেশের অধিকার মহান্যায়বিদের থাকবে।
৩৯। সমন্বিত রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃপক্ষের ব্যাপ্তিঃ
১।সমন্বিত রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃত্ব রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত হবে এবং তার দ্বারা প্রযুক্ত হইবে, প্রত্যক্ষভাবে অথবা তার অধস্তন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংবিধান অনুযায়ী।
২। সমন্বিত রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃত্ব সে সকল বিষয়ে বিস্তৃত হবে যেসব ক্ষেত্রে সংসদের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আছে, তবে শর্ত থাকে যে, সংবিধানে অথবা সংসদের কোন আইনে যদি স্পষ্ট উল্লখ না থাকে তবে, সংবিধানের অধীনে প্রদেশের জন্য কার্যকরের উপযুক্ত ক্ষেত্রে উল্লেখিত কর্তৃপক্ষ কোন বিষয়ে কোন প্রদেশে হস্তক্ষেপ করবে না যদি সে ক্ষেত্রে প্রাদেশিক বিধানসভারও আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকে।
৪০। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কঃ ১) সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব রাস্ট্রপ্রতির হাতে ন্যাস্ত থাকবে এবং উহার পরিচালনা আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হবে।
২) যতক্ষন না পর্যন্ত সংসদ এর পক্ষে আইনগত বিধি তৈরি না করবে, ততক্ষন পর্যন্ত সংসদের পক্ষে রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা থাকবে- ।
(ক) পাকিস্তানের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে এবং অন্যান্য সংরক্ষিত বাহিনীকে উন্নীত ও নিয়ন্ত্রন করা
(খ) উক্ত বাহিনীগুলোতে কমিশন প্রদান করা; এবং
(গ) সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান নিয়োগ করা ও তাদের বেতন-ভাতা নির্ধারন করা
৪১। সমন্বিত রাষ্ট্রীয় সরকারের ব্যবসায়ী আচরনঃ ১) সমন্বিত রাস্ট্রীয় সরকারের সকল নির্বাহী কর্ম রাষ্ট্রপতির নামে পরিচালিত হবে।
২) রাষ্ট্রপতির অধীনে যেসব আদেশ ও অন্যান্য নির্দেশনা প্রস্তুত করা ও বাস্তবায়ন করা হবে সেসব নিয়ম-নীতির মধ্যে যাচাই করে নিতে হবে, এবং যাচাই কৃত যে কোন আদেশ বা নির্দেশনার বৈধতা নিয়ে কোন আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না, কোন কিছুর উপর ভিত্তি করে যা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত বা বাস্তবায়িত হয় নি।
৩) রাস্ট্রপতিসমন্বিত রাষ্ট্রীয়সরকারেরবন্টনএবংলেনদেনসংক্রান্তব্যাবসারআইনতৈরিকরবেন।
৪২। রাষ্ট্রপতির সাথে সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বঃএটি প্রধানমন্ত্রীর কর্তব্য হবে
ক) মন্ত্রীপরিষদ সংক্রান্ত সকল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত যা যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত এবং আইন সংক্রান্ত প্রস্তাব এর ব্যাপারে রাস্ট্রপ্রতির সাথে যোগাযোগ রাখা
খ) রাষ্ট্রের প্রশাসনেরসাথেসম্পর্কিততথ্যাবলীওআইনপ্রনয়নেরপ্রস্তাবনারাষ্ট্রপতিরপ্রয়োজনঅনুযায়ীসরবরাহকরা; এবং
গ) যদিরাষ্ট্রপতিরকোনসিদ্ধান্তেরব্যাপারেমন্ত্রীপরিষদেরবিবেচনারজন্যউত্থাপনকরতেচান যেটির সিদ্ধান্ত একজন মন্ত্রী কতৃক নেয়া হয়েছিলা কিন্তু যেটি মন্ত্রীপরিষদের সিদ্ধান্তের জন্য বিবেচিত হয় নি।
অধ্যায় ২ – পাকিস্থানের জাতীয় সংসদ
৪৩. পাকিস্থানের জাতীয় সংসদ- পাকিস্থানে রাষ্ট্রপ্রতি ও এক পক্ষ সংবলিত একটি জাতীয় সংসদ গঠিত হইবে যা জাতীয় পরিষদ নামে পরিচিত ।
৪৪. জাতীয় পরিষদের গঠন- ১) নিম্ন লিখিত ধারা অনুসারে, পাকিস্থানের জাতীয় পরিষদ ৩০০ টি আসন নিয়ে গঠিত হইবে, যাহার অর্ধেক পর্ব পাকিস্থান আর বাকি অর্ধেক পশ্চিম পাকিস্থানের সংসদ ধারা গঠিত হইবে।
২) ১ নং ধারায় উল্লিখিত সংসদ সদস্যদের জন্য আসন ছাড়াও, সংবিধান প্রণয়নের দিক থেকে পরবর্তী দশ বছরের জন্য দশটি আসন নারী সাংসদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে, যাদের মধ্যে পাঁচ জন পূর্বপাকিস্থানের বিধানসভার নির্বাচক মন্ডলী দ্বারা নির্বাচিত হইবেন এবং পাঁচ জন পশ্চিম পাকিস্থানের নির্বাচক মন্ডলী দ্বারা নির্বাচিত হইবেন, এবং তাদের নির্বাচনী আসন নারীদের জন্য নির্ধারিত আসন হিসাবে বিবেচিত হইবে ।
তবে শর্ত থাকে যে, একজন মহিলা যিনি, এই দফার অধীনে, পরিষদের একজন সদস্য দশ বছরের নির্বাচিত হইবেন এবং সংসদ ভেঙ্গে দেবার পূর্ব পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন ।
৩) পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্থানের মধ্যে প্রতিনিধিত্বের সমতা রক্ষার জন্য, সংসদ আইনের দ্বারা, জাতীয় পরিষদের সদস্য সংখ্যা পরিবর্তন করিতে পারিবেন ।
৪) সংসদ আইনের দ্বারা জাতীয় পরিষদের যে কোন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব প্রদান করে যা সংবিধান প্রণয়নের দিন থেকে একটি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত । কিন্তু উক্ত আইন দ্বারা কোন প্রদেশর প্রতিনিধি সংখ্যার কোন পরিবর্তন সংগঠিত হইবে না ।
৪৫. সাংসদ হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা-১) একজন জাতীয় পরিষদের সাংসদ হইবার যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেন যদি-
ক) তাহার বয়স ন্যূনতম ২৫ বছর হয় এবং সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কে কোন আসনে ভোট প্রদানের যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হয় এবং
খ) যদি সংবিধান বা আইন পরিষদের আইন ধারা সাংসদ হইবার অযোগ্য বলিয়া বিবেচিত না হন
২) নির্বাচন পরবর্তী কোন সাংসদের যোগ্যতা প্রশ্নের সম্মূখীন হইলে জাতীয় পরিষদের স্পীকার নির্বাচন কমিশনের মতামত গ্রহণ করিবেন এবং নির্বাচন কমিশনের মতানুসারে অযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইলে তাহার আসন শূণ্য হইবে।
৩) কোন ব্যক্তি যিনি জানেন যে, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা ভোট প্রদানের যোগ্যতা অর্জন করেননি বা অযোগ্য, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা ভোট প্রদান করিরে প্রতিদিনের জন্য ৫০০ রুপি দন্ডের সম্মূখীন হইবেন যা ফেডারেশন প্রাপ্যদেনা হিসাবে তাহার কাছ আদায় করিতে পারিবে ।
৪৬. দ্বৈত সদ্যসতায় বাধা-
১) কোন ব্যক্তি একই সময়ে দুই বা ততোধিক এলাকার সংসদ সদস্য হইবেন না ।
২) কোন ব্যক্তি একই সময়ে দুই বা ততোধিক নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচন প্রার্থী হওয়ায় এই অনুচ্ছেদের ১ নং দফায় বর্ণিত কোন কিছুই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিবে না, তবে তিনি যদি একাধিক নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচিত হন তাহা হইলে তাঁহার সর্বশেষ নির্বাচনের ত্রিশ দিনের মধ্যে তিনি কোন নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করিতে ইচ্ছুক, তাহা জ্ঞাপন করিয়া স্পীকারকে একটি স্বাক্ষরযুক্ত ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং তিনি অন্য যে সকল নির্বাচনী এলাকা হইতে নির্বাচিত হইয়াছিলেন, অত:পর সেই সকল এলাকার আসন সমূহ শূণ্য হবে।
তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় পরিষদে আসন গ্রহণ বা ভেটা প্রদান করিতে পারিবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি দুই বা ততোধিক আসনের সদস্য ।
৩) যদি এক আসনে সাংসদ স্বেচ্ছায় জাতীয় পরিষদের অন্য কোন আসনের নির্বাচনে প্রার্থী হন, তবে তাহার পূর্ববর্তী আসন শূন্য বলিয়া বিবেচিত হইবে ।
৪৭. জাতীয় পরিষদের অনুপুস্থিতি- যদি কোন সাংসদ জাতীয় পরিষদের অনুমতি ব্যাতিত টানা ৬০ দিন অধিবেশনে অনুপুস্থিত থাকেন তবে তাহার আসন শূন্য হইবে ।
৪৮. শপথ গ্রহণ- নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নির্ধারিত শপথ গ্রহণ করিতে অসর্মথ হন, তবে তাহার আসন শূন্য বলিয়া বিবেচিত হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, অনুরুপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতেপারিবেন।
৪৯. সংসদ সদস্যের পদত্যাগ- জাতীয় অধিবেশনের একজন সদস্য স্পীকারকে সম্বোধন করিয়া স্বহস্তে লিখিত পদত্যাগ পত্রের মাধ্যমে তাহার আসন হইতে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
জাতীয় পরিষদের সভা ও কার্যাপ্রণালী
৫০.জাতীয় অধিবেশনের স্থিতিকাল, সমন, স্থগিতকরন এবং ভঙ্গ করিবার প্রক্রিয়া-
১) রাষ্ট্রপ্রতি সংসদ আহ্বান, স্থগিত ও ভেঙ্গে এবং সংসদ আহ্ববানকালে রাষ্ট্রপ্রতি বৈঠকের সময় ও স্থান নির্ধারণ করিবেন । উল্লেখ থাকে যে, প্রতি বছর সংসদের অন্তত একটি অধিবেশন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হইবে ।
২) যদি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ কালে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন না থাকে এবং ভেঙ্গে যাবার আশংকা না থাকলে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে তাহা আহ্বান করা যাইবে।
৩) রাষ্ট্রপ্রতি ভেঙ্গে না দিয়া থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর অতিবাহিত হইলে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া যাইবে।
৫১. জাতীয় পরিষদের অধিবেশন- প্রতি বছর জাতীয় পরিষদের অন্তত দুইটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইবে, এবং বিগত অধিবেশন ও পরবর্তী অধিবেশনের মাঝে ৬ মাসের অতিরিক্ত বিরতি থাকিবেনা ।
৫২. জাতীয় পরিষদে রাষ্ট্রপ্রতির ভাষণ ও বাণী- রাষ্ট্রপ্রতি সংসদে ভাষণদান এবং বাণী প্রেরণ করিতে পারিবেন ।
৫৩. জাতীয় পরিষদে মন্ত্রীগণের অধিকার ও এটর্নি জেনারেল এর ভাষণ- প্রত্যেক মন্ত্রী এবং এটর্নি জেনারেলের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করার অধিকার থাকিবে এবং পরিষদের অন্যান্য কাজে অংশগ্রহণ এবং যে কোন কমিটিতে সদস্য হিসাবে অংশগ্রহনের সুযোগ থাকিবে, তবে এই অনুচ্ছেদ কর্তক ভোট দানের অধিকার প্রাপ্ত হইবে না।
৫৪। জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার-
(১) জাতীয় সংসদ যত দ্রুত সম্ভব স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দুইজনকে মনোনীত করবেন এবং কোন কারণে এই স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের পদ শূন্য হলে পরিস্থিতি অনুসারে জাতীয় সংসদ একজন স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার নিযুক্ত করবেন।
(২) স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহনের জন্য উক্ত ব্যক্তিকে তার সংসদ সদস্য পদ (যদি থাকে) ছেড়ে দিতে হবে; তিনি যখন চাইবেন তখনই নিজের স্বাক্ষরে রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদনের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে পারবেন অথবা সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে নীতিমালা জারি করে তাকে পদচ্যুত করা হবে, নীতিমালা পরিবর্তনের জন্য কমপক্ষে ১৪ দিন পূর্বে এরূপ কোন নোটিশ না দিয়ে থাকলে এ সম্পর্কে কোন কথাই তোলা হবে না।
এখানে উল্লেখ্য যে, যখনইজাতীয়পরিষদবিলুপ্ত হবে, স্পিকারতারকার্যালয়থেকেবিলুপ্ত হবার কারনে নতুনপরিষদেরপ্রথমসভাঅনুষ্ঠিতহবারঅব্যবহিতপূর্বপর্যন্তঅব্যাহতিনেবেননা।
(৩) স্পিকারের পদ শূন্য হলে বা তিনি রাষ্ট্রপতিরূপে কার্যত থাকলে কিংবা অন্য কোন কারণে তিনি স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে সংসদ মনে করলে স্পিকারের সকল দায়িত্ব ডেপুটি স্পিকার পালন করবেন কিংবা ডেপুটি স্পিকারের পদও শূন্য হলে রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত কেউ এই দায়িত্ব আলন করবেন; এবং সংসদের কোন বৈঠকে স্পিকারের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পিকার কিংবা ডেপুটি স্পিকারও অনুপস্থিত থাকলে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী কোন সংসদ সদস্য স্পিকারের দায়িত্ব পালন করবেন।
৫৫। কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি- (১) এই সংবিধান সাপেক্ষে
ক) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কার্যপ্রণালী-বিধি দ্বারা সংসদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রিত হবে;
খ) উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সংসদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে তবে সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্র ব্যতীত সভাপতি ভোটদান করবেন না এবং অনুরুপ ক্ষেত্রে তিনি নির্ণায়ক ভোট প্রদান করবেন।
গ) কোন পদে শুন্যতা সৃষ্টি হলে সংসদ সেটা বিলোপ করার বা অন্য যেকোনো কাজ করার ক্ষমতা রাখে, শুধুমাত্র যদি কোন “অনাহূত ব্যক্তি কার্যপ্রণালী-বিধিতে অনুপ্রবেশ করে এবং কার্যে অংশগ্রহন করে”
(২) সংসদের কোন বৈঠক চলাকালে উপস্থিত সদস্য সংখ্যা চল্লিশের কম হলে সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরে তিনি কমপক্ষে চল্লিশ জন সদস্য উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত বৈঠক স্থগিত রাখবেন বা মুলতবি করবেন।
৫৬। জাতীয় সংসদ সদস্যমণ্ডলীর সুবিধাদি-
(১) জাতীয় সংসদের কোন কার্যবিধির বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।
(২) সংসদের যে সদস্য বা কর্মচারীর উপর সংসদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, কার্যপরিচালনা বা শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষমতা ন্যস্ত থাকবে, তিনি এই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ সংক্রান্ত কোন ব্যাপারে কোন আদালতের অধীন হবেন না।
(৩) সংসদে বা সংসদের কোন কমিটিতে কিছু বলা বা ভোটদানের জন্য কোন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কোন আদালতে কার্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।
(৪) সংসদ কর্তৃক বা সংসদের কর্তৃত্বে কোন রিপোর্ট, কাগজপত্র, ভোট বা কার্যধারা প্রকাশের জন্য কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।
(৫) এই অনুচ্ছেদের সাপেক্ষে সাংসদদের বিভিন্ন সুবিধাদি, সদস্যদের বিভিন্ন কমিটি এবং সেখানে কথা বলার জন্য যোগ্য লোক বাছাই সংসদীয় আইনের দ্বারা নির্ধারন করা যেতে পারে।
৫৭। আইন প্রণয়নে রাষ্ট্রপতির সম্মতি-
১) সংসদে কোন বিল উত্থাপিত ও পাস হয়ে গেলে সেটা রাষ্ট্রপতির নিকট পাঠাতে হবে; তিনি নব্বই দিনের মধ্যে-
ক) বিলে সম্মতি জ্ঞাপন করবেন; অথবা
খ) সম্মতিপ্রদানেবিরতথাকারঘোষনাদিবেন; অথবা
গ) অর্থবিল ব্যতীত অন্য যেকোনো ধরণের বিলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কোন বিশেষ সংশোধনী থাকলে সে সম্পর্কিত বার্তা সহ বিলটি আবার সংসদে ফেরত দিতে পারবেন।
২) রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রদানে বিরত থাকার ফলে সংসদে বিলটি আবার উত্থাপিত হবে এবং এর পরেও বিলটি সংশোধনীসহ বা ছাড়া ন্যূনতম দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে সেখানে পাস হয়ে গেলে বিলটি আবার রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রেরণ করা হবে এবং তিনি সম্মতি দিতে পারবেন।
৩) যখন রাষ্ট্রপতি বিলটি সংসদে আবার ফেরত পাঠালেন, সংসদ এটিকে পুনর্বিবেচনা করবে; এবং এটি যদি সংশোধনীসহ বা ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে পুনরায় পাস হয় তাহলে এটি পুনরায় রাষ্ট্রপতির নিকট তার সম্মতির জন্য প্রেরিত হবে।
আর্থিক কার্যপ্রণালী
৫৮। অর্থবিল-
১) এই ভাগে অর্থবিল বলতে কেবল নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের সকল বা যেকোনো একটি সম্পর্কিত বিধানবলী সংবলিত বিল বুঝাবে-
ক) কোন কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরন;
খ) ফেডারেল সরকার কর্তৃক কোন ঋণ গ্রহণ বা কোন গ্যারান্টিদান, কিংবা সরকারের আর্থিক দায়-দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশোধন;
গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরূপ তহবিলে অর্থ প্রদান বা অনুরূপ তহবিল থেকে অর্থ দান বা নির্দিষ্টকরণ;
ঘ) সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় আরোপ কিংবা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলোপ;
ঙ) সংযুক্ত তহবিল বা রাষ্ট্রের সরকারি হিসাব বাবদ অর্থপ্রাপ্তি কিংবা অনুরূপ অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ বা দান কিংবা সরকারের হিসাব নিরীক্ষা; এবং
চ) উপরে উল্লেখিত যেকোনো বিষয়ের অধীনে যেকোনো আনুষঙ্গিক বিষয়।
২) কোন বিল অর্থবিল বলে গণ্য হবে না শুধু এই কারণে যে-
ক) কোন জরিমানা বা অন্য অর্থদন্ড আরোপ বা রদবদল কিংবা কোন কার্যের জন্য ফি বা উসুল আরোপের বিধান রয়েছে; অথবা
খ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোন কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফবারহিতকরনেরবিধানরয়েছে।
৩) রাষ্ট্রপতিরসম্মতিরজন্যতাঁহারনিকটপেশকরারসময়েপ্রত্যেকঅর্থবিলেস্পিকারেরস্বাক্ষরেএইমর্মেএকটিসনদথাকবেযে, এটাএকটিঅর্থবিল, এবংঅনুরূপসনদসকলবিষয়েচূড়ান্তহবেএবংসেসম্পর্কেকোনআদালতেপ্রশ্নউত্থাপনকরাযাবেনা।
৫৯। আর্থিক ব্যবস্থাবলী সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির সুপারিশ- কোনপ্রস্তাববাসংশোধনীযাধারা৫৮এরদফা১এউল্লেখিতবিষয়বস্তুরক্ষেত্রেবিধানপ্রণয়নকরেঅথবাযাকার্যকরএবংবলবতহলেতাসমন্বিতরাষ্ট্রেররাজস্বথেকেখরচনির্বাহকরবেএমনহয়তবেতারাষ্ট্রপতিরঅনুমোদনব্যাতীতসংসদেআনায়নবাউত্থাপনকরাযাবেনা।
৬০।সংসদেরআইনব্যতীতকরারোপেবাধা- সংসদেরকোনআইনদ্বারাবাকর্তৃত্বব্যতীতকোনকরআরোপবাসংগ্রহকরাযাবেনা।
৬১। সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব- ১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক সংগৃহীত সকল ঋণ এবং কোন ঋণ পরিশোধ থেকে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিনত হবে এবং তা ‘সংযুক্ত তহবিল’ নামে অভিহিত হবে।
২) সরকার কর্তৃক বা সরকারের পক্ষে প্রাপ্ত অন্য সকল সরকারি অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা হবে।
৬২। সরকারি অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ-১) সরকারি অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ, সংযুক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান বা সেখান থেকে অর্থ প্রত্যাহার কিংবা সরকারি হিসাবে অর্থ প্রদান বা সেখান থেকে অর্থ প্রত্যাহার এবং উপরোক্ত বিষয়সমূহের সংশ্লিষ্ট বা আনুষঙ্গিক সকল বিষয় সংসদের আইন দ্বারা এবং অনুরূপ আইনের বিধান না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
২) সমস্ত অর্থ জমা হবে-
ক) সরকারের কর্মে নিযুক্ত কিংবা সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি কর্তৃক প্রাপ্ত বা সরকারের নিকট জমা আছে এরূপ অর্থ
খ) সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোন মামলা মোকদ্দমা, বিষয়, হিসাব বা ব্যক্তি বাবদ যে কোন আদালত কর্তৃক প্রাপ্ত বা আদালতের নিকট জমা আছে এরূপ সকল অর্থ।
৬৩। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি- ১) রাষ্ট্রপতি প্রতি বছর উক্ত অর্থ বছরের জন্য অনুমিত আয় ও ব্যয় সম্বলিত একটি বিবৃতি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন।
২) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে পৃথকভাবে থাকবে-
ক) এই সংবিধানের দ্বারা বা অধীন সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়রুপে বর্ণিত ব্যয়নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ; এবং
খ) সংযুক্ত তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে এমন প্রস্তাবিত অন্যান্য ব্যয়নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ।
৬৪। সরকারি সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়- সরকারি সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হবে-
ক) রাষ্ট্রপতিকে দেয়া পারিশ্রমিক ও তাঁর অন্যান্য দাপ্তরিক ব্যয়। এছাড়াও পারিশ্রমিক পাবেন-
i. সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ;
ii. সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্যগণ;
iii. মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক;
iv. কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারগণ;
v. জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার; এবং
vi. সীমানা নির্ধারক কমিশনের সদস্যগণ।
খ) সুপ্রিম কোর্ট, সরকারি কর্ম কমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অফিস, নির্বাচন কমিশন, জাতীয় সংসদের সচিববৃন্দ এবং সীমানা নির্ধারণ কমিশনের বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যয় ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পারিশ্রমিক।
গ) সুদ, পরিশোধ তহবিলের দায়, মূলধন পরিশোধ বা তার ক্রম-পরিশোধ এবং ঋণ সংগ্রহ ও সংযুক্ত তহবিলের জামানত গৃহীত ঋণের মোচন সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয়সহ সরকারের ঋণ সংক্রান্ত সকল দেনার দায়;
ঘ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো রায়, ডিক্রি এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রোয়েদাদ কার্যকর করবার জন্য যে কোন পরিমানের প্রয়োজনীয় অর্থ; এবং
ঙ) অন্যযে কোন পরিমানের অর্থ, একটি সংসদ সংবিধান দ্বারা বা আইনের দ্বারা ঘোষিত তাই নির্ধারন করা।
৬৫। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সংক্রান্ত পদ্ধতি- ১) বার্র্ষিক আর্থিক বিবৃতি হিসেবে ফেডারেল সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু জাতীয় পরিষদে ভোটের জন্য জমা হবেনা।
২)যেমন অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির বেশিরভাগই মঞ্জুরীর দাবি আকারে জাতীয় পরিষদের নিকট পেশ করতে হবে, এবং যে পরিষদের সম্মতি দেয়ার ক্ষমতা থাকবে বা কোনো চাহিদায় সম্মতি দেয়াতে প্রত্যাখান করা কিংবা কোনো চাহিদার বিষয় সম্মতি দেওয়ার পরিমাণ সেটাতে উল্লেখিত থাকবে।
৩) রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতীত একটি অনুদানের জন্য চাহিদা তৈরি করা যাবে না।
৬৬। রাজস্ব ব্যয় সংক্রান্ত বিল- ১) পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদের অধীনে জাতীয়পরিষদ কর্তৃক প্রদানের পর পরেই, সেটি পরিষদে বিল আকারে উপস্থাপন করতে হবে যাতে ফেডারেল তহবিলের সাথে সামঞ্জস্য থাকে-
(ক) অনুদান তাই জাতীয় পরিষদ কর্তৃক প্রণীত, এবং
(খ) যুক্তরাষ্ট্রীয় সংযুক্ত তহবিলেনির্ধারিত ব্যয়সীমা, কিন্তু কোন ভাবেই পূর্বে জাতীয় পরিষদে উত্থাপিত আর্থিক বিবৃতিতে উল্লেখিত সীমার বেশি হবে না ।
(২) এমন কোন সংশোধনী জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব করা যাবে না যে কোন বিলের ক্ষেত্রে যাতে করে নির্ধারিত পরিমান কে প্রভাবিত করে বা খরচের খাত পরিবর্তন করে।
(৩) সংবিধানের নির্দেশনা সাপেক্ষে, ফেডারেল তহবিল থেকে কোন অর্থ উত্তোলন করা যাবে না, এই অনুচ্ছেদের বিধানুযায়ী আইন প্রনয়ন না করে।
৬৭। সম্পূরক ও অতিরিক্ত অনুদান- কোন অর্থ বছর সাপেক্ষে যদি পাওয়া যায়-
(ক) অনুমোদিতনির্দিষ্টপরিমানঅর্থকোনখাতেরজন্যচলমানঅর্থবছরেঅপর্যাপ্তহয়, বানতুনকিছুসেবারজন্যনতুনকোনকরেতৈরিহওয়াচাহিদাযাউক্তবার্ষিকআর্থিকবিবৃতিতেঅন্তর্ভুক্তছিলনা; অথবা
(খ) কোনঅর্থকোনসেবাখাতেকোননির্দিষ্টঅর্থবছরেবরাদ্দকৃতঅর্থেরচেয়েবেশিখরচহয়েগেছেসেইবছরেরজন্য;
প্রেসিডেন্ট ফেডারেল একত্রীকরণ ফান্ড থেকে ব্যয় অনুমোদন করার ক্ষমতা থাকবে। ব্যয় ফান্ডের উপর সংবিধান দ্বারা উপযুক্ত হয় কিনা এর একটি সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি জাতীয় পরিষদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। ক্ষেত্রমতে অতিরিক্ত আর্থিক ব্যায়ের পরিমাণের বিবৃতি, প্রবন্ধ এর বিধান আউটসেটিং ৬৩ থেকে ৬৬ এর পুর্বোত্ত বিবৃতি প্রযোজ্য হবে যা বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
৬৮। হিসাবের ভোট, ঋণের ভোট, ইত্যাদি,- (১) এই অধ্যায়ের পূর্বোল্লোখিত কিছু না দন্ডায়মান রেখে, জাতীয় পরিষদের শক্তি থাকবে-
(ক) অগ্রিম কোনো অনুদান আনুমানিক ব্যায়ের জন্য ৬৫ নং প্রবন্ধে নির্ধারিত সময়ের বিচারাধীন করা হয় এবং ৬৬ নং প্রবন্ধে তা আইন পাশ করিয়ে রাখা হয়।
(খ) যেকোনো ডিমান্ড বা সম্পদের চাহিদার উপর কোনো অপ্রত্যাশিত চাহিদা মেটানোর জন্য অনুদান করা, চাহিদার বিবরণে সচারাচার বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি নির্দিষ্ট করা যাবেনা।
(গ) ব্যাতিক্রমধর্মী অনুদান থাকবে যেখানে সাম্প্রতিক কোনো কর্মকান্ডের উল্লেখ নয়, চাকরী গঠনের আর্থিক অংশ, সংসদের আইনে ফেডারেল ফান্ডের একত্রীকরণ থেকে আর্থিক প্রত্যাহারের অনুমোদন করার ক্ষমতা থাকবে।
(২) বিধানের ৬৫ এবং ৬৬ নং প্রবন্ধে (১) নং অংশের সম্মতিতে এমন সম্পর্ক স্থাপণ করতে হবে যা তা সহ বার্ষিক আর্থিক উক্তির ব্যায়ের পরিমাণ ফেডারেল ফান্ডে উল্লেখিত থাকবে এবং যথাযথ ভাবে সে ব্যায়ের যাবতীয় সকল কিছু সেখানে উল্লেখিত করা হবে।
রাষ্ট্রপতির বিধানিক ক্ষমতা
৬৯। অধ্যাদেশ জারি যখন জাতীয় পরিষদের অধীনে থাকে নাঃ-(১) যদি কোনো সময়, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ছাড়া প্রেসিডেন্ট কোনো সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কিংবা কোনো ঘটনায় খটকা দেখা দেয় প্রসিডেন্ট সেখানে সে মুহূর্তে যেকোনো প্রকার জারি করতে না পারলেও আইনের সহযোগীতায় এনে তাকে আওতায় নিয়ে সে বিষয় এর সাক্ষ্মী সহ প্রশাসনের সকল আইন মেনে এবং যাবতীয় সকল কিছু নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ক্ষমতা রাখতে পারে।
(২) অধ্যাদেশের সকল জারি উল্লেখিত (১) নং অংশের অধিশায়িত করা হবে এবং পরবর্তী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে এবং পরের সাক্ষাতকার হবে সেই অধিবেশনের ছয় সপ্তাহ পরে। সেই অধিবেশনে সেটার সমাধান নিয়ে আলোচনা করে হবে!
