শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংরক্ষণের মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন | আমেরিকাস্থ ইষ্ট পাকিস্তান লীগের প্রচারপত্র | ৩ এপ্রিল,
১৯৭১ |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য সংগ্রাম
বাংলাদেশের নিরপরাধ এবং নিরস্ত্র মানুষের উপর বোমারু-বিমান, ট্যাংক, ভারী কামান, মেশিনগান এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে যে বর্বর ও নৃশংস আক্রমণ চালানো হচ্ছে, সারা বিশ্বের মানুষ এখন সে সম্পর্কে অবগত, যাদের অপরাধ ছিল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, যিনি কিনা জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বড় পরিসরে স্বায়ত্বশাসনের অনুমতি।
এ সূত্রে স্মরণ করিয়ে দিতে পারা যায় যে, সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ কর্তৃক ১৯৪০ সালে প্রস্তাবিত লাহোর প্রস্তাবে, ভারতের সকল মুসলিম সংঘের জন্য, মুসলিম সংঘের রাজনৈতিক দলগুলো পরিষ্কারভাবে এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে উইলে উল্লেখ করেন যে,” ব্রিটিশ ভারতের দুটি অঞ্চল- দক্ষিণ পূর্ব এবং দক্ষিণ পশ্চিমের দুটি বিচ্ছিন্ন ও স্বাধীন রাষ্ট্র।”
আমরা দেখাতে চাই যে, বাংলাদেশের মানুষ সাবেক পাকিস্তানের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে এই কারণে যে, তারা সংসদে প্রতিনিধির সমতা এবং অন্যান্য সেবাদানে রাজি হয়েছিল।
আমাদের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লজ্জাহীন আগ্রাসনে প্রথম তিনদিনের যুদ্ধে ইতিমধ্যে তিন হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে।
আমাদের মানুষদের এ গুরুতর সময়ে, আমরা যুক্তরাজ্যের প্রদেশগুলোর সদস্যদের সাথে একটি চুক্তির সান্নিধ্যে এসেছি যে, তারা যেন চট্রগ্রামে অবস্থিত মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে শর্তাধীন বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত স্বীকৃতি দেয় এবং আগ্রাসকদের প্রত্যাখান করার যথাসম্ভব সাহায্যের হাত বাড়ায়।
তাছাড়া আমরা যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য জাতীয় পরিষদের সদস্যদের অনুরোধ করেছি যাতে তারা অতি দ্রুত নিরাপত্তা পরিষদের একটি সভা আহ্বান করে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্যপদ ধরে রাখার অনুমতি প্রদান করে যা পাকিস্তান কর্তৃক দখলকৃত ০১১, ভারতের সাথে এর একটি সাদৃশ্য রয়েছে যে, ১৯৪৭ সালে ভারত মূল সদস্যপদ লাভ করে এবং পাকিস্তানকে নতুন করে আবেদন করতে হয়।
যেমন মি. সামার সেন জাতিসংঘের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অত্যন্ত নির্ভীকভাবে বর্ণনা করেছেন যে, যদিও পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার তথাপি তাদের এ অভ্যন্তরীণ ব্যাপার অনৈতিক অনুপাতে পরিণত হয়েছে। ইহা অবিকল একটি পরিস্থিতি যা জাতিসংঘ দলিলে অনুচ্ছেদ ৯৯তে বর্ণিত এবং যথোপযুক্তভাবে প্রয়োগকৃত।
সুতরাং নিরাপত্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইউ থান্টকে জাতিসংঘ দলিলের অনুচ্ছেদ ৯৯ এর অধীনে একটি সভা আহ্বান করার এবং জাতিসংঘে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এখন বাংলাদেশের সময় নির্দয় ও বাছাইকরা গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মানবিক ইতিহাসে যার কোন সাদৃশ্য নেই এমনকি মধ্যযুগীয় অসভ্যতা ও নির্মমতার কাহিনীতেও নেই।
জয় বাংলা ! বাংলার জয়’
নিউইয়র্ক
এপ্রিল,১৯৭১ কে এস আহমেদ
সভাপতি
যুক্তরাষ্ট্রস্থ পূর্ব পাকিস্তান লীগ. ইনর্করপোরেট.,
২৬৬৭ ব্রডওয়ে,
নিউইয়র্ক। নিউইয়র্ক ১০০২