শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
আমেরিকায় প্রবাসী বাঙালিদের জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধের সংগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংবাদের প্রতিবেদন | বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার দলিলপত্র | ১ জুন, ১৯৭১ |
অনুগ্রহপুর্বক পড়ুন ও বাঙালিদের মাঝে বিতরন করুন
জুন ১, ১৯৭১
প্রচারপত্র নং- ৩
১। বিশ্ব ব্যাংক- আই এম এফ এর উদ্দেশ্যঃ
পাকিস্তানী আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখন একটি গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। পাকিস্তান এখন অনেকটাই দেউলিয়া এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার অবস্থায় থাকবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত জুলাইয়ের মধ্যে সাহায্য পাচ্ছে। জুনের ২১ তারিখে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে প্রেরিত ত্রাণ সহায়তা ২১ তারিখে প্যারিসে পৌছবে। প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশে এখন বিশ্বব্যাংক ও আই এম এফ এর একটি কার্যক্রম চলছে। এই কার্যক্রম বাংলাদেশে ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত চলবে এবং প্যরিস যাওয়ার পুর্বে তারা ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এই কার্যক্রমের তথ্য আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন যদি তারা প্রতিবেদন পেশ করে যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে তখন এই ত্রাণ সহায়তা পাকিস্তানে পৌছবে। অবশ্যই আমরা জানি যে, পরিস্থিতি সেখানে স্বাভাবিক নয় কিন্তু এই প্রতিবেদনের তথ্য সমূহ নির্ভর করবে সদস্যদের দৃষ্টিভঙ্গি ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের কতটা পরিমাণ চলাফেরা করার অনুমতি প্রদান করবে। বিশ্বব্যাঙ্ক-আই এম এফ এর এই কার্যক্রমে ১৩ সদস্য আছেন এবং এই কার্যক্রম বিশ্বব্যাংকের দক্ষিন এশিয়া শাখার প্রধান জনাব পি কারগিলের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। এই কার্যক্রমের প্রত্যেক সদস্য খুলনা, চালনা,যশোর, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা ভ্রমণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। তাদের কাছে অনুরোধ এসেছে কিছু মহকুমা শহর ও থানা কেন্দ্র পরিদর্শন করার। বেশ কিছু প্রতিবেদন থেকে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হয়েছে যে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি খুব স্বাভাবিক নয়। আমরা আশা করি যে, এই কার্যক্রম সত্যটা প্রত্যক্ষ করবে এবং পেশ করবে। প্রকৃত পরিস্থিতির প্রতিবেদন পাকিস্তানে ত্রাণ সহায়তা থামিয়ে দিতে পারে এবং এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে যাতে তারা একটি ব্যয়বহুল যুদ্ধ চালিয়ে যেতে না পারে।
২। খাদ্য ও ত্রাণ
চালের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে চলেছে এবং প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জায়গা বিশেষে ৮০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। কিছু জায়গায় এই পরিস্থিতি মজুতদারদের মালগুদাম লুট করা পর্যন্ত পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ঘুর্নিঝড় উপদ্রুত এলাকায় দুর্ভিক্ষ সম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। ত্রাণ সহায়তার আকুতিকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৩০ টি জাহাজ এবং অসংখ্য ট্রাক ইউ এস এইড এর কাছ থেকে লাভ করতে যাচ্ছে। এটি বলা হচ্ছে যে, এই জলযান এবং যানবাহন গুলো শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাদের দ্বারা ব্যবহৃত হবে। এটি আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারল না। সর্বোপরি, ঘুর্নিঝড় উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইউ এস এইড প্রদত্ত ৫০ টি স্পিড বোট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে, ডন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায় যে, গোপালগঞ্জ আক্রমনের পুর্বে জেনারেল নিয়াজি ত্রাণ সরবরাহের জন্য প্রদত্ত একটি বোট পরিদর্শন করছেন।