৩) যে কোন সময় যখন কোন জাতীয় পরিষদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে,তখন এরূপ জাতীয় পরিষদ বিলুপ্ত হওয়ার জন্য সৃষ্ট আনুষঙ্গিক কারণ গুলোর উপর যদি মহামান্য রাস্ট্রপ্রতি সন্তুষ্ট থাকেন তবে তিনি ৬৩,৬৫ ও ৬৬ অনুচ্ছেদের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয়ের জন্য অধ্যাদেশ/বিধান জারি করতে পারেন ,সেই নিয়মটা সংবিধানে থাক বা না থাক।
৪) জাতীয় পরিষদ পুনঃগঠনের দিন থেকে যত শীঘ্রই সম্ভব ৩ নাম্বার ধারার অধীনে যে বিধান/ অধ্যাদেশ জারী হয়েছিল তা সম্পাদন করতে হবে এবং ৬৩,৬৫ ও ৬৬ অনুচ্ছেদের নিয়ম ওই তারিখের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিপালন করতে হবে।
পঞ্চম খন্ড
প্রদেশ
অধ্যায় ১ – প্রাদেশিক সরকার
৭০) গভর্নর –
(১) প্রতিটা প্রদেশেই রাস্ট্রপ্রতি কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন গভর্নর থাকবে যে রাস্ট্রপ্রতির হয়ে অফিস পরিচালনা করবে।
(২) পাকিস্তানের নাগরিক না হলে এবং চল্লিশ বছর বয়সের কম হলে কেউ গভর্নর নিয়োগের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচ্য হবেনা ।
(৩) একজন গভর্নর পদত্যাগ করতে চাইলে রাষ্ট্রপ্রতি বরাবর নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠাতে হবে।
(৪)পুর্ববর্তী অনুচ্ছেদের ধারা অনুযায়ী একজন গভর্নর অফিস শুরু করার দিন হতে পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত গভর্নর হিসাবে কর্তব্যরত থাকতে পারবেন।
(৫) একজন গভর্নর সাধারণ পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হতে পারবেন না। যদি কোন সাধারণ বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য গভর্নর হন তবে তিনি গভর্নর হিসাবে অফিস শুরু করার সাথে সাথেই তার সাধারণ বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।
৭১) মন্ত্রীসভা-
(১) প্রধানমন্ত্রীকে নেতা হিসাবে মেনে মন্ত্রীদের নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠিত হবে যা গভর্নরকে তার কাজ সঠিকভাবে পালন করার জন্য সাহায্য এবং উপদেশ দিবে।
(২) গভর্নরকে মন্ত্রীসভা অথবা একজন মন্ত্রী যদি কোন উপদেশ বা পরামর্শ দিয়ে থাকে তবে তা কখনোই কোন আদালত খতিয়ে দেখতে যাবেনা।
(৩) গভর্নর তার বিবেচনা এবং বিচক্ষণতা অনুযায়ী প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের মধ্য হতে এমন একজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করবেন যিনি প্রাদেশিক পরিষদের অধিকাংশ সদস্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন।
(৪) অন্যান্য মন্ত্রী ,উপমন্ত্রী এবং সদস্য সচিবদের গভর্নর নিজে নিয়োগ এবং বরখাস্ত করতে পারবেন ,কিন্তু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য না হলে কেউ উপমন্ত্রী বা সংসদ সচিব হতে পারবেন না ।
(৫) প্রাদেশিক পরিষদের জন্য মন্ত্রীসভাই সম্পুর্ন রুপে দায়বদ্ধ থাকবে।
(৬) গভর্নরের ইচ্ছায় প্রধানমন্ত্রী তার স্বীয় পদে বহাল থাকবেন, কিন্তু গভর্নর কখনোই তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না যদি না সে প্রাদেশিক পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের আস্থা অর্জন করতে না পারে আর সেটা গভর্নরের অসন্তোষের কারণ হয়।
(৭) গভনর্র মন্ত্রিপরিষদের পরামর্শ নিয়েই তার কাযর্বলী সম্পাদন করিবে কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে সে তার বিচক্ষণতা আর সংবিধানের ক্ষমতা বলে কাজ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
উদাহরনস্বরূপঃ যেকোনো সন্দেহ এড়াতে (৪) নং অনুচ্ছেদ অনুসারে উপযুক্ত মন্ত্রীকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন।
৮) কোন মন্ত্রী টানা ছয় মাস প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য না থাকলে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং আবার মন্ত্রীসভায় নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারবে।
৯) এই ধারা অনুযায়ী কোন মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সংসদ সচিব বাতিল বলে গণ্য হবে না যদি প্রাদেশিক পরিষদ ভাঙ্গিয়া যায় অথবা এই রকম সময় কালে মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সচিব বা কোন ব্যক্তির নিয়োগ বাধা পাইবে না।
৭২। প্রদেশের অ্যাডভোকেট জেনারেল ঃ
(১) গভর্নর একজন অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগ দিবেন যিনি গভর্নরের ইচ্ছায় ঐ পদে বহাল থাকবেন, গভর্নরের নির্দেশে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
(২) অ্যাডভোকেট জেনারেল হতে হলে হাই কোর্টের বিচারক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।তবে হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক বা পূর্বে বিচারক ছিলেন এমন কেউ অ্যাডভোকেট জেনারেল হতে পারবেন না।
(৩) ৬৫ বছর বয়সের পর কেউ অ্যাডভোকেট জেনারেল থাকতে পারবেন না।
৭৩। প্রদেশের বর্ধিত নির্বাহী কতৃপক্ষ –
(১) সংবিধান অনুযায়ী নির্বাহী কতৃপক্ষ গভর্নর নিজে অথবা তার অধিনস্ত কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত হবে।
(২) সংবিধান ছাড়াও নির্বাহী কতৃপক্ষের সুষ্টুভাবে সকল দিক থেকে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা থাকে।
৭৪। প্রাদেশিক সরকারী কর্মকাণ্ড ঃ
(১) সকল সরকারি নির্বাহী আদেশ গভর্নর এর নাম দ্বারা পরিচালিত হবে।
(২) আইনানুগ ভাবেই সকল আদেশ, নীতিমালা, কার্যসম্পাদন গভর্নরের নামেই পরিচালিত হবে, এবং এর বৈধতা নিয়ে কোন আদালত অথবা অনুরূপ প্রতিষ্ঠান প্রশ্ন তুলতে পারবেনা যে এটি গভর্নর দ্বারা সম্পাদিত হয়নি।
৩) গভর্ণর প্রাদেশিক সরকারের আর্থিক বরাদ্দ ও লেনদেনের জন্য বিধি প্রণয়ন করবে
৭৫। গভর্ণর সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব-
এটা প্রতিটি প্রদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হবে –
(ক) প্রদেশের গভর্ণরের সাথে যোগাযোগ করে প্রদেশের মন্ত্রীপরিষদ সম্পর্কিত সকল দাপ্তরিক কাজ এবং আইন প্রণয়নের প্রস্তাব সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
(খ) প্রদেশের মন্ত্রীপরিষদ সম্পর্কিত সকল দাপ্তরিক কাজ এবং আইন প্রণয়নের প্রস্তাব সংক্রান্ত সকল কাজ সমাধান করতে হবে কেননা গভর্নর সেটা তলব করতে পারে এবং
(গ) যদি গভর্ণরের প্রয়োজন হয়, কোন মন্ত্রীর কোন সিদ্ধান্তকে মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য প্রস্তাব দিতে পারেন যেটা কিনা মন্ত্রিসভায় এর আগে বিবেচিত হয়নি।
অধ্যায়ঃ ২ – প্রাদেশিক আইনসভা
৭৬। প্রাদেশিক আইনসভা- প্রতিটি প্রদেশে গভর্নর আর একটি হাইজের সমন্বয়ে একটি করে প্রাদেশিক আইনসভা থাকবে, যেটা প্রাদেশিক পরিষদ নামে পরিচিতি লাভ করবে।
৭৭। প্রাদেশিক পরিষদের গঠন-
(১) পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদগুলো অনুযায়ী প্রতিটি প্রাদেশিক পরিষদ তিনশত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে।
(২) (১)-নং অনুচ্ছেদের সদস্য সংখ্যা ছাড়াও প্রতিটি প্রাদেশিক পরিষদে আরও দশটি করে সংরক্ষিত নারী আসন বরাদ্দ থাকবে যাদের মেয়াদ হবে অধিবেশনের দিন থেকে দশ বছর পর্যন্ত এবং নির্বাচকমণ্ডলী এই অর্থে আঞ্চলিক নারী নির্বাচকমণ্ডলী দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকবে যে এই ধারায় নিযুক্ত কোন নারী সদস্যের মেয়াদ দশ বছর পূর্ণ হলেও পরিবর্তী পরিষদ বিলুপ্ত হবার আগ পর্যন্ত ঐ সদস্য উক্ত পদে বহাল থাকবে
(৩) সংসদ আইনানুগ ভাবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সংখ্যা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে এই অর্থে যাতে করে দুই প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সংখ্যা সমান থাকে।
(৪) সংসদ ইচ্ছে করলে অধিবেশন শুরুর পরেও আইনানুগ ভাবেই প্রাদেশিক পরিষদের সম্মতি নিয়ে যেকোনো আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে কিন্তু কোন ভাবেই কোন আইন দিয়ে পরিষদের সদস্য সংখ্যার পরিবর্তন করতে পারবেনা।
(৫) ১৯৫৬ সালের অক্টোবর এর ১৫তম দিন পর্যন্ত, পশ্চিম পাকিস্তান এর প্রদেশের নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সংখ্যা ,পাকিস্তান আইন ১৯৫৫, যেটি পশ্চিম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার অবিলম্ব পূর্বে পাঞ্জাবের প্রদেশ গঠন করেছে ,তা অনুসারে পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার দুই –তৃতীয়াংশের বেশী হবে না।
৭৮. সদস্যপদ এর জন্য যোগ্যতা এবং অযোগ্যতা –
(১) একজন ব্যাক্তি প্রাদেশিক পরিষদের জন্য নির্বাচিত হবেন –
(ক) যদি তিনি ২৫ বছর এর কম বয়সী না হন এবং অনুচ্ছেদ ১৪৩ অনুযায়ী প্রাদেশিক পরিষদের যে কোন নির্বাচনে একজন নির্বাচক হবার যোগ্যতাসম্পন্ন হন এবং
(খ) যদি তিনি সংবিধান দ্বারা বা সংসদ এর আইন দ্বারা একজন সদস্য হিসেবে অযোগ্য ঘোষিত না হন।
(২) যদি নির্বাচন এর পরে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে , অযোগ্যতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এমন প্রশ্ন ঊঠে, প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার নির্বাচন কমিশন এর মতামত নিবেন এবং মতামত যদি হয় যে, সদস্য কোনো অযোগ্যতার প্রশ্নে দায়ী , তাহলে তার আসন খালি থাকবে।
(৩) যদি কোন ব্যাক্তি একটি প্রাদেশিক নির্বাচনে দাঁড়ায় বা ভোট দেয় এটা জেনেও যে তিনি এর জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন নন বা এর সদস্যপদ এর জন্য অযোগ্য, দাঁড়ানো বা ভোটের দায়ে প্রতিদিনের জন্য তার ৫০০ রুপী জরিমানার হবে, যা হয়ত প্রদেশের ঋণ হিসেবে তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
৭৯. দ্বৈত সদস্যপদ এর বিরুদ্ধে বাধা-
(ক) কোনো ব্যাক্তিই একই সময়ে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হতে পারবে না, এবং যদি কোনো ব্যাক্তি জাতীয় পরিষদ ও একটি প্রাদেশিক পরিষদ উভয়েরই সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং যদি না শেষোক্ত পরিষদে নির্বাচিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে যেকোনো একটিতে পদত্যাগ না করেন, প্রাদেশিক পরিষদে তার আসনটি খালি হয়ে যাবে।
(খ) কোনো ব্যাক্তিই একই সময়ে উভয় আঞ্চলিক পরিষদের এর সদস্য হতে পারবেন না, এবং যদি একজন ব্যাক্তি উভয় পরিষদ থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয় পরিষদে নির্বাচিত হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে যেকোনো একটি আসন থেকে পদত্যাগ না করেন, উভয় পরিষদে তার আসন খালি হয়ে যাবে।
(গ) একই সময়ে একজন ব্যাক্তি দুই বা ততোদিক নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রাদেশিক পরিষদে সদস্য হিসেবে থাকতে পারবে না, কিন্তু এই দফার কোন কিছুই একজন ব্যাক্তিকে একাদিক নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখে না, কিন্তু যদি একজন ব্যাক্তি দুই বা ততোদিক নির্বাচনী এলাকা থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং যদি না তার শেষোক্ত নির্বাচনী এলাকা যেখানে তিনি নির্বাচিত হয়েছে তার নির্বাচনের ত্রিশ দিনের মধ্যে , স্পিকার এর উদ্দেশ্যে তিনি যে নির্বাচনী এলাকাকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান তা নির্দিষ্ট করে একটি হাতে লেখা বিবৃতি না দেয়, পরিষদে তার সকল আসন খালি হয়ে যাবে, কিন্তু যে পর্যন্ত একজন ব্যাক্তি দুই বা ততোদিক নির্বাচনী এলাকার সদস্য হিসেবে থাকে,পরিষদে তিনি বসতে বা ভোট দিতে পারবে না।
(ঘ) যদি প্রাদেশিক পরিষদের একজন সদস্য একটি নির্বাচনী এলাকার জন্য , নিজেকে পরিষদের অন্য আরেকটি নির্বাচনী এলাকার নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোয়নের অনুমতি দেয়, তার আগের নির্বাচনী এলাকার আসন খালি হয়ে যাবে।
৮০. প্রাদেশিক পরিষদ হতে অনুপস্থিতিঃ যদি প্রাদেশিক পরিষদের একজন সদস্য পরিষদে ,পরিষদ হতে চলে যাওয়া ব্যাতীত ক্রমাগত ষাট দিন অনুপস্থিত থাকে ,তাহলে তার আসন খালি হয়ে যাবে।
৮১. সদস্যগণের শপথঃ যদি প্রাদেশিক পরিষদের একজন সদস্য, তার নির্বাচনের পর, পরিষদের প্রথম সভার দিন হতে ছয় মাসের মধ্যে প্রদেশের সংবিধান অনুসারে শপথ অথবা সম্মতি গ্রহন এবং সাক্ষর করতে ব্যর্থ হয় তবে তার আসন খালি হয়ে যাবে।
তবে শর্ত থাকে যে ,স্পীকার যদি বর্ণিত মেয়াদ উর্ত্তীণের পূর্বে উপযুক্ত কোনো কারণ দেখাতে পারে ,সেক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধি পাবে ।
৮২. সদস্যদের পদত্যাগঃ প্রাদেশিক পরিষদের একজন সদস্য , তার আসন পদত্যাগ করতে নিজ হাতের লিখিত নোটিশ স্পীকারের কাছে পেশ করতে পারেন।
সভা ও প্রাদেশিক পরিষদের কার্যপ্রণালী
৮৩ প্রাদেশিক পরিষদের স্থায়ীত্বকাল, তলব করা, স্থগিতকরণ এবং ভাঙ্গনঃ (১) সরকার প্রাদেশিক পরিষদ ডাকতে পারে,স্থগিত রাখতে পারে অথবা ভাঙ্গতে পারে ,যখন ডাকে তখন সভার সময় এবং স্থান করে দিবে।
(২) যখনই একটি প্রাদেশিক পরিষদে একজন মূখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন , ঐ নিযুক্ত হবার সময়ে প্রাদেশিক পরিষদ যদি চালু না থাকে এবং লীন না হয়ে যায় ,তবে এরপর দুই মাসের মধ্যে সভার জন্য ডাকা হবে।
(৩) যদি না শীঘ্রই লীন না হয় তবে প্রথম সভার দিন হতে মেয়াদোর্ত্তীণের পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রাদেশিক পরিষদ লীন থাকবে।
৮৪. প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশনঃ প্রতি বছর একটি প্রাদেশিক পরিষদের কমপক্ষে দুটি অধিবেশন থাকবে, এবং পরিষদের একটি অধিবেশনের শেষ সভার এবং পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম সভার মধ্যে ছয় মাসের বেশী হবে না।
৮৫. গভর্নরের প্রাদেশিক পরিষদ ডাকা এবং বার্তা প্রদানঃ একটি প্রদেশের গভর্নর প্রাদেশিক পরিষদকে ডাকতে পারেন এবং সেখানে বার্তা প্রেরণ করতে পারেন।
৮৬. মন্ত্রী এবং এডভোকেট জেনারেলদের প্রাদেশিক পরিষদ ডাকার অধিকারঃ একটি প্রদেশের প্রতিটি মন্ত্রী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেল এর কথা বলার অধিকার থাকবে এবং অন্যথায়, প্রাদেশিক পরিষদের কার্যধারায় অংশ নিতে পারবে এবং কোনো কমিটি যেটিতে তিনি সদস্য হিসেবে নাম লেখাতে পারবেন কিন্তু এই অনুচ্ছেদের গুণে ভোট দানে যোগ্য হবেন না।
৮৭. স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারঃ (১) প্রতিটি প্রাদেশিক পরিষদ যত দ্রুত সম্ভব তার দুইজন সদস্যকে স্পীকার এবং ডেপুটি স্পীকার হিসেবে বাছাই করবে এবং যদি স্পীকার এবং ডেপুটি স্পীকারের অফিস যদি খালি হয় এমন পরিস্থিতে, পরিষদ অন্য সদস্যকে স্পীকার অথবা ডেপুটি স্পীকার হিসেবে বাছাই করবে।
(২) স্পিকার বা সহকারী স্পিকার হিসেবে কার্যালয়ে অবস্থান করা একজন সদস্যকে তার কার্যালয় খালি করতে হবে যদি তিনি আঞ্চলিক পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে কার্য সমাপ্ত করতে চান, তবে যেকোনো সময়ে গভর্নর বরাবর তার নিজ হাতে লেখার মাধ্যমে তার অফীস হতে পদত্যাগ করতে পারবেন, এবং পরিষদ এর মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ এর মতামত এর ভিত্তিতে একটি সমাধান এত মাধ্যমে তাকে কার্যালয় থেকে অপসারণ করা যাবে।কিন্তু এই দফার উদ্দেশ্যে কোনো সমাধান পরিবর্তন করা যাবে না, যদি নাসমাধান পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে কমপক্ষে ১৪ দিনের নোটিশ দেয়া হয়।
শর্ত থাকে যে, যখনই প্রাদেশিক পরিষদ লীন হয়ে যায় ,স্পীকার, সমাধানে গুণে,সমাধানের পর পরিষদের প্রথম সভার পর অতিশীঘ্রই অফিস খালি করবে না।
(৩) যখন স্পীকার এর কার্যালয় খালি থাকবে অথবা স্পীকার কোনো কারনে তার অফিসের দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে, ঐ দায়িত্ব সহকারী স্পীকার কর্তৃক পালন করা হইবে অথবা যদি সহকারী স্পিকার এর কার্যালয়ও যদি খালি থাকে,গভর্নর কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত পরিষদের কোনো সদস্য দ্বারা, এবং স্পীকার এর যে কোন অনুপস্থিতিতে পরিষদে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন সহকারী স্পিকার, এবং যদি তিনিও অনুপস্থিত থাকেন,পরিষদের নিয়ম অনুসারে নির্ধারিত ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করবেন।
৮৮. কার্যপ্রণালীর নিয়মাবলী, কোরাম ইত্যাদি –
(১) সংবিধান এর আলোচ্য বিষয়-
(ক) একটি প্রাদেশিক পরিষদ এর কার্যপ্রণালী পরিষদ এর প্রণীত নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
(খ) প্রাদেশিক পরিষদে কোনো সিদ্বান্ত উপস্থিত এবং ভোট প্রদানকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের দ্বারা গৃহিত হবে, কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যাক্তি ভোট দিতে পারবেন না যদি না সেখানে ভোটের সমতা দেখা দেয়, এই ক্ষেত্রে তার একটি ভোট থাকবে এবং তা তিনি ব্যাবহার করতে পারবেন।
(গ) প্রাদেশিক পরিষদে কোন পদ শুন্য থাকা সত্ত্বেও এর কাজ করার ক্ষমতা থাকবে, এবং পরিষদের কোন সভা শুধুমাত্র এই কারণে অবৈধ হবে না যে, কোন অনপুযুক্ত ব্যক্তি ঐ সভায় অংশগ্রহণ করেছে এবং ভোট প্রদান করেছে অথবা কোন ভাবে কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেছে।
(২) যদি অঞ্চলিক পরিষদের সভা চলাকালীন যে কোন সময় দায়িত্বশীল এর দৃষ্টিতে অবগত হয় যে, চল্লিশ জনের কম সদস্য উপস্থিত আছেন, তাহলে দায়িত্বশীল ব্যাক্তির উপর দায়িত্ব বর্তায় পরিষদ স্থগিত বা বিলম্বিত করতে যতক্ষন পর্যন্ত না কমপক্ষে চল্লিশ জন সদস্য উপস্থিত থাকেন।
৮৯. প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের জন্য সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি –
(১) প্রাদেশিক পরিষদের যে কোনো কার্যবিবরণীর বৈধতা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
(২) প্রাদেশিক পরিষদ এর কোন কর্মকর্তা বা সদস্য যাদের কার্যপ্রণালীর নিয়মাবলীর জন্য অথবা ব্যাবসার বিষয়ে বা পরিষদে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তারা ব্যতিত অন্য কারোর এই ক্ষমতা প্রয়োগে সম্পৃক্তি থাকে ,তবে তিনি যেকোনো আদালতে বিচারের সম্মুখীন হবে।
(৩) আঞ্চলিক পরিষদ এর সদস্য নয়, এবং এর সম্পর্কে কথা বলার অধিকার রাখে না এমন কেউ যদি পরিষদের কোনো কমিটি সম্পর্কে কিছু বলেন অথবা তার কর্তৃক যদি পরিষদে কোনো ভোট প্রদান হয় , তাহলে তিনি যে কোন আদালতে যেকোনো ব্যাবস্থার জন্য দায়ী থাকবেন।
(৪) প্রাদেশিক পরিষদের অধীনে কর্তৃপক্ষের কোনো রিপোর্ট,পত্রিকা,ভোট অথবা কার্যপ্রণালী প্রকাশনার জন্যে কোনো ব্যাক্তি আদালতের কার্যধারার জন্য দায়ী থাকবে না।
(৫) এই অনুচ্ছেদ সাপেক্ষে, একটি প্রাদেশিক পরিষদের সুযোগ সুবিধা, কমিটি ও তার সদস্য, এবং বলার যোগ্য ব্যাক্তি প্রাদেশিক আইনসভায় আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে, কিন্তু এই ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদত্ত জাতীয় পরিষদ, তার কমিটির ও সদস্যদের, বলার যোগ্য ব্যাক্তির অতিক্রম করবে না।
৯০। বিলে গভর্নরের সম্মতিঃ- (১) যখনই একটি বিল প্রাদেশিক পরিষদে পাশ হয় ,এটি গভর্নরের নিকট পেশ করতে হবে যিনি নব্বই দিনের মধ্যে, –
ক) বিলটিতে সম্মতি দিবেন; অথবা
খ) রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য বিলটি সংরক্ষণ করবেন ; অথবা
গ) ঘোষণা দিবেন যে তিনি বিলটিতে সম্মতি তুলে নিয়েছেন; অথবা
ঘ) অর্থবিল ছাড়া অন্য বিলের ক্ষেত্রে, পরিষদে বিলটি ফেরত পাঠাবেন এই অনুরোধ বার্তা সহকারে যে, বিলটি অথবা কোনো নির্দিষ্ট আইন যেন পুনর্বিবেচনা ,এবং বার্তায় তার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোনো সংশোধনী বিবেচনা করা হয়।
(২) যখন গভর্নর একটি বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষণ করে রাখে,এটি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হবে ,উনি নব্বই দিনের মধ্যে-
ক) বিলে সম্মতি দিবেন; অথবা
খ) ঘোষণা দিবেন যে তিনি সেখান থেকে সম্মতি উঠিয়ে নিলেন।
(৩) যখন গভর্নর ঘোষণা দেয় যে তিনি একটি বিল হতে সম্মতি উঠিয়ে নিচ্ছেন,প্রাদেশিক পরিষদ বিলটি পুনর্বিবেচনায় উপুযুক্ত হবে ,এবং যদি এটি আবারো সংশোধনী সহ অথবা ব্যাতীত পরিষদ কর্তৃক , উপস্থিত ও ভোট প্রদানকারী দুই তৃতীয়াংশে কমে না সদস্যদের দ্বারা ,এটি আবারো গভর্নরের নিকট পেশ করা হবে,এবং গভর্নর সেখানে সম্মতি দিবেন।
(৪) যখন গভর্নর একটি বিল প্রাদেশিক পরিষদে ফেরত পাঠায় এটি পরিষদ কর্তৃক পুনর্বিবেচনা করতে হবে ,এবং যদি এটি আবারো পাশ হয় ,সংশোধনী সহ অথবা ব্যাতীত ,পরিষদ কর্তৃক ,পরিষদের মোট সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা,এটি আবারো গভর্নরের নিকট পেশ করা হবে ,এবং গভর্নর তাতে সম্মতি দিবেন।
আর্থিক কার্যপ্রণালী
৯১। অর্থ বিলঃ এই অংশে ‘অর্থ বিল’ বুঝায় যে একটি বিল শুধু মাত্র নিম্নলিখিত সকল অথবা কোনো ব্যাপারের সাথে সম্পর্কিত আইনগুলো ধারণ করবে ,যেগুলো হল –
ক) কোনো করের আরোপ,বাতিল ,হ্রাস ,পরিবর্তন এবং ব্যবস্থাপন;
খ) প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক কোন ধরনের ঋণগ্রহণ অথবা কোন ধরনের অঙ্গীকারনাম বা সেই সরকারের আর্থিক চুক্তি সংক্রান্ত আইন-কানুনে কোন সংশোধন ;
গ) সংযুক্ত প্রাদেশিক তহবিলের দায়িত্ব, এবং উক্ত ফান্ড থেকে লেনদেন অথবা অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত যেকোন বিষয়;
ঘ) সংযুক্ত প্রাদেশিক তহবিলের উপর কোন অর্থমূল্য আরোপ অথবা অর্থমূল্যের কোন পরিবর্তন বা বিলোপ;
ঙ) সংযুক্ত প্রাদেশিক তহবিলের হেফাজতে থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় রসিদ, বা প্রদেশের পাবলিক একাউন্ট অথবা অর্থ সংক্রান্ত নানা বিষয়; এবং
চ) উপ-ধারায় বর্ণিত যেকোন প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে
২) একটি বিল যে কারনগুলোতে একটি অর্থবিল বলিয়া গণ্য হবে না –
ক) প্রায়োগিক ক্ষেত্রে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কোন জরিমানা বা এতে কোনরূপ পরিবর্তন পরিমার্জন হলে, বা চাহিদার ভিত্তিতে বা লাইসেন্স ফি প্রদান বাবদ বা অন্য যেকোন সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ; অথবা
খ) স্থানীয় কাজের উদ্দেশ্যে কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা প্রতিনিধি কর্তৃক প্রণীত যে কোন করের আরোপ, বাতিল, হ্রাস, পরিবর্তন এবং ব্যবস্থাপন এর ক্ষেত্রে।
৩)প্রতিটি অর্থ বিল,যখন গভর্নরের কাছে তার সম্মতির জন্য পেশ করা হবে ,সেটিতে অবশ্যই স্পীকারের কর্ত্রৃক সনদ থাকতে হবে যে ,এটি একটি অর্থবিল , এবং সেই সনদ সকল কাজে চূরান্ত বলে বিবেচিত হবে এবং আদালতে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না।
৯২। অর্থনৈতিক পদক্ষেপের জন্য গভর্নর কর্তৃক যে সকল সুপারিশসমূহ প্রযোজ্য –
সংশোধনীর যেসব বিল ,যেগুলো অনুচ্ছেদ ৯১ এর ধারা (১) এর সাথে সম্পর্কিত কোন বিষয়ে বিধান তৈরী করে, বা সেগুলোর প্রণয়ন এবং কোন কার্যে ব্যবহার যদি প্রদেশের ব্যয়ের সাথে সম্পর্কিত হয় , সংবিধানে সেগুলো প্রাদেশিক পরিষদে গভর্নরের সুপারিশ ছাড়া জারি অথবা ঊত্থাপিত হবে না।
৯৩। প্রাদেশিক আইন-কানুন ব্যাতিরকে কোন ধরনের করারোপণ করা যাবে না । – প্রাদেশিক আইসভার ক্ষমতা ব্যাতিরকে বা তত্ত্বাবধান ছাড়া প্রদেশের কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে কোন রকম কর আরোপ বা ধার্য করা যাবে না।
৯৪। সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিল এবং প্রাদেশের সরকারী হিসাব। –
(১) প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল রাজস্ব , সরকার কর্তৃক উত্থাপিত সকল ঋণ এবং ঋণশোধের জন্য গৃহীত যেকোন অর্থসমূহকে একক সম্মিলিত তহবিলের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং তাকে বলা হবে ‘সম্মিলিত’ প্রাদেশিক তহবিল’।
(২) প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ হতে গৃহীত অন্যান্য সকল সরকারী অর্থ প্রদেশের ‘সরকারি তহবিল’ এ জমা করা হবে।
৯৫। একটি প্রদেশে সরকারি অর্থের মালিকানা। –
১) সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিল এর হেফাজত, উক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান, সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন, এমন তহবিলে
প্রাদেশিক সরকারের দ্বারা বা পক্ষে গ্রহন করা অর্থ ব্যতিত অন্যান্য সরকারি অর্থের হেফাজত, প্রদেশের সরকারি হিশাবে
সেগুলো প্রদান এবং এমন হিশাব থেকে অর্থ উত্তোলন এবং পূর্বে উল্লেখিত সকল বিষয়ের সংশ্লিষ্ট্য বা এর আনুসঙ্গিক বিষয়সমূহ এর তত্ত্বাবধায়ন প্রাদেশিক সভার আইন দ্বারা হবে এবং এই বিষয়ে বিধি প্রনয়ণের পূর্ব পর্যন্ত গভর্ণর-প্রণীত আইন দ্বারা হবে।
(২) সংগৃহীত সকল অর্থ গ্রহণ বা জমা হবে-
(ক) প্রদেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয়ে নিয়োগিত যেকোন কর্মকর্তা দ্বারা, প্রাদেশিক সরকার ব্যতীত উত্থাপিত এবং সংগৃহিত রাজস্ব অথবা সরকারী টাকা বাদে।
(খ) প্রাদেশিক কার্যাবলীর সাথে সম্পর্কিত যেকোন কারণ, বিষয়াদি, হিসাব বা ব্যক্তি দ্বারা ;
প্রদেশের ‘সরকারী তহবিলে’ অর্থ জমা হবে ।
৯৬। বার্ষিক অর্থ বিবরণী (১) এই অংশে উল্লিখিত ‘বার্ষিক অর্থ বিবরনী’ হিসেবে গভর্নর প্রতি বছর প্রাদেশিক পরিষদের সামনে প্রাদেশিক সরকারের ঐ বছরের জন্য ধারণাকৃত আয় এবং ব্যয় এর একটি বিবৃতি পেশ করবে।
(২) বার্ষিক অর্থ বিবরণী আলাদাভাবে দেখানো হবে
(ক)সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিল এর উপর ব্যয় ভার হিসেবে সংবিধান কর্তৃক বর্ণিত ব্যয় মেটাতে প্রয়োজনীয় হিসাব ; এবং
(খ) সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিল কর্তৃক প্রস্তাবিত অন্যান্য ব্যয় মেটাতে প্রয়োজনীয় হিসেব ;
এবং রাজস্ব হিসাব হতেঅন্যান্য ব্যয়ের জন্য আলাদা হবে ।
৯৭। সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিলের উপর করারোপ – সম্মিলিত প্রাদেশিক তহবিলের নিম্নোক্ত ব্যয়সমূহকে করের আওতায় আনা হবেঃ-
(ক) গভর্নরের অফিসের সাথে সম্পর্কযুক্ত খরচ বাবদ তাকে পরিশোধযোগ্য পারিশ্রমিক এবং পরিশোধ্য পারশ্রমিক পাবে –
(১) হাইকোর্টের মাননীয় বিচারকমন্ডলী;
(২) প্রাদেশিক সরকারি চাকুরী কমিশন এর সদস্যরা;এবং
(৩) প্রাদেশিক সভার স্পীকার এবং ডেপুটি স্পীকার
(খ) প্রসাশনিক ব্যয় যাতে অন্তুর্ভূক্ত থাকবে হাইকোর্টের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের , প্রাদেশিক সরকারী চাকুরী কমিশন এবং প্রাদেশিক পরিষদের সচিবদের পরিশোধযোগ্য পারশ্রমিক।
(গ) সকল ঋণভার যেগুলো প্রাদেশিক সরকার পরিশোধে বাধ্য যাতে অন্তর্ভূক্ত থাকে সুদ ,সিংকিং ফান্ড এর ব্য্য,মূলধনের ঋণ পরিশোধ অথবা শোধ ,
প্রাদেশিক সুসংহত তহবিলের নিরাপত্তা অন্যান্য খরচের সাথে দেনা,চুক্তি এবং ঋণ লাভের সাথে বাড়তে থাকে।
(ঘ) যেকোন কোর্ট অথবা ট্রাইবুনাল দ্বারা প্রদেশের বিরুদ্ধে কোন রায়, ফরমান অথবা স্বীকৃতি মেটাতে প্রয়োজনীয় কোন অংক
(ঙ) সংবিধান কিংবা অন্য কোন প্রাদেশিক আইন দ্বারা ঘোষিত অন্য কোন অংক প্রদেয় হবে
(৯৮) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সংক্রান্ত পদ্ধতি :
(১) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির অধিকাংশ খরচ যা প্রাদেশিক সুসংহত তহবিলের ব্যায়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত তা আলোচিত হবে, কিন্তু প্রাদেশিক এসেম্বলীতে ভোটের জন্য পেশ করা হবে না।
(২) বার্ষিক আর্থিক বিবৃতির অধিকাংশ খরচ যা অন্যান্য ব্যায়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত তা প্রাদেশিক এসেম্বলীতে বরাদ্দের দাবি আকারে পেশ করা হবে এবং সেই এসেম্বলীর যেন যেকোন চাহিদায় সম্মতি দানের, অপারগতা প্রকাশের ও ব্যয় হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকে।
(৩) গভর্নরের সুপারিশ ছাড়া কোন বরাদ্দের জন্য দাবি পেশ করা হবে না
(৯৯) উপযোজন বিল : যখনই পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদে উল্লেখিত কোন বরাদ্দ অনুমোদিত হবে, তখনই এ খরচ নির্বাহের জন্য প্রাদেশিক পরিষদের নিকট এ খরচের ব্যয় নিমিত্ত একটি বিল পেশ করতে হবে যা কোনক্রমেই প্রাদেশিক পরিষদের পেশকৃত খরচের বিবরণীকে অতিক্রম করবেনা, যা
(ক) প্রাদেশিক পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত এবং
(খ) প্রাদেশিক পরিষদে এমন কেন সংশোধনী প্রস্তাব আনা যাবেনা যার মাধ্যমে এ ধরনের অনুদানে কোনরকম গড়মিল হতে পারে।
(২) এ অনুচ্ছেদের ধারা অনুযায়ী উপযোজিত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের নির্ধারিত ধারা অনুযায়ী প্রাদেশিক সমন্বিত তহবিল থেকে কোন টাকা উত্তোলন করা যাবেনা।
(১০০) অতিরিক্ত সম্পূরক অনুদান : যদি কোন আর্থিক বছর এমন হয় যে-
(ক) কোন নির্দিষ্ট সেবার জন্য ধার্যকৃত ব্যয় অপর্যাপ্ত হয় অথবা একই বছরে আর্থিক বিবরনীতে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই এমন কোন সেবার ব্যয়ের প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, অথবা
(খ) কোন নির্দিষ্ট বছরের জন্য বরাদ্দ ব্যয়ের চেয়ে যদি অতিরিক্ত ব্যয় হয়।
রাজ্যপাল প্রাদেশিক উপযোজন তহবিল থেকে যে কোন পরিমাণ অর্থ ব্যায় করার অনুমোদন দিতে পারবে যদিও ব্যায়টি উপযোজন তহবিল থেকে সাংবিধানিক ভাবে নির্ধারিত অথবা নয় বা ব্যায় এর পরিমাণটি বের করার জন্য প্রাদেশিক সংসদ অধিবেশনের পূর্বে একটি সম্পূরক আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে এবং আইনের ৯৬ থেকে ৯৯ ধারা অনুযায়ী পূর্বোক্ত প্রতিবেদনে প্রযোজ্য হবে যেভাবে তা বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে প্রয়োগ করা হয়েছে।
১০১। হিসাব নির্ধারণের ভোটাভুটি, ঋণ নির্ধারণের ভোটাভুটি, ইত্যাদি –
(1) যদিও পূর্ববর্তী অণুচ্ছেদে কোন বিধান না থেকে থাকে তথাপি প্রাদেশিক সংসদের ক্ষমতা রয়েছে-
(ক) সংসদ যেকোন পরিমাণ অর্থ অগ্রীম বরাদ্দ করতে পারবে যার কারণে কোন অর্থ বছরে উল্লেখিত কার্যপ্রণালী বিলম্বিত করে; এই অর্থ আনুমানিক ব্যায়ের বিপরীতে দেয়া হবে যা ৯৮ ধারা মোতাবেক অনুদান প্রদানের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে এবং আইনটি পাশ হবে সংবিধানের ধারা ৯৯ অনুযায়ী যা ঐ ব্যায়ের সাথে সম্পর্কিত।
(খ) কোন অপ্রত্যাশিত চাহিদা পূরণের জন্য প্রাদেশিক সম্পদের পুঁজি থেকে চাহিদার গুরুত্ব বুঝে অনুদান দেয়া বা যে সেবাটির আচরণ অনির্দিষ্ট ও এর চাহিদা বিস্তারিত ঠিক করা যায়না যেমনটা সাধারণত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেয়া থাকে।
(গ) কোন ব্যাতিক্রমী অনুদান যার কোন সেবার অংশই বর্তমান আর্থিক অর্থ বছরে নেই এবং প্রাদেশিক আইনসভার আইনগত ক্ষমতা রয়েছে প্রাদেশিক উপযোজন তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলনের যা তারা বলবে অনুদান দেয়া হোক।
২। আইনের ধারা ৯৮ ও ৯৯ অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলির উপর প্রভাব ফেলতে পারে;
ক) উল্লেখিত বিষয়টির প্রেক্ষাপটে যেকোন আইণ তৈরি করা যাবে যা যেকোন অনুদান তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত ব্যায়ের উপরে এবং প্রাদেশিক উপযোজন তহবিল থেকে উক্ত ব্যায় মিটানোর প্রেক্ষিতে অর্থ গ্রহণের জন্য আইণটি তৈরি করা হবে।
রাজ্যপালের আইনী ক্ষমতা
১০২। প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন ছাড়া আইন জারিঃ
(1) প্রাদেশিক পরিষদে অধিবেশন চলাকালীন সময় ব্যতীত অন্য যেকোন সময়ে রাজ্যপাল যদি উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুযায়ী মনে করেন যে অতি সত্তর পদক্ষেপ নেয়া উচিত তবে তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইন জারি করতে পারেন এবং জারিকৃত যেকোন অধ্যাদেশ প্রাদেশিক আইন সভায় প্রণীত আইনের মত শক্ত হবে কিন্তু এই অনুচ্ছেদের অধীনে অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা হচ্ছে প্রাদেশিক আইনসভায় আইন তৈরীতে সীমাবদ্ধতা ; এই অনুচ্ছেদের অধীনে জারিকৃত অধ্যাদেশ যেকোন আইন দ্বারা রহিত বা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে;
তবে রাজ্যপাল কর্তৃক জারিকৃত অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পূর্ববর্তি কোন নির্দেশনা ছাড়া প্রাদেশিক আইনসভায় যা ঐ অধ্যাদেশের মতই রয়েছে তা সাংবিধানিক ভাবে অকার্যকর থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাওয়া যায়।
২) দফা-(১) এর অধীনে জারীকৃত অধ্যাদেশ প্রাদেশিক সভায় উপস্থাপিত হবে এবং পরবর্তী পরিষদের সভা অনুষ্ঠানের পর ছয় সপ্তাহের মেয়াদ শেষে অথবা যদি এটির অননুমোদন এর রেজ্যুলুশন সভা দ্বারা গৃহিত হয় তবে তা গৃহিত হবার পর এর কার্যকারিতা রহিত হবে।
৩) যে কোন সময়ে যখন প্রাদেশিক পরিষদের ভেঙে গেলে, যদি গভর্নর মনে করেন সেই পরিস্থিতিতে এমন উদ্যোগ জরুরী, তবে তিনি প্রাদেশিক সংযুক্ত তহবিল থেকে অর্থব্যয়ের অনুমোদন দিয়ে অধ্যাদেশ তৈরী ও জারি করতে পারবেন, অনুচ্ছেদ ৯৬, ৯৮ এবং ৯৯ এর বিধিসমূহের অনুমোদন সাপেক্ষে, উক্ত অর্থব্যয় সংবিধান অনুসারে সেই তহবিল এর আওতাধীন হোক বা না হোক ।
৪) প্রাদেশিক সভা পুনর্গঠন এর তারিখের পরে যতো দ্রুত সম্ভব, দফা-(৩) এর অধীনে জারীকৃত যেকোনো অধ্যাদেশ সভায় উথাপিত হবে, এবং ওই তারিখ থেকে ছয় মাস সময়কাল অনুচ্ছেদ ৯৬,৯৮ এবং ৯৯ এর বিধানসমূহ মেনে চলতে হবে।
বহির্ভূত ও বিশেষ এলাকাঃ
১০৩। বহির্ভূত এলাকাঃ ১) এই অনুচ্ছেদে “বহির্ভূত এলাকা” বলতে এমন একটি এলাকা বোঝানও হচ্ছে যা সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বেই বাদ দেওয়া হয়েছিলো।
২) বহির্ভুত এলাকাতেও একটি প্রদেশের নির্বাহী কর্তৃত্ব প্রয়োগ হতে পারে, কিন্তু সংবিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, কোনো প্রাদেশিক আইনসভার কোনো আইন বহির্ভূত এলাকায় প্রয়োগ হবে না যদি না প্রজ্ঞাপন জারি দ্বারা গভর্নর এমন নির্দেশ দেন, এবং কোনো আইন সাপেক্ষে, যে আইন ওই এলাকায় বা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় প্রয়োগ হবে বলে তিনি মনে করেন, তার নির্দেশনায় উল্লেখিত ব্যতিক্রম ও পরিমার্জন সাপেক্ষে এমন কোনো নির্দেশনার এর প্রয়োগ হবে।
৩) প্রদেশের কোনো বহির্ভুত এলাকায় শান্তি ও সুশাসনের জন্য গভর্নর বিধান তৈরি করতে পারবেন এবং এমন আইন, সংসদ বা প্রাদেশিক সভা বা ওই এলাকায় বলবৎ কোনো আইন বাতিল বা সংশোধন করতে পারেঃ
এই শর্তে যে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ব্যতিত সংসদের আইন বাতিল বা সংশোধন করে এমন কোনো বিধান প্রয়োগ হবে না ।
৪) বহির্ভুত এলাকার সম্পুর্ন অথবা কোনো নির্দিষ্ট অংশ কে বহির্ভুত এলাকা থেকে বিরত রাখতে রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্দেশ দিতে পারবেন এবং এই নির্দেশনায় এমন আনুষঙ্গিক এবং অনুবর্তী বিধান থাকতে পারে যা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত মনে করেন।
১০৪) বিশেষ এলাকাঃ ১) পশ্চিম পাকিস্তানের প্রদেষের নির্বাহী কর্তৃত্ব বিশেষ এলাকাতে বর্ধিত হবে, কিন্তু সংবিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রপ্রধানের পূর্ব অনুমোদনসহ গভর্নরের নির্দেশিনা ব্যতিত, কোনো সংসদ বা প্রাদেশিক আইনসভার কোনো আইন একটি বিশেষ এলাকা বা আর অংশবিশেষে প্রযোজ্য হবে না এবং কোনো আইন সাপেক্ষে এমন নির্দেশনা দিতে গভর্নর নির্দেশ করতে পারেন যে, বিশেষ এলাকা বা এর অংশবিশেষে প্রয়োগের ক্ষেত্রে, নির্দেশনায় উল্লেখিত ব্যতিক্রম ও পরিমার্জন বিবেচনায় রেখে আইনটি প্রযোজ্য হবে।
(৪) একটা প্রদেশ বা তার অংশবিশেষ ব্যাতীত প্রাদেশিক তালিকায় বর্ণিত বিষয়ে পার্লামেন্টের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে।
(১০৭) ক্ষমতা
(২) রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদনক্রমে এক বিশেষ এলাকার বা তার অংশবিশেষের শান্তি রক্ষা ও সুন্দর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন করতে পারবেন এবং একই ধরনের প্রচলিত আইন পার্লামেন্টের বা প্রাদেশিক পরিষদ কর্তৃক প্রণিত হবে অথবা একই উদ্দেশ্যে অন্য যেকোন প্রণীত আইন বাতিল বা সংশোধন করতে পারবেন।
(৩) রাষ্ট্রপতি সময়ে সময়ে বিশেষ কোন পূর্ণ এলাকা বা তার অরংশ বিশেষের জন্য গভর্নরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারবেন এবং এই অনুচ্ছেদ অনযায়ী গভর্নর এই কার্যতালিকা প্রতিপালন করবেন।
(৪) রাষ্ট্রপতি সময়ে সময়ে আদেশবলে কোন বিশেষ এলাকা বা তার অংশবিশেষকে বিশেষ এলাকা হিসেবে বাতিল করতে পারেন। এবং রাষ্ট্রপতি যেসকল ঘটনা ও পরিণতির কারণে বাতিল করেছেন সেগুলি আদেশে উল্লেখিত থাকবে। তবে শর্ত থাকে যে, কোন আদেশের পূর্বে রাষ্ট্রপতি তার বিবেচনায় যথার্থভাবে জনগণের মতামত গ্রহণ করবেন।
পার্ট-৬
কেন্দ্র এবং প্রদেশের সাথে সম্পর্ক :
অধ্যায় ১- বিধানিক ক্ষমতা
(১০৫) কেন্দ্র ও প্রদেশিক আইনসমূহের ব্যাপ্তি : সংবিধানের বিধান অনুযায়ী পার্লামেন্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সীমারেখার বা তার অংশ বিশেষের জন্য আইন প্রনয়ন করতে পারে।
(১০৬) কেন্দ্র ও প্রদেশের আইনের বিষয়বস্তু :
(১) পরবর্তী দুই দফায় উল্লেখ না থাকলেও কেন্দ্রের তালিকাভুক্ত যেকোন বিষয়ে আইন প্রনয়নের সর্বোচ্চ ক্ষমতা পার্লামেন্টের থাকবে
(২) দফা-৩ এ না থাকলেও দফা-১ অনুযায়ী প্রাদেশিক আইনসভার বিস্তারিত তালিকা অনুযায়ী একজন প্রাদেশিক আইনপ্রণেতার কোন প্রদেশ বা তার অংশবিশেষের জন্য আইন প্রণয়নের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকবে।
(৩) দফা ১ ও ২ অনুযায়ী, প্রাদেশিক আইনপ্রণেতার প্রদেশিক তালিকা অনুযায়ী আইন প্রণয়নের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকবে।
(৪) প্রাদেশিক তালিকা অনুযায়ী যেকোন আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সংসদের থাকবে
107. Power of Parliament to legislate for Provinces by consent.- If it appears to
the Provincial Assemblies to be desirable that any of the matters enumerated in the
প্রাদেশিক তালিকা, বা পঞ্চম তফসিলে কোন তালিকার মধ্যে স্বীকৃত নয় এরুপ কোন ব্যাপার সংসদের আইন দ্বারা প্রদেশে নিয়ন্ত্রিত হবে এবিং যদি কোন সমাধান প্রাদেশিক পরিষদ দ্বারা গৃহিত হয়, তবে সে সমাধান তদ্রুপ নিয়ন্ত্রিত ভাবে আইন হিসেবে পাস করা সংসদের জন্য আইনসম্মত হবে, কিন্তু এরকম পাস হওয়া কোনো আইন যে কোনো প্রদেশের প্রাদেশিক আইনসভায় সংশোধিত বা রোহিত করা যেতে পারে।
১০৮. আন্তর্জাতিক চুক্তি,ইত্যাদি কার্যকরণে সংসদের ক্ষমতা:
পাকিস্তান ও অন্য যে কোন দেশের মধ্যে কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি বা সম্মেলন বা কোন আন্তর্জাতিক সংগঠন দ্বারা গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঊদ্দেশে সমগ্র পাকিস্তানের বা তার যে কোনো অংশের জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকিবে সংসদের, যদিও বা তা প্রাদেশিক তালিকার স্বীকৃত একটি ব্যাপার অথবা পঞ্চম তফসিলের কোনো তালিকায় স্বীকৃত না হয়ে থাকে।
তবে শর্ত থাকে যে, এই অনুচ্ছেদের অধীন কোনো আইন যা কোন প্রদেশে প্রয়োগ করা হবে তা ঐ প্রদেশের গভর্নরের সহিত পরামর্শক্রমে প্রণয়ন করা হইবে।
১০৯. আইনের অবশিষ্ট ক্ষমতা- নিবন্ধনটি ১০৭ ও ১০৮ এর বিধান সাপেক্ষে, প্রাদেশিক আইনসভার পঞ্চম তফসিলের কোনো তালিকায় স্বীকৃত নয় এরকম কোন ব্যাপার থেকে যে কোন আইন প্রণয়নের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকিবে কর আরোপ সংক্রান্ত আইন আরোপের ক্ষমতাসহ যা কোন তালিকায় উল্লেখ করা নেই এবং প্রদেশের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ প্রশাসন দ্বারা সে আইনের প্রণয়ন নিশ্চিত করবে।
১১০. সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন এবং প্রাদেশিক আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনের মধ্যে অসংগতি- (১)যদি একটি প্রাদেশিক আইনসভার কোন বিধান সংসদের কোন আইনের, যা সংসদ প্রণয়নের উপযুক্ত, বা প্রচলিত আইনের কোন বিধান যা তালিকায় স্বীকৃত বিষয়ের সাথে সহগামী, পরিপন্থী হয় তবে দফার বিধানাবলী সাপেক্ষে (২),সংসদের আইন প্রাদেশিক আইনসভায় আগে বা পরে পাস কিনা অথবা ক্ষেত্রমতে বিদ্যমান আইন প্রাধান্য পাইবে এবং প্রাদেশিক আইনসভায় আইন যতখানি বিরুদ্ধতা হবে, ততখানি বাতিল হবে। (২)যেখানে সমবর্তী তালিকায় কোন বিষয়ের সঙ্গে প্রাদেশিক আইনসভায় একটি আইন বিধান সংসদের আগের আইনের বিধানাবলী বেমানান রয়েছে, অথবা যে বিষয়টি আইনে সম্মানের সঙ্গে বিদ্যমান,তারপর যদি প্রাদেশিক আইনসভায় আইন,রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত করা হয়,তার সম্মতি পায়, প্রাদেশিক আইনসভায় আইন প্রদেশের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রাধান্য পাইবে,কিন্তু তা সত্ত্বেও সংসদ যে কোনো সময়ে সে বিষয়ে যে কোন আইন প্রণয়ন করতে পারে, যা প্রাদেশিক আইনসভা দ্বারা সংশোধন বা রদ করতে পারে।
১১১. সুপারিশ বিধান-(১) যেখানে সংবিধানের কোন বিধানের আওতায় গভর্নরের উপর রাষ্ট্রপতির পূর্ববর্তী সুপারিশ একটি বিল প্রবর্তনের বা একটি চলন্ত সংশোধনীর প্রয়োজন বোধ করা হয়,তাঁকে সুপারিশ নির্মাণের পরবর্তীচর্চা থেকে প্রতিরোধ করতে পারবে না,বিল নির্মাণের প্রশ্নে কোনো ক্ষমতা সম্মতির প্রতিসংহার থেকে সম্মানের সংবিধান দ্বারা তাঁর উপর অর্পিত বা ফিরতি বা বিল রিজার্ভেশন।
২. সংসদের কিংবা প্রাদেশিক আইনসভার কোন আইন বা সেই আইনের কোন বিধান , শুধুমাত্র এই কারনে অবৈধ গন্য হবে না যে, এর জন্য ইতিপূর্বে কোন সুপারিশ করা হয়নি,যদি সেই আইনের সম্মতি দেয়া হয়—
ক। যেখানে আগের সুপারিশ প্রয়োজন ছিলো গভর্নরের পক্ষ থেকে, হয় গভর্নর নয়তো রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে এবং
খ। যেখানে আগের সুপারিশ প্রয়োজন ছিলো প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে, স্বয়ং প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে।
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ অর্থনৈতিক বিধান
১১২. করমুক্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকারের সম্পত্তিঃ
১. একটি প্রদেশের সরকার সংসদ দ্বারা প্রণীত কোন আইনের অধীনে পাকিস্তানের উপর অবস্থিত যেকোন জমি কিংবা ভবনের উপর অথবা পাকিস্তানে অর্জিত, উদ্ভুত কিংবা গৃহীত কোন আয়ের উপর কর দিতে বাধ্য থাকবে নাঃ
তবে উল্লেখ্য যে, যেকোন ধরনের ব্যাবসা কিংবা বানিজ্য প্রাদেশিক সরকারের দ্বারা প্রদেশের বাইরে নিয়ন্ত্রিত হলে,এই প্রবন্ধের কিছুই সেই ব্যাবসা এবং বানিজ্য বা অথবা তাদের সাথে যুক্ত যেকোন কার্যক্রম অথবা সেই উদ্দেশ্যে অধিকৃত যেকোন ধরনের সম্পত্তির জন্য কেন্দ্রীয় কর হতে প্রাদেশিক সরকার কে অব্যহতি দিবেনা,
২. কেন্দ্রীয় সরকার এর উপর অর্পিত সম্পত্তি, সংসদের কোন আইন দ্বারা অন্যথা নির্দেশিত না হলে, যেকোন প্রদেশ বা প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের দ্বারা আরোপিত কর থেকে অবমুক্ত থাকবে।
৩. এই প্রবন্ধে নিবন্ধিত কোন কিছুই পরিসেবার প্রদানের উপর মাশুল আরোপ প্রতিরোধ করবে না।
১১৩. বিদ্যুতের উপর আরোপিত কর অব্যহতিঃ যদি না সংসদ আইনের মাধ্যমে অন্যথা নির্দেশ করে তবে, প্রাদেশিক আইনসভা দ্বারা প্রনীত যেকোন আইন, এমন বিদ্যুৎ এর ব্যাবহার কিংবা বিক্রীর উপর কর আরোপ বা করারোপ অনুমোদন করবে না যা কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক ব্যাবহৃত হয় এবং প্রাদেশিক আইনসভা দ্বারা বিদ্যুৎ এর ব্যবহার এবং বিক্রীর উপর করারোপ বা করারোপ অনুমোদনের জন্য প্রনীত আইন এটা নিশ্চিত করবে যে, ঐ সরকার কর্তৃক কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট ব্যবহারের জন্য বিক্রীকৃত বিদ্যুৎ এর মুল্য অন্য গ্রাহকদের কাছে বৃহদাকার বিদ্যুত বিক্রির ক্ষেত্রে নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে করের সমমানে কম হবে।
১১৪. প্রদেশের আপদকালীন অনুদান তহবিলঃ সংসদ আইনের দ্বারা একটি প্রদেশের আয় থেকে আপদকালীন তহবিল গঠন করতে পারে যা, সহযোগীতার জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
১১৫. সমন্বিত রাষ্ট্রের ঋনগ্রহনঃ সমন্বিত রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সমন্বিত রাষ্ট্রের সংযুক্ত তহবিলের নিশ্চয়তার ভিত্তিতে ঋণের সীমা, যদি থেকে থাকে, তবে তা ততখানি প্রসারিত করতে পারবে যতখানি সংসদের কোন আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে, এবং এই সীমা যদি তা নির্ধারিত হয়ে থাকে তবে তার উপর জামানত প্রদান করবে।
১১৬. ঋণ এবং প্রদেশগুলোর ধার:- (১) উক্ত প্রবন্ধের বিধান বিষয়ে একটা প্রদেশের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ প্রাদেশিক একীকৃত তহবিলের জন্য নির্দিষ্ট সীমায় নিরাপত্তা ঋণ গ্রহণ বর্ধিত করতে পারে, যদি কোনো একটি প্রাদেশিক আইনসভার আইন দ্বারা নির্ধারিত হয়, এবং উক্ত সীমার মধ্যে প্রত্যাভূতিপত্র দেওয়া হয়।, যদি কোনো একটি, নির্ধারিত হয়।
(২) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার, এমন শর্তের সাথে সম্পর্কিত, যদি কোনো, এমন আরোপ করার চিন্তা করা হয় যে, ঋণ গ্রহণ করা, অথবা সর্বশেষ প্রবন্ধের কার্যধারার অধীনে কোনো সীমা নির্ধারণ ঋণের জন্য প্রত্যাভূতিপত্র অতিক্রম না করে, একটি প্রদেশ এবং একটা প্রদেশের ঋণ গ্রহণের জন্য যে অঙ্কের প্রয়োজন তা যুক্তরাষ্ট্রীয় আইনসভার আইন দ্বারা অভিযুক্ত হবে।
(৩) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সম্মতি, সম্মতি জাতীয় কিছু ব্যতীত একটা প্রদেশ পাকিস্তানের বাইরে থেকে ধার নিতে পারবে না, যদি ঋণের একটা অনাদায়ী অংশ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দ্বারা অথবা যে সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দ্বারা প্রত্যাভূতিপত্র প্রদান করে প্রদেশের জন্য গ্রহণ করা হয়।
(৪) উক্ত প্রবন্ধের অধীনে এমন শর্ত সাপেক্ষে কোনো সম্মতি মঞ্জুর করা হয় যদি কোনো যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার আরোপ করার চিন্তা করে, কিন্তু এমন কোনো সম্মতি অকারণে প্রতিসংহৃত হয়, নতুবা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার প্রত্যাখ্যান করে, যদি পর্যাপ্ত কারণ প্রদর্শন করা হয়, ঋণ গ্রহণের জন্য, অথবা ঋণ গ্রহণের জন্য প্রত্যাভূতিপত্র প্রদান করা হয়, একটা প্রদেশ, অথবা কোনো কোনো বিষয় পূর্বোক্ত শর্ত যা অযৌক্তিক তা সম্পর্কে আরোপ করার চেষ্টা করা হয়; এবং যদি প্রত্যাখ্যান অথবা সম্মতি বিষয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়, অথবা কোনো ঋণ গ্রহণে প্রত্যাখ্যান অথবা প্রত্যাভূতিপত্র প্রদান অথবা উপরে উল্লেখিত যেকোনো শর্ত, সমর্থনযোগ্য অথবা সমর্থনযোগ্য নয়, প্রবন্ধ ১২৯ এ বর্ণিত কার্যপ্রণালী অনুসারে বিতর্ক স্থায়ী হবে।
১১৭. পেশা, বাণিজ্য, ব্যবসা এবং কর্মসংস্থানের উপর করসমূহ: (১) তত্সত্ত্বেত্ত প্রবন্ধ ১০৬ এ অন্তর্গত কেনোকিছু, একটা প্রদেশের অথবা পৌরসভার, জেলা বোর্ড অথবা স্থানীয় প্রশাসনের তাহাতে পেশা, ব্যবসা, কর্মসংস্থান সম্পর্কিত লাভের জন্য কর সম্পর্কিত কোনো প্রাদেশিক আইন শুরুতেই অকার্যকর হবে যা আয়ের উপর করের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।
(২) প্রদেশের প্রতি অথবা প্রদেশের পৌরসভা, জেলা বোর্ড, স্থানীয় বোর্ড অথবা অন্যান্য স্থানীয় প্রশাসনের কারো প্রতি পেশা, ব্যবসা, ককর্মসংস্থানের উপর একজন ব্যক্তির প্রদেয় সর্বমোট পরিমাণ কর বছর প্রতি ৫০ রুপি অতিক্রম করবে না।
(৩) the fact that উপরের বক্তব্য অনুযায়ী একটা প্রাদেশিক সরকারের পেশা, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান সম্পর্কিত কর আইন তৈরির ক্ষমতা রয়েছে যা পেশা, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রণের ব্যাখা প্রদান করা হবে না, the generality of the entry in Federal List relating to taxes on income.
