শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির পরিচালনা ও তার কার্যক্রম সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন | বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ……… ১৯৭১ |
পূর্ব অঞ্চলের যুব শিবিরের অপারেশন ও ব্যাবস্থাপনা
যুব শিবিরের মূল লক্ষ্য ছিল সবার কর্মপন্থা একমুখী করন এবং সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানীদের অমানুষিক নির্মমতা ও গণহত্যার সময় বাংলাদেশ থেকে আসা যুব সম্প্রদায় কে প্রশিক্ষন দেয়া। প্রকৃতপক্ষে এই যুব শিবির গুলোর অবস্থান ছিল বিভিন্ন সীমান্তের প্রবেশ-পরিবহন পথে এবং এগুলোর কিছু কিছু এখনো আছে যেগুলো প্রবেশ-পরিবহন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার না করে যুব শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হয় যাতে সেই সব যুবকদের কিছু প্রাথমিক প্রশিক্ষন দেয়া যাবে যারা এলোমেলো ভাবে সাজানো যুব শিবির গুলো খুজে না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
যুব শিবির গুলো স্থাপন করতে গিয়ে অনিয়মিত ভাবে দেরি হয়ে যায়। আমাদের ছেলেরা হতাশ এবং মাতৃভূমি স্বাধীন করার জন্যতাদের মনে যে উদ্যম ছিল তাতে ভাটা পড়তে শুরু করে। বাসস্থানের অপ্রতুলতা আর প্রশিক্ষনের দুরাবস্থা দেখে শ’য়ে শ’য়ে ছেলেরা তাদের মানসিক উদ্যম হারিয়ে ফিরে যাচ্ছে। গতানুগতিক ভাবে যুব শিবির ব্যাবস্থাপনা চলতে থাকলে পুরো পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে যাবে কারন বাংলাদেশি যুবকরা কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়ায় এখানে চলে আসে। এই যুব শিবির গুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু কিছু পরিস্থিতির জন্য যুবকদের আসা এক সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই কারনেই প্রবেশ-পরিবহন পথে এই যুব শিবির গুলো প্রয়োজন। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে যুব শিবির গুলোকে যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রে রুপান্তর করা এবং ক্রমান্বয়ে আরও যুব শিবির স্থাপন করার প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য বলা হয়। বর্তমানে তিন রকম যুব শিবির আছে, যথাঃ প্রথমত যেসব শিবির সীমান্তের যুবকদের থাকার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা স্থাপিত।
যেহেতু এখনো তিনটি ব্লকে ১০০০০ যুবকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি, এই শিবির গুলোকে যুবকদের চাহিদা মোতাবেক প্রাথমিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিবির গুলো হলঃ
(১) ১০০০ জনের ক্ষমতা নিয়ে হরিনা। এই সংখ্যা নির্ভর করে একদিনে কতজন যুবক আসে তার উপর। এই শিবিরে আমাদের পরিকল্পনা মোতাবেক যাবতীয় প্রশিক্ষন দেয়ার ব্যবস্থা আছে। এটা সীমান্তের কাছে নয়। আমাদের সেক্টর কমান্ডার (হরিনা সেক্টর যুব শিবিরের চূড়ার ঠিক বিপরীত দিকেই) যুবকদের প্রশিক্ষনের দায়িত্ত নিতে পারে।
আমি ইতিমধ্যেই মেজর মেহতা, ডেপুটি ডিরেক্টর, যুব শিবির অপারেশন কে অনুরোধ করেছিলাম তার একজন অফিসার কে যুব শিবিরে নিয়োগ দেয়ার জন্য কিন্তু প্রকৃত প্রশিক্ষন (অস্ত্র) শুরু করা যাবে শুধুমাত্র স্থানীয় মিলিটারি কর্তৃপক্ষের সম্মতিক্রমে। জনাব এম. এ. হান্নান, সচিব, চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ হচ্ছেন ক্যাম্প প্রধান।
ক্যাপ্টেন চ্যটার্জি এখন মেজর মেহতার (ছুটিতে) পরিবর্তে কাজ করছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে ক্যাম্পে একজন অফিসার নিয়োগ দিবেন।