ঢাকায় খাদ্য বিভাগ ও ত্রাণ বিভাগের দুই সচিব পাকিস্তান সরকারের সেবায় নিয়োজিত আছেন। আমরা বলতে পারছি না কতটা সুষ্ঠুভাবে তারা গ্রামগুলোতে ত্রাণ বিতরন করতে পারবেন যতক্ষন না পর্যন্ত থানা কর্মকর্তারা এবং ইউনিয়ন কাউন্সিলররা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করছেন। অতএব, খাদ্য সাহায্য তাদের অনুমতি প্রাপ্তির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। ভোলা, হাতিয়া ও সন্দীপে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক আক্রমনের ভিত্তিতে আমরা ভাবছি ত্রাণ বহন কারী সকল জল ও স্থল যানবাহন ও ত্রাণ বিতরনের পদ্ধতি বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আমাদের দেশ থেকে প্রত্যাহার না করা হচ্ছে।
৩। বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সমূহ
বিভিন্ন তথ্যসুত্র থেকে আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া নিম্নলিখিত খবর সমূহ সংকলন করতে সক্ষম হয়েছিঃ
১। জেনারেল ওসমানী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, ঘোষণা করেছেন যে, গেরিলা যুদ্ধের উপর পুনঃপ্রশিক্ষনের পর ১০,০০০ মুক্তিযোদ্ধাকে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। গেরিলা প্রশিক্ষন প্রাপ্ত আরও মুক্তি ফৌজকে শীঘ্রই রণাঙ্গনে পাঠানো হবে।
২। যশোর সেক্টরে, ঢাকা থেকে ৪০ মাইল দূরে মুক্তিযোদ্ধারা কিছু আর্মি গানবোট এর উপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছে, এবং একটি সড়ক সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৩। কুমিল্লা সেক্টরে তারা রেল ও সড়ক সেতু ধ্বংস করেছে, সেনাবাহিনীর গতিবিধিকে সড়কপথে অবরুদ্ধ করেছে এবং ফেনীর দিকে অগ্রসরমান একটি সৈন্য বাহিনীকে সফল ভাবে আক্রমণ করে এবং ২০০ পাকিস্তানি সৈন্য এতে নিহত হয়।
৪। কসবা সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একটি ভারী যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।
৫। সিলেটের গুরুত্বপুর্ন তেলিয়াপাড়া সড়ক জংশন পুনঃ গ্রহনের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টা মুক্তিযোদ্ধারা একটি ভারী যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিহত করেছে।
৬। দিনাজপুর জেলায় একটি রেলসেতু উড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং অসংখ্য রেল পথ অচল করে দেয়া হয়েছে।
৭। চট্টগ্রাম সেক্টরে, লাকসাম ও ফেনীর মধ্যকার একটি রেল ও একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়েছে এবং ইলিয়টগঞ্জ রেল সেতু উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
৮। রংপুর সেক্টরে সৈন্য শ্রেণীর একটি দলকে কালুঘাটে অতর্কিত আক্রমণ করা হয় এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিবাহিনীর দ্বারা জব্দ করা হয়েছে।
৯। কুষ্টিয়া সেক্টরে একটি রেলসেতু মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দিয়েছে।
১০। বরিশালের একটি সৈন্য ঘাটি মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা অতর্কিত আক্রমনের শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে।
১১। খুলনার নিকটে , পকিস্তান সেনাবাহিনীর নদী গতিপথ পরিষ্করণ কার্যলাপ মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা ব্যর্থ হয়েছে যখন তারা আবার তাদের রণতরী ডুবিয়ে দিয়েছিল।