১১৮. জাতীয় বাণিজ্য কমিশন- (১) শীঘ্রই হয়তো সংবিধান দিবসে, এবং তারপর পাঁচ বছর ব্যবধান অতিক্রমণ করার আগেই, রাষ্ট্রপতি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী, প্রাদেশিক সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী এবং এরকম অন্যান্য জাতীয় বাণিজ্য কমিশন গঠন করবেন।
প্রদেশের গভর্নর সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি ব্যাক্তি নিয়োগ করবেন।.
(২) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুনরায় সমর্থন পাবার জন্য ন্যাশনাল ফাইন্যান্স কমিশনের নিম্নরূপ দায়িত্ব থাকবেঃ
(ক) কেন্দ্র এবং প্রদেশ সমুহে মোট লভ্যাংশ এবং কর ফেডারেশন এবং প্রভিন্সেস মধ্যে দফা(৩) অনুযায়ি বন্টন
(খ)প্রাদেশিক সরকারের জন্য ‘সহায়তা অনুযায়ি অনুদান’ কেন্দ্রিক সরকার কর্তৃক তৈরি হবে।;
(গ)কেন্দ্রিয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতার বণ্টন হবে সংবিধান অনুযায়ী এবং
(ঘ) অর্থ সংক্রান্ত অন্য সব ব্যাপার রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কমিশনের নিকট প্রেরিত হবে।
ব্যাখ্যা.- এই নিবন্ধটিতে “নেট আয়” মানে, কোনো করের ক্ষেত্রে, আয় এর পর সংগ্রহ খরচ থেকে যে লাভ বাকি থাকে।
(৩) করসমুহ অনুচ্ছেদ (ক) দফা এ উল্লেখিত (২) এ নিম্নলিখিত কর সমূহ সংসদ কর্তৃক উত্থাপিত হয়: –
(ক) পাট ও তুলার, এবং অন্য কোন নির্দিষ্ট রপ্তানি কর্তব্যরত রপ্তানি দায়িত্ব;
(খ) কর্পোরেশন ট্যাক্স ছাড়া অন্য আয়ের ওপর কর;
(গ) ফেডারেল আবগারির নির্দিষ্ট দায়িত্ব ;
(ঘ) বিক্রয় এবং ক্রয় কর; এবং
(ঙ) অন্যান্য কর.
(৪) সম্ভবত রাষ্ট্রপতি যত তাড়াতাড়ি ন্যাশনাল ফাইন্যান্স কমিশনের সুপারিশ পাবেন,তত দ্রুত তিনি (২) নং দফার উপদফা অনুযায়ী নেট লভ্যাংশ উত্থাপন এবং (৩) নং দফা অনুযায়ী বরাদ্দ দেয়ার অনুশাসন নির্দিষ্ট করতে পারবেন। প্রতি প্রদেশ থেকে প্রাদেশিক সরকারের কাছে লভ্যাংশ জমা হবে এবং সরকার ফান্ড সংকোচন করবেন না।
(৫) জাতীয় ফাইন্যান্স কমিশনের সুপারিশ, একসঙ্গে এর গৃহীত পদক্ষেপ হিসেবে একটি ব্যাখ্যামূলক স্মারকলিপি দিয়ে, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের উপস্থাপিত হবে
১১৯। আন্তঃপ্রাদেশিক বানিজ্য– কোন প্রাদেশিক আইনসভা বা প্রাদেশিক সরকার শক্তির হস্তক্ষেপ থাকবে না।
(ক) কোন আইন পাস, বা কোনো নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ, নিষিদ্ধ বা প্রবেশ, অথবা, সকোন শ্রেণীর বা বর্ণনার পণ্য প্রদেশ রপ্তানি সীমাবদ্ধ করা হবে।
(খ) কর, উপ-কর আরোপিত হবে শিল্পজাত পণ্যের ক্ষেত্রে, সরঞ্জাম যা, প্রদেশ অনুযায়ি উৎপাদীত এবং অনুরূপ পণ্য যা শিল্পজাত অথবা প্রদেশের বাইরে পন্যের শিল্পোৎপাদন ও উৎপাদন ,স্থান অনুযায়ি পন্যের মেনুফেকচার ও উৎপাদন করলে।
তবে শর্ত থাকে যে, এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ি প্রাদেশিক আইনসভা কতৃক এমন কোনো আইন পাশ হবেনা যা যুক্তিসংগতভাবেই জনস্বাস্থ্যবিরোধী, জনশৃঙ্খলা বা নৈতিকতা বিরোধী ,যদি না তার সংবিধান অনুযায়ি বৈধতা থাকে। কিন্তু এই সংক্রান্ত বিল আইনসভা কতৃক পাশ হলেও যতক্ষণ না পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি আদেশ করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োগ হবেনা।
তৃতীয় অধ্যায়. -নিরীক্ষণ ও হিসাব
১২০) হিসাবাধ্যক্ষ এবং পাকিস্তানের নিরীক্ষণ জেনারেল, – (১) একজন হিসাবাধ্যক্ষ এবং পাকিস্তানের নিরীক্ষণ জেনারেল, যিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।.
(২) পদ ও চাকুরীর শর্তাবলী , হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেল পদের মেয়াদ সংসদের আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে, এবং তা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বিধি কার্যকর হবে।
১২১) হিসাবাধ্যক্ষ ও নিরীক্ষণ জেনারেলের অপসারন- (১) একজন ব্যক্তি যিনি হিসাবাধ্যক্ষ ও নিরীক্ষণ জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি পাকিস্তান সেবায় পুনরায় নিয়োগলাভের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না।.
(২) হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেল পদের ব্যাক্তিকে তার থেকে একটি হাইকোর্টের , অনুমতি ছাড়া তার পদের মেয়াদ অতিবাহিত হবার পূর্বে অপসারণ করা যাবে না।.
১২২) একজন হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেলের দায়িত্ব ও ক্ষমতা- কেন্দ্রিয় এবং রাজ্য সভার প্রদত্ত আইনানুযায়ি হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেলে তার দায়িত্ত, কর্তব্য ও ব্যায় সম্পাদন করবেন।
১২৩). সরকারি হিসাব ফর্ম-ফরম রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে, হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেলের ফর্ম জমা রাখা হবে,।
১২৪)হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেলের ফেডারেশন হিসাব সংক্রান্ত রিপোর্ট- হিসাবাধ্যক্ষ এবং নিরীক্ষণ জেনারেল কেন্দ্র সম্পর্কিয় সকল রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জাতীয় পরিষদে পেশ করবেন ।রাজ্য সম্বন্ধীয় হিসাব সমূহ প্রদেশের গভর্নরের নিকট পেশ করা হবে যিনি পরবর্তিতে কেন্দ্র পরিষদে এসব উত্থাপন করবেন।
চতুর্থ অধ্যায় – কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যকার প্রশাসনিক সম্পর্ক
১২৫. কেন্দ্র কর্তৃক প্রদেশগুলোর নিরাপত্তা- প্রতিটি প্রদেশকে বহিরাগত আগ্রাসন ও অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা থেকে রক্ষা করা এবং একাদশ অণুচ্ছেদের বিধানসমূহ তথা প্রত্যেক প্রদেশের সরকার সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে তা নিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব।
১২৬. বিশেষ ক্ষেত্রে প্রাদেশিক সরকারের প্রতি নির্দেশাবলী- (১) প্রত্যেক প্রদেশের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষের উপর নিয়োজিত থাকবে-
(ক) উক্ত প্রদেশে আরোপিত সংসদীয় আইন ও বিদ্যমান নিয়মকাননের চর্চা নিশ্চিত করা।
(খ) কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষের কাজে বাঁধা দেয়া কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ করা হতে বিরত থাকা।
(২) কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষ প্রদেশকে এ ধরণের নির্দেশাবলী দিতে ব্যাপ্ত থাকবে যেগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে (১) নম্বর ধারার জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে হবে। উক্ত কর্তৃপক্ষ একটি প্রদেশকে নিন্মোক্ত নির্দেশাবলী দেয়ার ক্ষেত্রেও ব্যাপ্ত থাকবে-
(ক) জাতীয় ও সামরিক ক্ষেত্রে তাৎপর্য বহন করে এরূপ যোগাযোগ মাধ্যম গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।
(খ) প্রদেশের অভ্যন্তরীণ রেলপথের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া।
(গ) প্রদেশের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থায় বা অর্থনৈতিক জীবনে কিংবা যেকোন অংশে ভয়াবহ বিপদ হতে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নিয়োজিত পদ্ধতিগুলো অনুশীলন করা।
(ঘ) যুগ্ম তালিকার ২য় অংশে তালিকাভুক্ত যেকোন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত সংসদের যেকোন আইন প্রদেশে বাস্তবায়ন করা এবং এ ধরণের নির্দেশাবলীর অনুমোদন করা।
(৩) একটি প্রদেশকে প্রদত্ত (২) ধারার (ক) ও (খ) উপধারার অন্তর্ভুক্ত যেকোন নির্দেশাবলী বহন করার ক্ষেত্রে, তাদের জন্য বিশেষ অর্পিত খরচপত্র যা প্রাদেশিক সরকার তার সাধারণ দায়িত্ব পালনে আরোপণ করত তা কেন্দ্রীয় সরকার প্রাদেশিক সরকারকে দিবে যেমনটি অনুমোদিত হবে যদি বিশেষ কোন নির্দেশনা না দেয়া থাকে। এক্ষেত্রে অনুমোদনের অনুপস্থিতিতে ১২৯ অণুচ্ছেদে উল্লেখিত পদ্ধতি অনুযায়ী নির্ধারন করা হবে।
১২৭. প্রদেশগুলোতে ক্ষমতা অর্পন- (১) সংবিধানের কোন প্রকার বিরোধিতা ব্যতীত, প্রাদেশিক সরকারের সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি শর্তসাপেক্ষে বা নিঃশর্তভাবে উক্ত সরকার, উহার যেকোন কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষ ব্যাপ্ত আছে এমন যেকোন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত কাজে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবে।
(২) সংসদের একটি আইন হবে, এটি সম্মানের সাথে এই ব্যাপারে সম্পরক রাখবে যে, প্রাদেশিক আইনপ্রণেতাদের প্রদেশ অথবা অফিসার অথবা তার কর্তৃপক্ষের জন্য আইন তৈরী করার, ক্ষমতা অর্পণ এবং দায়িত্ব পালন করার, অথবা ক্ষমতা অর্পণ এবং দায়িত্ব পালন করার অনুমোদন দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।
(৩) এই অনুচ্ছেদ দ্বারা প্রদেশ অথবা অফিসার অথবা তার যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষের কাছে এই ক্ষমতা এবং দায়িত্ব অর্পণ বা আরোপ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার চুক্তি অনুযায়ী প্রাদেশিক সরকার কে নির্দিষ্ট অংকে পরিশোধ করবে যা নির্ধারণ এবং নির্ধারণের নিয়মাবলী অনুচ্ছেদ ১২৯ এ বর্ণনা করা আছে। সেই সাথে এই ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য প্রাদেশিক সরকার কোনো অতিরিক্ত ব্যয় অর্পণ করতে পারবে না।
১২৮। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাজে জমি অধিগ্রহণঃ
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার যদি একটি প্রদেশে অবস্থিত কোনো জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, সেই উদ্দেশ্যে সংসদের আইন তৈরীর ক্ষমতা আছে। প্রাদেশিক সরকার কে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারে পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের খরচে জমি অধিগ্রহণ বা মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে যদি তা ওই প্রদেশের অন্তর্গত হয়। এই ক্ষেত্রে চুক্তি নির্ধারণ এবং নির্ধারণের নিয়মাবলী অনুচ্ছেদ ১২৯ এ বর্ণনা করা আছে।
১২৯। বিরোধ নিষ্পত্তিঃ
(১) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সাথে যে কোনো প্রাদেশিক সরকারের অথবা উভয় প্রাদেশিক সরকারের বিরোধ কিংবা দুই প্রাদেশিক সরকারের বিরোধ, আইন বা সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রীম কোর্টের এখতিয়ারে থাকবে না। এই বিরোধের সাথে সংশ্লিষ্ট যেকোনো সরকার এই বিরোধ পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির কাছে অর্পণ করবেন, যিনি এই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ট্রাইবুনাল নিয়োগ দেবেন।
(২) সংসদীয় আইনের বিধান অনুযায়ী, এইরকম ট্রাইবুনালের পদ্ধতি এবং নিয়মাবলী, সকল প্রকার খরচ এবং পারিশ্রমিক সুপ্রিম কোর্টের তৈরী নিয়মে নির্ধারিত হবে এবং তা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
(৩) ট্রাইবুনালের তৈরী রিপোর্ট প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে হবে যিনি ঠিক করবেন যেই উদ্দেশ্যে ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছে তা পূরণ হয়েছে কিনা, যদি তিনি মনে করেন যে উদ্দেশ্য পূরন হয়নি তাহলে তিনি ট্রাইবুনালের কাছে রিপোর্টটি পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাবেন। যখন রিপোর্টে সবকিছু ঠিকভাবে সুবিন্যস্ত থাকবে, প্রধান বিচারপতি তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন যিনি প্রতিবেদন কার্যকর করতে নির্দেশ দেবেন।
(৪) ইহা কোনো প্রদেশে এমনভাবে কার্যকর হবে যে এই অনুচ্ছেদের অধীনে থাকা কোনো বিষয়ে রাষ্ট্রপতির নির্দেশ এবং প্রাদেশিক আইনসভা কর্তৃক তৈরী কোনো আইন এই বিষয়ে সাংঘর্ষিক হলে সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে।
(৫) এই অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক যেকোনো নির্দেশ উভয় পক্ষের সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে ভিন্ন হতে পারে।
১৩০। আন্তঃ-প্রাদেশিক পরিষদঃ যদি কখনো প্রেসিডেন্টের কাছে এমন প্রতীয়মান হয় যে আন্তঃ-প্রাদেশিক পরিষদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনস্বার্থ রক্ষিত হবে তাহলে তাদের দ্বায়িত্ত্ব থাকবেঃ-
ক) তদন্ত এবং প্রদেশ, কেন্দ্র অথবা একটি বা উভয় প্রদেশ নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে সকলের একটি অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে; অথবা
খ) কোন বিষয়ের উপর সুপারিশ গঠন এবং উক্ত বিষয়ের উপর নীতিমালা ও তার প্রয়োগের সমন্বয় সাধনের জন্য বিশেষ প্রস্তাবনা;
প্রাদেশিক গভর্নরদের সম্মতিতে, রাষ্ট্রপতি একটি পরিষদ গঠন করতে পারেন এবং এর দ্বারা পরিচালিত সংস্থার দায়িত্বের প্রকৃত কার্যপ্রণালী নির্ধারণ করতে পারেন।
১৩১. সম্প্রচার-
(১) সংবিধানে যাই থাকুক না কেন, প্রাদেশিক সম্প্রচারের জন্য প্রাদেশিক সরকারের ট্রান্সমিটার তৈরি এবং ব্যবহার প্রয়োজনঃ
শর্তমতে যখন একজন প্রাদেশিক সরকার প্রদেশে ট্রান্সমিটার তৈরি এবং ব্যবহার করে, তখন এটি প্রদেশে ব্যবহৃত যেকোনো গ্রহণ যন্ত্রের ব্যবহারের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্ত ফি এর একটি অংশের ভাগীদার হবেন, যে অনুপাতে তারা একমত হয়েছেন অথবা চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন, যা অনুচ্ছেদ ১২৯ এর বর্ণনা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়েছে।
(২) অনুচ্ছেদে বর্ণিত পূর্বোল্লিখিত বিধানের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সংসদে সম্প্রচার সংক্রান্ত যেকোনো আইন অলঙ্ঘনীয় হবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই পরিবর্তন করা যাবে না, কেননা সংবিধান অনুসারে এই ক্ষমতা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ যাতে করে কেউ পাকিস্তান অথবা এর কোন অংশের শান্তি ভঙ্গ করতে না পারে।
১৩২। রেলপথ স্থানান্তরে প্রাদেশিক নিয়ন্ত্রণঃ
(১) প্রতিটি প্রদেশে প্রাদেশিক সরকার অথবা সংবিধান অনুযায়ী কত্রিপক্ষ রেলপথ স্থানান্তর এবং সকল চুক্তি, সংরক্ষণ ও স্থানান্তর সম্পর্কিত অন্যান্য ব্যাপারেও সংসদ আইন প্রণয়ন করতে পারে; এবং যতক্ষণ পর্যন্ত রেলপথে সেরকম আইন গঠন অথবা কার্যকর না হচ্ছে রেলওয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকবে, এবং অনুচ্ছেদ ১০৬ অনুযায়ী সংসদের ক্ষমতা রয়েছে এই সংক্রান্ত নীতিমালা গঠনের।
(২) এছাড়াও অনুচ্ছেদ ১৯৬ অনুসারে, প্রাদেশিক আইনসভার ধারা (১) এর অধীনে আইনের কোন বিধান কে প্রভাবিত করার কোন আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা নেই।
৭ম অংশ
সম্পত্তি চুক্তি এবং মামলা
১৩৩। বাজেয়াপ্ত বা অক্ষম বা মালিক বিহীন সম্পত্তি অধিগ্রহণঃ যেসকল সম্পত্তির কোন বৈধ মালিকানা নেই অথবা সংবিধান প্রণয়নের জন্য, অথবা সরকার দ্বারা বাজেয়াপ্ত বা অক্ষম অবস্থায় মালিক বিহীন অবস্থায় রয়েছে বৈধ মালিকানার অভাবে, যদি তা একটি প্রদেশে অবস্থিত সম্পত্তি হয় তবে সেসব সম্পত্তি প্রাদেশিক সরকারের হাতে ন্যস্ত, এবং অন্যভাবে বলতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত হবে।
শর্তমতে কোন সম্পত্তি যদি রাষ্ট্রের অধিন্যস্ত হয় তবে, তা যদি সে তারিখ পর্যন্ত ফেডারেল সরকার অথবা প্রাদেশিক সরকারের দখলে অথবা অধীনে থাকে, যা ফেডারেশন অথবা প্রদেশের উদ্দেশ্য অনুযায়ী করা হয়েছিল, তাহলে শর্তমতে তা ফেডারেল সরকার অথবা প্রাদেশিক সরকারের হাতে ন্যস্ত।
১৩৪। অর্জনকৃত ক্ষমতা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর ও চুক্তি সম্পাদনঃ
(১) ফেডারেশন এবং প্রতিটি প্রদেশের কার্যনির্বাহী পরিষদ তাদের নিজ নিজ প্রয়োজনে সম্পত্তি ক্রয় বা অধিগ্রহণ করতে পারে, এবং এই ধরণের সকল সম্পত্তি ফেডারেল সরকারের অধীনে অথবা ক্ষেত্র অনুসারে প্রাদেশিক সরকারের থাকবে।
(২) ফেডারেশন এবং প্রতিটি প্রদেশের কার্যনির্বাহী পরিষদ ফেডারেল সরকার বা প্রাদেশিক সরকারের নিকট ন্যস্ত সম্পত্তি প্রয়োজনে দান, বিক্রয়, বন্ধক অথবা চুক্তি অনুসারে অন্যান্য কাজে হস্তান্তর করতে পারবে।
(৩) পাকিস্তানের সমুদ্র সীমার অভ্যন্তরে অবস্থিত সকল ভূমি, খনিজ এবং অন্যান্য দ্রব্য কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকবে।
১৩৫। চুক্তিঃ
(১) রাষ্ট্রপতি অথবা প্রাদেশিক গভর্নর দ্বারা সকল রকম চুক্তি ক্ষেত্র অনুসারে তৈরি করা হয়েছে ফেডারেশন অথবা প্রাদেশিক পরিষদের প্রয়োগের জন্য এবং সবরকম সম্পদের চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি সে ব্যক্তি দ্বারা তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রপতি অথবা গভর্নরের পক্ষ থেকে কর্ম সম্পাদনের জন্য, যাকে ক্ষমতা অথবা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
২) রাষ্ট্রপতি অথবা গভর্নর কেউ ব্যক্তিগতভাবে প্রাদেশিক সংবিধান অনুসারে অথবা ফেডারেল প্রাদেশিক আইন অনুসারে গঠিত বা সম্পাদিত কোন প্রকার চুক্তি ও প্রতিশ্রুতির প্রতি দায়বদ্ধ নন। কিংবা কোন ব্যক্তি দ্বারা তাদের পক্ষ হতে গঠিত বা সম্পাদিত কোন প্রকার চুক্তি ও প্রতিশ্রুতির প্রতিও সেই ব্যক্তিরা ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন না।
শর্তমতে, এই ধারার কোন কিছুই কারও ব্যক্তি অধিকার খর্ব করবে না যদি সে কেন্দ্রীয় সরকার অথবা প্রাদেশিক সরকারের বিরুদ্ধে যথাযথ বিধিব্যবস্থা নিতে চায়।
১৩৬. মামলা এবং কার্যধারাঃ
কেন্দ্রীয় সরকার যদি কখনো অভিযুক্ত হয় অথবা কাউকে অভিযুক্ত করে তাহলে সেটা পাকিস্তানের নামে করবে আর প্রাদেশিক সরকার যদি কখনো অভিযুক্ত হয় অথবা কাউকে অভিযুক্ত করে তাহলে সেটা প্রদেশের নামেই হবে।
৮ম অংশ
নির্বাচন
১৩৭. নির্বাচন কমিশন ও আঞ্চলিক কমিশন গঠনঃ ১) একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে যাতে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকবেন, যিনি কমিশনের সভাপতি হবেন, এবং রাষ্ট্রপতি আরও কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার নির্ধারণ করবেন।
২। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য সকল নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্বাচিত হবেন।
৩। রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনবোধে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এই অংশের অধিনে বর্ণীত কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন করতে পারেন।
৪। এই ধারার অধীনে রাষ্ট্রপতির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি নিজস্ব বিচক্ষণতা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন।
১৩৮। নির্বাচন কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের কর্মের শর্তাবলীঃ
১। নির্বাচন কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের কর্মের শর্তাবলী নির্ধারিত হবে সংসদের আইন-দ্বারা, এবং তা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বিধি দ্বারা।
২। হাইকোর্টের একজন বিচারক যেরূপ পদ্ধতিতে অপসারিত হন তদ্রুপ প্রক্রিয়া ছাড়া প্রধান নির্বাচন কে তার কার্যালয় থেকে অপসারিত করা যাবে না, কিন্তু অন্য কোন নির্বাচন কমিশনার বা আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারকে তার কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতি তার বিচক্ষণতা অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার সঙ্গে পরামর্শক্রমে অপসারিত করতে পারবেন।
৩। নির্বাচন কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার পদের মেয়াদ পাঁচ বছর হইবে: তবে শর্ত থাকে যে, পঁয়ষট্টি বছর বয়সে পৌঁছে যাবার পর এই ধরনের কোন কমিশনার নিজ পদে বহাল থাকতে পারবেন না।
৪। তার মেয়াদ অতিবাহিত হলেঃ
ক। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও এক মেয়াদে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন, তবে কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের অন্য কোন সেবার জন্য নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না।
খ। অন্য কোনো নির্বাচন কমিশনার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন, তবে কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের অন্য কোন সেবার জন্য নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না; এবং
গ। কোনো আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার আরও এক মেয়াদে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন অথবা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন, তবে কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের অন্য কোন সেবার জন্য নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না।
১৩৯।নির্বাচন কমিশন কে সহায়তাঃ
১। কেন্দ্র এবং প্রদেশের সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে নির্বাচন কমিশন কে এর কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে সহায়তা করা এবং এই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনবোধে উক্ত নির্দেশ দিতে পারেন।
২। যখন নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করবে, তখন কেন্দ্র সরকার এবং প্রত্যেক প্রদেশের সরকারের কর্তব্য হবে কমিশন কে এর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী সরবরাহ করা এবং এই উদ্দেশ্যে কি কর্মীর প্রয়োজন এই বিষয়ে যদি কোনো মতানৈক্য ঘটে তবে রাষ্ট্রপতির কর্তৃক তার বিচক্ষণতা অনুসারে তা নির্ধারিত হবে।
কর্মী বাছাই সংক্রান্ত মতানৈক্য সমাধান হতে পারে রাষ্ট্রপতি সুবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্তের দ্বারা।
১৪০। নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য- নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব হবেঃ
(ক) গন পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রনয়ন করা এবং সেই তালিকা বাৎসরিক ভিত্তিতে হালনাগাদ করা; এবং
(খ) গন পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন ও পরিচালনা করা
১৪১। নির্বাচন ও উপ নির্বাচনের সময়ঃ গন পরিষদ অথবা প্রাদেশিক পরিষদ যখন ভেঙ্গে যাবে, তখনি নতুন পরিষদ গঠনের জন্য সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে পরিষদ ভেঙ্গে যাবার ছয় মাসের মধ্যে; এবং যখনি আকস্মিক শুন্য আসন তৈরি হবে যে কোন পরিষদে, একটি উপ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই শুন্য আসন পূরন করতে হবে আসন শুন্য হবার তিন মাসের মধ্যেঃ
উল্লেখ থাকে যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়া জনিত কারনে যদি মনে করেন, তবে তিন মাস পরেও উপ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারেন তবে তা আসন শুন্য হবার দিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে
১৪২। সীমানা নির্ধারন কমিশন (১) রাষ্ট্রপতি হাইকোর্টের একজন বর্তমান বা সাবেক বিচারপতি কে চেয়ারম্যান মনোনীত করে এবং আরো দুই জন সদস্য নিয়ে, যারা গন পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নন, সময়ে সময়ে সীমানা নির্ধারন কমিশন গঠন করতে পারেন,
(২) সীমানা নির্ধারন কমিশনের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্য, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন রাষ্ট্রপতি বেধে দেয়া সময়ের জন্য, রাষ্ট্রপতির ইচ্ছানুযায়ী তারা কাজ করবেন, এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত সুযোগ-সুবিধা ও ভাতাদির জন্য বিবেচ্য হবেন
(৩) পূর্ববর্তী দুটো ধারার কার্যাবলী রাষ্ট্রপতি তার বিচক্ষনতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পন্ন করবেন
(৪) গন পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারনের ক্ষমতা থাকবে সীমানা নির্ধারন কমিশনের এবং উক্ত আসনগুলোর তালিকা জন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানাতে হবে।
(৫) সীমানা নির্ধারন কমিশনের কোন কাজ বা তার আওতাধীন কোন কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন তোলা যাবে না
১৪৩। নির্বাচকদের যোগ্যতা- (১) একজন ব্যক্তি কোন নির্বাচনী আসনের নির্বাচক হতে পারবেন যদি-
(ক) তিনি পাকিস্তানের নাগরিক হন;
(খ) ভোটার তালিকা প্রনয়ন বা হালনাগাদের বছরের জানুয়ারীর এক তারিখে তার বয়স পচিশ বছরের কম না হয়;
(গ) তিনি উপযুক্ত আদালত কর্তৃক মানসিকভাবে অসুস্থ হিসাবে ঘোষিত না হন;
(ঘ) তিনি নির্বাচনী আসনের, ভোটার তালিকা প্রনয়ন বা হালনাগাদের বছরের জানুয়ারীর এক তারিখের অন্তত ছয় মাস বসবাস রত বাসিন্দা হন;
(ঙ) সংবিধান বা সংসদ কর্তৃক তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত না হন
(২) চতুর্থ তফসিল মোতাবেক “বাসিন্দা” বলতে যা বোঝায় এই ধারার জন্য তাই বলবত থাকবে, সংসদ আইনের মাধ্যমে যতদিন না অন্য কোন সংজ্ঞা না দেয়
১৪৪। নির্বাচনী আইন- সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী, সংসদ আইন প্রনয়ন করতে পারে নিম্নোক্ত বিষয়ের জন্য-
(ক) নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারন, ভোটার তালিকা প্রনয়ন, ভোটার তালিকা প্রনয়ন বিধিমালা নির্ধারন
(খ) নির্বাচন পরিচালনা ও নির্বাচনী বিধি; নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত, সংশয় ও অসঙ্গতি
(গ) নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি ও অন্যান্য অনিয়ম; এবং
(ঘ) গন পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদ যথাযথ ভাবে গঠন বিষয়ক অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়;
কিন্তু উক্ত ধরনের আইন নিচের অংশে উল্লেখিত নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতাকে খর্ব করতে পারবে না।
১৪৫। নির্বাচক মন্ডলীর প্রধান- প্রাদেশিক পরিষদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে, সংসদ প্রয়োজনীয় আইন তৈরি করবে যে, গন পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন যৌথ নির্বাচক মন্ডলী নাকি আলাদা নির্বাচক মন্ডলী দ্বারা অনুষ্ঠিত হবে এবং এমন আইনে আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদী সম্পর্কে নির্দেশনা দেবে।
১৪৬। নির্বাচনী আদালত- যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ব্যতীত গন পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের কোন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না এবং তা সংসদীয় আইন অনু্যায়ী হবে
১৪৭। বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা- এই অংশের কোন কিছুই বিশেষ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না; তবে রাষ্ট্রপতি গন পরিষদ ও পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের বিশেষ ক্ষেত্রের প্রতিনিধিত্বের জন্য আদেশ জারির মাধ্যমে বিধান প্রণয়ন করতে পারেন যদি তিনি তা সঠিক মনে করেন।
খন্ড ৯
বিচার বিভাগ
অধ্যায়১- সুপ্রীম কোর্ট
১৪৮। সুপ্রীম কোর্ট স্থাপন ও গঠন- একজন প্রধান বিচারপতি সমন্বয়ে পাকিস্তানের সুপ্রীম কোর্ট গঠিত হবে, যিনি পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হিসাবে পরিচিত হবেন এবং যেখানে ছয় জনের বেশি বিচারপতি থাকবেন না
তবে শর্ত থাকে যে, সংসদ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য বিচারকের সংখ্যা ৬ এর অধিক উন্নীত করতে পারবে।
১৪৯। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ –
১। কোন ব্যক্তি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হবার যোগ্যতা লাভ করবেন না যদি না তিনি পাকিস্থানের নাগরিক হন এবং
২। ক। ন্যুনতম পাঁচ বছর কোন উচ্চ আদালতে অথবা পর্যায়ক্রমে দুই বা ততোধিক উচ্চ উদালতে বিচারক হিসেবে নিযুক্ত থাকেন অথবা
খ। ন্যুনতম পনের বছর কোন উচ্চ আদালতে অথবা পর্যায়ক্রমে দুই বা ততোধিক উচ্চ উদালতে আইনজিবী অথবা রাষ্ট্রপক্ষের উকিল হিসেবে নিযুক্ত থাকেন।
৩। দফা ২ এর উপদফা (ক) এ উল্লেখিত সময়কালের নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পাকিস্থানের সংবিধান দিবসের পূর্বে কোন উচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে ঐ ব্যক্তির অতিবাহিত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত হবে।
৪। দফা ২ এর উপদফা (খ) এ উল্লেখিত সময়কাল নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পাকিস্থানের সংবিধান দিবসের পূর্বে বা ব্রিটিশ ভারতের কোন উচ্চ আদালতে আইনজিবী অথবা উকিল হিসেবে ঐ ব্যক্তির অতিবাহিত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত হবে।
১৫০। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের অবসরের বয়স এবং শারিরীক অক্ষমতা –
১। ধারা ১৫১ এবং ধারা ১৭৩ অনুসারে, সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারক ৬৫ বছর বয়স এ উপনীত না হওয়া পর্যন্ত স্বপদে বহাল থাকবেন।
২। কোন ব্যক্তি যিনি সর্বোচ্চ আদালতের একজন স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি পাকিস্থানের কোন আদালত অথবা কর্তৃপক্ষর সম্মুখে ওকালতি করতে পারবেন না।
১৫১। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের অভিশংসন –
১। জাতীয় পরিষদের অধিকাংশ সদস্য তথা পরিষদে উপস্থিত ভোটদানকারী সদস্যদের সর্বনিম্ন দুই তৃতীয়াংশ ভোটারের সমর্থনে প্রমাণিত অসদাচারণ অথবা শারিরীক বা মানসিক অথর্বতার দরুণ কোন বিচারকের অভিশংসনের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপিত হবার পর, রাষ্ট্রপতির জারিকৃত আদেশ ব্যতীত সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারক অভিশংসিত হবেন নাঃ
তবে শর্ত থাকে যে, জাতীয় পরিষদে সুপারিশটি উত্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে না যদি না পরিষদে সুপারিশটির ব্যাপারে ভোট গ্রহনের প্রজ্ঞপ্তি পরিষদের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ সদস্য কর্তৃক সমর্থিত হয়,
২। সংসদ আইনের মাধ্যমে কোন বিচারকের অসদাচারণ অথবা শারিরীক বা মানসিক অথর্বতার তদন্ত এবং প্রমাণ এর প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিতে পারে, এবং এমন আইন প্রণীত হবার পূর্ব পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি আদেশ জারির মাধ্যমে উল্লেখিত প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিতে পারেন।
১৫২। প্রধান বিচারপতির সাময়িক নিয়োগ – যদি পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতির পদ খালি হয় অথবা প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিতি অথবা অন্যকোন কারণে তার কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তবে ঐ ব্যক্তি যিনি শুন্য পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি তার কার্যালয়ে প্রবেশের অথবা পুনরায় দায়িত্ব গ্রহনের আগ পর্যন্ত, পরিপ্রেক্ষিত যাই হোক না কেন, ঐ দায়িত্বসমূহ সর্বোচ্চ আদালতের অন্য একজন বিচারক কর্তৃক পালিত হবে যাকে রাষ্ট্রপতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করবেন।
১৫৩। ভারপ্রান্ত অবর বিচারকগণের সাময়িক নিয়োগ – যখন সর্বোচ্চ আদালতের কোন বিচারক সাময়িকভাবে পাকিস্থানের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হবেন অথবা এমন কোন বিচারক মঞ্জুরকৃত ছুটি অথবা অন্যকোন কারণে দায়িত্ব পালন করতে না পারবেন তখন রাষ্ট্রপতি উচ্চাদালতের একজন বিচারক নিযুক্ত করতে পারবেন যিনি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবার এবং সাময়ীকভাবে দায়িত্ব পালনের যোগ্যতাসম্পন্ন এবং এই মর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তার নিয়োগ প্রত্যাহার অবধি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে সেই গণ্য হবেন ।
১৫৪। জরুরী ভিত্তিতে বিচারকগণের বিশেষ নিয়োগ – যদি সর্বোচ্চ আদালতে কোন কার্যক্রম আয়োজন করা অথবা অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারকের উপস্থিতি না ঘটে তবে পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতি লিখিতভাবে উচ্চ আদালতের একজন বিচারককে সর্বোচ্চ আদালতের অধিবেশনে অংশগ্রহনের জন্য জরুরী ভিত্তিতে বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় মেয়াদের জন্য তলব করতে পারেন, এবং এমন অধিবেশিনে জরুরী ভিত্তিতে বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারকের অনুরূপ ক্ষমতা এবং এখতিয়ার প্রাপ্ত হবেন;
তবে শর্ত থাকে যে, যথাযথ উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির সাথে মত বিনিময় ব্যতীত পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতি এমন কোন বিচারক মনোনীত করবেন ন।
১৫৫। সর্বোচ্চ আদালত এর আসন – সর্বোচ্চ আদালত এর অবস্থান হবে করাচীতে অথবা মাঝে মাঝে অন্য এমন কোন স্থানে যা পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির অনুমতিক্রমে নির্ধারণ করবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি বছর অন্তত দুইবার ঢাকায় আদালত স্থপিত হবে, এমন সময়ব্যাপী যা পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতি উপযুক্ত মনে করেন।
১৫৬। সর্বোচ্চ আদালতের মৌলিক অধিক্ষেত্র – ১। সর্বোচ্চ আদালতের সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে নিম্নোক্ত যেকোন বিরোধের ক্ষেত্রে অন্য যেকোন আদালত বর্জনের মৌলিক এখতিয়ার থাকবেঃ
ক। রাষ্ট্র সরকার এবং এক বা উভয় প্রদেশের সরকার; অথবা
খ। রাষ্ট্র সরকার এবং কোন একটি প্রদেশের সরকার এক পক্ষে এবং অপর প্রদেশের সরকার অন্যপক্ষে; অথবা
গ। যদি প্রদেশসমূহের সরকারের মধ্যে বিরোধের বিষয় হয়
i. আইনগত অথবা বা বস্তুগত যে কোন প্রসঙ্গ যার উপর আইনি অধিকারের অস্তিত্ব অথবা ব্যপ্তি নির্ভর করে
ii. সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যেকোন প্রসঙ্গ
