শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পাকিস্তান গণপরিষদ বাতিলের বিরুদ্ধে তমিজ উদ্দিন খানের রীট আবেদন | ঢাকা ল’রিপোর্ট পশ্চিম পাকিস্তান ৭ম খন্ড | ………………১৯৫৫ |
১৫৪ তমিজ উদ্দিন খা্ন বনাম পাকিস্তান ফেডারেশন (পশ্চিম পাকিস্তান কমিশন, সিন্ধু) সপ্তম ঢাকা ল’রিপোর্ট।
তমিজ উদ্দিন খানের পাকিস্তান গণপরিশদ বাতিলের বিরুদ্ধে রীট পিটিশনের উদ্ধৃতাংশ
আবেদনকারীর কেস ১১নং অনুচ্ছেদে বর্ননা করা হয়েছে যা নিম্নে আবার দেওয়া হলঃ আবেদঙ্কারীকে এই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, তথাকথিত ঘোষণা অসাংবিধানিক, বেআইনি, নিয়ম বিরুদ্ধ, এক্তিয়ার বহির্ভূত, নিস্ক্রিয় এবং নিম্ন লিখিত অন্যান্য বিষয়ের ভিত্তিতে অকার্যকরঃ
(ক) যে মান্যবর, ভারত স্বাধীনতা আইন, ১৯৪৭ বা ভারত সরকার আইন, ১৯৩৫(যেমনটা পাকিস্তানে গৃহিত হয়েছিল বা সেই সময়ে বলবত যেকোন আইনের অধীনে) কোনটার অধীনেই কথিত ঘোষণা দেওয়ার ক্ষমতা গভর্ণর জেনারেলের নেই।
(খ) এটা অস্বীকার করা হয়েছে যে, সাংবিধানিক কার্যক্রম ভেংগে পড়েছে। এটা উপস্থাপন করা হয়েছে যে, কথিত অভিযোগ শুধুমাত্র ঘোষনার সত্যতা নিরুপনের জন্য করা হয়েছে। যেকোন ক্ষেত্রে এই ধরনের অভিযোগের অন্তর্ভুক্তি মহামান্য গভর্ণর জেনারেলকে কথিত ঘোষণা প্রদানের অধিকার দেয় না।
(গ) ভারত স্বাধীন আইনে ১৯৪৭ এর বিধান অনুযায়ী গণপরিষদ দৈত কার্যক্রম পরিচালনা করে। এতে ভারত সরকার আইন ১৯৩৫(যেমনটা পাকিস্তান কর্তৃক গৃহীত হয়েছে)এর উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক, সার্বভৌম, অবাধ আইনসভা হিসেবে কাজ করার অতিরিক্ত কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
(ঘ) কথিত ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, গণপরিষদ আর কাজ করতে পারে না।যদি এর ফলে এটি মনে করা হয় বা অন্যথায় গণপরিষদকে বাতিল করার কথা ভাবা হয়, তাহলে কথিত আবেদনকারী বলেন যে ঘোষণাটি বাতিল হবে যেহেতু মহামান্য গভর্ণর জেনারেলের গণপরিষদ বাতিলের কোন এক্তিয়ার নেই।
(ঙ) এটা অস্বীকার করা হয়েছে যে, গনপরিষদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গণপরিষদ গভর্ণর জেনারেল বা পরিষদ নিজে ছাড়া অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাতিল হতে পারে না।
(চ) গণপরিষদ এর ফেডারেল আইনসভার ক্ষমতা থাকা শত্যেও গভর্ণর জেনারেল কর্তৃক বাতিল হতে পারে না। ফেডারেল আইনসভা বাতিলের ক্ষমতা আগষ্ট ১৫, ১৯৪৭ এর আগে, ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ এর ধারা ১৯(২) (সি) এ উল্লেখিত।
রাষ্ট্রীয় আইনসভা ভঙ্গের ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত ছিল ভারতীয় সরকারের আইন ১৯৩৫ অনুসারে ধারা ১৯(২) (গ)-তে১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ এর পূর্বে। তারপর উক্ত উপধারাটি বিলুপ্ত করা হয় (খসড়া সংবিধান) এর অধীনে, পাকিস্তান আদেশ ১৯৪৭ অনুসারে। কাজেই রাজপ্রতিনিধির রাষ্ট্রীয় আইনসভা ভঙ্গের কোন ক্ষমতা নেই।
(ছ) গণপরিষদ সভা, যা রাজ্য সংসদের ক্ষমতা ব্যবহার করে কাজ করছে, তা অনুযায়ী রাজপ্রতিনিধির কোন এখতিয়ার, অধিকার, বা কোন ক্ষমতা এটি ভঙ্গ করার। সভা ডাকা, সভা মুলতবি করা, স্থগিত করা, ভঙ্গ করার প্রসঙ্গ সাংবিধানিক সংসদ প্রণীত নিয়মাবলীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। গণপরিষদের সভা ডাকা, সভা মুলতবী এবং স্থগিত করার ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রপতির আছে। সভা ভঙ্গ নিয়ে যা বলা আছে তা হল সংসদে সভা ভাঙবে না যতক্ষণ না সভার মোট সদস্যদের কমপক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সদস্য একমত হচ্ছেন এ সিদ্ধান্তে।
(ঝ) সুতরাং এটা উপস্থাপিত হল যে উল্লেখিত ঘোষণাপত্র অনুযায়ী গণপরিষদের সভা ভঙ্গ করা গেল না।
(ঞ)রাজ প্রতিনিধিদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই গণপরিষদ সভার উপর (সংবিধান) । প্রকৃতপক্ষে গণপরিষদের আইন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। যখন কোন আইন পাশ করা হয় এটির প্রতিলিপি রাষ্ট্রপ্রতির দ্বার স্বাক্ষরিত হয় এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে পাকিস্তানের অফিসিয়াল গেজেটের মাধ্যমে এটি আইনের রূপ পায়।