১২। সমগ্র বাংলাদেশে রেলওয়ে ও ষ্টীমার সেবা ব্যবস্থা মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যাবলির জন্য মুলত অচল হয়ে পড়েছে এবং সেনাবাহিনীর অনুরোধ ও হুমকি সত্ত্বেও কর্মচারিরা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
১৩। মে ১২ তারিখের পরে ভোলা, হাতিয়া ও সন্দীপ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমনের শিকার হয়। তারা অনেক গ্রাম ধ্বংস করে দিয়েছিল এবং হাতিয়া ও সন্দীপে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তারা পিছু হটেছিল। যাইহোক, তারা ভোলায় নিজেদের সুরক্ষিত অবস্থায় রেখেছে। ঘুর্নিঝড় উপদ্রুত এলাকায় তাদের উপস্থিতি ত্রাণ সরবরাহকে একটি তামাশা বানিয়ে দিয়েছে।
১৪। চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ সদর মহকুমা আক্রমণকারীদের দ্বারা বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে এবং পথের ধারে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে। ১৮’মে এর লন্ডন টাইমসে একটি সচিত্র বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে। ( হ্যাজেলহার্স্ট এর প্রতিবেদন)
১৫। ঢাকায় বিভিন্ন ভবনে বিভিন্ন সময়ে ছয় বার বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে ( সচিবালয়, স্টেট ব্যাংক, ইউ বি এল ইত্যাদি)। এই বোমাগুলোর সাথে চিরকুট পাওয়া গিয়েছে যেখানে সহযোগিতার বিরুদ্ধে সাবধান করা হয়েছে। খবর পাওয়া গিয়েছে যে, সিলেটে দুইজন বিশিষ্ট সহযোগী নিহত হয়েছেন এবং আরেকজন সহযোগী, একজন প্রাক্তন মন্ত্রী, তালিকার পরবর্তী শিকার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
১৬। ২৫ মে পাওয়া প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, আক্রমণ পুর্ববর্তী সময়ে শহরগুলোতে জনসংখ্যা ছিল ময়মনসিংহ ১০%, চাদপুর ২০%, কুমিল্লা ৩০%।
১৭। ধামরাই লুটের শিকার হয়েছে। মন্দির ও প্রতিমাসমূহ ধ্বংস করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ঢাকা ও আশেপাশের জাদুঘর গুলো লুটের বা ধ্বংসের শিকার হতে পারে। ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ লুটের দ্রব্য সমূহ ঢাকা থেকে পাঞ্জাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এখন তারা আমাদের সাংস্কৃতিক শিল্পদ্রব্য সমূহ ধ্বংস করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন দলসমুহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করতে পারে ইউনেস্কোকে দেশের মন্দির, মসজিদ, গির্জা, জাদুঘর সমূহকে ধংসের হাত থেকে রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ বার্তা পাঠাতে। ইউনেস্কো পর্যবেক্ষকদেরকে অনুরোধ করা উচিৎ এগিয়ে আসার জন্য।
১৮। পাকিস্তানি সেনাদের কারখানা শ্রমিকদের কাজে যোগদান করার অনুরোধ এবং পরবর্তীতে হত্যা করার উদাহরণ ঊঠে এসেছে। এরূপ গণহত্যার স্পষ্ট প্রমানাদি গোপালগঞ্জ চিনি কারখানা, রাজশাহী, খুলনা নিউজপ্রিন্ট কারখানা এবং বাটা জুতা কারখানা, টংগি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
১৯। সকল থানা উন্নয়ন কেন্দ্র সমূহ খালি পরে রয়েছে এবং থানা ও গ্রাম পর্যায়ে কোন কাজ সংঘটিত হচ্ছে না।
৪। সন্ধির দলিল সমূহ
এটি পাকিস্তানের কাছে একটি ধাক্কা হিসেবে এসেছে যে, তারা তাদের প্রকৃত পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে তিনদিনে চুর্ণ বিচুর্ণ করতে সমর্থ হয়নি। পরাজয়ের দিকে এগুতে থাকায় তারা এখন একে অপরকে দোষারুপ করতে শুরু করেছে এবং এমনকি তারা পাকিস্তানকে একত্র করে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টাকেও তারিফ করছে। আমেরিকায় পাকিস্তান ছাত্র সংঘ গত বছর একটি জামায়াত পন্থী দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইউ এস এ তে নিযুক্ত পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূতের এই কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। এতদিন পর্যন্ত বাঙালি বিরোধী পিএসএএ ইয়াহিয়া ও টিক্কা খানের