২। সর্বোচ্চ আদালত এর মূল অধিক্ষেত্র প্রয়োগের সময় চূড়ান্ত নির্ধারণী রায় ব্যতীত অন্য কোন ধরনের রায় প্রদান করবে না।
১৫৭। সংবিধানের ব্যাখা সংক্রান্ত বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত এর আপীলাত এখতিয়ারঃ
১। দেওয়ানি, ফৌজদারি বা অন্য কার্যধারা হতে প্রদত্ত রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশে যদি উচ্চ আদালত প্রত্যায়িত করে যে, মামলাটির সাথে সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত তবে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল দাখিল হবে
২। যেখানে উচ্চ আদালত এমন প্রত্যয়ন দিতে অস্বীকৃতি জানাবে সেখানে সর্বোচ্চ আদালত যদি নিশ্চিত হয় যে মামলাটির সাথে সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত তবে সর্বোচ্চ আদালত এমন রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়পত্র/আদেশ দিতে পারে।
৩। যখন এমন প্রত্যয়ন অথবা আদেশ/ছাড়পত্র দেওয়া হয়, তখন যেকোন পক্ষ সর্বোচ্চ আদালত এ, পূর্বে উল্লেখিত ধরনের প্রশ্নে ভুল রায় দেয়া হয়েছে এই পটভূমিতে এবং সর্বোচ্চ আদালত এর আদেশ অনুযায়ী অন্য যেকোন পটভূমিতে আপীল দাখিল করতে পারবে।
১৫৮। দেওয়ানি বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত এর আপীলাত এখতিয়ারঃ
১। উচ্চ আদালতের দেওয়ানি কার্যধারায় প্রদত্ত রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশ থেকে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল দাখিল হবেঃ
ক। যদি আদলতে বিবাদমান বিষয়বস্তুর পরিমাণ অথবা মুল্য প্রথম ক্ষেত্রে এবং আপীলের ক্ষেত্রেও ১৫ হাজার রুপির কম না হয় অথবা এমন অন্য কোন মুল্য যা এই মর্মে সংসদীয় আইন দাড়া নির্ধারিত হয়; অথবা
খ। যদি রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশ এ বিবাদমান বিষয়বস্তুর সম্ভাব্য পরিমাণ বা মুল্যের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে সন্দেহ বা প্রশ্ন প্রকাশ করা হয়;
গ। যদি উচ্চ আদালত মামালাটিকে সর্বোচ্চ আদালতে আপীলের উপযুক্ত ঘোষণা করে।
২। এই ধারায় যাই থাকুক না কেন, উচ্চ আদালতের একক বেঞ্চ কর্তৃক প্রদত্ত রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশ থেকে সর্বোচ্চ আদালতে কোন আপীল দাখিল হবে না যদি না সংসদীয় আইনে অন্য কিছুর উল্লেখ থাকে।
১৫৯। ফৌজদারি বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত এর আপীলাত এখতিয়ারঃ উচ্চ আদালতের ফৌজদারি কার্যধারায় প্রদত্ত রায়, ফরমান অথবা চূড়ান্ত আদেশ থেকে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল দাখিল হবে, যদি উচ্চ আদালতঃ
ক। কোন আপীলে দোষীসাব্যস্ত কোন ব্যক্তিকে বেকসুর খালাসের রায় পরিবর্তন করে এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন তাকে দন্ডিত করে; অথবা,
খ। যদি নিম্নতর কোন আদালতের কোন মামলার বিচার কার্যক্রম প্রত্যাহার করে এবং এর রায়ে দোষীসাব্যস্ত কোন ব্যক্তিকে পূর্ব উল্লেখিত দন্ডে দণ্ডিত করে, অথবা আদালত
গ। যদি মামালাটিকে সর্বোচ্চ আদালতে আপীলের উপযুক্ত ঘোষণা করে; অথবা
ঘ। উচ্চ আদালত অবমাননার জন্য কোন ব্যক্তিকে কোন দণ্ডদান করে।
তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে এই ধারার অনুচ্ছেদ (গ) এর অধীনে কোন প্রত্যয়ন পত্র জারি করা হয়, সেক্ষেত্রে আপীল দাখিল করা হবে এই উদ্দেশ্যে তফসিল ৩ এর অনুচ্ছেদ ৩ এর অধীনে প্রণীত বিধি এবং এই উদ্দেশ্যে উচ্চ আদালত কর্তৃক প্রণীত অন্যান্য বিধিমালা যা পূর্ব উল্লেখিত বিধিমালার পরিপন্থী নয়, তার সাপেক্ষে।
১৬০। আদালতের বিশেষ আদেশে সর্বোচ্চ আদালতে আপিলঃ এই অংশে যা ই থাকুক না কেন, যে কোন রায়, ফরমান, আদেশ অথবা পাকিস্থানের সামরিক আইনের দ্বারা বা এর অধীনে গঠিত কোন সামরিক আদালত অথবা ট্রাইবুনাল ব্যতীত যে কোন আদালত বা ট্রাইবুনাল এর দন্ড কে আপীলের জন্য সর্বোচ্চ আদালত বিশেষ আদেশ দিতে পারে ।
১৬১। সর্বোচ্চ আদালতের রায় বা আদেশ পর্যালোচনাঃ সংসদের যেকোন আইনের বিধান এবং সর্বোচ্চ আদালত প্রণীত যেকোন প্রদত্ত রায় অথবা জারিকৃত আদেশ পর্যালোচনা করার ক্ষমতা সর্বোচ্চ আদালতের থাকবে।
১৬২। সর্বোচ্চ আদালতের উপদেষ্টা এখতিয়ারঃ যদি কখনো রাষ্ট্রপতির মনে হয় যে, আইনগত কোন দ্বন্দ উত্থাপিত হয়েছে বা হতে পারে যার ধরন এবং জনগুরুত্ব এমন যে, এর উপর সর্বোচ্চ আদালতের মতামত গ্রহণ সঙ্গত, সেখানে তিনি সেই দ্বন্দটি সেই আদালতে বিবেচনার জন্য সুপারিশ করতে পারেন এবং আদালত এই মর্মে শুনানীর পর যেমন উপযুক্ত মনে করে তেমন অভিমত রাষ্ট্রপতির কাছে ব্যাক্ত করতে পারে।
১৬৩। সর্বোচ্চ আদালতের ফরমান এবং আদেশ বলবতকরণ এবং সর্বোচ্চ আদালতের ক্ষমতাবলীঃ
১। সর্বোচ্চ আদালতের ঘোষিত আইন পাকিস্থানের যেকোন আদালতে শিরধার্য হবে
২। পাকিস্থানের সকল নির্বাহী এবং বিচারিক কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালত কে সহায়তার জন্য কাজ করবে
৩। সর্বোচ্চ আদালতের ক্ষমতা থাকবে এমন নির্দেশনা, আদেশ, ফরমান অথবা পরওয়ানা জারির যা এর সামনে বিচারাধীন কে কোন ব্যাপার অথবা বিষয়বস্তুর সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজন হতে পারে, এবং এমন নির্দেশনা, আদেশ, ফরমান অথবা পরওয়ানা সমগ্র পাকিস্থানব্যপী বলবত হবে এবং এমনভাবে কার্যকর হবে যেন তা যথাযথ প্রদেশের উচ্চ আদালত কর্তৃক জারিকৃত হয়েছে।
৪। যদি এমন দ্বিধা সৃষ্টি হয় যে, উচ্চ আদালত সর্বোচ্চ আদালতের কোন নির্দেশনা, আদেশ, ফরমান অথবা পরওয়ানা কার্যকর করবে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
৫। কোন ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করা অথবা কোন প্রমাণ হাজির করার জন্য আদেশ জারি করার ক্ষমতা সর্বোচ্চ আদালতের থাকবে।
৬। সংবিধান দিবসের পূর্বে কোন হাজিরা অথবা আর্জির উপর মহামান্য রাণীর কোন আদেশ এমনভাবে বলবত হবে যেন তা সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক জারিকৃত হয়েছে।
১৬৪। ব্যাখাঃ এই অংশে, সংবিধানের ব্যাখা সংক্রান্ত আইনি যেকোন তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন বলতে ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫ অথবা ভারতীয় স্বাধীনতা অধিনিয়ম, ১৯৪৭ এর ব্যাখা সংক্রান্ত আইনি যেকোন তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন কে বোঝাবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এমন আইন যা দ্বারা এসব আইনে কোন সংশোধনী অথবা সংযোজন করা হয়েছে এবং এমন আদেশ সমূহ যা এসব আইনের অধীনে গৃহীত হয়েছে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: উচ্চ আদালত
১৬৫. উচ্চ আদালত সংক্রান্ত সংবিধান -১)প্রত্যেক প্রদেশে একটি করে উচ্চ আদালত থাকবে
২) পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের প্রদেশগুলোতে সংবিধান দিবসের পূর্বে উচ্চ আদালত হিসেবে কার্যরত আদালতসমূহ, সংবিধান অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্থান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের উচ্চ আদালত হিসেবে কার্যকরী বলে গণ্য হবে
৩) উচ্চ আদালত একজন প্রধান বিচারক এবং রাষ্ট্রপতি নির্ধারিত প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য বিচারক সমন্বয়ে গড়ে উঠবে |
১৬৬. উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ: ১) উচ্চ আদালতের প্রত্যেক বিচারক কে রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি, যদি প্রধান বিচারপতির নিয়োগ না হয়, তবে প্রদেশের উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির সাথে ও সংশ্লিষ্ট প্রদেশের শাসকের সাথে আলোচনা করে নিয়োগ দিবেন।
২) ১৬৯ ও ১৭৩ নং শর্তানুযায়ী, উচ্চ আদালতের প্রত্যেক বিচারক ষাট বছর বয়স পর্যন্ত দায়িত্বে নিযুক্ত থাকবেন
৩) যিনি উচ্চ আদালতে স্থায়ী বিচারকের পদে আসীন থাকবেন তিনি কখনো সেই আদালত বা তার অধিভুক্ত কোন আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করে অধিকার আদায় করতে পারবেন না |
১৬৭. উচ্চ আদালতের বিচারকগণের যোগ্যতা: ১) পাকিস্তানের নাগরিক না হলে কেউ উচ্চ আদালতের বিচারক পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন না এবং
ক) কমপক্ষে দশ বছর উচ্চ আদালত বা অন্য আদালতে ওকালতির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বা
খ)পাকিস্তানের বেসামরিক চাকুরে হিসেবে কমপক্ষে দশ বছর কর্মরত এবং কমপক্ষে তিন বছর জেলা শাসকের ভূমিকা পালন করতে হবে বা
গ) পাকিস্তানে কমপক্ষে দশ বছর কোন বিচারালয়ে কার্য অভিজ্ঞতা থাকতে হবে :
শর্তানুযায়ী কোন ব্যক্তি উচ্চ আদালতে স্থায়ী প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাবেন না যদি না
-তিনি তখন বা কোন বিচারিক দপ্তরে প্রথমবার নিযুক্ত হবার সময় উচ্চ আদালতের ততকালীন আইনজীবী অথবা উকিল হিসেবে নিযুক্ত থেকে থাকেন
-কমপক্ষে তিন বছর পাকিস্তানের উচ্চ আদালতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন
আরো প্রযোজ্য যে, সংবিধান দিবসের পূর্বে উচ্চ আদালতে নিযুক্ত কোন বিচারক তার দায়িত্ব অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র এই কারণে অযোগ্য ঘোষিত হবেন না যে তিনি পাকিস্থানের নাগরিক নন।
২) মেয়াদ গণনা করার জন্য যে বিষয়গুলো বিবেচিত হবে –
ক) বিচারালয়ে আইনজীবীর দায়িত্ব পালনের সময়কাল
খ) ব্রিটিশ ভারতে উচ্চ আদালতে আইনজীবীর দায়িত্ব পালনের সময়কাল
৩) মেয়াদ গণনার জন্য ব্রিটিশ ভারতে বিচারালয়ের যে কোন সময়কাল ধরে দায়িত্ব পালন করলে তাও গণ্য হবে|
১৬৮. উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারক এবং অন্যান্য বিচারকগণের ক্ষণস্থায়ী নিয়োগ-
১) যদি উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারকের কার্যালয় শূণ্য থাকে অথবা যদি প্রধান বিচারক অনুপস্থিতি বা অন্য কোন কারণে তাঁর কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করতে অসমর্থ হন,তবে অন্য কোন ব্যক্তিকে শূণ্যস্থানে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত বা প্রধান বিচারক দায়িত্বে পুনরায় যোগদান না করা পর্যন্ত, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, এহেন পরিস্থিতি সমাধানে রাষ্ট্রপতি উচ্চ আদালতের অন্য কোন বিচারককে ক্ষণস্থায়ীভাবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে নিযুক্ত করতে পারেন|
২) যদি উচ্চ আদালতের অন্য কোন বিচারকের কার্যালয় শূণ্য থাকে বা যদি কোন বিচারক ক্ষণস্থায়ী প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালনের জন্য অনুপস্থিত থাকেন বা অন্য কোন কারণে তাঁর কার্যালয়ের দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হন রাষ্ট্রপতি তখন উচ্চ আদালতে বিচারকের দায়িত্ব গ্রহনের যোগ্য কোন ব্যাক্তিকে ঐ আদালতের বিচারকের দায়িত্বে নিয়োগ দিয়ে ঐ দায়িত্ব পালনের ভার দিবেন এবং রাষ্ট্রপতি যদি না ঐ পদ নাকচ ঘোষণা করেন তবে তিনি ঐ আদালতে বিচারক বলে গণ্য হবেন যতদিন না অন্য কোন ব্যক্তি স্থায়ী নিয়োগ পান বা স্থায়ী বিচারক দায়িত্বে পুনরায় যোগদান করেন।
১৬৯. উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণ-
সরবোচ্চ আদালত যদি রাষ্ট্রপতি বরাবর সুপারিশ করে যে, কোন বিচারক কে এইসব কারণে অপসারণ করা উচিত তবে অসদাচরণ বা শারীরিক বা মানসিক অপারগতার কারণে উচ্চ আদালতের কোন বিচারক রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি না করা পর্যন্ত অপসারিত হবেন না।
১৭০. উচ্চ আদালতের পরোয়ানা জারি সংক্রান্ত ক্ষমতা, ইত্যাদি : ২২ নং অনুচ্ছেদে যাই থাকুক না কেন, উচ্চ আদালত এর আইনগত এলাকাতে খণ্ড ২ এ প্রদত্ত অধিকার বজায় রাখার জন্য বা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যে যথাযথ ক্ষেত্রে সরকারসহ, যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা, আদেশ বা পরোয়ানা জারি করার এক্তিয়ার রাখবে, যার মধ্যে হিবিয়াস করপাস (বন্দী প্রদর্শন), নিম্ন আদালতের প্রতি উচ্চ আদালতের হুকুমনামা, নিষেধাজ্ঞা, ক্যুয়ে ওয়রেন্ট্যে (অধিকারনামা উপস্থাপন) এবং নিম্ন আদালতের রায় পর্যালোচনা (অন্তত চারজন বিচারকের সুপারিশের ভিত্তিতে) জাতীয় পরওয়ানা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
১৭১। অধস্তন আদালত থেকে নিজেই মামলা স্থানান্তরে উচ্চ আদালতের ক্ষমতাঃ উচ্চ আদালত যদি এই মর্মে উপনীত হয় যে কোন ক্ষেত্রে একটি অধস্তন আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত, যা সমাধান মামলার নিস্পত্তির জন্য জরুরী, তবে উচ্চ আদালত ঐ আদালত থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করতে পারে এবং আরও যা করতে পারে তা নিম্নরূপঃ
ক। স্বয়ং মামলার নিস্পত্তি করে দিতে পারে অথবা;
খ। উল্লেখিত আইনী প্রশ্নের সমাধান নির্ধারণ করতে পারে এবং মামলাটি যে আদালত থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে সেই আদালতে এমন প্রশ্নের সমাধানে প্রদত্ত রায়ের অনুলিপি সহ ফেরত পাঠাতে পারে এবং উল্লেখিত আদালতটি তা প্রাপ্তির পর, উক্ত রায়ের সাথে সঙ্গতি রেখে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য মোকদ্দমা চালিয়ে যাবে।
১৭২। হাইকোর্টের বিচারক বদলিঃ
১। রাষ্ট্রপতি উচ্চ আদালতের যে কোন বিচারককে এক উচ্চ আদালত থেকে থেকে অন্য উচ্চ আদালতে বদলি করতে পারবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে ঐ বিচারকের সম্মতি না নিয়ে এবং তিনি যেই উচ্চ আদালতে বিচারক হিসাবে আছেন সেই আদালতের প্রধান বিচারপতি এবং পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির সাথে আলোচনা না করে তাকে বদলি করতে পারবেন না।
২। যখন একজন বিচারককে এভাবে বদলি করা হবে তখন তিনি যে আদালতে বদলি হয়েছেন সেই আদালতে উচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সাময় তার বেতনের অতিরিক্ত এমন সম্পূরক ভাতার স্বত্বপ্রাপ্ত হবেন যা রাষ্ট্রপতি আদেশ জারির মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন।
তৃতীয় অধ্যায়ঃ সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের সাধারণ নিয়মাবলী
১৭৩। সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারকদের পদত্যাগঃ সুপ্রিমকোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারকগন নিজ হস্তে লিখিত পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠিয়ে পদত্যাগ করতে পারবেন।
১৭৪। শাসক হিসাবে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট এর বিচারকদের অযোগ্যতাঃ হাইকোর্ট বা সুপ্রিমকোর্ট এর বর্তমান বা সাবেক বিচারকদের কোন নির্দিষ্ট এলাকা বা প্রদেশের শাসক হিসাবে নিয়োগ দেয়া যাবেনা।
১৭৫। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট এর বিচারকদের পারিশ্রমিক সহ বিবিধঃ
(১) হাইকোর্ট বা সুপ্রিমকোর্ট এর কোন বিচারকের পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুবিধাদি তার কর্মকালে এমন ভাবে পরিবর্তন করা যাবে না যেন তিনি অসুবিধার সম্মুক্ষীন হন।
(২) অনুচ্ছেদ ১৫১ অনুযায়ী হাইকোর্ট বা সুপ্রিমকোর্ট এর বিচারকদের আচরণাবলী জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদে আলোচনা করা যাবেনা।
১৭৬। সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট হবে নথি সংরক্ষণকারীঃ সুপ্রিমকোর্ট ও সকল হাইকোর্ট হবে নথি সংরক্ষণকারী কোর্ট এবং তাদের এ ধরনের কোর্টের সকল ধরনের ক্ষমতা থাকবে যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে নিজ কৃত যে কোন তদন্ত বা প্রদেয় সাজার ব্যাপারে আদেশ প্রদানের ক্ষমতা।
১৭৭। তৃতীয় তফসিলের প্রয়োগঃ সংসদে অন্য কোন আইন পাশ না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় তফসিলের বিধানাবলী হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট বিষয়াবলীতে প্রযোজ্য হবে ।
১৭৮। বিশেষ এলাকা থেকে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের এখতিয়ার বর্জনঃ সংবিধান এ যাই থাকুক না কেন, যদি না সংসদ কর্তৃক আইন করা না হয় তবে বিশেষ এলাকা হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট এর এখতিয়ার এর বাইরে থাকবে।
পর্ব-৯
অধ্যায় -১ঃ সেবাসমূহ
১৭৯। পাকিস্তানের সেবায় নিয়োজিত ব্যাক্তিদের চাকরীর নিয়মাবলীঃ
১। কোন ব্যাক্তি যদি পাকিস্তানের নাগরিক না হয় তবে সে পাকিস্তানের সেবার জন্য কোন পদে বহাল হওয়ার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেঃ শর্ত থাকে যে,পাকিস্তানের নাগরিক নয় এমন ব্যাক্তিকে রাষ্ট্রপতি বা কোন প্রদেশের শাসক অস্থায়ী হিসাবে নিয়োগ দিতে পারে। আরোও শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাক্তি যদি পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের পূর্বে ব্রিটিশরাজের সেবক হিসেবে পাকিস্তান মূলকের সেবায় নিয়োজিত থেকে থাকে তবে সে নাগরিক না হওয়া সত্ত্বে পাকিস্তানের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেনা।
২। সংবিধানে স্পষ্টভাবে অন্যথা উল্লেখ না থাকলে, পাকিস্তানের সেবায় নিয়োগ ও শর্তাবলী সংবিধানের সুস্পষ্ট যথোপযুক্ত বিধান ও আইন অনুযায়ী হতে হবে।
১৮০। সরকারী চাকুরীতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের কার্যকালের মেয়াদঃ সংবিধানে যদি স্পষ্টভাবে অন্যথা উল্লেখ না থাকেঃ
(অ) কোন ব্যক্তি যদি প্রতিরক্ষা সার্ভিসের একজন সদস্য, অথবা ফেডারেশনের সিভিল সার্ভিসে, বা সর্ব পাকিস্তানি সার্ভিস বা কোনো প্রতিরক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত পদে, বা ফেডারেশন এর বিষয়াবলির সাথে সংশ্লিষ্ট বেসামরিক পদে বহাল থাকে, তবে স্বীয় পদে রাষ্ট্রপতির ইচ্ছানুযায়ী বহাল থাকিবেন।
(আ) কোন ব্যাক্তি যদি কোন প্রদেশের সিভিল সার্ভিসে থাকেন বা সিভিল সার্ভিসের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন পদে বহাল থাকেন বা উল্লেখিত (অ) প্যাড়ায় বর্ণিত কোন পদে নিযুক্ত থাকেন তবে সরকারের ইচ্ছানুযায়ী বহাল থাকনেন।
১৮১। অপসারণ, নিয়মশৃংখলাজনিত বিষয়াবলী, বিবিধঃ
১। রাষ্ট্রের সিভিল সার্ভিসের সদস্য বা কোন প্রদেশের সিভিল সার্ভিসের সদস্য বা রাষ্ট্র সংলশ্লিষ্ট কোন প্রদেশের সিভিল সার্ভিসের সদস্য সর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের সদস্য বা প্রদেশের সিভিল সার্ভিসের পদ অধিষ্ঠিত ব্যাক্তিকে, এমন কোন কর্তৃপক্ষ যা তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অধস্তন সার্ভিস থেকে পদচ্যুত বা অপসারিত বা পদে খর্বিত করতে পারবে না দিবে সে যার অধীনে নিয়োজিত।
২। উপরোল্লিখিত ব্যাক্তিবর্গকে সার্ভিস থেকে খারিজ বা অপসারণ বা পদ থেকে নিম্নপদে নামিয়ে দেয়া হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সে যথোপযুক্ত যুক্তি দিতে পারবে তার বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপের বিপরীতে।
এই ধারা আরোপিত হবে না –
(ক) যেখানে অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা যায় এমন কার্যপরিচালনার কারণে কোনো ব্যক্তিকে চাকুরী হতে বরখাস্ত অথবা অপসারিত অথবা পদমর্যাদা কমানো হয়; অথবা
(খ) যেখানে কোনো ব্যক্তিকে চাকুরী হতে বরখাস্ত অথবা অপসারণ অথবা পদমর্যাদা কমানোর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কতৃপক্ষ কোনো কারণে যদি সন্তুষ্ট হয় যে,ঐ ব্যক্তির কারণ দর্শানোর সু্যোগ দেওয়া জরুরী নয় ; অথবা
(গ) যেখানে রাষ্ট্রপতি অথবা গভর্নর কোনো পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট হয়, পাকিস্তান অথবা তার যেকোনো অংশের নিরাপত্তার ব্যাপার জড়িত থাকার কারণে ঐ ব্যাক্তিকে এ ধরণের সু্যোগ দেওয়াই সমীচিন নয়।
১৮২. নিয়োগ এবং চাকুরীর শর্তাবলীঃ
(১) সংবিধানের সুস্পষ্ট অথবা যথাযথ আইনসভার ক্ষমতা বাদে ,পাকিস্তাবের বেসামরিক চাকুরী এবং বেসামরিক চাকুরী পদে নিয়োগ দেওয়া হবে-
(ক) ফেডারেশন এর চাকুরী এবং ফেডারেশনের সাথে সম্পর্কিত চাকুরী পদের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক অথবা তার নির্দেশিত ব্যক্তি কর্তৃক;
(খ) প্রদেশের চাকুরী অথবা প্রদেশের সাথে সম্পর্কিত চাকুরী পদের ক্ষেত্রে গভর্নর অথবা তার নির্দেশিত ব্যাক্তি কর্তৃক;
(২) সংবিধানের সুস্পষ্ট অথবা যথাযথ আইনসভার ক্ষমতা বাদে, এই অনুচ্ছেদের আইনের মাধ্যমে বেসামরিক পদে চাকুরীরত ব্যাক্তিগণের চাকুরীর শর্ত প্রযোজ্য হবে-
(ক) ফেডারেশনের সাথে সম্পর্কিত চাকুরীরত ব্যক্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অথবা রাষ্ট্রপ্রতি কর্তৃক আইন তৈরির অনুমোদিত ব্যক্তি কর্তৃক তৈরি আইনের মাধ্যমে;
(খ) প্রদেশের সাথে সম্পর্কিত চাকুরীরত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রদেশের গভর্নর কর্তৃক তৈরি অথবা গভর্নর কর্তৃক আইন তৈরির অনুমোদিত ব্যক্তি কর্তৃক তৈরি আইনের মাধ্যমে;
বলা থাকে যে, সাময়িকভাবে চাকুরীতে নিয়োগকৃত ব্যাক্তি যাদের একমাস অথবা তারও কম সময়ের নির্দেশে চাকুরিচুত্য করা যায় তাদের চাকুরীর শর্ত তৈরি করা প্রয়োজনীয় না এবং আইন দ্বারা যদি কোন শ্রেণী নিয়ন্ত্রণ উপযোগী না হয় এবং এমন ব্যাপার আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনে হলে এখানকার কোন ধারাই ঐ শ্রেণীর চাকুরীর শর্তের জন্য প্রয়োজনীয় না।
আরো বলা হল যে, এই অনুচ্ছেদের উপর অর্পিত কোনো নতুন আইন অনুচ্ছেদ (৩) এর আইনের সাথে কোনোপ্রকার অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি করবে না।
(৩) এই অনুচ্ছেদ (২) এর অধীনে প্রণীত করা হবে এবং নিশ্চিত করবে-
(ক) এই অনুচ্ছেদ এর অধীনস্ত কোনো ব্যক্তির চাকুরীর মেয়াদ এবং শর্তাবলী তার প্রতিকূলে পরিবর্তন করা হবে না; এবং
(খ) প্রত্যেক ব্যক্তিই কোনো আদেশের বিরুদ্ধে একবার আপিলের সুযোগ পাবে যে আদেশ অনুযায়ী-
(১) তাকে শাস্তি অথবা আনুষ্ঠিকভাবে নিন্দা জানানো হয়; অথবা
(২) তার প্রতিকূলে কোনো নিয়মের পরিবর্তন অথবা সংশোধন করা হলে যা তার চাকুরীতে প্রভাব ফেলে; অথবা
(৩) বার্ধক্য বয়সসীমার পৌছানোর পূর্বেই তার চাকুরী শেষ করে দেও্য়া হলেঃ
যখন কোনো আদেশ রাষ্ট্রপতি অথবা গভর্নরের আদেশ হলে,আক্রান্ত ব্যাক্তির আপিলের কোনো অধিকার থাকবে না,তবে এই আদেশের পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবে।
১৮৩. সমগ্র-পাকিস্তান চাকুরিসমূহ-
(১) সংবিধানে “সমগ্র-পাকিস্তান চাকুরীসমূহ” এর অর্থ হল ফেডারেশন এবং প্রদেশের মধ্যকার সাধারণ চাকুরিসমূহ যেগুলো সাংবিধানিক দিবসের আগ পর্যন্ত সমগ্র পাকিস্তান চাকুরি ছিল।
(২) ’সমগ্র পাকিস্তান চাকুরী’ এর বিপরীতে আইন করার জন্যে পার্লামেন্টের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকবে।
(৩) অনুচ্ছেদ ১৮২ এবং ১৮৮ ‘সমগ্র পাকিস্তান চাকুরীসমূহ’ এ কার্যকর হবে যেভাবে সেগুলো ‘ফেডারেশন এর চাকুরীসমূহ’ তে কার্যকর হয়।
(৪) ‘সমগ্র পাকিস্তান চাকুরীসমূহ’ এর কোনো সদস্য কোনো প্রদেশে প্রদেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয়ে সেবা দানের জন্য প্রেরণ করা হবে না অথবা ঐ প্রদেশে স্থানান্তর করা হবে না,যদি না প্রদেশের গভর্নর এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের আদেশ হয়।
(৫) যতক্ষণ ‘সমগ্র পাকিস্তান চাকুরীসমূহ’ এর কোন সদস্য প্রদেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত কোনো চাকুরীতে কর্তব্যরত থাকে এবং ঐ প্রদেশর মধ্যে তার পদোন্নতি এবং স্থানান্তরে তার বিরুদ্ধে কোনো কিছু খুঁজে পাওয়া যায়, ততক্ষণ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ঐ প্রদেশের গভর্নর এর আদেশের মাধ্যমে।
অধ্যায় ২- সরকারি চাকুরী কমিশন
১৮৪ সরকারি চাকুরী কমিশন-
(১) এই অনুচ্ছেদের অধীনে, ফেডারেশন জন্য একটি সরকারী চাকুরী কমিশন থাকবে এবং প্রত্যেক প্রদেশের জন্য একটি করে প্রাদেশিক সরকারী চাকুরী কমিশন থাকবে।
(২) ফেডারেশন এর জন্য সরকারী চাকুরী কমিশন প্রদেশের গভর্নরের অনুরোধ সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে প্রাদেশিক সরকারী চাকুরী কমিশনের সকল কাজ বা কিছু অংশ চালনা করতে পারবে।
(৩) যেখানে কোনো বিষয়ে ফেডারেল সরকারী চাকুরী কমিশন একটি প্রাদেশিক সরকারী চাকুরী কমিশন পরিচালনা করে, কোন পূর্বাপর সম্বন্ধ বাদে সংবিধান বা ঐ প্রাদেশিক সরকারী চাকুরি কমিশনের রেফারেন্স ফেডারেল সরকারী কমিশনের রেফারেন্স অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা হবে।
১৮৫। সরকারী কর্ম কমিশনসমূহের গঠনঃ- কেন্দ্রীয় কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে রাস্ট্রপতি এবং প্রাদেশিক কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী গভর্ণর নির্ধারন করবেন-
(ক) কমিশনের সদস্য সংখ্যা ও তাদের চাকুরীর শর্ত এবং
খ) কমিশনের কর্মচারীর সংখ্যা ও তাদের চাকুরীর শর্ত।
১৮৬। সরকারী কর্ম কমিশনসমূহের সদস্যদের নিয়োগ, ইত্যাদি-
(১) সরকারী কর্ম কমিশনসমূহের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, কেন্দ্রীয় কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং প্রাদেশিক কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রদেশের গভর্নর কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন।
(২) কর্ম কমিশনের কমপক্ষে অর্ধেক সদস্যদের পাকিস্তানের সরকারী চাকুরীতে নূন্যতম ১৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা- এই অনুচ্ছেদের জন্য পাকিস্তানের সরকারী চাকুরী বলতে পাকিস্তান সরকারের অধীনে এবং স্বাধীনতার পূর্বে বৃটিশ-ভারত সরকারের অধীনে চাকুরীকে গণ্য করা যাবে।
(৩) কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যদের কার্যকাল হবে পাঁচ বছর।
(৪) কর্ম কমিশনের কোন সদস্য কেন্দ্রীয় কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং প্রাদেশিক কর্ম কমিশনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রদেশের গর্ভনর বরাবর স্বহস্তে লিখিত পত্রের মারফৎ পদত্যাগ করতে পারবেন।
(৫) পদ ত্যাদের পর-
(ক) কেন্দ্রীয় কর্ম কমিশনের সভাপতি পাকিস্তান সরকারের অধীনে পূনরায় কোন চাকুরীতে নিয়োগের অযোগ্য হবেন।
খ) প্রাদেশিক কর্ম কমিশনের সভাপতি কেন্দ্রীয় কর্ম কমিশনের সভাপতি অথবা সদস্য হিসাবে, কিংবা অন্য কোন প্রাদেশিক কর্ম কমিশনের সভাপতি হিসাবে নিয়োগের যোগ্য হবেন, তবে পাকিস্তান সরকারের অন্য কোন চাকুরীতে নিয়োগের অযোগ্য হবেন।
গ) সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ছাড়া অন্য যে কোন সদস্য সভাপতি হিসাবে অথবা সদস্য হিসাবে তিনি যে সরকারী কর্ম কমিশনে ইতঃপূর্বে সদস্য ছিলেন সেটি ছাড়া অন্য যে কোন কর্ম কমিশনের সদস্য অথবা সভাপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন, তবে পাকিস্তান সরকারের অন্য কোন পদে নিয়োগের অযোগ্য হবেন।
তবে সরকারী কর্ম কমিশনের কোন সদস্য তার মেয়াদের বাকী সময়ের জন্য ঐ কমিশনের সভাপতি হিসাবে নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।
১৮৭। সরকারী কর্ম কমিশনসমূহের সদস্যদের প্রত্যাহারঃ- (১) সরকারী কর্ম কমিশনের কোন সদস্যকে অসদাচার অথবা শারিরীক বা মানসিক অক্ষমতা ছাড়া অন্য কোন কারনে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা যাবে না।
(২) উচ্চ আদালতে বিচার হবার যোগ্য এমন কোন কারণ ছাড়া রাস্ট্রীয় সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্যকে প্রত্যাহার করা যাবে না।
(৩) প্রাদেশিক সরকারী কর্ম কমিশনের কোন সদস্যকে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা যাবে না যদি না ঐ প্রদেশের গভর্নর উপ-অনুচ্ছেদ (১) এ বর্ণিত অবস্থার প্ররিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালতের সম্মতিতে আদেশ প্রদান করেন।
১৮৮। সরকারী কর্ম কমিশনের কার্য পরিধি ঃ- (১)রাস্ট্রীয় সরকারী কর্ম কমিশন এবং প্রাদেশিক সরকারী কর্ম কমিশন এর কার্য পরিধি হবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র বা প্রদেশে (যেটি প্রযোজ্য) এর সরকারী চাকুরীতে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ করা।
(২) রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রীয় সরকারী পদসমূহের জন্য এবং গভর্ণর সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক সরকারী পদসমূহের জন্য, সর্বতোভাবে অথবা বিশেষ ধরনের ক্ষেত্রসমূহের জন্য কিংবা একটি বিশেষ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্ম কমিশনের পরামর্শ ব্যতীত নিয়োগের নিয়ম তৈরী করে বিধি জারী করতে পারবেন; তবে এ ধরনের বিধি জারীর ক্ষেত্রে যথাপোযুক্ত সরকারী কর্ম কমিশনের সাথে যে সমস্ত বিষয়ে সাথে পরামর্শ করতে হবে তা হলো-
ক) সরকারী চাকুরী ও পদসমূহে নিয়োগের পদ্ধতি এবং চাকুরী ও পদসমূহে আবেদনের যোগ্যতা সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়সমূহ;
খ) চাকুরী ও পদসমূহে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং এক চাকুরী থেকে অন্য চাকুরীতে বদলী এবং এ সকল নিয়োগ, পদোন্নতি এবং বদলীর নীতিমালা;
গ) কেন্দ্রীয় অথবা প্রাদেশিক সরকারী কর্মকর্তার সকল শৃঙ্খলতা জনিত কারণ যেমন বাধ্যতামূলক অবসর হোকনা সেটা শৃঙ্খলতা ভঙ্গের দ্বায়ে অথবা অন্য কারণ এবং তৎসম্পর্কিত পিটিশন, তথ্য সংগ্রহ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ;
ঘ) কেন্দ্রীয় কিংবা প্রদেশিক সরকারী পদে কর্মরত কিংবা কর্মরত ছিলেন এমন কোন ব্যক্তি বা তার পক্ষে কেউ যদি দাবী করেন যে, সরকারী দায়িত্ব পালন করার কারনে তিনি কোন মামলা মোকাবেলা করতে গিয়ে যে অর্থ ব্যয় করেছেন তা কেন্দ্রীয় কোষাগার কিংবা প্রাদেশিক কোষাগার (যেটি প্রযোজ্য) থেকে প্রদান করতে হবে।
ঙ) কোন বিশেষ বা অতিরিক্ত অবসর ভাতা প্রদান স্থগিত করতে অথবা কোন সাধারন অবসর ভাতার পরিমান হ্রাস করার প্রস্তাব;
চ) রাস্ট্রীয় বা প্রদেশিীক সরকারে কর্মরত অবস্থায় আহত হবার কারণে অবসর ভাতা বা অন্য কোন ভাতা দাবী অথবা এ ধরনের দাবীর পরিমানের ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন সৃষ্টি হলে;
এবং এ ধরনের যে কোন বিষয় সরকারী কর্ম কমিশনের নিকট পাঠানো হলে এবং রাষ্ট্রপতি বা প্রাদেশিক গভর্ণর (যেটি প্রযোজ্য) যে কোন বিষয় সরকারী কর্ম কমিশনের নিকট পাঠানো হলে, উপযুক্ত পরামর্শ প্রদান করা সরকারী কর্ম কমিশনের কর্তব্য।
(৩) যেখানে সংবিধান বা অন্য কোন আইনের অধীন, পাকিস্তান এ চাকুরিতে নিয়োগলাভের ক্ষেত্রে ব্যক্তির চাকুরীর পদ ও শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়ম রয়েছে, কিন্তু সরকার বা প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়; অনুরূপ বিধি উপযুক্ত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাথে পরামর্শক্রমে এবং সংবিধান বা উক্ত আইনের কোন যথাযথ বিধান সাপেক্ষে প্রয়োগ করা যেতে পারে, দফা (২) একইরকম ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
১৮৯। সরকারী কর্ম কমিশনের কার্যাবলী বাড়ানোর ক্ষমতা –
সংসদ প্রণীত একটি আইন কেন্দ্রীয় সরকারী কর্ম কমিশনকে অতিরিক্ত কার্যাবলী পালনের জন্য প্রদান করা যেতে পারে এবং প্রাদেশিক আইনসভা প্রণীত একটি আইন প্রাদেশিক সরকারী কর্ম কমিশনকে অতিরিক্ত কার্যাবলী পালনের জন্য প্রদান করা যেতে পারে।
১৯০। সরকারী কর্ম কমিশনের প্রতিবেদন –
(১) এটা কেন্দ্রীয় সরকারী কর্ম কমিশনের দায়িত্ব যে কমিশন দ্বারা সম্পন্ন কার্যক্রম এর উপর বার্ষিক একটি প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করবে এবং রাষ্ট্রপতি এই প্রতিবেদন এর একটি অনুলিপি জাতীয় পরিষদের সামনে পেশ করবেন এবং এটা প্রাদেশিক সরকারী কর্ম কমিশনের দায়িত্ব যে কমিশন দ্বারা সম্পন্ন কার্যক্রম এর উপর বার্ষিক একটি প্রতিবেদন গভর্নরের নিকট পেশ করবে এবং গভর্নর এই প্রতিবেদন এর একটি অনুলিপি প্রাদেশিক পরিষদের সামনে পেশ করবেন।
(২) প্রতিবেদনে এর সাথে একটি স্মারকলিপি প্রকাশ করা হবে-
(ক) কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি এমন যদি কোন ব্যাপার থেকে থাকে এবং এর কারণ;
(খ) কমিশনের সাথে পরামর্শ করা উচিত ছিল, কিন্তু পরামর্শ করা হয় নি এমন যদি কোন বিষয় থেকে থাকে এবং এর কারণ।
একাদশ অংশ
জরুরি বিধান
১৯১। যুদ্ধ , অভ্যন্তরীণ গোলযোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা ঘোষনা-
যদি প্রেসিডেন্ট মনে করেন যে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবনে একটি গুরুতর অবস্থা বিদ্যমান, বা কোন ক্ষেত্রে, যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ দ্বারা হুমকির সম্মুখীন,অথবা অভ্যন্তরীণ গোলযোগ নিয়ন্ত্রণ করা একটি প্রাদেশিক সরকার এর ক্ষমতা বহির্ভূত, তিনি এই অনুচ্ছেদ এ একটি ঘোষণা হিসাবে উল্লেখ করা জরুরী একটি ফরমান জারি করতে পারেন।
(২) ফরমান বলবৎ থাকলে সংবিধানে যা কিছুই থাকুক না –
(ক) কোন প্রদেশ বা এর কোন অংশ, কেন্দ্রীয় বা এই তালিকায় বর্ণিত নেই এমন কোন বিষয় এর ক্ষেত্রে সংসদ এর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে;
(খ) কেন্দ্রীয় সরকার এর নির্বাহী কর্তৃপক্ষ একটি প্রদেশে নির্দেশনা প্রদান করবে, যা প্রদেশের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ রীতি হিসেবে প্রয়োগ হবে; এবং
গ) আদেশ দ্বারা রাষ্ট্রপতি স্বয়ং বা রাষ্ট্রপতির পক্ষে একটি প্রদেশের গভর্নর দ্বারা, প্রদেশের , সকল বা আংশিক সরকারি কার্যাবলী এবং সব বা যেকোন অর্পিত ক্ষমতা গ্রহন করতে পারেন অথবা প্রাদেশিক আইনসভা ব্যতীত যেকেউ বা প্রদেশের কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রয়োগযোগ্য, এবং ফরমান কার্যকর করার জন্য বিধান পুরো বা আংশিকভাবে স্থগিত করা সহ এমন প্রাসঙ্গিক এবং আনুষঙ্গিক বিধান রাষ্ট্রপতির পেশ করা প্রয়োজনীয় বা কাম্য।
প্রদেশের যে কেউ অথবা কর্তৃপক্ষ সংক্রান্ত সংবিধানের যেকোনো বিধান এর কার্যপ্রনালীঃ
উপ-দফা (গ) যা কিছুই থাক তবে শর্ত থাকে উচ্চ আদালত কে অর্পিত বা কায়েমী কোন ক্ষমতা, বা উচ্চ আদালত সংক্রান্ত সংবিধানের কোনো বিধান এর প্রয়োগ সামগ্রিকভাবে বা আংশিকভাবে স্থগিত প্রক্রিয়া রাষ্ট্রপতির স্বয়ং আদেশ দ্বারা অনুমোদন করবে , বা প্রদেশের গভর্নর তার পক্ষ থেকে অনুমোদন করবে।
(৩) সংসদে একটি প্রদেশ এর জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা, আইন প্রণয়ন ও দায়িত্ব আরোপ করার ক্ষমতা সম্পর্কিত যেকোনো ব্যাপার বা ফেডারেশন, ফেডারেশন এর কর্মকর্তা ও কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষমতা প্রদান ও দায়িত্ব আরোপ অনুমোদন সম্পর্কিত যেকোনো ব্যাপার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
(৪) এই ধারার কোন কিছুই সংবিধানের আওতায় একটি প্রাদেশিক আইনসভার কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করতে পারবে না, কিন্তু একটি প্রাদেশিক আইন এর কোন বিধান একটি কেন্দ্রীয় আইন এর কোন বিধান পরিপন্থী হলে, এই ধারায় সংসদের ক্ষমতা অধীনে কেন্দ্রীয় আইন আগে বা প্রাদেশিক আইন পরে প্রাধান্য পাবে এবং প্রাদেশিক আইন অসংগতি পরিহার করবে, কিন্তু যেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইন কার্যকর আছে, শুধুমাত্র ততখানি বাতিল হবে।
(৫) সংসদ কর্তৃক প্রণীত একটি আইন যা সংসদে এর জন্য নয় এবং অসঙ্গতিপূর্ণ কিন্তু একটি জারিকৃত ফরমানকে কার্যকরী করে তুলতে, ফরমান জারি করার ছয় মাসের সময়সীমা পার হবার পর এর অকার্যকারিতা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে এবং উক্ত সময়সীমা শেষ হবার আগে যে কাজ গুলো সম্পন্ন হয়েছে বা যেগুলো শেষ হয়নি সেগুলো গুটিয়ে ফেলতে হবে।
(৬) রাষ্ট্রপতি যাতে এটা কার্যকারী করতে পারেন সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষদ তলব করে জাতীয় পরিষদে ঘোষণা উপস্থাপিত হইবে এবং যদি পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়, তাহলে প্রত্যাহার করা না পর্যন্ত এটি বহাল থাকবে, অথবা যদি অনুমোদন বাতিল হয় তাহলে অনুমোদন বাতিল তারিখ থেকে এর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে ।
(৭) যদি রাষ্ট্রপতি মনে করেন যে পাকিস্তান বা কোনো ক্ষেত্রে নিরাপত্তায় কোনো ধরনের আগ্রাসন হবার ঝুকি আছে তাহলে বাস্তবে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হবার আগেই ফরমান জারী করা যেতে পারে।
১৯২। জরুরি অবস্থা চলাকালীন সময় মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিত করতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাঃ (১) যখন অনুচ্ছেদ ১৯১ এর অধীন জারীকৃত একটি ফরমান বলবৎ থাকবে, প্রেসিডেন্ট আদেশ ও ঘোষণা দিতে পারেন যে, এই অনুক্রমে উল্লিখিত অধ্যায় ২ দ্বারা অর্পিত অধিকার বলবৎকরণের জন্য আদেশ অনুযায়ী কোন আদালতের কার্যক্রম এর অধিকার এবং নির্দিষ্টভাবে অধিকার বলবৎকরণের জন্য কোন আদালতের কার্যধারায় বিচারাধীন সকল বিষয় , ফরমান বলবৎ থাকাকালীন সময় স্থগিত থাকবে।
(২)যখন অপারেশনে অনুচ্ছেদ ১৯১ এর মোতাবেক ঘোষণা জারি আছে ,অনুচ্ছেদ ৫০ এর ধারা (১) এর অনুবিধি অনুসারে প্রেসিডেন্ট সকল ক্ষমতা বলে অপারেশন স্থগিত করতে পারে।
(৩)এই অনুচ্ছেদ মাধ্যমে দেওয়া সকল আদেশ দ্রুততর সময়ের মধ্যে ন্যাশানাল এসেম্বলির কাছে পেশ করতে হবে।
১৯৩.প্রদেশে সাংবিধানিক কার্যকলাপের ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেশন এর ক্ষমতা দখলের ঘোষণা-(১)যদি প্রেসিডেন্ট প্রদেশের গভর্নর ধারা এইরকম পরিস্থিতির খবর লাভ করে যে সেখানে আর প্রাদেশিক সরকার সংবিধান অনুসারে প্রদেশে টিকে থাকতে পারছে না তবে এই ঘোষণা কার্যকর হবে।
(ক)নিজ কতৃক অথবা প্রেসিডেন্ট এর পক্ষ হতে প্রাদেশিক গভর্নর,পুরোপুরি অথবা প্রাদেশিক সরকারের যেকোনো অংশ এবং প্রাদেশিক আইনসভা ব্যাতিত, প্রদেশের কতৃপক্ষ অথবা যেকেউ দ্বারা বলবত সম্পূর্ণ অথবা এর উপর নিহিত যেকোনো ক্ষমতা দখল করবে।
(খ)ঘোষণা করা যাইতেছে যে পার্লামেন্ট কর্তৃপক্ষ এর অধীনে প্রাদেশিক আইনসভার ক্ষমতা প্র্য়োগ করা যাবে ।
(গ)যেকারো সাথে অথবা প্রদেশের কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংবিধানের যেকোনো বিধান সম্পূর্ন স্থগিত অথবা কিছু অংশ কার্যকর সহ প্রেসিডেণ্ট এর জরুরী অথবা আকাঙ্খিত অনুষঙ্গিক এবং অনুবর্তী যেকোনো বিধান, ঘোষণার বিষয়ে প্রভাব ফেললে ঃ
এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই প্রসিডেন্টকে তার নিজের অথবা তার হয়ে প্রদেশের গভর্নরকে প্রদেশে কায়মরত অথবা হাইকোর্ট দ্বারা বলবত অথবা হাইকোর্ট সম্পর্কিত প্রদেশে সংবিধানের কোনো কার্যকলাপ পুরোপুরি অথবা কিছু অংশ স্থগিত করার ক্ষমতা প্রদান করবে না।
(২) এই অনুচ্ছেদের (পূর্বের ঘোষণার কোনো বদল না করে) অধীনে একটি ঘোষণা ন্যাশানাল এসেম্বলিতে পেশ করা হবে এবং দুই মাস মেয়াদের মধ্যে স্থগিত করা হবে যদি না দুই মাসের আগে ন্যাশানাল এসেম্বলি কর্তৃক কোনো সমাধান অনুমোদন করা হয় এবং সমাধান চারমাসেরর বেশী দীর্ঘস্থায়ী হবে না ,কিন্তু কোনো ঘোষণা ছয় মাসের বেশী ক্ষমতাবলে স্থগিত করা যাবে না।
যদি এমন কোনো ঘোষণা (পূর্বের ঘোষণার কোনো বদল না করে) ঐ সময়ে জারি করা হয় যখন ন্যাশানাল এসেম্বলি ভাঙ্গে অথবা ন্যাশনাল এসেম্বলির ভাঙ্গনের দুই মাসের মধ্যে এই দফায় আরোপিত ঘোষণা ন্যাশানাল এসেম্বলি পুনর্ঘটনের প্রথম মিটিং এর ত্রিশ দিনে মধ্যে কার্যকর স্থগিত হবে যদি না ত্রিশ দিন মেয়াদ উর্ত্তীনের পুর্বে যদি এসেম্বলি কর্তৃক এই ঘোষণা অনুমোদনের কোনো সমাধান দেওয়া হয়।
(৩)যেখানে অনুচ্ছেদের অধীনে একটী ঘোষণা জারি করা হয় যে ,প্রাদেশিক আইনসভার ক্ষমতা চালু রাখা অথবা পার্লামেন্টের কর্তৃপক্ষ দ্বারা উপযুক্ত হবে –
(ক)পার্লামেন্টের উপর প্রেসিডেন্টকে প্রাদেশিক আইনসভায় আইন প্রণয়নের ক্ষমতা অর্পণ করা;
(খ) পার্লামেন্টের উপর অথবা প্রসেডিন্টের উপর যখন তিনি উপধারা (ক) এর ক্ষমতাবলে ,আইনপ্রণয়নের অর্পিত ক্ষমতা অথবা দায়িত্ব আরপের অথবা ফেডারেশন অথবা অফিসার এবং কতৃপক্ষ উপর ক্ষমতা আরোপ এবং দায়িত্ব বর্তানো অনুমোদন করে।
(গ)প্রেসিডেন্টের উপর, যখন ন্যশানাল এসেম্বলি প্রাদেশিক কনসলিডেটেড ফান্ড থেকে ব্যয় অনুমোদন করার জন্য উপস্থিত থাকে না, এই ব্যয় সংবিধান দ্বারা ফান্ডের উপুর বরাদ্দ হোক বা না হোক,পার্লামেন্ট কতৃক ব্যয় অনুমোদন মুলতুবী রাখার।
(ঘ)ন্যাশানাল এসেম্বলির উপর ,উপধারা (গ) অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট কতৃক ব্যয় মুলতুবীর অনুমোদন এর সমাধান করার।
(৪)পার্লামেন্ট অথবা প্রেসিডেন্ট কতৃক প্রাদেশিক আইনসভার ক্ষমতাবলে যেকোনো আইন চালু রাখা যেটি পার্লামেন্ট বা প্রেসিডেন্ট করবে না বরং এই অনুচ্ছেদের জারিকৃত ঘোষণার কারণে পালনে উপযুক্ত হবে,অযোগ্য হয়ার আগ পর্যন্ত , সময় উর্ত্তীনের আগ পর্যন্ত যেকোনো সিদ্বান্ত গ্রহণ ও বর্জন বাদে, ছয় মাস মেয়াদর্ত্তীনের সময়সীমার মধ্যে অনুচ্ছেদের অধীনে ঘোষণা কার্যকরে স্থগিত করার প্রভাব ফেলবে।
১৯৪.অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার উপর ঘোষণা –(১) যদি প্রেসিডেন্ট এইধরণের পরিস্থিতি উত্থানের উপলব্ধি লাভ করেন যে যেখানে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অথবা আমানত কিংবা যেকোন অংশ হুমকি্র সম্মুখীন ,তিনি প্রদেশের গভর্নরদের একীভূত করে অথবা প্রদেশের গভর্নরদের সাথে নিয়ে এই অবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে এই ঘোষণার অধীনে বিবৃতি প্রদান করবে এবং যখন এই ঘোষণা কার্যকর থাকে ,ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কতৃপক্ষ যেকোনো প্রদেশে দিকনির্দেশনা প্রদান করে লক্ষ্য রাখবে যেন অর্থনৈতিক যথযথতা নির্দেশনা অনু্যায়ী বজায় থাকে এবং এই ধরণের অন্যান্য নির্দেশনা প্রেসিডিন্ট কতৃক অর্থনৈতিক স্থতিশীলতা অথবা পাকিস্তানের আমানত অথবা যেকোনো অংশের জন্য আবশ্যক বিবেচনায় প্রদান করা হবে।
(২)পরুন্ত একটি প্রদেশের ব্যাপারে সম্পর্কযুক্ত যেকেনো শ্রেণির সেবাদানকারী মানুষ অথবা প্রদেশের প্রয়োজনীয় সকল বেতন এবং বরাদ্দের পরিমাণ কমানো সংবিধানের কোনো কিছু কোনো নির্দেশনার অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
(৩)যখন এই অনুচ্ছেদের অধীনে কোনো ঘোষণা কার্যকর থাকে,প্রেসিডেন্ট ফেডারেশনের ব্যাপারে সম্পর্কযুক্ত যেকেনো শ্রেণির সেবাদানকারী মানুষ অথবা প্রয়োজনীয় সকল বেতন এবং বরাদ্দের পরিমাণ কমানো নির্দেশনা জারি করতে পারে এবং এতে সুপ্রীম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিরাও অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
(৪)অনুচ্ছেদ ১৯৩ এর ধারা (২) এর বিধান কার্যকর হবে এই অনুচ্ছেদের অধীনে জারিকৃত ঘোষণার অধীনে যেভাবে সেগুলো ঐ অনুচ্ছেদের জারিকৃত ঘোষণার অধীনে কার্যকর হয়।
১৯৫.ঘোষণার প্রত্যাহার ,অন্যান্য – (১)এই অংশে জারিকৃত একটি ঘোষণা পরবর্তী ঘোষণা দ্বারা বদলানো অথবা প্রত্যাহার করা হতে পারে।
(২)এই অংশের অধীনে জারিকৃত কোনো ঘোষণা অথবা আদেশ আদালতে কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না।
১৯৬) জানমালের ক্ষতিপূরণে আইন তৈরিতে সংসদ ঃ
যে কোন ব্যক্তি যিনি রাষ্ট্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারী চাকুরীজীবী অথবা অন্য যে কোন ব্যক্তির , ক্ষতিপূরনের লক্ষে কোন আইন তৈরি করা হলে, সংবিধানের কোনকিছুই তা প্রতিরোধ করতে পারবে না । পাকিস্তানের যে কোন অঞ্চল যেখানে সামরিক শাসন জোড়পূর্বক রয়েছে অথবা বৈধভাবে জারি করা হয়েছে অথবা শাস্তি সরূপ আরোপ করা হয়েছে অথবা অপরাধের জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে অথবা অন্য কোন আইনের কারনে ঐসব এলাকা সামরিক শাসনে রয়েছে , সেখানেও জনগনের ভরণপোষণ ও পূনর্বাসনের জন্য যে কোন আইন করা যেতে পারে ।
১২ তম অংশ
সাধারন শর্তসমূহ
অধ্যায় ১- ইসলামিক শর্তসমূহ
১৯৭) ইসলামিক গবেষণা এবং শিক্ষার জন্য সংস্থা ঃ
১) শুদ্ধ ইসলামের ভিত্তিতে, মুসলিম সমাজ পুনর্গঠনে সহায়তার উদ্দেশ্যে, রাষ্ট্রপতি , ইসলামিক গবেষণা ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য একতি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন ।
২) চুক্তিপত্রের ধারা (১) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত সংস্থার ব্যয় নির্বাহের জন্য সংসদ প্রয়োজনে মুসলিমদের উপর বিশেষ কর আরোপন করতে পারে এবং উক্ত করারোপ সম্ভব না হলে , সংবিধানে কোন কিছু না থাকা সত্ত্বেও , পারস্পারিক চুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত সঞ্চিত ভান্ডার থেকে দেয়া যেতে পারে ।
১৯৮) পবিত্র কোরআন ও সুন্নীহ সম্পর্কিত শর্ত ঃ
১) পবিত্র কোরআন ও সুন্নীহতে বর্নিত আদেশ সমূহ ছাড়াও ইসলামে বিধিবদ্ধ রীতিসমূহের সাথে অবমাননাকর কোন আইন করা হবে না এবং ঐসব বিধিবদ্ধ আইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আইনেই বর্তমান আইনসমূহকে পরিবর্তিত করতে হবে ।
২) বস্তুত, চুক্তিপত্র (১) এ, যে শর্তসমূহ রয়েছে , তার আলোকেই শুধুমাত্র ঐসব রীতি দ্বারাই চুক্তিপত্র (৩) প্রস্তুত করা হবে ।
৩) নিয়মতন্ত্র গঠনের ১ বছরের মধ্যে, রাষ্ট্রপতি একটি কমিশন গঠন করবে
ক) সুপারিশসমূহ তৈরি করার জন্য –
বর্তমান আইনকে ইসলামিক আইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ন করতে পদক্ষেপসমূহ নিতে
অবস্থানুযায়ী, কোন্ কোন্ পদক্ষেপগুলো কার্যকারীভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত
খ) উপযুক্ত রীতিতে সংকলন করতে, জাতীয় ও প্রাদেশিক আইনসভাসমূহের নির্দেশের জন্য, ইসলামের ঐসব বিধিসমূহ, কার্যকারী আইনপ্রনেতাদের কাছে দেয়া যেতে পারে ।
নিয়োগের পাঁচ বছরের মধ্যে কমিশনকে তাদের চূড়ান্ত বিবারণী দাখিল করতে হবে এবং নিয়মানুযায়ী সময়ের পূর্বেও যেকোন মধ্যবর্তী বিবিরণীও দাখিল করতে পারবে । বিবরণীটি মাধ্যবর্তী বা চূড়ান্ত যাই হোক, গৃহীত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই তা জাতীয় আইনসভায় পাঠাতে হবে এবং বিবরণীটি আইনসভার বিবেচনার পর, বিষয়বস্তুর আলোকে আইনটি বিধিবদ্ধ করা যেতে পারে ।
৪) এই আইনের ধারায় এমন কিছুই থাকবে না যা, অমুসলিম নাগরকদেরর ব্যক্তিগত আইন বা নাগরিক হিসেবে তাদের মর্যাদা বা তাদের মনের স্বাভাবিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে
ব্যাখ্যাঃ এই আইনের ধারা মুস্লিম সম্প্রদায়ের নিজস্ব আইনে প্রয়োগ, কোরআন ও সুন্নীহ বলতে ঐ সম্প্রদায় দ্বারা কোরআন এবং এর অনুবাদকেই বুঝাবে ।
অধ্যায় ২- বিশেষ কাউন্সিল ও বোর্ডের নিয়োগ (পরিষদ) সমিতি
১৯৯) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ ঃ
১) শাসনতন্র গঠনের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, রাষ্ট্রপতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গঠন করবে যাহাকে পরে কাউন্সিল বলা হবে যা গঠিত হবে, জাতীয় সরকারের ৪ জন মন্ত্রী ,প্রত্যেক প্রাদেশিক সরকারের ৩ জন করে মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর সমন্বয়ে , যিনি এই পরিষদেরর সভাপতি থাকবেন ।
২)জাতীয় ও প্রাদেশিক সরকারকে উপদেশ দেয়ার জন্য, আর্থিক, বানিজ্যিক ও আর্থিক বীমাসমূহ সম্পর্কে পরিকল্পনা লিপিবদ্ধ করতে, কাউন্সিল দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করবে এবং করতে থাকিবে এবং কাউন্সিল দেশের সর্বত্র সমমাত্রায় আর্থিক উন্নয়ন অর্জন নিশ্চিতকরনে লক্ষ স্থির রাখবে ।
৩) কাউন্সিল বিভিন্ন সময়ে এরকম কওমিটি অথবা অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ নিয়োগ করতে পারে, যাহা ইহার কার্যকলাপ সম্পূর্ন করতে প্রয়োজন বলে বিবেচিত হবে ।
৪) পূর্বোক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য, রাষ্ট্রপতি উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরন করে, জনগনকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেয়ার জন্য এবং সরকারী ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা এবং জনগনের প্রয়োজনীয়তার জন্য প্রত্যেক প্রদেশে আলাদা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে পারে ।
৫) এই আইনের ধারায় এমন কিছুই থাকবে না, যা , রাষ্ট্র বা প্রাদেশিক কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পারে ।
৬) কাউন্সিল যে ফলাফল পাবে এবং তাদের উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনে যতটা উন্নতি করেছে তার উপর প্রতিবছর জাতীয় আইনসভায় একটি বিবরনী উপস্থাপন করবে এব্বং এই বিবরনীর অনুলিপিসমূহ প্রত্যেক প্রাদেশিক আইনসভায় বিবেচনার জন্য দেয়া হবে ।
২০০) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জন্য উপদেষ্টা নিয়োগ ঃ
১) প্রদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ে জাতীয় সরকারকে উপদেশ দিতে ,রাষ্ট্রপতি প্রত্যেক প্রদেশের জন্য জাতীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকারের প্রতিনিধিত্বকারীদের সমন্বয়ে একটি পরিষদ নিয়োগ করবে ।
২) সংবিধানে না থাকা সত্ত্বেও প্রাদেশিক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মধ্যে প্রথম শ্রেণি ব্যতীত , ডাক ও অন্যান্য চাকুরীতে প্রবেশন ওই প্রদেশের বিভাগীয় নিবেশিত ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমেই দেয়া হবে ।
অধ্যায় ৩- রাষ্ট্র ও শাসনকর্তা সম্পর্কিত শর্তসমূহ
তৃতীয় অধ্যায়ঃ রাষ্ট্র ও শাসকদের বিধান
২০১। অঞ্চলগুলোর পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোজনঃ সংবিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রপতি আদেশের মাধ্যমে ১ম অনুচ্ছেদের ধারা (২) এর ২য়, ৩য় ও ৪র্থ উপ-দফাসমূহে উল্লেখিত অঞ্চলগুলোর জাতীয় পরিষদে প্রতিনিধিত্বের জন্য নিয়ম করতে পারবেন যেন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিনিধিত্বের সমতা সংরক্ষিত হয়।
২০২। শাসক সংক্রান্ত চুক্তিসমূহঃ ১) সাংবিধানিক দিবসের পূর্বে বা পরে পাকিস্তান সরকার এবং সেই সময়ে পাকিস্তানের সাথে সংযোজিত ছিল এমন রাজ্য শাসকের মধ্যে প্রণীত কোনো চুক্তির অধীনে, সেই রাজ্য শাসকের ব্যক্তিগত ব্যয়নির্বাহার্থে পাকিস্তান সরকার যে করমুক্ত অর্থের নিশ্চয়তা ও আশ্বাস দিয়েছে, সেই অর্থ ফেডারেল সংযুক্ত তহবিলের উপর ধার্য হবে এবং রাজ্য শাসককে ফেডারেল তহবিল থেকে করমুক্ত ঐ অর্থ পরিশোধ করা হবে।
২) যেখানে পূর্বোক্ত শাসকদের অঞ্চলগুলো কোনো একটি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত, সেখানে সংযুক্ত তহবিলের উপর অর্থ ধার্য হবে। এই অর্থ ধারা (১) এর অধীনে সরকারকর্তৃক রাজ্য শাসককে প্রদানকৃত অর্থের বাইরে রাজ্য শাসককে ফেডারেল সরকারকে প্রদান করতে হবে।
৩) আইন প্রণয়নে যে কোনো ক্ষমতার প্রয়োগ এবং ফেডারেশন বা প্রদেশের নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কৌশলের কারণে কোনো চুক্তির অধীনে যথাযথ ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি বা নিশ্চয়তা দেওয়া হবে যেমনটা ধারা (১) এ উল্লেখ করা হয়েছে। এই দফায় রাজ্যের শাসকের ব্যক্তিগত অধিকার, সুযোগ সুবিধা ও মর্যাদা সম্বন্ধেও উল্লেখ রয়েছে।
২০৩। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য সংক্রান্ত বিধানঃ যখন জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মানুষ পাকিস্তানের অধীনে থাকার সম্মতি দেবে, তখন পাকিস্তান ও উক্ত রাজ্যের সম্পর্ক সেই রাজ্যের মানুষের ইচ্ছানুযায়ী নির্ধারিত হবে।
চতুর্থ অধ্যায়ঃ তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠী
২০৪। তফসিলি জাতির সংজ্ঞাঃ জাতি, বর্ণ ও গোত্র এবং এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কোনো অংশ বা গোষ্ঠী সাংবিধানিক দিবসের আগমুহূর্তে ভারত শাসন আইনের পঞ্চম তফসিল, ১৯৩৫ এর অর্থানুসারে তফসিলি জাতি গঠন করে যা সংবিধানের উদ্দেশ্যে তফসিলি জাতি হিসেবে গণ্য হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত সংসদ নতুন কোনো আইন প্রদান করে।
২০৫। তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর স্বার্থ উন্নয়নঃ ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার পাকিস্তানের তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর স্বার্থের উন্নয়ন বিশেষ করে শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক সুবিধা উন্নয়নে কাজ করবে এবং তাদেরকে সামাজিক অবিচার ও শোষণের হাত থেকে রক্ষা করবে।
২০৬। তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর অবস্থার তদন্ত করতে কমিশনের নিয়োগঃ ১) রাষ্ট্রপতি তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর অবস্থার তদন্তের জন্য পাকিস্তানে একটি কমিশন নিয়োগ করবেন। তিনি সুপারিশ প্রণয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং ফেডারেল বা প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য অনুদান দেবেন।
২) ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত কমিশন নিজের উপর অর্পিত বিষয়বস্তু তদন্ত করে দেখবে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে নিজেদের বোধ অনুযায়ী মানানসই সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন পেশ করবে। এই প্রতিবেদনের অনুলিপি জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদে উপস্থাপিত হবে।
২০৭। তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ অফিসারঃ ১) তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত একজন অফিসার থাকবে।
২) এই বিশেষ অফিসারের দায়িত্ব থাকবে অনুচ্ছেদ ২০৫ অনুসারে তফসিলি জাতি ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর রক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয়ে তদন্ত করা, ধারা ২০৬ এর অধীন নিযুক্ত কমিশনের কোনো সুপারিশ কার্যকর হলো কিনা খতিয়ে দেখা ও রাষ্ট্রপতিকে মধ্যবর্তী সময়ে তথ্যগুলোর বিবরণী দেওয়া যাতে করে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন এবং জাতীয় পরিষদে সেগুলো উপস্থাপন করতে পারেন।
পঞ্চম অধ্যায়ঃ বিবিধ
২০৮। উপাধি, সম্মান ও পদকঃ ১) রাষ্ট্রীয় কোনো ধরনের উপাধি, সম্মান বা পদক নাগরিকের উপর অর্পিত হবে না যদিও রাষ্ট্রপতি সামরিক বা সরকারী চাকুরীতে বিশেষ স্বীকৃতিস্বরূপ পদক দিতে পারবেন।
ব্যাখ্যা- এই দফায় “রাজ্য” অংশ ২ এর অনুরূপ অর্থ বোঝায়।
২) পাকিস্তানের কোনো নাগরিক বিদেশী রাষ্ট্রের থেকে রাষ্ট্রপতির অনুমতি ব্যতীত কোনো ধরনের উপাধি, সম্মান বা পদক গ্রহণ করতে পারবে না।
২০৯। শাস্তি রদ ও ক্ষমাঃ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা, শাস্তি রদ ও বিরতি মঞ্জুর করার ক্ষমতা থাকবে। একইসাথে রাষ্ট্রপতি কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন দণ্ডাদেশের মওকুফ, স্থগিত বা বিনিময় করতে পারবেন।
২১০। প্রধান বন্দর ও বিমানঘাঁটি সংক্রান্ত বিশেষ বিধানঃ সংবিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রপতি প্রকাশ্য প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে কোন তারিখ হতে অনধিক তিন মাসের জন্যে নির্দেশ দিতে পারবেন-
ক) সংসদ বা প্রাদেশিক আইনসভা কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইন প্রধান বন্দর অথবা বিমানঘাঁটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না অধিকন্তু এই ধরনের ব্যতিক্রম ও সংশোধন প্রজ্ঞাপনে উল্লেখপূর্বক প্রয়োগ করতে হবে।
খ) প্রধান বন্দর অথবা বিমানঘাঁটির জন্য প্রযোজ্য যে কোনো বিদ্যমান আইন যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, যে কাজগুলো করা হয়েছে বা ছেড়ে যাওয়া হয়েছে সেগুলো অগ্রাহ্য করেই তা স্থগিত রাখতে হবে। যে কোনো বন্দর বা বিমানঘাঁটিতে আইনের ব্যতিক্রম ও সংশোধন প্রজ্ঞাপনে উল্লেখপূর্বক প্রয়োগে প্রভাব ফেলবে।
ব্যাখ্যা- এই অনুচ্ছেদে “বিমানঘাঁটি” বলতে বিমান, বিমানচালন ও বিমান চলাচলের পথকে বোঝানো হয়েছে।
ফেডারেল ক্যপিটালের প্রশাসন রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যাস্ত থাকবে যিনি ক্ষমতাবলে বিধান তৈরী করবে যা তার নিকট জরুরী ও যথাযথ মনে হবে-
(ক) এটির সরকার এবং প্রশাসনের জন্য।
(খ) আইনের সাপেক্ষে ক্ষমতা প্রয়োগে।
(গ) বিচারব্যবস্থার সাপেক্ষে,হাইকোর্টের পরিচালিত যেকোনো বিচারব্যবস্থার অন্তর্গত খরচ এবং লভ্যাংশ এর।
(ঘ) বন্টন এবং সমন্বয়তার সাপেক্ষে, সম্পদ এবং দায়ের পরিপ্রেক্ষিতে।
(ঙ) রাজস্ব হতে ফেডারেশন এর ব্যয় অনুমোদন এর জন্য; এবং
(চ) অন্যান্য সম্পূরক,আনুষঙ্গিক এবং অনুবর্তী বিষয়ের সাপেক্ষে।
(৩) তথাপি সংবিধানের কোনো কিছুতে,হাইকোর্টের সাথে সম্পর্কিত বিষয়দি বাদে, প্রাদেশিক তালিকার অন্তর্গত বিষয়ে এবং ৫ম শিডিউলের কোনো লিস্টে অন্তর্ভূক্ত না হওয়া বিষয়ে , ফেডারেল ক্যাপিটালের জন্য আইন তৈরী করার ক্ষমতা থাকবে সংবিধানের।
২১২.রাষ্ট্রপতি,মন্ত্রী ইত্যাদীর পারশ্রমিক,যেটি তাদের কার্যকালে অপরিবর্তিত থাকবে-রাষ্ট্রপতির কার্যলয় ধারনকারী ব্যাক্তি,ফেডারেলের অথবা একটি প্রাদেশিক সরকার এর মন্ত্রী,জাতীয় অথবা প্রাদেশিক প্রদেশের স্পীকার অথবা ডেপুটি স্পীকার এর,গভর্নর ,হিসাবাধ্যক্ষ ও অডিটর জেনারেল,পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য,নির্বাচন কমিশনার ,অথবা আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার অথবা সীমা নির্ধারণ কমিশনের সদস্য এর পারশ্রমিক এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তার কার্যকালে নিজের সুবিধামোতাবেক পরিবর্তন করা যাবে না।
২১৩.গভর্নর এবং রাষ্ট্রপতির সুরক্ষা-প্রদেশের গভর্নর অথবা প্রেসিডেন্ট কেউই তার কার্যলয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব পালনের , অথবা এসব ক্ষমতা ও দায়িত্ববলে কোনো কাজ করা অথবা কোনো কাজের অভিপ্রায় করার কারণে কোনো কোর্টে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না।
ফেডারেল সরকার অথবা প্রাদেশিক সরকারে বিরুদ্বে কোনো ব্যাক্তির মামলা করার অধিকারকে বাধা প্রদান করে এমন কিছু এই অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করে না।
২১৪.রাষ্ট্রভাষা-(১)পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু এবং বাংলাঃ
সাংবিধাবনের দিন হতে বিশ বছর পর্যন্ত সকল আনুষ্ঠানিক বিষয়ে ইংরেজি ব্যবহৃত হতে থাকবে যেটি সাংবিধান দিবস এবং পার্লামেন্ট দিবস এর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত পাকিস্তানে ব্যবহৃত হত, এই বিশ বছর মেয়াদের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ইংরেজি ব্যবহারে আইন প্রদান করা হবে,যেখানে আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য সমূহ বর্ণিত হবে।
২)সাংবিধানিক দিবসের হতে ১০ বছরের মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি ইংরেজির প্রতিস্থাপনে কমিশন নিয়োগ দিতে সুপারিশ করবে।
৩) এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই প্রাদেশিক সরকারকে ইংরেজি প্রতিস্থাপনে, বর্ণিত ২০ বছর মেয়াদ উর্ত্তীণের পূর্বে ব্যবহৃত যেকোনো রাষ্ট্র ভাষার কারণে ,বাধা প্রদান করবে না।
২১৫- শপথ এবং স্বীকৃতিঃ ২য় তফসিলে উল্লিখিত যেকোনো কার্যালয়ে একজন ব্যক্তি নির্বাচিত অথবা নিযুক্ত হলে,কার্যালয়ে প্রবেশের পূর্বে ঐ তফসিল অনুসারে শপথ অথবা স্বীকৃতি গ্রহণ এবং সম্মতি প্রদান করবে।
২১৬-সংবিধানের সংশোধনীঃ(১)সংবিধান অথবা কোনো আইন পার্লামেন্টের ক্ষমতাবলে সংশোধন অথবা বাতিল করা যাবে যদি এর জন্যে জাতীয় পরিষদের মোট সদস্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং পরিষদে উপস্থিত ও ভোট প্রদানকারী দুই তৃতীয়াংশ বেশী সদস্যের ভোটের দ্বারা একটি বিল পাশ হয় এবং তাতে রাষ্ট্রপতি রাজী থাকে।
এ ধরণের কোনো বিলের মাধ্যমে যদি অনুছেদ ১,৩১,৩৯,৪৪,৭৭,১০৬,১১৮,১১৯,১৯৯ অথবা এই অনুচ্ছেদের কোনো আইনের সংশোধনী অথবা বাতিল করা হয় তবে সেটি রাষ্ট্রপ্রতির কাছে তার সম্মতির জন্য উপস্থাপন করা যাবে না যতক্ষণ না তা প্রত্যেক প্রাদেশিক পরিষদ কতৃক অনুমোদিত হয় অথবা যদি এটি শুধুমাত্র একটি প্রদেশের উপর প্রযোজ্য হয় তবে ঐ প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদঃ
৫ম তফসিল এবং ৪র্থ তফসিলের ৬ষ্ঠ অংশ বাদে ,তফসিলসমূহ সংশোধন অথবা বাতিল করা যাবে যদি এই উদ্দ্যেশে একটি বিল পাশ হয় পরিষদে উপস্থিত ও ভোট প্রদানকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ এর দ্বারা এবং তাতে প্রেসিডেন্ট সম্মতি দেয়।
চতুর্থ তফসিলের ৪র্থ অংশের নির্দিষ্ট ব্যাপারে প্রাদেশিক আইনসভা কানুনবলে আইন তৈরি করতে পারবে।
২) প্রাদেশিক পরিষদের স্পীকারের অধীনে একটি প্রমাণপত্র থাকবে যাতে ধারা ১) এর আইন মোতাবেক পাশ হওয়া একটি বিল চূড়ান্ত হয় এবং আদালত কতৃক প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।
২১৭-৪র্থ তফসিলের আবেদনঃ এই উদ্দেশ্যে যতক্ষণ না অন্য কোনো আইন বিধানের মাধ্যমে প্রণয়ন করা হয়;চতুর্থ তফসিলের আইনসমূহ ঐ বিষয়ক ব্যাপারে প্রয়োগ করা যাবে।
অধ্যায় ৬-ব্যাখ্যা
২১৮-সংজ্ঞাসমূহ,ইত্যাদিঃ (১)সংবিধানে,যদি না অন্য প্রসংগে ব্যবহৃত হয়, নিম্নলিখিত শব্দসমষ্টির তাদের উপর আরোপিত অর্থসমূহ বর্ণনা করা হল-
‘সংসদের ক্ষমতাবলে’ বলতে বুঝায় যে একটি বিল জাতীয় পরিষদ কর্তৃক পাশ হয় এবং রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অধ্যাদেশ এতে অন্তর্ভূক্ত থাকে।
“প্রাদেশিক আইনসভা আইন/প্রাদেশিক আইন” বলতে প্রাদেশিক পরিষদ কর্তৃক গ্রৃহীত এবং রাজ্যপাল(গভর্নর) বা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত কোন প্রস্তাব কে বোঝায় এবং তন্মধ্যে সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপাল কর্তৃক সংযোজিত যেকোন অধ্যাদেশও অন্তর্ভুক্ত।
“কৃষিজ আয়” বলতে আয়কর আইন সংক্রান্ত প্রয়োজনে সংজ্ঞায়িত কৃষিজ আয়কে বোঝায়।
“ধারা” বলতে সংবিধানের যেকোন ধারা কে বোঝায়।
“ধার” এর মধ্যে বার্ষিক বৃত্তি অনুদান এর মাধ্যমে তহবিল গঠন অন্তর্ভুক্ত এবং ঋণ তদনুসারে গণ্য হবে।
“নৈমিত্তিক/সাধারণ শুন্যপদ” বলতে জাতীয় অথবা প্রাদেশিক পরিষদের কোন শুন্যপদকে বোঝায় যা পরিষদের বিলুপ্তি ভিন্ন অন্য কোন কারনে উদ্ভূত।
“নাগরিক” অথবা “পাকিস্তানের নাগরিক” বলতে এমন কোন ব্যাক্তিকে বোঝায় যে নাগরিকত্ব আইনানুসারে পাকিস্তানের নাগরিক।
“দফা” বলতে বোঝায় কোন ধারার একটি দফা যাতে ঐ ধারার অভিব্যাক্তি/রূপরেখা প্রকাশিত হয়।
“সমবর্তী সূচি” বলতে পঞ্চম অধ্যাদেশের সমবর্তী সুচিকে বোঝায়।
“গণপরিষদ” বলতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের গণপরিষদ কে বোঝায়।
“সংবিধান দিবস” বলতে ধারা ২২২ এর দফা (৪) এর অধীনে গণপরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত দিবস কে বোঝায়;
“বাণিজ্যিক কর” বলতে কোন কোম্পানী/বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়ের উপর প্রদেয় কর কে বোঝায়, যেখানে নিম্নলিখিত শর্তসমূহ প্রযোজ্য –
(ক) এই কর কৃষিজ আয়ের উপর আরোপযোগ্য নয়
(খ) আয়কর আইনের অন্য কোন আইন দ্বারা কোন কোম্পানী/বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যাক্তি/ব্যক্তিবর্গকে প্রদেয় লভ্যাংশ এর উপর কোন কর মওকুফ/বিযোজন কার্যকর হবে না, এবং
(গ) এধরনের লভ্যাংশ প্রাপ্ত কোন ব্যাক্তির পূর্ণ আয় নির্ধারণ করে উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় বা উক্ত ব্যক্তির কাছে ফেরতযোগ্য করের হিসাব করার সময় তার প্রাপ্ত লভ্যাংশের উপর কোম্পানী কর্তৃক দেয়া আয়করের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করার কোন বিধান নাই।
“আদালত” এর মধ্যে জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদ বা অনুরূপ পরিষদের কোন কার্যনির্বাহী দল অন্তর্ভুক্ত হবে না।
“ঋণ” এর মধ্যে যেকোন মূলধনী দায় যা বার্ষিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এমন এবং জামানতভুক্ত যেকোন দায় অন্তর্ভুক্ত, এবং তদনুযায়ী “ঋণের মাশুল” ধার্য হবে।
“ভোটার” বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝায় যার নাম সংবিধান মোতাবেক প্রস্তুতকৃত একটি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে;
“ভূসম্পত্তি শুল্ক” বলতে মৃত্যুজনিত কারনে হস্তান্তরিত সম্পত্তি বা হস্তান্তরিত হিসেবে বিবেচিত হয় এমন সম্পত্তির উপর নির্ধারিত শুল্ককে বোঝায় যা সংসদ কর্তৃক নির্দেশিত কোন আইন বা কোন সংসদীয় আইন এর মাধ্যমে সম্পদের মূল মানের উপর বা তদসাপেক্ষে নির্ধারিত হয়।
“বিদ্যমান/প্রচলিত আইন” বলতে যেকোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ, উপআইন, বিধি, প্রবিধান অথবা প্রজ্ঞাপন কে বোঝায় যা সংবিধান দিবসের অব্যহিত পূর্বে সমগ্র পাকিস্তান বা পাকিস্তানের কোন অংশে আইন হিসেবে কার্যকর।
“ফেডারেল/রাষ্ট্র আদালত” বলতে ভারত সরকার আইন, ১৯৩৫ এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত রাজ্য/রাষ্ট্র আদালত কে বোঝায় যা তদনুযায়ী সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে কার্যরত আছে।
“ফেডারেল/রাষ্ট্র সূচি” বলতে পঞ্চম অধ্যাদেশের ফেডারেশন/রাষ্ট্র তালিকা কে বোঝায়।
“রাষ্ট্র/ফেডারেশন” বলতে পাকিস্থান ইসলামী প্রজাতন্ত্র-কে বোঝায়।
“গভর্নর জেনারেল” বলতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের গভর্নর জেনারেলকে বোঝায়।
“জামানত” এর মধ্যে সংবিধান দিবসের পূর্বে গৃহীত যেকোন বাধ্যবাধকতা অন্তর্ভুক্ত যা কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জনে ঘাটতি দেখা গেলে ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘাটতি পূরণের নিশ্চয়তা দেয়।
“আইনি প্রক্রিয়া” এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে কোন মামলা, আপীল বা আবেদন অথবা কোনো উপলক্ষ বা ব্যাপার যা ফয়সালার জন্য কোন আইনী আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
“অংশ/পার্ট” বলতে সংবিধানের কোন অংশ/পার্ট কে বোঝায়।
“অবসর বৃত্তি/ভাতা” বলতে কোন ব্যাক্তিকে বা কোন ব্যাক্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রদেয় যেকোন ধরনের অবসর বৃত্তি/ভাতা কে বোঝায়- তা প্রদায়ক হোক বা না হোক, এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে প্রদেয় অবসর বেতন, প্রদেয় আনুতোষিক এবং বিনিময় হিসেবে প্রদেয় কোন অংক বা অংকসমুহ;- তা তদুপরি সুদসমেত হোক বা না হোক, অথবা ভবিষ্যতনিধিতে সদস্যপদের জন্য প্রদেয় যেকোন অতিরিক্ত অঙ্ক।
“প্রাদেশিক সূচি/তালিকা” বলতে পঞ্চম অধ্যাদেশের প্রাদেশিক তালিকা কে বোঝায়।
“জন/গণ প্রজ্ঞাপন” বলতে, রাষ্ট্রীয়/প্রজাতন্ত্রের ক্ষেত্রে পাকিস্তান গেজেটের মাধ্যমে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন এবং প্রদেশের ক্ষেত্রে ওই প্রদেশের আনুষ্ঠানিক গেজেটের মাধ্যমে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপণকে বোঝায়।
“পারিশ্রমিক” এর মধ্যে বেতন, ভাতা এবং অবসর বৃত্তি/ভাতা অন্তর্ভুক্ত।
“তফসিল” বলতে সংবিধানের কোন তফসিল কে বোঝায়।
“তফসিলি” বলতে ধারা ২০৪ এর বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত কোন তফসিলি কে বোঝায়।
“সিকিউরিটিস/সুরক্ষাপত্র” এর মধ্যে স্টক অন্তর্ভুক্ত।
“পাকিস্তানের সেবা/চাকুরী” বলতে যেকোন চাকুরী অথবা দায়িত্ব কে বোঝায় যা রাষ্ট্রীয় বা কোন প্রাদেশিক কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে সম্পৃক্ত, এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে যে কোনো প্রতিরক্ষা সেবা ও অন্য কোন সেবা যা কোন সংসদীয় আইন এর মাধ্যমে বা অধীনে অথবা প্রাদেশিক আইনসভার অধীনে একটি সেবা হিসেবে ঘোষিত হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে যেসকল পদে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত হবেন না তারা হলেনঃ (গভরনর-জেনারেল) রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান/গভর্নর/রজ্যপাল স্পীকার বা সহকারী স্পীকার, (ফেডারেল) রাষ্ট্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী অথবা রাজ্যসরকারের উপমন্ত্রী, প্রদেশিক সরকারের উপমন্ত্রী বা সাংসদীয় সচিব, সর্বোচ্চ আদালত বা উচ্চ আদালত এর বিচারক, অথবা হিসাবাধ্যক্ষ এবং প্রধান নিরীক্ষক; এবং ‘পাকিস্তানের সেবক” তদনুসারে গণ্য হবে;