প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য বলেছে ( দেখুন পাকিস্তান স্টুডেন্ট, এপ্রিল, ১৯৭১)। তারা বিবেচনা করে যে পাকিস্তান ভ্রাতৃত্তবোধের ভিত্তিতে একত্রে থাকতে পারে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা যে, পাকিস্তান বাংলাদেশের মুসলিমদের হত্যা ও নির্যাতন করার মাধ্যমে ইসলামকে কলঙ্কিত করছে। তারা কি ৭ লক্ষ মানুষকে হত্যা এবং ৫ কোটি মানুষকে সর্বস্বান্ত করার পুর্বে তাদের ভাতৃত্ববোধ প্রদর্শন করতে পারত না? এই বিশ্বাসঘাতক কসাইদের সাথে বসবাস করা এখন যে কোন বাংগালির পক্ষে অসম্ভব।
ওয়াশিংটন ডি সি তে সফরকালে আরও নানাবিধ সন্ধির পরিকল্পনা এম এম আহমেদ ও অন্যান্য পাকিস্তানিদের দ্বারা প্রনয়ন করা হয়েছে। এই সকল দলিল সমূহ ইংগিত প্রদর্শন করে যে, বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে একত্রে থাকতে পারে এবং শেখ মুজিবুরের বিচার ও শাস্তি সত্বেও আওয়ামী লীগ সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করবে। এইসমস্ত অদ্ভুত ধারণা সমূহ রহমান সোবহান কার্যকরীভাবে নিকাশ করেছেন, যিনি সৌভাগ্যক্রমে তখন ওয়াশিংটনে ছিলেন। জনাব সোবহান চারবার টিভিতে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং প্রচুর উপস্থিত মানুষের সাথে একটি সংবাদ সম্মেলন ও আয়োজন করেছিলেন।“ চ্যানেল ২৬ “এ তার সাক্ষাৎকার সবাই প্রশংসা করেছে এবং অনুরোধ সাপেক্ষে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও দেখানো হবে। সাক্ষাতকারের অনুলিপিগুলো বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জনাব সোবহান ১২ জন সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন। তার সম্মানে একটি মধ্যাহ্ন ভোজ আয়োজন করেছিলেন সিনেটর সাক্সবি যেখানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সিনেটররা অংশ নিয়েছিলেন। জনাব সোবহান বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ, ইউ এস এইড ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর ঊচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি কানাডাও পরিদর্শন করেছিলেন ( অটোয়া ও মন্ট্রিল ), সংসদ সদস্যদের সাথে দেখা করেছিলেন এবং সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।
৫। বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী
বিচারপতি জনাব আবু সাইদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, নিউইয়র্ক গিয়েছিলেন স্বল্প সময়ের জন্য। এই ভ্রমণ ব্যাপক প্রচার লাভ করেনি যেহেতু এটি শেষ সময় পর্যন্ত অনিশ্চিত ছিল। তাকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি কাজের জন্য লন্ডনে ফিরতে হয়েছিল। তিনি ১,৫০,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করতে পেরেছেন এবং লন্ডনে অবস্থিত বাঙালিরা তার স্থাপন করা তহবিলে মুক্ত হস্তে দান করছেন
৬। জুন ১২ তারিখে নিউইয়র্কের র্যালি
আমেরিকায় বাংলাদেশ লীগ পাকিস্তান দুতাবাস, নিউইয়র্ক এবং জাতিসংঘ ভবন এর সামনে ১২ জুন বিক্ষোভ প্রদর্শনের আয়োজন করেছে।
এই সমাবেশের বক্তারা হলেনঃ
বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী
জয় প্রকাশ নারায়ন
ইকবাল আহমেদ
রুথ গেজ কলবি
বিচারপতি জনাব আবু সাইদ চৌধুরী ১২ জুনের মধ্যে আমেরিকায় ফেরার আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন এবং কয়েক সপ্তাহ তিনি ইউ এস এ এবং কানাডাতে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ব্যয় করবেন। জনাব রহমান সোবহান ও প্যারিস সাহায্য সংঘের পরবর্তিতে ২১ জুন ইউ এস এ তে ফেরার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
চলুন আমরা সবাই বাংলাদেশের জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুন করি এবং জুন মাসকে মুক্তিযুদ্ধের লড়াই এর জন্য একটি সন্ধিক্ষণ এ পরিণত করি।
জয় বাংলা!