“বিশেষ অঞ্চল” বলতে পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশের সেইসব অঞ্চল কে বোঝায় যেগুলো পশ্চিম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা আইন, ১৯৫৫ এর কার্যকর হবার অবব্যহিত পূর্বে নিম্নরূপ ছিলঃ
(ক) বেলুচস্থান, পাঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এর উপজাতীয় এলাকা এবং
(খ) আমিব, চিত্রল, দির এবং সোয়াত রাষ্ট্র
“উপদফা” বলতে কোন দফার উপদফা বোঝায় যেখানে ঐ দফার অভিব্যক্তি/রুপরেখা প্রকাশিত হয়;
“করারোপণ” এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে সাধারণ স্থানীয় বা বিশেষ যেকোন কর বা শুল্ক আরোপ এবং তদনুসারে “কর” গণ্য হবে।
“আয়ের উপর কর/ আয়কর” এর মধ্যে অতিরিক্ত মুনাফা কর অথবা ব্যবসায়-মুনাফা কর প্রকৃতির কর অন্তর্ভুক্ত।
(২) সংবিধানের অধীনে কোনকিছু যদি সুনির্দিষ্ট করতে হয় এবং কোন সুনির্দিষ্টকরণ কর্তৃপক্ষ সুপারিশকৃত না হয়ে থাকে তাহলে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা সুনির্দিষ্টকরণ হবে।
(৩) সন্দেহ পরিহারের জন্য এতদ্দ্বারা ঘোষণা করা হয় যে, একটি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের কার্যকাল একটি সাধারন নির্বাচন বা পরিষদ স্থগিতকরণের পরে প্রথম পরিষদের সভার শুরুর সাথে আরম্ভ হবে এবং পরিষদের স্থগিতকরণ বা বিলুপ্তির সাথে শেষ হবে। সংবিধানে উল্লেখিত কার্যরত পরিষদ তদনুসারে ব্যাখ্যা করা হবে।
২১৯। সাধারণ দফা আইন, ১৮৯৭ এর প্রয়োগ।-
(১) প্রেক্ষাপটে অন্যকিছুর প্রয়োজন না থাকলে, সাধারণ দফা আইন, ১৮৯৭ কেন্দ্রীয় আইন ব্যাখ্যার জন্য প্রযোজ্য হবে এবং ঠিক একইভাবে এটি সংবিধানের ব্যাখ্যার জন্য প্রযোজ্য হবে – যেন সংবিধানও একটি কেন্দ্রীয় আইন।
(২)সংবিধানের ব্যাখ্যায় সাধারণ দফা আইন, ১৮৯৭ প্রয়োগের জন্য সংবিধান কর্তৃক রহিত আইনসমূহ কেন্দ্রীয় আইন বলে বিবেচিত হবে।
সপ্তম অধ্যায়- প্রবর্তন এবং রহিতকরণ
২২০। প্রবর্তন- এই ধারা এবং ধারা ২১৮, ২১৯ এবং ২২০ একসাথে বলবত হবে, এবং অবশিষ্ট বিধানসমূহ সংবিধান দিবস থেকে বলবত হবে।
২২১। রহিতকরণ- ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫ এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭, এতদ্দ্বারা রহিত করা হল, একসঙ্গে সেসব আইনসমেত যেগুলো দ্বারা উল্লেখিত আইনসমূহের সংশোধন বা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে: তবে শর্ত থাকে যে ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫, যা ধারা ২৩০ অনুযায়ী প্রযোজ্য, এর রহিতকরণ ১ এপ্রিল, ১৯৫৭ সালের পূর্বে প্রযোজ্য হবে না।
ত্রয়োদশ অংশ
অস্থায়ী ও ক্রান্তিকালীন বিধান
২২২। রাষ্ট্রপতির জন্য বিধান-
(১) পরিষদের উদ্দেশ্যে সংগঠিত প্রথম সাধারন নির্বাচনের পর জাতীয় পরিষদ গঠিত হলে যত দ্রুত সম্ভব প্রধান নির্বাচন কমিশনার ধারা ৩২ এর অধীনে একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
(২) গণপরিষদ ষষ্ঠ তফসিলের বিধান অনুযায়ী একজন ব্যাক্তিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচিত করবে ততদিন পর্যন্ত যতদিন ধারা ৩২ এর দ্বারা নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি তার কার্যালয়ে দায়িত্বভার গ্রহন না করেন এবং এই নির্বাচন, এই ধারা বলবত হবার ৩০ দিনের মধ্যে গণপরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত কোন একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
(৩) কোন ব্যাক্তি এই ধারা এর অধীনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যোগ্য হবেন না যদি না তিনি পাকিস্থানের নাগরিক হন এবং তার বয়স ন্যুনতম ৪০ বছর হয়।
(৪) গণপরিষদ একটি দিনকে সংবিধান দিবস হিসেবে নির্ধারণ করবে এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত ব্যাক্তি দ্বিতীয় তফসিলের অনুচ্ছেদ ১ অনুয়ায়ী শপথ গ্রহনের পর ওই দিনে তার কার্যালয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
(৫) এই ধারার অধীনে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির বৈধতা কোন আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।
(৬)এই ধারার অধীনে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যদি মৃত্যু, পদত্যাগ বা কার্যালয় থেকে অভিশংসন এর কারনে কোন শুন্যপদ দেখা দেয় তবে জাতীয় পরিষদের কোন ব্যক্তি কর্তৃক তা ষষ্ঠ তফসিলের বিধান অনুযায়ী নথিভুক্ত করবেন।
২২৩। জাতীয় পরিষদ এবং এর নির্বাহীদের জন্য বিধান-
(১) সংবিধান এর বিধান অনুযায়ী জাতীয় পরিষদের প্রথম সভা গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান দিবসের অবব্যহিত পূর্বে যে পরিষদ গণপরিষদ হিসেবে কার্যরত ছিল তা ওইদিন থেকে জাতীয় পরিষদ হিসেবে গণ্য হবে।
(২) এই ধারার অধীনে জাতীয় পরিষদে কোন সাধারণ শুন্যপদ সৃষ্টি হলে তা এমন বিধি অনুসারে পূরণ করা হবে যা রাষ্ট্রপতির পক্ষে উক্ত নিমিত্তে গঠিত।
(৩) সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে জাতীয় গণপরিষদের স্পীকার ও সহকারী স্পীকার হিসেবে যারা দায়িত্বরত ছিলেন তারা ওইদিন (সংবিধান দিবস) থেকে যথাক্রমে জাতীয় পরিষদের স্পীকার ও সহকারী স্পীকার হিসেবে এই ধারার অধীনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন, এক্ষেত্রে সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে তাদের সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধাদির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শর্তাবলী অনুরূপ/অপরিবর্তিত থাকবে।
২২৪। বিদ্যমান আইনের ধারাবাহিকতা এবং তাদের সমন্বয়
(১) ধারা ২২১ এ উল্লেখিত আইনসমূহের রদ/রহিতকরণ সত্ত্বেও এবং সংবিধানে স্পষ্টভাবে অন্যথা উল্লেখিত না হলে, ওইসকল আইনসমূহ ব্যাতীত সকল আইন তদুপরি প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাপেক্ষে বলবত থাকবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে বিধানসমূহ, পরিষদের আদেশসমূহ, আদেশসমূহ, বিধি সমূহ, উপ-আইনসমূহ, নিতীমালাসমূহ, প্রজ্ঞাপনসমূহ এবং অন্যান্য আইনগত দলিলসমূহ যেসব পাকিস্তান বা পাকিস্তানের কোন অংশে সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে বলবত আছে অথবা তাদের অতিরাষ্ট্রীয় বৈধতা আছে, যতক্ষন পর্যন্ত না সেসব আইন যথাযথ আইনসভা বা অন্যকোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিবর্তিত, রহিত বা সংশোধিত হয়।
ব্যখ্যা ১- এই ধারায় “আইন” শব্দটির মধ্যে চিঠিপত্র (উচ্চআদালতের সীলমোহর সংযুক্ত) অন্তর্ভুক্ত হবে।
ব্যখ্যা ২- এই ধারায় কোন আইনের সাপেক্ষে “বলবত” বলতে আইনের কার্যকারিতা বোঝানো হচ্ছে তা আইনটি প্রয়োগ করা হোক বা না হোক।
(২) পাকিস্তানে কোন আইনের বিধান কার্যকর করার জন্য (৩) রাষ্ট্রপতি, প্রাদেশিক সূচির দফা ২ অনুসারে তার উপর আরপিত ক্ষমতাবলে, কোন প্রদেশের রাজ্যপালকে ওই প্রদেশের জন্য অনুমোদন প্রদান করতে পারেন।
(৪) দফা ২ এবং ৩ এর অধীনে প্রায়োগিক ক্ষমতা সমূহ যথাযথ আইনসভার কোন আইনের বিধানের উপর নির্ভর করবে।
২২৫। প্রাদেশিক আইনসভা-
(১) সংবিধানের বিধান অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত পূর্ব বাংলা প্রদেশে যে প্রাদেশিক আইন পরিষদ সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে কার্যরত আছে তা পূর্ব পাকিস্থান প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের উপর সংবিধান এর বিধান অনুযায়ী অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ করবে ও এর উপর নিযুক্ত দায়িত্ব পালন করবে এবং কোন ব্যাক্তি যিনি সংবিধান দিবসের অবব্যহিত পূর্বে পূর্ব বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক আইন পরিষদের স্পীকার অথবা সহকারী স্পীকার হিসেবে নিজ কার্যালয়ে দায়িত্বরত আছেন তিনি ওইদিন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের যথাপ্রযোজ্য ভাবে স্পীকার অথবা সহকারী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন।
(২) সংবিধানের বিধান অনুযায়ী পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত, পশ্চিম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা আইন, ১৯৫৫ এর অধ্যাদেশ ১১ এর অধীনে নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক গঠিত আইন পরিষদ যা সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে কার্যরত আছে, তা পূর্ব পাকিস্থান প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের উপর সংবিধান এর বিধান অনুযায়ী অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ করবে ও এর উপর নিযুক্ত দায়িত্ব পালন করবে, এবং কোন ব্যাক্তি যিনি সংবিধান দিবসের অবব্যহিত পূর্বে পূর্ব বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক আইন পরিষদের স্পীকার অথবা সহকারী স্পীকার হিসেবে নিজ কার্যালয়ে দায়িত্বরত আছেন তিনি ওইদিন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের যথাপ্রযোজ্য ভাবে স্পীকার অথবা সহকারী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন।
সংবিধান দিবসের আগের সমাবেশ থেকেই স্পিকার অথবা প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকার পরিচালনা করবেন।
৩) প্রাদেশিক পরিষদের কোনো সাধারন শুন্যপদ খালি হলে রাষ্ট্রপতি কতৃক ১ম দফা অথবা ২য় দফার বিধি অনুযায়ি পুরন করতে হবে।
৪) দফা (১) এর ৭৯ নম্বর ধারার বিধি মোতাবেক এবং প্রাদেশিক পরিষদের বর্তমানে কার্যকর দফা (১) ও দফা (২) প্রযোজ্য হবেনা।
২২৬। গভর্নর,মন্ত্রি ও এডভোকেট জেনারেলের পদে বর্তমানে কার্যরত তারাই বহাল থাকবেন যতদিন না পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ি নতুন কাউকে নিয়োগ করা হচ্ছে।
(২) যিনি এখন প্রধানমন্ত্রী বা গভর্নর জেনারেল, মন্ত্রী বা ফেডারেল সরকারের অধিষ্ঠিত আছেন তিনি সংবিধান দিবসে থেকেও একি পদে আসীন থাকবে।
ব্যাখ্যা.- এখানে “মন্ত্রী” বলতে প্রদেশের মন্ত্রী বোঝানো হয়েছে।.
(৩) সংবিধান দিবসের আগের থেকে যারা মুখ্যমন্ত্রী বা একটি প্রদেশের গভর্নর অন্যান্য মন্ত্রী, অধিষ্ঠিত ছিলেন সে পদে সেদিন ও থাকবেন। অবশ্যই ক্ষেত্রমতে।.
(৪) ব্যক্তি হিসেবে পাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন,তিনি , সংবিধান দিবসের আগের থেকে অফি্সে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং যতদিন না পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী অথবা প্রদেশের অন্যান্য মন্ত্রীরা তা হস্তগত না করেন। শর্ত সাপেক্ষে অবশ্যই।
(৫) ব্যক্তি হিসেবে পাকিস্তান অডিটর জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি সংবিধান দিবসের আগের দিন থেকে তিনিই বহাল থাকবেন এবং পাকিস্তানের অডিটর জেনারেলের শর্ত ও কার্যাবলি তাকে সময়ানুযায়ি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
(৬) যিনি প্রদেশ অ্যাডভোকেট জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত আছেন, তিনি সংবিধান দিবসের আগে থেকে যিনি আছেন এবং সে পদেই অধিষ্ঠিত থাকবেন।
২২৭) বিচারক, আদালত এবং আইনি প্রক্রিয়া .- (১) প্রধান বিচারপতি কিংবা ফেডারেল কোর্টের বিচারক, সংবিধান দিবসের আগ থেকে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, যেমন বহ্ল আছেন, তেমনি থাকবেন। অফিস পরিচালিত হবে, প্রধান বিচারপতি কিংবা সুপ্রিম কোর্ট, কত্বক বহাল অন্য বিচারক পদে বহাল আছেন এমন বিচারক। সংবিধান দিবসের আগের থেকেই যেসব শর্ত ছিল সেসব ই , একই শর্তাবলী এবং পারিশ্রমিক হিসেব প্রযোজ্য হবে।
(2) প্রধান বিচারপতি বা হাইকোর্টের বিচারক,যিনি অধিষ্ঠিত আছেন, তিনি সংবিধান দিবসের আগে থেকে বহাল আছেন এবং সে পদেই অধিষ্ঠিত থাকবেন। পরিচালিত হবে প্সংরধান বিচারপতি এবং বিশেষ টার্ম গুলো আগের মতোই পরিচালিত হবে।
(৩) ফেডারেল কোর্টে বিচারাধীন সকল আইনি প্রক্রিয়া, সংবিধান দিবসের আগে যেমন ছিল তেমনি থাকবে। বদলী এবং বিচারাধীন মামলা, সুপ্রিম কোর্ট; এবং কোনো রায় বা ফেডারেল কোর্টের অর্ডার বিতরণ ইত্যাদি সুপ্রিম কোর্ট এর আগের একই বল এবং বিধি অনুযায়ি কার্যকর থাকবে।.
(৪) সংবিধান অন্যান্য বিধানাবলী কুসংস্কার ছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের একই এখতিয়ার এবং ক্ষমতার অধিকারী হইবেন, যেমনটি ছিলসংবিধান দিবসের আগে থেকেই।, ফেডারেল কোর্ট এর প্রয়োগ, এবং ফেডারেল আদালতে কোন আইনে উল্লেখ বলিয়া গণ্য হইবে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স হতে.
(৫) সংবিধানের অন্যান্য বিধানাবলী কুসংস্কার ছাড়া, প্রতিটি উচ্চ কাউন্সিল যেমন সংবিধান দিবসের পূর্বে ছিল একই এরকম ভাবে এখতিয়ার এবং ক্ষমতার অধিকারী হইবেন.।
(৬)সংবিধানের- বিধানাবলী সাপেক্ষে
(ক) সকল নাগরিক, ফৌজদারি ও রাজস্ব আদালতের এখতিয়ার এবং দায়িত্ব পালনকারী, অবিলম্বে সংবিধান দিবস আগে থেকে , যেমন ছিল তেমন ই তাদের নিজ নিজ বিচারব্যবস্থায় ফাংশন এবং আদালতে পদে অধিষ্ঠিত সব ব্যক্তিদের প্র্যাকটিস তাদের নিজ নিজ পদ অনুযায়ি অব্যাহত থাকবে ;
(খ) সকল কর্তৃপক্ষ এবং সকল কর্মকর্তা, বিচারিক, নির্বাহী ও পরিচারক পাকিস্তান চর্চা সর্বত্র, সংবিধান দিবসের আগের মত,োঃতাদের নিজ নিজ প্র্যাকটিস চালিয়ে যাবে.
২২৮) পাকিস্তান ফেডারেশন বিরুদ্ধে বা এর দ্বারা পরিচালিত কার্যধারা .- (১) দফা (২) এর সাপেক্ষে ,. কোনো আইনি প্রক্রিয়া যা পাকিস্তানের ফেডারেশন “পাকিস্তান ফেডারেশন” কোন আদালতে বিচারাধীন থাকলে তারপর ঐ কার্যধারাতেই সংবিধান দিবসের আগে অর্থাৎ “পাকিস্তান” যে দিন থেকে সে দিন থেকে বাস্তবায়িত হবে।
(২) কোন আইনি প্রক্রিয়া যা, কিন্তু সংবিধানের জন্য, দ্বারা বা ‘পাকিস্তান ফেডারেশন বিরুদ্ধে তা সংবিধান দিবসের আগে, ফেডারেশনের দায়িত্ব যেমন ছিল এবং রয়েছে তা বহাল থাকবে। , সংবিধানের অধীন হয়ে একটি প্রদেশের দায়িত্ব বা সংশ্লিষ্ট প্রদেশের বিরুদ্ধে আনীত কোন ধরনের আইনি প্রক্রিয়া কোন আদালতে বিচারাধীন ্থাকলে সংবিধান দিবস আগে, পাকিস্তান ফেডারেশন প্রদেশের ঐ কার্যধারায়, যে দিন থেকে যেমন, প্রতিস্থাপিত হইয়াছে তেমনি চলবে।
২২৯। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একজন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা ফেডারেল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বা প্রাদেশিক সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য পদে অধিষ্ঠিত, সংবিধান দিবসের আগ থেকে যেমন ছিলেন তেমনি তার নিজ নিজ পদে বহাল অব্যাহত থাকবেন একই শর্তাবলী পারিশ্রমিক হিসেবে । বিশেষ সুবিধা সমূহ সংবিধান দিবস থেকেই প্রয়োগ হবে যতদিন না পর্যন্ত এর উপর কোনো আইন প্রয়োগ করা না হয়।
২৩০. আর্থিক বিষয়ের বিধান সমূহঃ (১)সংবিধানের নিয়ম – রাষ্ট্রীয় সরকার বা প্রাদেশিক সরকার দ্বারা রাষ্ট্রীয় তহবিল, বা প্রাদেশিক তহবিল অথবা এইরকম যেকোনো তহবিলের অর্থ গ্রহন বা উত্তলনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, ঐ অর্থবছরের প্রতিটি সাংবিধানিক দিন এবং পরের অর্থবছর সহ উপরন্তু ঐ অরথবছরের যা কিছু সাংবিধানিক উপযুক্ত ব্যয় তা ভারতীয় সরকার বিধান, ১৯৩৫ বলে যথাযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
(২) ১ নং দফার জন্য প্রযোজ্য, ভারতীয় সরকার আইন, ১৯৩৫ এবং এর অধীনস্থ যেকোনো উক্তি, চাহিদা, সময়সূচী অথবা যেকোনো দলিল – প্রবরতনের পর থেকেই যেকোনো অফিস, অথবা যেকোনো ব্যাক্তি, অথবা যেকোনো সেবা, অথবা অন্যান্য বিষয়ের জন্য প্রযোজ্য হবে।
(৩) ১ নং দফার উদ্দেশে, যদি কখনো জাতীয় সভা লীন হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে বার্ষিক সভায় উপস্থাপন না হওয়া এবং সভার কোন অনুমোদন ছাড়ায় যেকোনো ব্যয় অনুমোদন করতে পারবেন।
(৪)দফা ৩ প্রদেশের গভর্নরের জন্য প্রযোজ্য। এটি পরিবরতনের প্রয়োজন হলে গভর্নর এবং প্রাদেশিক সভায় – রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় সভার রেফারেন্স দিতে হবে।
(৫) যেসব হিসাব সংবিধান দিবসের আগে অডিট করা হয়নি, হিসাবাধ্যক্ষ এবং অডিটর-জেনারেল পাকিস্তানের সেই সব হিসাব অডিট করবেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সরকারের হিসাবের অডিট রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির কাছে দিতে হবে, যাতে তিনি জাতীয় সভার সামনে জবাবদিহি আদায় করতে পারেন। প্রাদেশিক সরকারের অডিট রিপোর্ট যাবে গভর্নরের কাছে, তিনি প্রাদেশিক সভার সামনে তাদের কাছে জবাবদিহি আদায় করবেন।
(৬) উপরন্তু আইন দ্বারা ধার্য করা সব ট্যাক্স এবং ফি সমুহ সংবিধান দিবসের ঠিক আগেই প্রদান করতে হবে, এবং উপযুক্ত আইন সভা দ্বারা রহিত না করা পর্যন্ত এটি চলতে থাকবে।
২৩১. উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি, অধিকার, দায় এবং বাধ্যবাধকতা- (১) সংবিধান দিবসের পূর্বে রাষ্ট্রীয় কাজে কায়েমকৃত সব সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় কাজেই বহাল থাকবে যদিনা সংবিধান দিবসে সেটি প্রাদেশিক কাজে বহাল করা হয়।
(২) সংবিধান দিবসের পূর্বে প্রাদেশিক কাজে কায়েমকৃত সব সম্পত্তি সংবিধান দিবসের দিন্ থেকেই প্রাদেশিক সরকারের কাজে ব্যবহৃত হবে।
(৩) সংবিধান দিবস পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের অধিকার, দায় এবং বাধ্যবাধকতা সংবিধান দিবসের দিন থেকে রাষ্ট্রীয় সরকার এবং নিম্নোক্ত প্রদেশের সরকারের জন্যও প্রযোজ্য হবে- যেকোনো বিষয়ে অধিকার, দায় এবং বাধ্য-বাধকতা প্রযোজ্য হবে- (ক) সংবিধান দিবসের আগে যেসব বিষয়ের দায়িত্বে কেন্দ্রীয় সরকার ছিল, সংবিধান দিবসে যদি সেই সব বিষয় প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্বে চলে যায়, তাহলে সংবিধান দিবসের পরে সেই সব বিষয় প্রাদেশিক সরকার দেখা-শোনা করবে। (খ) সংবিধান দিবসের আগে যেসব বিষয়ের দায়িত্বে প্রাদেশিক সরকার ছিল, সংবিধান দিবসে যদি সেই সব বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বে চলে যায়, তাহলে সংবিধান দিবসের পরে সেই সব বিষয় কেন্দ্রীয় সরকার দেখা-শোনা করবে।
২৩২. সরকারী কর্মচারীদের জন্য পরিবর্তন কালীন বিধানঃ যেকোনো প্রাদেশিক বা কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী সংবিধান দিবসের পূর্বে যেভাবে পাকিস্তান সরকারের কর্মচারী ছিল, সংবিধান দিবসের পরেও সেভাবেই সে তার কাজে বহাল থাকবে।
২৩৩। সচিব দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীদের জন্য পরিবর্তন কালীন বিধানঃ সংবিধানে স্পষ্ট ভাবে বলা না থাকলে, রাষ্ট্রীয় সচিব অথবা পরিষদের সচিব দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত প্রতিটি সরকারী কর্মচারী সংবিধান দিবসের পরেও রাষ্ট্রীয় অথবা প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে কর্মরত থাকবে। আগের মতই সে বেতনাদি, ভাতা, ছুটি এবং পেনশন এর জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। ২৩৪. প্রতিকুলতা নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রপতির ভুমিকাঃ ভারতীয় আইনের ১৯৩৫ এবং ১৯৪৭ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিকুলতা নিরসনের জন্য রাষ্ট্রপতি সমীচীন মনে করলে যেকোনো আইন প্রণয়ন, পরিবর্তন বা বাতিল করতে পারবেন।
উল্লেখ করা আছে যে প্রথম সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদের প্রথম সভার উক্ত ধরনের আদেশ প্রস্তুত করা যাবে
(২) এই অনুচ্ছেদের অন্তর্গত সকল আদেশ জাতীয় সংসদে পেশ করতে হবে এবং সংসদ কর্তৃক তা সংশোধিত বা বাতিল হতে পারে।
প্রথম তফসিল
(অনুচ্ছেদ ৩২ ও ৩৩)
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
১। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের যে কোন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন ও তা পরিচালনা করবেন, এবং তিনি উক্ত নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হবেন।
২। প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিবেন গন পরিষদ সদস্যদের সভায় সভাপতিত্ব করার জন্য, যা করাচীতে অনুষ্ঠিত হবে এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সভা বসবে যথাক্রমে ঢাকা ও লাহোরে।
৩। গন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনয়ন পত্র জমা দেয়া, মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার, যদি থাকে এবং নির্বাচনের সময় ও স্থান জানিয়ে দিবেন।
৪। গন পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের যে কোন সদস্য মনোনয়নের জন্য নির্ধারিত দিনে দুপুরের আগে যে কোন সময় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য যোগ্য কাউকে মনোনীত করতে পারেন গন পরিষদের প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন পত্র পাঠাতে পারেন যেখানে নিজে প্রস্তাবক হিসাবে, গন পরিষদের অন্য আরেকজন সদস্য সমর্থক হিসাবে স্বাক্ষর করবেন সাথে যুক্ত থাকবে যার নাম প্রস্তাব করছেন তার সম্মতিপত্র।
উল্লেখ থাকে যে, একই নির্বাচনে কোন ব্যক্তি একবারের বেশি প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসাবে একটির বেশি মনোনয়ন পত্রে স্বাক্ষর করতে পারবেন না।
৫। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে তার দ্বারাই যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হবে, এবং যাচাই-বাছাইয়ের পর যদি একজনের মনোনয়ন বৈধ হিসাবে গন্য হয়, তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার উক্ত মনোনীত ব্যক্তিকে নির্বাচিত ঘোষনা করবেন, অথবা একজনের বেশি মনোনয়ন বৈধ হয়, তবে তিনি গন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৈধভাবে মনোনীত ব্যক্তিদের নাম ঘোষনা করবেন যারা পরবর্তীতে প্রার্থী হিসাবে গন্য হবেন।
৬। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের নির্ধারিত দিনের দুপুরের আগে একজন প্রার্থী তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিতে পারেন নিজ হাতে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার বরাবর যার কাছে মনোনয়ন পত্র জমা আছে এবং এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন প্রার্থী যিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার জন্য বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন তা আর বাতিল করতে পারবেন না।
৭। যদি একজন ছাড়া বাকি সবাই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়, সেই একজনকে নির্বাচিত হিসাবে ঘোষনা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
৮। যদি কোন প্রার্থীতা প্রত্যাহার না থাকে বা যদি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পরে দুই বা ততোধিক প্রার্থী রয়ে যায়, তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থীদের নামে এবং তাদের প্রস্তাবক ও সমর্থকের নাম জানিয়ে দিবেন এবং পরবর্তী অনুচ্ছেদ মোতাবেক গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহনের জন্য পদক্ষেপ নিবেন।
৯। কোন প্রার্থীর মনোনয়ন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গৃহীত হবার পরে যদি তিনি মারা যান এবং প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক তার মৃত্যু প্রতিবেদন ভোট গ্রহনের আগেই প্রাপ্ত হয় তবে প্রিসাইডিং অফিসার তার মৃত্যু সংবাদ যথাযথ ভাবে গ্রহন সাপেক্ষে ভোট গ্রহনের পূর্বাদেশ প্রত্যাহার করতে পারবেন এবং উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন দিবেন এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সকল কার্যক্রম নতুন ভাবে শুরু করবেন যেমনটা নতুন নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়।
বলা থাকে যে, বৈধ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নতুন করে মনোনয়ন সংক্রান্ত কাজে অংশ নিতে হবে না ভোট গ্রহনের পূর্বাদেশ প্রত্যাহার করার ফলেঃ
আরো বলা থাকে যে, এই তফসিলের অনুচ্ছেদ ৬ মোতাবেক কোন ব্যক্তি ভোট গ্রহনের পূর্বাদেশ প্রত্যাহারের আগে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে থাকলে পুনরায় মনোনয়নের জন্য যোগ্য নতুন করে ভোট অনুষ্ঠানের জন্য।
১০। গন পরিষদের সদস্যদের এবং প্রতিটা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের সভায় ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে এবং স্ব স্ব প্রিসাইডিং অফিসার ভোট গ্রহন পরিচালনা করবেন প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে, যাদের ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অনুমোদন থাকতে হবে।
১১। একটি করে ব্যালট পত্র প্রদান করতে হবে গন পরিষদের সকল সদস্যদের জন্য এবং প্রাদেশিক পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের জন্য ও, যারা ভোটের জন্য গন পরিষদের সভায় উপস্থিত থাকবেন এবং তারা তাদের ভোট ব্যক্তিগতভাবে প্রদান করবেন যথাযথ ভাবে ব্যালট পেপার সনাক্ত করে, পরবর্তী অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী।
১২। ভোট গ্রহন করতে হবে গোপন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে যেখানে অক্ষরের ক্রমানুসারে প্রার্থীদের নাম ব্যালট পেপারে থাকবে যেসন প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নাই, এবং একজন ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে আড়াআড়ি চিহ্ন দিয়ে তার ভোট প্রদান করবেন।
১৩। মুড়ি যুক্ত ব্যালট পেপারের বই থেকে ব্যালট পেপার প্রদেয় হবে, ব্যালট পেপার ও প্রতিটা মুড়িতে নম্বর দিতে হবে; যখন ব্যালট পেপার কোন ব্যক্তিকে দেয়া হবে তখন তার নাম বইয়ের মুড়িতে উল্লেখ করতে হবে এবং ব্যালট পেপার সত্যায়িত হতে হবে প্রিসাইডিং অফিসারের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে।
১৪। ভোটার দ্বারা আড়াআড়ি চিহ্ন অংকিত ব্যালট পেপার তার মাধ্যমেই প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে থাকা ব্যালট বাক্সে জমাকৃত হতে হবে।
১৫। যদি কোন ব্যালট পেপার ভোটার কর্তৃক বিনষ্ট হয় তিনি চাইলে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে তা ফেরত দিতে পারেন, যিনি তাকে দ্বিতীয় আরেকটি ব্যালট পেপার প্রদান করবেন, প্রথমটি বাতিল এবং বইয়ের মুড়িতে যথাযথ ভাবে চিহ্নিত করার মাধ্যমে।
১৬। ব্যালট পেপার অবৈধ হবে যদিঃ
(i) যদি এর উপর ভোটদানকারী ব্যাক্তির সনাক্তকারী সরকারী সংখ্যা ছাড়া অন্য কোন নাম, শব্দ অথবা চিহ্ন থাকে; বা
(ii) এর উপর মুখ্য আধিকারীক কর্মকর্তার আদ্যক্ষর না থাকে; বা
(iii) এর উপর কাটা (X) চিহ্ন না থাকে; বা
(iv) কাটা (X) চিহ্ন দুই বা ততোধিক প্রার্থীর নামের বিপরীতে বসানো হয়; বা
(v) কোন প্রার্থীর নামের বিপরীতে কাটা (X) চিহ্ন বসানো হয়েছে তা নিয়ে সংশয় থাকে
১৭। ভোটগ্রহন শেষে প্রত্যেক মুখ্য আধিকারীক কর্মকর্তা প্রার্থী অথবা তার নির্বাচিত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ব্যালট বাক্স খুলবেন এবং খালি করবেন এবং সেখানে ব্যালট পেপারগেলো পরীক্ষা করে দেখবেন এবং অবৈধ ব্যালট বাতিল করে বৈধ ব্যালটে প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য প্রদত্ত ভোটসংখ্যা গণনা করবেন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সেই নথিভুক্ত ভোটের সংখ্যা অবহিত করবেন।
১৮। যদি মাত্র দুজন প্রার্থী থাকে তাহলে যিনি অধিক সংখ্যক ভোট পেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাকে নির্বাচিত ঘোষনা করবেন।
১৯। যদি তিন বা ততোধিক প্রার্থী থাকে এবং তাদের একজন অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত সম্মিলিত ভোটের চেয়ে অধিক পরিমাণ ভোট লাভ করেন তাহলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাকে নির্বাচিত ঘোষনা করবেন।
২০। যদি তিন বা ততোধিক প্রার্থী থাকে এবং ঠিক পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদটি কার্যকর না হয় তাহলে এই তফসিলের পূর্ববর্তী বিধানাবলী অনুযায়ী পূর্ববর্তী নির্বাচনে ন্যূনতম ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ব্যাতিরেকে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২১। সর্বশেষ তিনটি অনুচ্ছেদ পরবর্তী যেকোন ভোটগ্রহন অথবা ততপরবর্তীতে যেকোন প্রয়োজনীয় ভোটগ্রহনের জন্য এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী অনুসারে প্রযোজ্য হবে।
২২। যদি কোন ভোটগ্রহনে দুই বা ততোধিক প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত হন তাহলেঃ
ক। নির্বাচনের হজন্য যদি মাত্র দুইজন প্রার্থী থাকে অথবা
খ। যদি প্রার্থীদের মধ্যে একজন এই তফসিলের অনুচ্ছেদ ২ এর বিধান অনুযায়ী পরবর্তী ভোটগ্রহণের জন্য ছাটাই অথবা বাছাই হন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তবে তা হবে ভাগ্য নির্ধারণের মাধ্যমে।
২৩। যখন কোন ভোটগ্রহনের পর ভোট গণনা সম্পন্ন হবে এবং ভোটের ফলাফল নির্ধারিত হবে তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সামনে তা ঘোষণা করবেন এবং তা রাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রতিবেদন করবেন, যিনি পরবর্তীতে প্রকাশ্য প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেই ফলাফল প্রকাশের ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন।
২৪। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে প্রকাশ্য প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তফসিলের কার্যকারিতা নির্বাহের জন্য বিধিমালা প্রণয়ন করতে পারবেন।
তৃতীয় তফসিল
(ধারা ১৫৯ এবং ১৭৭)
বিচারপতিগণ
প্রথম অংশ
সর্বোচ্চ আদালত
১। বিচারকগণের বেতন ও ভাতাঃ
১।পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতিকে প্রতি মাসে ৫,৫০০ রুপি এবং সর্বোচ্চ আদালত এর অন্যান্য প্রত্যেক বিচারক কে প্রতি মাসে ৫,১০০ রুপি করে বেতন দেয়া হবে।
২। সর্বোচ্চ আদালত এর অন্যান্য প্রত্যেক বিচারক এমন বিবিধ সুবিধাদি ও ভাতা ভোগ করার জন্য উপযুক্ত হবেন যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে প্রথম যোগদানের জন্য সরঞ্জাম খরচ এবং যাতায়াত ভাতা, এবং রাষ্ট্রপতির অধিকারবলে নির্ধারিত ছুটি এবং অবসর ভাতা, এবং সেই ভাতা নির্ধারিত হবার আগ পর্যন্ত সেইসব ভাতা এবং সুবিধাদী সমূহ যা সংবিধান দিবসের অব্যবহিত পূর্বে রাষ্ট্রীয় আদালতের বিচারকদের জন্য ধার্য ছিল, এবং এই মর্মে ভারতীয় সরকার (রাষ্ট্রীয় আদালত) আদেশ, ১৯৩৭, সংবিধানের বিধিমালা মোতাবেক কার্যকর হবে।
২। সর্বোচ্চ আদালত এর কর্মকর্তা এবং করমচারীঃ
১। সর্বোচ্চ আদালত এর কর্মকর্তা এবং করমচারী নিযুক্ত হবেন পাকিস্থানের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক অথবা ঐ আদালতের অন্য এমন কোন বিচারক বা কর্মকর্তা কর্তৃক যাকে তিনি রাষ্ট্রপতির পূর্ব অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ আদালত এর বিধিমালা মোতাবেক নির্দেশ দেবেন।
২। সর্বোচ্চ আদালত এর কর্মকর্তা এবং করমচারীদের চুক্তি এমন হবে যা সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক প্রণীত বিধিমালায় নির্দেশিত হতে পারেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, সম্মানী এবং ছুটি সংক্রান্ত বিধিমালার জন্য রাষ্ট্রপতির পূর্ব অনুমোদন লাগবে।
৩। সর্বোচ্চ আদালত এর বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাঃ রাষ্ট্রপতির পূর্ব অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ আদালত, আদালতের কার্যপ্রণালী এবং অনুশীলন পরিচালনার জন্য বিধিমালা প্রনয়ন করতে পারবে, নিম্নোক্ত বিধিসমূহ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবেঃ
ক। আদালতে আইন চর্চাকারী ব্যাক্তিবর্গ
খ। সেসব শর্ত সমূহ যার সাপেক্ষে আদালতের কোন রায় বা আদেশ পুনঃমূল্যায়ন করা হবে এবং এই পুনঃমূল্যায়নের প্রক্রিয়া যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে পুনঃমূল্যায়ন আবেদনের সময়সীমা
গ। আপীল এবং আবেদনের শুনানীর প্রক্রিয়া যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে আপীল এবং আবেদনের সময়সীমা
ঘ। ধারা ১৫৯ এর অনুচ্ছেদ (গ) অনুযায়ী আপীল গ্রহণ
ঙ। আদালতের কোন কার্যধারার মুল্য ও আনুষাঙ্গিক খরচ;
চ। আদালতের কোন কার্যধারার জন্য নির্ধার্য ব্যয়
ছ। আদালতের কাছে অসার বা হয়রানিমূলক অথবা সময়ক্ষেপ জন্য আনীত বলে প্রতীয়মান হয় এমন কোন আপীলের সারমর্ম নির্ধারণের প্রক্রিয়া ;
জ) কোন উদ্দেশ্যে বসা বিচারকবৃন্ধ এবং কোন বিভাগে একা বসে থাকা বিচারকদের ক্ষমতা।
ঝ) বিচারকার্য এবং জামিন মঞ্জুরিকরণে থাকা।
ঞ) অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য আদলতে পাঠানো প্রতিবেদনের মতামত।
২। কৃত্রিম কোর্টের দ্বারা কোন রায় প্রদান করা হবে না এবং কোন প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হবেনা। তবে তা খোলা আদালতে সংরক্ষণ করা হবে। মামলার শুনানিতে উপস্থাপিত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের আলোচনার মাধ্যমে রায় হলেও ভিন্নমত প্রদর্শনকারী বিচারককে তার রায় বা মতামত প্রদানে কোন কিছু নিবৃত্ত করতে পারবে না।
৩। এই অনুচ্ছেদের অধীনে প্রণীত বিধির বিধান পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি নির্ধারণ করবেন কোন বিচারকদের কোন বিভাগ গঠন করতে হবে এবং কোন বিচারকরা কোন উদ্দেশ্য হাসিলে বসবেন।
দ্বিতীয় অংশ
উচ্চ আদালতসমূহ
৪। বিচারকদের বেতনঃ (১) উচ্চ আদলতের প্রধান বিচারপতিদের প্রতিমাসের বেতন হবে ৫,০০০ Rs এবং অন্যান বিচারপতিদের বেতন হবে ৪,০০০ Rs.
(২) প্রত্যেক বিচারপতিদের নিম্নোক্ত সুবিদাহ ও ভাতা প্রদান করতে হবেঃ
I. যান্ত্রিক ও ভ্রমনভাতা
II. অনুপস্থিতি ও পেনশন ভাআ (সম্ভবত রাষ্ট্রপতি নির্ধানরণ করে)
III. সাংবিধানিক (পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত) ভাতা
IV. আর ভারত্তীয় সরকারের ১৯৩৭ সালের (উচ্চ আদালত) বিধি অনুযায়ী যাবতীয় সুযোগ প্রয়োগ
৫। উচ্চ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকান্ডঃ (১) উচ্চ আদালত দেশের অন্য আদালতসমূহকে তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করবে।
(২) পূর্ববর্তী বিধানের সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করে উচ্চ আদালত নিন্মোক্ত অধিকার সংরক্ষন থাকেঃ
ক) কারো অবসর ঘোষনা করা
খ) আইন জারী ও প্রয়োগ নির্দেশনা দেওয়া
গ) যেকোন কোর্টে নিয়োজিত অফিসাররের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা
ঘ) আদালতের যাবতীয় যথা এটর্নী, সকল কেরাণী ও জাতীয় আদলতের সকল কর্মচারী-কর্মকর্তার যাবতীয় বেতন নির্ধারণ করা।
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধরনের নিয়ম-কানুন গঠনতন্ত্রের সাথে সঙ্গতিহীন হবে না। কোন আইনের বিধান বলবৎ করার সময়ে গভর্নরের পূর্বানুমেদন প্রয়োজন হবে।
৬. উচ্চ আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং খরচপত্র- (১) গভর্নরের পূর্ব সমর্থন সাপেক্ষে উচ্চ আদালতের বিধি-বিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি অথবা আদালতের অন্যান্য সমমর্যাদার বিচারপতি বা কর্মকর্তাগণ উচ্চ আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ পদ্ধতি পরিচালনা করবেন।
(২) প্রাদেশিক আইনসভার যেকোন আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে উচ্চ আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবার শর্তাবলী উচ্চ আদালতের নিয়ম দ্বারা বিহিত হবে। তবে এক্ষেত্রে পারিশ্রমিক বা ছুটি প্রদানের সাথে সম্পর্কিত বিধানগুলির ক্ষেত্রে গভর্নরের পূর্ব সম্মতি লাগবে।
৭. উচ্চ আদালতে অনুশীলনের অধিকার- উচ্চ আদালতে কর্তব্যরত একজন আইনজীবী উচ্চ আদালত ও অধস্তন অন্য সকল আদালতের কার্যকলাপ তকালতি করার জন্য নিযুক্ত থাকবেন এই শর্তে যে, উচ্চ আদালতের কর্তব্য হতে বিতাড়িত কোন আইনজীবী উচ্চ আদালত ও অধস্তন অন্য সকল আদালতের কার্যকলাপ তকালতি করার জন্য নিযুক্ত থাকবেন না।
চতুর্থ কর্মপরিকল্পনা
(অণুচ্ছেদ ২১৭)
সাময়িক বিধানাবলি
পার্ট I
পারিশ্রমিক এবং সুযোগ-সুবিধা
১. সংবিধান স্বীকৃত যে, সংসদে ভিন্ন আইন পাশ না হওয়া পর্যন্ত নিন্মোক্ত ছকের কলাম-১ এ উল্লেখিত অফিসগুলোতে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ ছকের কলাম-২ এ পাশাপাশি লিপিবদ্ধ উল্লেখিত অফিসগুলোতে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের অনুরূপ পারিশ্রমিক এবং সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকবেন।
ছক
কলাম-১ কলাম-২
রাষ্ট্রপতি
জাতীয় পরিষদের স্পিকার
প্রধানমন্ত্রী
কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী
কেন্দ্রীয় সরকারের উপমন্ত্রী
জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার
জাতীয় পরিষদের সদস্য
প্রদেশের গভর্নর
গভর্নর জেনারেল
গণপরিষদের স্পিকার
প্রধানমন্ত্রী
গভর্নর জেনারেলের মন্ত্রী
গভর্নর জেনারেলের প্রতিমন্ত্রী
গভর্নর জেনারেলের উপমন্ত্রী
গণপরিষদের ডেপুটি স্পিকার
গণপরিষদের সদস্য
একই প্রদেশের গভর্নর
অংশ ২
নির্বাচন সংক্রান্ত বিধান
২। বাসস্থানঃ ১। একজন ব্যক্তি একটি নির্বাচনী এলাকায় বাসিন্দা বলে গণ্য হবে যদি সে সচরাচর সে আসনে বসবাস করে অথবা সেই আসনে কোন বাড়ির মালিক হয় অথবা সেখানে তার দখলে কোন আবাসিক বাড়ি থাকে।
তবে শর্ত থাকে যে,
ক। কোনো ব্যক্তি যিনি কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকার এর মন্ত্রী বা স্পিকার, বা জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদের সহকারী স্পিকার হিসেবে কার্যালয়ে দায়িত্বরত থাকলে, তিনি তার দায়িত্বকালের যে কোন সময় ঐ দায়িত্বে না থাকলে যে আসনের বাসিন্দা বলে বিবেচিত হতেন, সেই আসনের বাসিন্দা বলে বিবেচিত হবেন।
খ। কোনো ব্যক্তি যিনি পাকিস্থানের কোন সরকারী কার্যালয়ে কার্যরত অথবা পাকিস্থানের সেবায় নিযুক্ত, তিনি তার দায়িত্বকালের যে কোন সময় ঐ দায়িত্বে না থাকলে বা নিযুক্ত না হলে যে আসনের বাসিন্দা বলে বিবেচিত হতেন সেই আসনের বাসিন্দা বলে বিবেচিত হবেন।
২। কোন ব্যক্তি যখন কোন আসনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা অর্জন করে তখন অনুচ্ছেদ ২ এর অনুবিধি অনুযায়ী তার স্ত্রীও সেই যোগ্যতা অর্জন করে যদি না অন্যথা যোগ্যতাসম্পন্ন হয়।
৩। (১) কোন ব্যক্তি জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন যদি তার নাম কোন আসনের ভোটার তালিকায় উপস্থিত থাকে।
(২) কোন ব্যক্তি প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন যদি তার নাম সেই প্রদেশের ভোটার তালিকায় উপস্থিত থাকে।
৪। জাতীয় পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের জন্য অযোগ্যতাঃ ১। কোন ব্যক্তি নির্বাচিত হবার অথবা জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হওয়ার জন্য অযোগ্য হবেনঃ
ক। যদি তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হন, এবং তা একটি উপযুক্ত আদালত কর্তৃক ঘোষিত হয়;
খ। যদি তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হন, তবে শর্ত থাকে যে, এই অযোগ্যতা যে তারিখে তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হয়েছেন তার থেকে দশ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্থগিত হবে।
গ। যদি তিনি পাকিস্তানের সেবায় কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;
ঘ। যদি তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় অথবা নির্বাচন বিধি কার্যধারায় নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক বা অবৈধ অনুশীলনের প্রমাণ পাওয়া যায় যেটি আইন দ্বারা অপরাধ অথবা জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদের পরিষদের সদস্যতার অযোগ্যতা বলে গণ্য হয়েছে, যদি না সেই আইনের বিধানাবলী দ্বারা উল্লেখিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে থাকে।
ঙ। যদি জাতীয় পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে অথবা মনোনীত কোন ব্যক্তির নির্বাচনী প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদ্ধতিতে নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হন:
তবে শর্ত থাকে যে, এই অযোগ্যতা বিবরণী দায়ের করার নির্ধারিত দিনের পর এক মাস অথবা জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল যে সময় অনুমোদন করতে পারেন তা অতিবাহিত হবার আগে কার্যকর হবে নাঃ
আরও শর্ত থাকে যে, এই অযোগ্যতা স্থগিত হবে যখনঃ
(১) বিবরণী দায়ের করার নির্ধারিত দিনের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত হবে অথবা,
(২) জাতীয় পরিষদে নির্বাচনের নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী দায়েরের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী দায়েরের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কর্তৃক, এই অযোগ্যতা বিলুপ্ত হবে;
চ। যদি তিনি ব্রিটিশ ভারতের একটি আদালত দ্বারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার তারিখের আগে অথবা ঐ দিনের পর পাকিস্থানের কোন আদালত কর্তৃক কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে থাকেন এবং দুই বছরেরও কম সময়ের জন্য অপসারণ বা কারাদন্ডে দন্ডিত হন, যদি না তারপর পাঁচ বছর অথবা যেকোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এর চেয়ে কম যে সময় জাতীয় পরিষদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল নির্ধারণ করতে পারেন তা অতিবাহিত হয়।
ছ। যদি তিনি সর্বোচ্চ আদালত বা কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সুপারিশে পাকিস্তানের সেবা থেকে অসদাচরণের জন্য বরখাস্ত হন, তবে শর্ত থাকে যে, এই অযোগ্যতা বরখাস্ত হবার দিনের ৫ বছর পর অথবা ঐ সময়ের মধ্যে যেকোন সময়ে প্রাদেশিক কোন চাকুরী থেকে বরখাস্তের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল অথবা অন্যকোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক দূরীভূত হলে তা স্থগিত হবে।
জ। যদি তিনি নাগরিকত্ব স্থগিত করেন, অথবা স্বেচ্ছায় একটি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন, বা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য বা বশ্যতা ঘোষণা করেন।
২। এই অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ ১ এর দফা ৩ এর জন্য সর্বোচ্চ আদালত অথবা উচ্চ আদালতের বিচারকগণ এবং হিসাবাধ্যক্ষ ও মহানিরীক্ষক পাকিস্থানের সেবায় লাভজনক পদে কার্যরত বলে বিবেচিত হবেন।
অংশ ২
জাতীয় পরিষদের কার্যপ্রণালী এবং সুবিধাবলী
৫। কার্যবিধিঃ অনুচ্ছেদ ৫৫ এর অধীনে পরিষদ কর্তৃক বিধিমালা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের কার্যপ্রণালী, সংবিধান দিবসের অব্যব্যহিত পূর্বে কেন্দ্রীয় আইনসভা হিসেবে কার্যরত গণপরিষদ এর বিধিমালা এবং তাতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আনীত সম্ভ্যাব্য পরিবর্তন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
৬. নাগরিক সুবিধাসমূহ- অণুচ্ছেদ ৫৬ এর পক্ষে সংসদে আইন পাশ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পরিষদ, উহার কমিটি ও সদস্যগণ এবং তার অন্তর্ভুক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বক্তাদের নাগরিক অধিকারসমূহ সংবিধান দিবসের আগমূহুর্তে ক্ষমতাপ্রাপ্ত গণপরিষদের ন্যায় থাকবে।
৭. অর্থ কমিটি- (১) ভারত সরকার আইন, ১৯৩৫ কতৃক মঞ্জুরিত সীমার আওতাভুক্ত কিংবা উক্ত সময়ে বলবৎ উপযোজন আইনের সীমাভুক্ত জাতীয় পরিষদের খরচাদি উক্ত পরিষদ দ্বারা অর্থ কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হবে।
(২) অর্থ কমিটি সভাপতি হিসেবে স্পিকার এবং অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় পরিষদ দ্বারা নির্বাচিত এমন অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গঠিত হবে।
(৩) অর্থ কমিটি নিজের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ম বানাতে পারবে।
৮. জাতীয় পরিষদের সচিবালয়- (১) জাতীয় পরিষদের তার নিজস্ব সচিবালয়ের কর্মী থাকবে।
(২) সংসদ আইন দ্বারা জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ে নিযুক্ত কর্মীদের নিয়োগ ও সেবা প্রদানের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
(৩) সংসদ কর্তৃক বিধান সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত, রাষ্ট্রপতি জাতীয় পরিষদের স্পিকারের সাথে পরামর্শের পর জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ের কর্মীদের নিয়োগ ও সেবা প্রদানের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি করতে পারবে। এভাবে তৈরিকৃত যেকোন নিয়মের আইনের বিধানের উপর প্রভাব থাকবে।
৪র্থ অধ্যায়
ক-প্রদেশগুলোতে পারিশ্রমিক ও নাগরিক সুবিধাসমূহ
৯. প্রাদেশিক আইনসভা অন্য নিয়ম না করা পর্যন্ত পারিশ্রমিক ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধাসমূহ নিন্মোক্ত ছকের কলাম ১ এ উল্লেখিত কর্মকর্তাদের এই ছকের কলাম ২ এ পাশাপাশি রাখা কর্মকর্তাদের সমপরিমাণ থাকবে যেমনটি সংবিধান দিবসের আগমূহুর্তে স্বীকার করা হয়েছিল।
ছক
কলাম ১ কলাম ২
প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী
প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী
প্রাদেশিক সরকারের উপমন্ত্রী
প্রাদেশিক সরকারের সংসদীয় সচিব
প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার
প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকার
প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য
উক্ত প্রদেশের গভর্নরের মুখ্যমন্ত্রী
উক্ত প্রদেশের গভর্নরের মন্ত্রী
উক্ত প্রদেশের গভর্নরের উপমন্ত্রী
উক্ত প্রদেশের গভর্নরের সংসদীয় সচিব
উক্ত প্রদেশের আইনসভার স্পিকার
উক্ত প্রদেশের আইনসভার ডেপুটি স্পিকার
উক্ত প্রদেশের আইনসভার সদস্য
বি- কার্যপ্রনালী এবং প্রাদেশিক পরিষদের বিশেষ সুযোগ
১০.কার্যপ্রণালী বিধিঃ ধারা-৮৯ প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত,প্রাদেশিক পরিষদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রিত হতো সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক আইনসভার বিধি দ্বারা,সংশোধনী সাপেক্ষে গভর্নর তৈরী করা যেতে পারে।
১১. বিশেষাধিকারঃ প্রাদেশিক আইনসভার একটি আইন ধারা-৮৯ প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, একটি প্রাদেশিক পরিষদ, এর সদস্য ও কমিটি,এবং ব্যক্তি যার কার্যধারায় অংশগ্রহণ করবে সে প্রদেশের আইনসভা সংবিধানের আগের দিন অবিলম্বে একই থাকবে।
১২.অর্থকমিটিঃ (১) প্রাদেশিক পরিষদের ব্যয়সীমা ইন্ডিয়া অ্যাক্ট ১৯৩৫ এর মধ্যেই সরকারের অধীনে অনুমোদিত, অথবা, আপাতত বলবত কারণে উপযোজন আইনের সীমার মধ্যে,যে পরিষদের পরামর্শক্রমে ভারপ্রাপ্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে, তা অর্থকমিটির।
(২)অর্থকমিটি হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের দ্বারা স্পিকার, অর্থ মন্ত্রী নির্বাচিত করা যেতে পারে এবং এই ধরনের অন্যান্য সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে।
(৩) অর্থকমিটি তার নিজস্ব কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ বিধি প্রণয়ন করতে পারবে।
১৩.প্রাদেশিক পরিষদ সচিবালয়- (১) প্রাদেশিক পরিষদের নিজস্ব সাবিচিক কর্মকারী থাকবে।
(২) প্রাদেশিক পরিষদের আইন দ্বারা নিয়োগ ও ব্যক্তিদের চাকরীর শর্তাবলী প্রাদেশিক পরিষদের কর্মচারীরা নিয়ন্ত্রণ করবে।
(৩) যতক্ষণ পর্যন্ত বিধান প্রাদেশিক আইনসভা দ্বারা তৈরী করা না হয়, গভর্নর পরে আইনসভার স্পিকারের সহিত পরামর্শক্রমে,নিয়োগ ও পরিষদের সাবিচিক কর্মচারীদের নিযুক্ত ব্যক্তিদের চাকুরীর শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা প্রণয়ন, তাই প্রণীত বিধিমালা যে কোন আইনের বিধানাবলী কার্যকর হবে। পঞ্চম তফসিল (ধারা-১০৬)
যুক্তরাষ্ট্রীয় তালিকা
১.পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং এর প্রতিটি অংশ, এবং সব কাজ সেখানে সংযুক্তের ব্যবস্থা রয়েছে। নেভাল,সামরিক এবং বিমান বাহিনী এবং অন্যান্য কোন সশস্ত্র বাহিনূ উথ্থাপিত বা পরিচালিত রেডেরেশনের সরকার কর্তৃক হত।সশস্ত্র বাহিনী যা ফেডারেশনের বাহিনী নয় বরং ফেডারেশনের অন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনীর সাথে অপারেটিং সংযুক্ত।
শিল্পকারখানা সমূহ প্রতিরক্ষার সাথে সংযুক্ত। ইহার উৎপাদিত পণ্যের জন্য পারমানবিক শক্তি এবং খনিজ সম্পদ অত্যাবশ্যক।
সেনানিবাস অঞ্চলের অধিকৃত সীমানা; সেনানিবাস অঞ্চলের স্হানীয় স্বায়ত্তশাসন; সেনানিবাস কতৃপক্ষের এরূপ অঞ্চলের মধ্যকার সংবিধান, ক্ষমতা এবং ক্রিয়াকলাপ, এরূপ অঞ্চলসমুহে গৃহ আবাসস্হানের নিয়ন্ত্রণ (ভাড়ার নিয়ন্ত্রসহ)
অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক পদার্থের উৎপাদন
২. বৈদেশিক নীতি, যা পাকিস্তানের সহিত বহিঃবিশ্বের যেকোনো দেশের মধ্যকার সম্পর্ক স্হাপন করেছে যেখানে সকলবিষয়সমূহ সংযুক্ত।
কূটনৈতিক সংগঠনসমূহ ;আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশগ্রহন এবং তৎসংশ্লিষ্ট সম্পাদন।
শান্তি ও সংঘর্ষ; বৈদেশিক রাষ্ট্রসমুহের সাথে বিবিধ চুক্তি সম্মেলন, প্রজ্ঞাপন এবং অন্যান্য সমঝোতাসমূহ প্রস্তাবন এবং বাস্তবায়ন।
অন্তঃপ্রবেশ, প্রবাসগমন এবং পাকিস্তানি হতে নির্বাসন; বহিঃসমর্পণ, পাস্পরত,ভিস, অনুমতিদান এবং অন্যান্য এইরূপ নথিপত্র, পাকিস্তানের বাইরে তীর্থযাত্রী গমন এবং পাকিস্তানের বাহির হতে নাগরিকের ভেতরে আগমন। পরিসেবা, তৎসংশ্লিষ্ট সংযোজিত হাসপাতালসমূহ অন্তরভুক্ত,নাবিক এবং সামুদ্রিক হাসপাতালসমূহ।
৩. নাগরিকত্ব, নাগরিকত্বদান এবং বহিরাগত নাগরিক।
৪. প্রদেশসমূহের মধ্যকার ব্যবসা এবং বাণিজ্য, এবং বহিঃশুক্ল সীমান্তের মধ্যদিয়ে বৈদেশিক রাষ্ট্রসমূহের সাথে আমদানি রপ্তানি।
৫. মুদ্রা, মুদ্রায়ন এবং বৈধ টেন্ডার; বৈদেশিক বিনিময় এবং হস্তান্তরযোগ্য দালিলিক আইন, পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংক, ব্যাংকিং (সমবায় ব্যাংকিং ব্যতীত) এবং ব্যবসা এক প্রদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
৬. ফেডারেশনের নাগরিকঋণ, ফেডারেল সংযুক্ত তহবিলের নিরাপত্তার ঋণগ্রহন, বৈদেশিক ঋণ।
৭. কোন একক প্রদেশের মধ্যে স্টক একচেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ বাজারের বস্তু এবং ব্যবসা সীমাবদ্ধ নয়।
৮. বিমা এবং প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক উত্তরন, প্রবিধান, একত্রীভবন, যেখানে লেনদেন মুখ্য নয় (কিন্তু সমবায় সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয় বা পৌর ও স্হানীয় সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত নয়) এবং একই প্রদেশের ব্যবসায়িক এবং বৈষয়িক বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
৯. কপিরাইট, নমুনা, নকশা ও উদ্ভাবন, বাণিজ্য ও ব্যবসায় চিহ্ন, পাকিস্তানের বাইরে রপ্তানিকৃত পণ্যের গুনগত মান।
১০. ওজন এবং পরিমাপের আদর্শিক মান সংস্থাপন।
১১. নেভিগেশন এবং শিপিং উপকূলীয় শিপিং অন্তরভুক্ত(কিন্তু একক প্রদেশে সীমাবদ্ধ উপকূলীয় শিপিং ব্যতীত); আকাশপথ; বিমানঘাটি, বিমানযান এবং উদ্ভয়ন নভিগেশন, এবং সকল বিষয়ে সম্পর্কিত প্রাসাঙ্গিক বিষয়াদি; শিপিং এবং বৈমানিক যানের নিরাপত্তার জন্য লাইটহাউস এবং অন্যান্য বিধানবলী।
১২. গুরত্বপূর্ণ বন্দরসমূহ, যেখানে এই ধরনের বন্দরের সীমানা নির্ধারণ, ঘোষণা, সংবিধান এবং সেইক্ষেত্রে বন্দর কতৃপক্ষের ক্ষমতা; অধিকৃত জলসীমার বাইরে মৎস্য আহরন এবং মৎস্য সম্পদ।
১৩. ডাক ও টেলিযোগাযোগের সকল ধরন, টেলিভিশন এবং সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত, ডাক অফিস সুরক্ষিত ব্যাংক।
১৪. শিল্পকারখানাসমূহ; ফেডারেশন দ্বারা পুরোপুরি বা আংশিক মালিকানাধীন, বা ফেডারেশনের কর্পোরেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
১৫. খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস।
১৬. সংবিধান, প্রশাসন, বিছার ব্যবস্থা এবং সুপ্রীম কোর্টের ক্ষমতা (যেমন আদালত অবমাননাসহ) এবং ফি গ্রহনসহ, ব্যক্তির সুপ্রীম কোর্টের পূর্বে অনুশীলন শিরনামে কার্যাদি সম্পাদন।
১৭. জাতীয় পরিষদ, প্রাদেশিক পরিষদ এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন।
১৮. সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এবং তদন্ত সংস্থা; প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র বা পাকিস্তানের সাথে নিরাপত্তার সংযুক্ত কারনে নিবৃত্তিমূলক আটক; নাগরিক/ ব্যক্তি এইরূপ আটকে অধিগ্রস্থ।
১৯. আদমশুমারি; পাকিশ্তানের জরিপ; পাকিস্তানের ভুতাত্ত্বিক জরিপ; আবহাওয়া সংগঠন।
২০. ফেডারেশনের সম্পত্তি এবং তা থেকে উৎকৃত রাজস্ব, তা যেকোনো প্রদেশেই অধিষ্ঠিত হতে পারে।
২১. ফেডারেল সংস্থা এবং ফেডারেল প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য বিশেষ শিক্ষা এবং গবেষণা; ফেডারেশনের অর্থায়ন দ্বারা লাইব্রেরী এবং জাদুঘর পরিচালিত।
২২. ফেডারেল পরিসেবা এবং ফেডারেল কর্ম কমিশন, ফেডারেল অবসরভাতা।
২৩. ফেডারেল সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের সদস্য, স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারের পারিশ্রমিক; প্রধান হিসাব নিরক্ষক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং প্রাদেশিক গভর্নরের পারিশ্রমিক।
২৪. রাষ্ট্রপতি এবং গভর্নরের বিশেষাধিকার এবং দায়মুক্তি।
২৫. জাতীয় সংসদ, সদস্যবৃন্দ এবং উহার কমিটির ক্ষমতা, বিশেষাধিকার এবং অব্যাহতি; এবং জাতীয় সংসদের কমিটির আগে নথিপত্র প্রনয়ন বা প্রমাণস্বরূপ ব্যক্তির উপস্থিতির প্রয়োগ।
২৬। শুল্ক বিভাগের দায়িত্ব (রপ্তানি শুল্ক সহ); আবগারি শুল্ক (লবনের উপর শুল্ক সহ, তবে মদ্য পানীয়, আফিম ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য বাদে) বানিজ্যিক কর ও আয়ের উপর কর কৃষিজাত আয় ছাড়া; স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির উপর কর কৃষি জমি ছাড়া; সম্পদের মুল্যমানের উপরে কর কৃষি জমি ব্যতীত; ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ধার্যকৃত কর; মালামালের উপরে প্রান্তিক কর বা বিমান ও জাহাজে যাত্রীদের ভাড়া ও মাল বহনের উপরে কর; খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর কর
২৭। আদালত কর্তৃক গৃহীত খরচের তালিকার বাইরের যে কোন খরচ।
২৮। উক্ত তালিকার যে কোন বিষয়ের প্রয়োজনে করা অনুসন্ধান এবং পরিসংখ্যান।
২৯। সর্বোচ্চ আদালত ছাড়া সকল আদালতের ক্ষমতা এবং আইনগত অধিক্ষেত্র, উক্ত তালিকার যে কোন বিষয়কে সমুন্নত রেখে, তালিকার যে কোন বিষয়ের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে আইন অবমাননা।
৩০। সংবিধানের অধীনস্থ সব বিষয়াদি সংসদের আইনগত ভিত্তির সাথে সঙ্গতিপূর্ন হবে এবং অধিকন্তু বিষয় গুলো প্রাসঙ্গিক ও হবে।
সমবর্তী তালিকা
খন্ড ১
১। দেওয়ানী এবং ফৌজদারী আইন, কার্যপ্রনালী ও প্রামানিক তথ্য আইন, সীমাবদ্ধতা, বিবাহ ও বিচ্ছেদ, সংখ্যালঘু ও শিশু সহ; দত্তক গ্রহন, যৌথ পরিবার ও বিভাজন; ব্যক্তি আইন সাপেক্ষে সংবিধান দিবসের আগে আইনগত প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের সকল বিষয়; ইচ্ছাপত্র বিহীন; অনুক্রম, ও সম্পত্তির স্থানান্তর (কৃষিজমির স্থানান্তর বাদ দিয়ে); দলিল ও নথিপত্রে নিবন্ধন; সালিশ; চুক্তি; অংশীদারিত্ব; এজেন্সী; দেউলিয়াপনা ও অর্থশুন্যতা; মামলাযোগ্য অন্যায়; আইন ও চিকিৎসা পেশাজীবীদের আদালত অবমাননা; ট্রাস্ট ও ট্রাস্টি।
২। বৈজ্ঞানিক ও শিল্পজাত গবেষনা
৩। বিষ ও বিপদজনক ঔষধ সমূহ৪। পত্রিকা, বই ও ছাপানো প্রকাশনা; ছাপাখানা
খন্ড ২
৫। কর্মীদের মধ্যকার সম্পর্ক; শ্রমিক সমিতি; শিল্প সংক্রান্ত ও শ্রমিক বিরোধ, শ্রমিক কল্যান কাজের পরিবেশ সহ; ভবিষ্যতের জন্য তহবিল; নিয়োগকারীর দায়বদ্ধতা; শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ; বয়স্কদের জন্য পেনশন ও মাতৃত্বকালীন ভাতা; শ্রমিকদের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষন; সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক বীমা।
৬। দুর্নীতি বিরোধি ব্যবস্থা
৭। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন
৮। শরনার্থীদের ত্রান ও পুনর্বাসন; উদ্বাস্তুদের সম্পদ রক্ষনাবেক্ষন, ব্যবস্থাপনা ও অপসারন।
৯। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিকল্পনা
১০। বানিজ্যিক ও শিল্প সংক্রান্ত একাধিপত্য, সম্মিলন ও ট্রাস্ট
১১। আন্ত প্রাদেশিক অভিবাসন ও পৃথকীকরন
১২। খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস বাদে লৌহ, ইস্পাত, কয়লা ও খনিজ পন্য
১৩। ফেডারেল তালিকার সাপেক্ষে ব্যাংকিং, বীমা ও কর্পোরেশন
১৪। স্টক এক্সচেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ বাজার ফেডারেল তালিকার ভিত্তিতে
১৫। জাতীয় ভাবে গুরুত্বপূর্ন প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা
১৬। অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক, ফেডারেল তালিকার ভিত্তিতে
১৭। অনুসন্ধান ও পরিসংখ্যান, উক্ত তালিকার যে কোন বিষয়ের প্রয়োজনে
১৮। ব্যয় খরচ, উক্ত তালিকার যে কোন বিষয়ের জন্য
১৯। সর্বোচ্চ আদালত ছাড়া সকল আদালতের ক্ষমতা এবং আইনগত অধিক্ষেত্র, উক্ত তালিকার যে কোন বিষয়কে সমুন্নত রেখে, তালিকার যে কোন বিষয়ের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে আইন অবমাননা।
প্রাদেশিক তালিকা
১। গন নির্দেশ (বেসামরিক প্রশাসনের দরকারে সেনা, নৌ বা বিমান, বা অন্য কোন সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত নয়)
২। বিচার প্রশাসন; সুপ্রীম কোর্ট ছাড়া বাকি সব গুলো গঠন করা; রাজস্ব আদালতের কার্যপ্রনালী; সুপ্রীম কোর্ট ছাড়া বাকি সব আদালতের ব্যয় জনিত খরচ।
৩। পুলিশ, যেখানে সশস্ত্র পুলিশ, রেলওয়ে ও গ্রাম পুলিশ অন্তর্ভুক্ত
৪। ক্ষমতার আওতা ও কোন প্রদেশের পুলিশের সদস্যদের আইনী অধিক্ষেত্র সেই প্রদেশের বাইরে বর্ধিতকরন
৫। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রতিরোধমূলক আটক ব্যবস্থা
৬। কারাগার, সংশোধনাগার, অপ্রাপ্তবয়্স্ক অপরাধীদের সংশোধনাগার ও উক্ত ধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান; কারাগার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের জন্য অন্য প্রদেশের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা
৭। কয়েদীদের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে সরিয়ে নেয়া; ভবঘুরে; অপরাধী ও যাযাবর গোষ্ঠী
৮। জমি, এটা বলতে হয় যে, জমির উপরে অধিকার; জমি ভোগ দখল, জমির মালিক ও জমির ভাড়াটিয়াদের সম্পর্ক সহ, ও ভাড়া সংগ্রহ; হস্তান্তর, কৃষি জমির বিভক্তি ও হস্তান্তর; ভূমি উন্নয়ন ও কৃষি ঋন; ভূমি নিষ্পত্তি
৯। কর্পোরেশন সংস্থাপন, নিয়ন্ত্রন ও বন্ধ করে ফেলা ফেডারেল তালিকা সাপেক্ষে; অনিয়মিত বানিজ্য; সাহিত্যীয়, বৈজ্ঞানিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য সংঘ ও সমিতি; সমবায় সমিতি সমূহ।
১০। ভূমি রাজস্ব, নির্ধারণ সহ এবং সংগৃহীত রাজস্ব, জমিরে নথিপত্র রক্ষণাবেক্ষণ, রাজস্ব উদ্দেশ্যে পরিদর্শন এবং অধিকারের নথিপত্র এবং মালিকানা হস্তান্তর অথবা রাজস্ব।
১১। ওয়ার্ডের আদালত।
১২। কাজ, জমি এবং ইমারতে কায়েমি করা অথবা প্রদেশে ভোগদখল করা।
১৩। বাধ্যতামূলক অর্জন অথবা সম্পত্তির অধিযোচন।
১৪। কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা ; মহামারি হতে রক্ষা এবং গাছের রোগবালাই প্রতিরোধ।
১৫। স্হানীয় সরকার বলতে হবে যে, সংবিধান এবং পৌর কর্পোরেশন এর অধিকার, বিশ্বাসের উন্নতি, জেলা বোর্ড, শ্রমিক উপনিবেশ কতৃপক্ষ এবং অন্যান্য স্হানীয় কতৃপক্ষ এই উদ্দেশ্যের জন্য স্হানীয় নিজেস্ব সরকার অথবা গ্রাম প্রশাসন।
১৬। ভাণ্ডারের সংগ্রহ, রক্ষা, উন্নতি, পশুর রোগের প্রতিরোধ, পশুচিকিৎসার প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলন।
১৭। পুকুর এবং গবাদি পশু খাদ্যের উন্নয়ন।
১৮। সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে বিস্তার রোধ
১৯। পানি, পানি সরবরাহ, সেচব্যবস্হা এবং খাল, নর্দমা এবং বাঁধ, পানি সংগ্রহ ও পানি শক্তি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ।
২০। শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় সহ, কারিগরি শিক্ষা, ব্যবসা শিক্ষা।
২১। পাঠাগার, জাদুঘর এবং পৌরানিক এবং ঐতিহাসিক ভাস্কর্য।
২২। উদ্ভিদসংক্রান্ত, প্রানিসংক্রান্ত এবং নৃবিজ্ঞান সম্পর্কিত জরিপ।
২৩। উচ্চতর শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সাধন এবং মানদণ্ড নির্ধারন
২৪। নাট্যশালা, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা, বিনোদন এবং আনন্দ।
২৫। চলচ্চিত্র শিল্পের প্রদর্শনের অনুমতি।
২৬। জনসাধারণের চিকিৎসা এবং হাসপাতাল ও ঔষধের দোকানের অনুমতি।
২৭। জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন।
২৮। রেলপথ।
২৯। যোগাযোগ কেন্দ্রীয় তালিকায় উল্লেখ থাকবে না, রাস্তা, সেতু, ফেরী এবং অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্হা, গৌণ রেলপথ, ট্রামপথ, দড়িবস্তা অন্তদেশিয় জলদশা এবং যানবাহনের উপরে।
৩০। জাহাজ সমৃহ এবং দিকনির্ণয় পানিপথে।
৩১। উপকূলীয় জাহাজ এবং প্রদেশ বন্ধ করতে পারবে।
৩২। যানবাহন, যান্ত্রিক উপায়ে চয়ালিত যানবাহন সহ।
৩৩। বন্দর, ঢুকার বিষয় ১২নং কেন্দ্রীয় তালিকা।
৩৪। সমাধি এবং সমাধিক্ষেত্র,
৩৫। বিকলাঙ্গ বেকারদের ভাতা।
৩৬। তীর্যযাত্রার বিশয়ে কেন্দ্রের তালিকা।
৩৭। মাদক জাতীয় উগ্র পানীয়, এদের প্রস্তুতকরণ, দখল, পরিবহন, ক্রয় এবং বিক্রয় এবং মাদক জাতীয় পানীয়।
৩৮। আফিমের চাষ প্রস্তুত এবং বিক্রয়।
৩৯। শিল্পকারখানা।
৪০। কারখানা এবং বয়লার।
৪১। খনির নিয়মকানুন এবং খনিকপদার্থের উন্নয়ন, কেন্দ্রের তালিকার বিষয় এবং সহগামী।
৪২। এই দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা বাণিজ্য।
৪৩।পণ্যের উৎপাদন সরবরাহ এবং বিতরণ।
৪৪।বাজার
৪৫।ওজন ও ভর,জীবনযাত্রার মান ছাড়া।
৪৬।লবনের উতপাদন,প্রস্তুতকরন এবং বিতরণ।
৪৭।অর্থের ঋণদান এবং অর্থের ঋণ গ্রহিতার পরিত্রাণ।
৪৮।বন
৪৯।বন্যপ্রাণী এবং পাখির সংরক্ষণ।
৫০।হিংস্রপ্রানী থেকে প্রতিরোধ।
৫১।খাদ্য এবং অন্যন্যা পণ্যের ভেজাল।
৫২। লটারি।
৫৩। বাজি এবং জুয়া।
৫৪। মাছের চাষ।
৫৫। সম্পদ উত্তোলন।
৫৬। গ্যাস।
৫৭। গ্যাস এবং গ্যাসের কাজ।
৫৮. জীবিকা।
৫৯. সরাইখানা এবং সরাইখানা-পরিচালক।
৬০. প্রাদেশিক পাবলিক সার্ভিসেস; প্রাদেশিক সরকারি কর্মকমিশন।
৬১. প্রাদেশিক পেনশন।
৬২. প্রদেশের জন ঋণ।
৬৩. প্রশাসক জেনারেল।
৬৪. যাকাত।
৬৫. দাতব্য এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান; দাতব্য ও ধর্মীয় বৃত্তিদান।
৬৬. পাগল এবং মানসিকভাবে ত্রুটিযুক্তদের সেবা ও চিকিৎসার স্থান সহ একাগ্রতা এবং মানসিকতার অভাব।
৬৭. বেতন ও সদস্যদের ভাতা, স্পীকার ও প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকার; প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী ও অ্যাডভোকেট জেনারেল এর বেতন-ভাতা।
৬৮. প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও উহার কমিটিসমূহের ক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা ও দায়মুক্তি; প্রাদেশিক পরিষদের কমিটির সামনে নথি উৎপাদন ও ব্যক্তির সাক্ষ্য প্রদান এ বলপ্রয়োগ।
৬৯. ওয়াক্ফ এবং মসজিদসমূহ।
৭০. এতিমখানা ও দরিদ্র ঘর।
৭১. কৃষি আয় এবং কৃষিজমির মূলধন এর উপর কর।
৭২. কৃষিজমির উত্তরাধিকার পরির্বতন এর শুল্ক ।
৭৩. মুদ্রাঙ্ক শুল্ক, বিনিমেয় দলিল এবং বীমা নীতি উপর মুদ্রাঙ্ক শুল্কসহ।
৭৪. কৃষিজমির উপর স্থানীয় কর।
৭৫. জমি ও ভবনের কর।
৭৬. খনিজ অধিকার কর, কেন্দ্রীয় সরকারি তালিকা এবং সংসদের খনিজ উন্নয়ন সংক্রান্ত আইন দ্বারা আরোপিত সীমাবদ্ধতা সাপেক্ষে।
৭৭. প্রদেশে নিম্নলিখিত পণ্যের শিল্পজাতকরণ বা উৎপাদন এবং পাকিস্তানে অন্যত্র উৎপাদিত অনুরূপ বা সস্তা দরের অনুরূপ পণ্যের উপর সমমানের শুল্ক আরোপ-
(ক) মানুষের ধ্বংসকারী নেশার মদ;
(খ) আফিম, গাঁজা এবং অন্যান্য চেতনানাশক ওষুধ এবং মাদকদ্রব্য; অ-চেতনানাশক ওষুধের;
(গ) ঔষধি এবং প্রসাধনী সামগ্রী যাতে উপ-অনুচ্ছেদ (খ) এ উল্লিখিত এলকোহল বা কোনো পদার্থ আছে।
৭৮. স্থানীয় এলাকায় ব্যবহায্য ও বিক্রয় হওয়া পন্যের উপর কর।
৭৯. ব্যবহায্য বা বিক্রয় হওয়া বিদুৎ এর উপর কর।
৮০. বিজ্ঞাপনের উপর কর।
৮১. ক্রয় বা বিক্রয় হওয়া সংবাদপত্রের উপর কর।
৮২. স্থলপথে বা জলপথে যাত্রি বা পন্য বহনের উপর কর।
৮৩. যে কোন প্রকার বাহন, যা যান্ত্রিক, যা স্থলে অথবা আভ্যন্তরীণ জলপথে নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার অথবা ট্রাম গাডির উপর কর।
৮৪. গবাদি পশু এবং নৌকার উপর কর.
৮৫. টোল/উপশুল্ক.
৮৬. পেশা, ব্যবস্যা, জীবিকা এবং চাকুরীর উপর কর.
৮৭. মাথাপিছু গণনা কর.
৮৮. বিলাসিতার উপর কর; যার মধ্যে চিত্তবিনোদন, বাজি এবং জুয়া উপর কর.
৮৯. রেলওয়েতে পণ্য ও যাত্রীবহনের উপর প্রান্তীয় কর.
৯০. রাষ্ট্রিও তালিকাধিন মনোনিত দলিল পত্র ব্যতিত অন্যন্য দলিলের উপর মুদ্রানঙ্ক শুল্ক.
৯১. রাস্ট্রিও আইনের বিরুদ্ধ যে কোন অপরাধ যা উক্ত তালিকায় অন্তরভুক্ত.
৯২. সকল আদালতের অধিক্ষেত্র ও ক্ষমতা, সরবচ্চ আদালত ব্যাতিত যা উক্ত তালিকায় সব ধরনের ব্যাপার অন্তর্ভুক্ত .
৯৩. সকল ধরনের মামলার খরচ কিন্তু আদালতে নেয়া খরচ ব্যতিত.
৯৪. যে কোন ধরনের তদন্ত ও পরিসংখ্যান যা উক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
ষষ্ঠ তফসিল
( প্রবন্ধ ২২২)
প্রবন্ধ ২২২ অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
১. নির্বাচনের নির্ধারিত দিনের দুপুরের আগ পযন্ত যে কোন সংসদ সদস্য কোন ব্যক্তিকে সংসদ সচিবের কাছে নিয়ে গিয়ে উক্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরকৃত মনোনয়ন পত্র যাতে উল্লেখ থাকবে যে উনি নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী তা জমা করবেন।
২. নির্বাচনের পুর্বে মনোনয়ন প্রাপ্ত যে কোন ব্যক্তি নিজ প্রার্থীত্ব মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন।
৩. নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত দিনে সংসদে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তি সংসদে মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তিরা যারা নিজ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি এবং প্রস্তাবকারি ব্যক্তিদের নামসহ এবং উক্ত ব্যক্তি বিজয়ী ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। যদি একের অধিক ব্যক্তি হন তবে সংসদ গুপ্তভোটের মাধ্যমে রাস্ট্রপতি নিরবাচন করবেন। ভোট অধিগ্রহন সংসদে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির নির্দেশনা অনুসারে হবে।
৪. যদি নির্বাচনে শুধু ২জন প্রার্থি থাকেন তবে যে প্রারথি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনি নির্বাচিত হবেন। যদি ২জন প্রারথি সমপরিমান ভোট পান তবে নির্বাচনের ফলাফল লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
৫. যখন মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২য়ের অধিক হবে এবং প্রথম ভোটে যদি কোন প্রার্থী সমষ্টিগত ভোটের চেয়ে বেশি না পেয়ে থাকেন; যে প্রার্থীগন সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোট পাবেন তারা নির্বাচন থেকে বাদ পড়বেন। ভোটাভুটি যারি হবে সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রার্থীকে বাদ দিয়ে যতক্ষন পর্যন্ত একজন প্রার্থী বাকি সকল হতে অথবা সমষ্টিগত প্রার্থী হতে অথবা যে কোন একটি অবস্থায় উক্ত প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষনা করা হবে।
৬. যদি কোন ভোটে যে কোন ২ বা ততোধিক প্রার্থী সমপরিমান ভোট পান এবং একজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দিতে হলে তা নির্বাচন অনুচ্ছেদ নং ৫ অনুসারে নিরধারিত হবে; এবং সমপরিমান ভোটের মধ্যে লটারির মাধ্যমে একজন নির্বাচিত ও একজন বাদ পড়বেন।
৭. সংসদের যে সভার নির্বাচন হবে তার সভাপতিত্ব করবেন স্পিকার অথবা অপারগতায় ডেপুটি স্পিকার অথবা এমন কোন ব্যক্তি যিনি ‘সংসদ নিয়মাবলি’ অনুসারে হবেন। ৮. এই তফসিলে ”সংসদ” অর্থ হল সংবিধান দিবসের পুর্বের গন পরিষদ যা সংবিধান দিবসে সংঘটিত জাতীয় সংসদ।
যুক্ত নির্বাচনের পক্ষে আওয়ামী | পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ আগষ্ট, ১৯৫৬ লীগের প্রচার যুক্ত নির্বাচন প্রথা কায়েম করুন পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকদের প্রতি আওয়ামী লীগের আবেদন আমাদের দেশের নির্বাচন পদ্ধতি কিরূপ হওয়া উচিত যুক্ত নির্বাচন, না পৃথক নির্বাচন, সে বিষয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ হইতে আমরা পূর্বে আপনাদের নিকট দ্বার্থহীন ভাষায় ও বিভিন্ন যুক্তি দিয়া বলিয়াছি যে, পাকিস্তানের মঙ্গলের জন্য আমরা যুক্ত নির্বাচন প্রথা চাই। এ সম্পর্কে এখন আরও দু একটি কথা আপনাদের খেদমতে হাজির করিতে চাই। কারণ, জনবিরোধী মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম প্রভৃতি নানা অপপ্রচার দ্বারা যুক্ত নির্বাচন প্রথার বিরুদ্ধে জনগণের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করিতে চাহিতেছে। মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম বলিতেছে যে, যুক্ত নির্বাচন পদ্ধতি চালু হইলে পাকিস্তান ধ্বংস হইবে। ভাইসব, ইহাদের এই কথার জবাবে আমরা শুধু একটি বিষয় আপনাদের সামনে হাজির করিতেছি। কায়েদে আজম হইলেন আমাদের পাকিস্তানের জন্মদাতা। তিনি পাকিস্তানের অমঙ্গল চাহিবেন এমন কথা কোন পাকিস্তানীই মুখে আনিতে পারে না। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রথম দিবসেই ১৯৪৭ সনের ১৪ই আগষ্ট তারিখে স্বাধীন পাকিস্তানের সার্বভৌম গণপরিষদের প্রথম দিনের অধিবেশনে তিনি উদাত্ত কষ্ঠে সারা দুনিয়ার সামনে ঘোষনা করিয়াছিলেন “কালে হিন্দু আর হিন্দু থাকিবে না এবং মুসলমান থাকিবে না; অবশ্য ধর্মীয় অর্থে নহে; কারণ ধর্ম হইতেছে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস। কথাটা হইতেছে রাজনৈতিক অর্থে, রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে।” কায়েদে আজমের উপরোক্ত ঘোষণা হইতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, আমাদের ঐ মহান নেতা সম্প্রদায় তুলিবার স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন। তাঁহার সে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্যই আমরা যুক্ত নির্বাচন চাই। যুক্ত নির্বাচন প্রথার মধ্য দিয়াই আমাদের রাষ্ট্রের মুসলমান, হিন্দু প্রভৃতি রাজনৈতিক ভেদাভেদ দুর হইবে এবং মুসলমান, হিন্দু প্রভৃতি সমস্ত নাগরিকদের নিয়া পাকিস্তানী জাতি গড়িয়া উঠিবে। ইহাতে পাকিস্তানের সংহতি আরও অটুট হইবে। করিতেছেন। তাহারা কায়েদে আজমের স্মৃতিকে অবমাননা করিতেছেন এবং তাহারা পাকিস্তানের সংহতি আরও অটুট করিয়া তুলিবার পথে বাধা জন্মাইতেছেন। মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম আর এক জিগীর তুলিয়াছে যে, যুক্ত নির্বাচন প্রথা চালু হইলে হিন্দুরা অভিভক্ত ভারতে- যেখানে হিন্দুরা ছিল শতকরা ৭৫ জন এবং যেখানে হিন্দুরা প্রভূত ধন-সম্পদের অধিকারীও ছিল, সেক্ষেএেই যদি হিন্দুগণ মুসলমানদের পাকিস্তানের দাবী হইবে বিচ্যুত করিয়া থাকিতে না পারে, তবে আজ পাকিস্তানে- যেখানে হিন্দুগণ সংখ্যায় শতকরা ১০ জনের বেশী নয়, সেখানে তাহারা কি করিয়া কোটি কোটি মুসলমানকে ভুলাইয়া পরিষদের সব আসন দখল করিয়া নিবে? ইউনিয়ন বোর্ডে ও জেলা বোর্ডে যুক্ত নির্বাচন প্রথা প্রচলিত আছে। সেখানে কি হিন্দুরা সব আসন দখল নিয়াছে? শতকরা ১০ জন হিন্দু কোটি কোটি মুসলমানকে বোকা বানাইয়া দিবে- এরূপ আজগুবি কথা আজ যাহারা বলিতেছেন, মুসলমান সমাজের উপর তাহদের কো আস্থা নাই। কাজেই মুসলমান সমাজও তাহদের বিশ্বাস করিতে পারে না। সরল, ধর্ম বিশ্বাসী মুসলমান ভাইদের মনে বিভ্রান্তি জনাইবার জন্য ঐ মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম গলাবাজি করিতেছে যে, যুক্ত নির্বাচন প্রথা চালু হইলে ইসলামের খেলাপ হইবে। চালু আছে। তাহাতে সে সব দেশে ইসলামের খেলাপ হয় নাই। আমরা যুগ যুগ ধরিয়া ইউনিয়ন বোর্ড ও জেলা বোর্ডের নির্বাচনে যুক্ত নির্বাচন প্রথায় ভোট দিতেছি। তাহাতেও আমাদের ধর্মের হানি হয় নাই। আজ আইন পরিষদের নির্বাচনে যুক্ত নির্বাচন প্রথা চালু হইলেই ইসলামের খেলাপ হইবে কেন? পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থের দিকটাও আজ আমাদের ভাবিয়া দেখা দরকার। গত ৯ বৎসর যাবৎ পশ্চিম পাকিস্তানের একটি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি এই অবিচার করিয়াছে। আজ কেন্দ্রীয় আইন সভার আসন বন্টনে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভিতর সংখ্যাসাম্য নীতিও চালু রহিয়াছে। এই অবস্থায় যদি পৃথক নির্বাচন প্রথা চালু থাকে এবং পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমান ও সংখ্যালঘুদের ভিতর ভেদাভেদের সুযোগ নিয়া পশ্চিম পাকিস্তানের ঐ প্রতিক্রিয়াশীলরা যদি কয়েকজন দালালকে হাত করিতে পারে, তবে তাহারা চিরদিনের জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের উপর অবিচার চালাইয়া যাইবে। বস্তুতঃ পূর্ব করার জন্যও আজ যুক্ত নির্বাচন প্রথা প্রবর্তন করা প্রয়োজন। যে মুসলিম লীগ গত ৯বৎসর যাবৎ সব দিক দিয়াই আমাদের সর্বনাশ করিয়াছে সেই মুসলিম লীগ ও তার দোসর নেজামে ইসলাম এখনও সাম্প্রদায়িকতার উপর নির্ভর করিয়াই বাঁচিয়া থাকিতে চাহিতেছে। সেজন্যই তাহারা পৃথক নির্বাচন চাহিতেছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা দেশের বহু ক্ষতি করিয়াছে। দেশের মঙ্গলের জন্য সাম্প্রদায়িকতার বিষয়ে আজ দূর করা প্রয়োজন। সেজন্যই, আমরা চাই যুক্ত নির্বাচন। যতদিন দেশে সাম্প্রদায়িকতা থাকিবে, হিন্দু-মুসলমানে রাজনৈতিক ভেদাভেদ থাকিবে, ততদিন দেশে সুস্থ গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে না। সাম্প্রদায়িকতা দূর করিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যও আজ যুক্ত নির্বাচন প্রথা চালু করা অপরিহার্য। সকলে ঐক্যবদ্ধ শক্তি দ্বারা যুক্ত নির্বাচনের দাবীকে অমোঘ করিয়া তুলুন। সকলে মিলিয়া আওয়াজ তুলুন • কায়েদে আজমের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য যুক্ত নির্বাচন চাই। • পাকিস্তানের সংহতি অটুট করার জন্য যুক্ত নির্বাচন চাই। • সাম্প্রদায়িকত ভেদাভেদ দুর করার জন্য যুক্ত নির্বাচন চাই। • গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্ত নির্বাচন চাই। • পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থের জন্য যুক্ত নির্বাচন চাই। পূর্ব পাক আওয়ামী লীগের পক্ষে জনাব আদুল হাই কর্তৃক ৫৬ নং সিমসন রোড, ঢাকা হইতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। পাইওনিয়ার প্রেস, ঢাকা।
আতাউর রহমান কে মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য তলবঃ
আওয়ামীদের সাড়াদানঃ
আজ মন্ত্রীসভার নাম প্রকাশ
(নিজস্ব প্রতিনিধি)
গভর্নর জনাব এ.কে. ফজলুল হক গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদেশে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করতে পূর্ব পাকিস্তান বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা জনাব আতাউর রহমান খান কে দায়িত্ব দেন।
গত রাতে যোগাযোগ করা হলে জনাব খান বলেন যে, তিনি মন্ত্রীপরিষদ গঠনের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন এবং আজ সে অনুযায়ী গভর্নর কে অবহিত করবেন।
এটা জানা গেছে যে, একটি মন্ত্রিসভা গঠন করতে জনাব খান কে নিযুক্ত করে পাঠানো গভর্নরের চিঠি, বিকাল ৫ টার পরপরই বিতরিত হয় যখন তিনি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে ছিলেন।
আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক, যা পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বিকেল ৪ টা থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, তাতে দলের কার্যালয় গ্রহণ করা উচিত হবে কি না এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। দলের অভ্যন্তরে কিছু অভিমত ছিল যে, বর্তমান মুহুর্তে কার্যালয় গ্রহণ করা উচিত হবে না।
মওলানা ভাসানী সভার উদ্দেশ্যে বলেন যে, ঘাটতি মোকাবিলার জন্য যে পরিমাণ খাদ্য লাগবে তা যত খরচ ই লাগুক না কেন সরবরাহ করা হবে, যদি না কেন্দ্র থেকে এই নিশ্চয়তা দেয়া হয়, তবে দলের পক্ষে সরকারের দায়ভার গ্রহণ করা ঠিক হবে না।
যাই হোক সংসদীয় দল এবং কার্যকরী কমিটি উভয় ই , যারা এর পরপরই সাক্ষাত করে, কার্যালয় গ্রহণের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
জনাব আতাউর রহমান গতরাতে সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি যখন আজ গভর্নরের সাথে দেখা করবেন তখন তিনি মন্ত্রীপরিষদে অন্তর্ভুক্ত করতে চান এমন ব্যক্তিবর্গের একটি তালিকা তাকে দিতে পারেন। মন্ত্রীপরিষদের ক্ষমতা সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নির্দিষ্ট করে কোন ধারনা দিতে পারেননি। তবে, এটা বোঝা গেছে যে মন্ত্রিসভা এগারো সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে।
বর্তমান ইঙ্গিত মতে পাঁচ জন মন্ত্রী হবেন আওয়ামী লীগ, দুই জন হবেন কংগ্রেস থেকে, একজন গণতন্ত্রী দল থেকে, U.P.P. থেকে একজন , এবং তফসিলি থেকে একজন এবং একজন হবেন অন্যান্য থেকে।
গত রাতে হালকা গুজব ছিল যে অন্য দলগুলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে চাইছে। যাইহোক, এই ধরনের পদক্ষেপের কোন নিশ্চিত ঘোষণা পাওয়া যায় নি। জনাব রহমান, গভর্নর এর কাছে প্রস্তাবিত মন্ত্রীদের তালিকা জমা দেবার পরই, প্রদেশ থেকে রাষ্ট্রপতির বিধি প্রত্যাহার করা হবে যেন একটি সংসদীয় সরকার গঠন করা যায়।
গত রাত পর্যন্ত, সার্কিট হাউসে জনাব সোহরাওয়ার্দীর রুমে সব বিরোধী দলের নেতাদের একটি রুদ্ধদার বৈঠক হয়, যেখানে একটি মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়। আলোচনায় যারা অংশ নেন তাদের মধ্যে ছিলেন জনাব সোহরাওয়ার্দী, জনাব আতাউর রহমান, জনাব বসন্ত কুমার দাস, জনাব মাহমুদ আলী, জনাব শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য.
আওয়ামী লীগ সরকার মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬ আমাদের নীতি ও কার্যক্রম পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খানের বেতার ভাষণ (৭ই সেপ্টেম্বর-১৯৫৬) গত ৭ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাকা বেতার কেন্দ্র হইতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান এক বেতার বক্তৃতায় নূতন মন্ত্রী-সভার নীতি ও কর্মপরিকল্পনা বিশ্লেষণ করেন। তিনি সকল রাজবন্দীর মুক্তির ঘোষণা প্রচার করেন এবং বলেন যে, খাদ্য সমস্যার সমাধানের জন্য তাঁহারা সম্ভাব্য সকল উপায় অবলম্বন করিবেন। তাঁহার এই বক্তৃতার পূর্ণ বিবরণ নিন্মে বিবরণ দেওয়া গেল: ইতিমধ্যেই আপনার সম্ভবতঃ জানতে পেরেছেন যে কেবলমাত্র সাড়ে ছাবিবশ ঘন্টা আগে আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেছি। সরকার গঠনের কাজ এখন পর্যন্ত সম্পূর্ন হয়নি। শীঘ্রই এ কাজ সম্পূর্ণ হবে। ইত্যবসরে আমি ও আমার অপর চারজন সহকমী যে সব সমস্যা শাসন-ব্যবস্থা ও জন-কল্যাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে রেখেছে, সাহস ও সংকল্পের সাথে সেগুলির সমাধানের জন্য এগিয়ে যাব বলে সঙ্কলপবদ্ধ হয়েছি। আর অধিক কিছু বলার পূর্বে আমার এবং আমার সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক সহানুভুতি প্রকাশের জন্য আমি দেশবাসী জনগনের উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা জাপন করছি। ভ্রাতা ও ভগ্নিগণ! আমরা এ প্রদেশের ইতিহাসের একটি সঙ্কট মুহুর্তেই কার্যভার গ্রহণ করেছি। আমরা বেশ ভালরূপেই অবগত আছি যে, আমাদিগকে কতকগুলো ভয়াবহ সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা করতে হবে। আমরা শুধুমাত্র ক্ষমতা ও গদি দখলের লোভে দায়িত্ব গ্রহণ করি নাই। উপরন্ত কর্তব্যের চরম আহবানেই তা করেছি। আমাদের কার্যতার গ্রহণ করার মাত্র একদিন আগে পুলিশের গুলী চালনার ফলে ঢাকা শহর এক ভীষণ গোলযোগের সম্মুখীন হয়েছিল। আমরা এই দুর্ঘটনার জন্য একটি বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব করেছি এবং সরকার নিহত ও আহতগণের উত্তরাধিকারীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও দেবেন। খাদ্য সমস্যা খাদ্য ব্যবস্থা ও শাসন-ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ক্রমাবনতি গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গেই আমরা লক্ষ্য করছি। গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণ বহু বৎসর যাবৎ যে অবহেলা সহ্য করে আসছে, তা প্রকৃতই অবর্ণীয়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সোজা ভাষায় বলতে গেলে হয় যে, প্রদেশ দুৰ্দ্দশার শেষ সীমার গিয়ে পৌছেচে। যা হোক খাদ্য সংকট সব সমস্যাকে ছাড়িয়ে উঠেছে। আমি আপনাদিগকে আশ্বাস দিচ্ছি যে, অগ্রে বিবেচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে খাদ্যই সর্বোচ্ছ স্থান অধিকার করে আছে। কাজেই আমাদের প্রথম কাজই হচ্ছে সমগ্র খাদ্য সমস্যার পর্যালোচনা করা। এ গেছে। এই সম্মেলনে জনাব হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী অংশ গ্রহণ করায় আমরা সৌভাগ্য বলেই মনে করি: কারণ, খাদ্য ব্যবস্থায় তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে আপনারা সবিশেষ ওয়াকেবহাল আছেন। তীব্র খাদ্য সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানকল্পে খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং খাদ্য ব্যবস্থা আয়ত্তে আনার জন্য যে কয়েকটি ব্যবস্থা অবনম্বন করেছি, তা এই: ১. ইতিপূর্বে যে ১ কোটি ১০ লাখ মণ খাদ্য-শস্য আমদানীর আদেশ দেয়া হয়েছে, তা ছাড়াও প্রেসিডেন্টের মহানুভবতায় আরো ২৭ লাখ মন চাউল আমদানীর আদেশ দেওয়া হয়েছে। ২. পূর্ব পাকিস্তানের বন্দরগুলো ও রেল প্রান্তে যাতে খাদ্য বোঝাই জাহাজগুলো তাড়াতাড়ি পৌছতে পারে, তার জন্যে নতুন উপায় উদ্ভাবনকল্পে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হওয়ার পূর্বেই ১ কোটি ৩৭ লাখ মণ চাউল আমদানী করতেই হবে। ৩. আগামী ১৪ই সেপ্টেম্বর জেলা ম্যাজিষ্ট্যাট ও জেলার কন্ট্রোলারদের এক সম্মেলন বসছে। এ সম্মেলনে খাদ্যবস্থা পর্যালোচনা করে তাদের স্বস্ব এলাকার প্রয়োজন নির্ণয় করা হবে- এতে করে খাদ্য-শস্যের দ্রুত বিলি ব্যবস্থায় সামঞ্জস্য সৃষ্টি করা যাবে। এসব অফিসারদের বলা হয়েছে যেন তাঁরা তাঁদের মজুদ শস্যের পরিমাণ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে কি পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন এবং গ্রামাঞ্চলে কিভাবে খাদ্য-শস্য তাড়াতাড়ি বিলি করা যায় তার প্রস্তাবসহ ঢাকায় আসেন। ৪. আমরা সিদ্ধান্ত করেছি যে, খাদ্য সমস্যার সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার জন্যে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটদের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে। তাঁদের কাজ অধিকতর সহজ ও কার্যকরী করার উদ্দেশ্যে এই সব অফিসারদের ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হবে, যাতে করে ঢাকার সদর দফতরের সঙ্গে পত্রালাপে বৃথা সময় নষ্ট না করে তারা সরাসরি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারেন। খাদ্য সংক্রান্ত অপরাধে বিশেষ করে মওজুদকারী, চোরাচালানকারী, কালোবাজারী এবং মুনাফাখোরদের কঠোর শাস্তি বিধানের জন্য জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটদের অধিকতর ক্ষমতা দেওয়া হবে। ৫. এখনও ফুড কমিটি গঠিত হয়ে না থাকলে উহাদের আশু গঠনের আদেশ দেওয়া হবে। যেসব ফুড কমিটি ৬. যেখানে লঙ্গরখানার প্রয়োজন হবে, সেখানে লঙ্গরখানা খোলার ব্যবস্থা হচ্ছে। দীর্ঘ বা স্বল্পমেয়াদী এর যে-কোন নীতিরই সাফল্য নির্ভর করে কর্মচারীদের দক্ষতা, কার্যক্ষমতা এবং উদ্ভাবনী শক্তির উপর। এজন্য আমরা শাসন ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করে সর্বপ্রকার দুনীতিমুক্ত করতে চাই। স্থায়ী কর্মচারীদের সততা এবং সাধুতা ফিরিয়ে আনতেই হবে। অসৎ এবং অকৰ্মণ্য কর্মচারীদের আমরা সরিয়ে দিতে চাই। সং কর্মক্ষম এবং মনোযোগী কর্মচারীদের জন্য অমনোযোগী এবং বেয়াড়া কর্মচারীদের জায়গা ছেড়ে দিতেই হবে। কর্মচারীরা হয় কাজ করবেন, না হয় কাজ ছেড়ে চলে যাবেন; কালগুণে জনসাধারণের অর্থ অপচয় করা চলবে না। আমাদের কর্মসূচী এবং পরিকল্পনা কার্যকরী করতে সরকারী কর্মচারীরা আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা ও সমর্থন পাবেন। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যা কিছু আমরা করব, জনসাধারণের সেবাই হবে তার ভিত্তি, রাজনৈতিক সুবিধাবাদের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক থাকবে না। দৈনন্দিন শাসনকার্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করব না। সাধু এবং দক্ষ কর্মচারীদের মনোবল রাখতে ও অটুট রাখতে ও যথাসম্ভব তাদের পুরস্কৃত করতে এবং অসাধু ও করব। রাজবন্দীদের মুক্তি রাজনৈতিক বন্দীদের দুঃখ-কষ্টে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন নাগরিকের হৃদয়-মন ভারাক্রান্ত তাদের মুক্তির জন্য বরাবর দাবী করা হচ্ছে। তাদেরে মুক্তি আমাদের বিশ্বাসের অঙ্গ হিসেবে ২১-দফা কর্মসূচীর অন্তৰ্ভুক্ত করেছিলাম। জনসাধারণের ন্যস্ত বিশ্বাসের মর্যাদা ও আমাদের নির্বাচনী ওয়াদা রক্ষার জন্য বাধা-নিষেধও আমরা তুলে দিয়েছি। রাজনৈতিক কর্মীদের উপর আরোপিত সমূদয় বাধা-নিষেধও আমরা তুলে নিয়েছি। নিরাপত্তা আইন বাতিলের জন্য যথাযথ আইন রচনা ব্যবস্থাও করা হবে। দুনীতি দমন আমাদের ওয়াদা অনুযায়ী দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রের যাবতীয় অনাচার ও দুনীতি দূরীকরণের জন্য আমরা বাস্তব কর্মপন্থা অবলম্বন করব। সন্দেহজনক উপায় এবং জনগণের রক্তের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এসব বিবেকহীন ভাগ্যন্বেষীদের অচিরে দমন করা প্রয়োজন এবং ওদের দমন করা হবে। শিক্ষা সংস্কার জনগণের প্রতি আমাদের ওয়াদা অনুযায়ী দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের ব্যবস্থাও আমরা করব। আজাদী লাভের পর দেশের সর্বস্তরেই অধোগতি দেখা গিয়েছে; কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রের মান হাসের কোন তুলনাই হয় না। শিক্ষার মান ছাড়াও, শিক্ষার ব্যয় যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে সাধারণ সঙ্গতির লোকদের পক্ষে দুঃসহ হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি, নাগরিকদের যে শিক্ষা দেয়া হবে, তার উপরেই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। সুতরাং আমরা প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠনের প্রতি মনোনিবেশ করতে চাই। অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের মতো শিক্ষাকেও আমরা জীবনের অন্যতম প্রধান প্রয়োজন বলে মনে করি। এই অনুভূতিতে অনুপ্রানিত হয়েই আমরা জনসাধারণের জন্য কম ব্যয়সাপেক্ষ ও উন্নত ধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করার কাজে ব্ৰতী হব। সংখ্যালঘুদের প্রতি আশ্বাস আমি এখন দেশবাসীর এক অংশ সস্বন্ধে বলছি- যারা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যালঘু নামে পরিচিত কিন্তু তাঁদের আমরা দেশ ও জাতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই মনে করি। তাঁদের সেবায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা তাঁদের এই আশ্বাস দিচ্ছি যে, সরকারী কাজে ও দেশের সেবায় তাঁরা কেবল সমান সুযোগ সুবিধাই পাবেন না; অধিকন্ত এমন এক পরিবেশ সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যাতে তাঁরা মুসলমান ভাইদের মতই পূর্ণ নিরাপত্তার সংগে তাঁদের ধর্ম-বিশ্বাস পোষণ ও পালন করতে পারেন। মোহাজের সমস্যা এখন আমি আমার সেই সব দেশবাসী সম্বন্ধে দু-এক কথা বলছি যারা দুর্ভোগ্যবশতঃ আমাদের আজাদীর দশম বর্ষে ও’মোহাজের নামে পরিচিত হচ্ছেন। তাঁরাই হচ্ছেন সেই সব নরনারী যাঁরা পাকিস্তান সব কিছু কোরবান করেছেন। এটা আশা করা যাচ্ছিল তাঁরা বহু আগেই ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত ও পুনর্বাসিত হবেন। তার পরিবর্তে তাঁদের বহু লোক ক্যাম্পে, মালগাড়ীতে, নোংরা ও জীর্ণ কুটিরে মানুষের অনুপযুক্ত অবস্থায় বাস করছেন। তাঁদের সুষ্ঠু পুনর্বাসনই আমাদের সংকল্প । এতে করে তাঁরা জনসাধারণের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাবেন। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে সন্মানজনকভাবে সুষ্ঠু এবং সাধারণ জীবনযাত্রার উদ্দেশ্যে তাঁদের জন্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করতেই হবে। পর্যাপ্ত খাদ্য-শস্যের সরবরাহের বন্দোবস্ত সুসম্পন্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই আমি এবং আমার সহকর্মীগণ খাদ্য সরবরাহ ও বন্টন ব্যবস্থার কার্যাবলী স্বচক্ষে দেখার জন্য মপম্বলে যাব। আমাদের বন্ধু-বান্ধব এবং শুভাকাংখীগণকে অনুরোধ করছি-যখন আমরা সফরে বের হই, তখন যেন তাঁরা আমাদের জন্য পার্টি, অভ্যর্থনা ও খানাপিনার বন্ধোবস্ত না করেন। আমরা বিশেষভাবে বুঝতে পারছি যে, যখন আমাদের জনসাধারণের এক বিরাট অংশ অর্ধনশন অবস্থায় রয়েছেন, তখন আমাদের জাঁকজমকপূর্ণ আতিথেয়তা গ্রহণ করবার অধিকার নেই। আজকে আপনাদের নিকট থেকে বিদায় নেবার আগে আমি এটাই বলতে চাই যে, আমরা জনসাধারণের ইচ্ছার উপরেই সরকারী কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছি এবং আমরা যতদিন পর্যন্ত জনসাধারণের আস্থাভাজন থাকবো, ততদিন পর্যন্ত আমরা সরকারী কার্য পরিচালনা করব। আমি আশ্বাস দিচ্ছি যে, যে মুহুর্তে আমরা বুঝব যে, আমরা জনসাধারণের খেদমত করবার মত অবস্থায় নেই, তারপরে আর এক মূহুর্তে আমরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকব না।
————-