(২) ছেতাকখোলাঃ (আকিনপুরের কাছে) এই ক্যাম্প টি ৪০০ জোয়ান রাখার মত ক্ষমতা রাখে। যেহেতু এটা সীমান্তের কাছে, তাই এটাকে ভেতরে স্থানান্তর করতে হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত এরকম কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। জনাব খাজা আহমেদ এমএনএ হচ্ছেন এই ক্যাম্পের প্রধান।
এখানে জোয়ানরা মুক্তিবাহিনীর সাহায্যে প্রশিক্ষন নিচ্ছে।
(৩) রাজনগরঃ এখন এই ক্যাম্পে ৪০০ জন জোয়ান থাকতে পারে কিন্তু এটাকে বাড়িয়ে ১০০০ জন করার সুযোগ আছে। মেজর মেহতার একজন অফিসার ক্যাপ্টেন আর.পি. সিং (জানা গেছে তিনি এখন অন্য ক্যাম্পে স্থানান্তর হয়েছেন) কে এই ক্যাম্পের কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ত দেয়া হয়েছে। আমাদের বারংবার অনুরোধ সত্তেও ক্যাম্পগুলো বানানো হয়েছে শামুকের গতিতে আর এইদিকে বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন আসা জওয়ানদের আশ্রয় দিতে গিয়ে আমরা অনেক চাপে আছি। প্রফেসর এ. হানিফ এমএনএ হচ্ছেন ক্যাম্প প্রধান।
(৪) সোনামুড়াঃ এই এলাকায় ৪ টি ক্যাম্প আছে। সেগুলো হলঃ
(ক)কাঁঠালিয়াঃ ১০০০ জনের ক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্যাম্পে সর্বচ্চ ৮০০ জন থাকতে পারে। প্রতিদিন শয়ে শয়ে আশ্রয় নিতে আসা যুবকদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে যার কারন হচ্ছে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে।
(খ)হাতিমারাঃ ৮০০ জনের ক্ষমতা সম্পন্ন (যেটা সহজেই ১০০০ জন করা যায়) এই ক্যাম্পে জনাব মেহতা ক্যাপ্টেন শর্মা(এখন তিনি এখানে নেই) কে এই ক্যাম্পের দায়িত্ত দিয়েছেন কিন্তু পরিবহন সমস্যা, নির্মাণ দ্রব্য এবং ক্যাম্পের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অপ্রতুলতার কারনে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি হয়নি। জওয়ানদের জন্য দরকারি প্রশিক্ষন দেবার মত ব্যবস্থা এই ক্যাম্পে আছে। এমনকি জোয়ানরা কিছু প্রাথমিক প্রশিক্ষন নিয়ে বাংলাদেশে কিছু অপারেশনাল কর্মকাণ্ডও চালিয়েছে। জনাব এম. এ. রশিদ এমপিএ এই ক্যাম্পের প্রধান।
(গ)বুক্ষানগরঃ এই ক্যাম্পের ক্ষমতা ৮০০ জন জোয়ানের কিন্তু সবসময় এই ক্ষমতা বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০০০ করার একটা চাপ থাকতো, কারন ক্যাম্প কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ থেকে আসা জোয়ানদের ফিরিয়ে দিতে হয়। অনেক বেশি জোয়ান আগমনের কারনে মাঝে মাঝে অস্থায়ী ভাবে ১০০০ জনকে এখানে আশ্রয় দেয়া হয় যাদের পরবর্তীতে সম্ভব হলে অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হয় অথবা লারচে রেখে দেয়া হয়। জনাব মেহতা, ক্যাপ্টেন দাস কে এই ক্যাম্পের দায়িত্ব দেন কিন্তু তিনি তেমন কোন উন্নতি দেখাতে পারেননি কারন অন্যান্য ক্যাম্পের অফিসারদের মত তাকেও অনেক প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে হয়। প্রফেসর এ. রউফ এই ক্যাম্পের প্রধান। এখানে জোয়ানরা প্রশিক্ষন নেয়ার পাশাপাশি কিছু অপারেশনেও অংশ গ্রহন করছে।
(ঘ)মেলাঘরঃ এই ক্যাম্প কে আলাদা ভাবে বিবেচনা করতে হবে। সেক্টর ২ এর মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পের সাথে এটি সংযুক্ত। এই ক্যাম্পে ১০০০ জোয়ান আছে।
(৫) উদয়পুরঃ এই ক্যাম্পটি সম্প্রতি শুরু হলেও স্থানীয় অফিসার, বিশেষ করে এএডিএম জনাব ব্যানার্জির সহযোগিতার জন্য এর অগ্রগতি চমৎকার। এই ক্যাম্পের ক্ষমতা বর্তমানে ১২০০ এবং এটি ১৫০০ করার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
ক্যাপ্টেন এস আলি এম এন এ ক্যাম্পের প্রধান। ছেলেগুলো প্রাথমিক প্রশিক্ষন নিতে শুরু করেছে। ক্যাম্পটি উদায়পুর থেকে ৫কিমি দূরে পালাতানা নামক একটি আর্দশ স্থানে গঠিত হয়েছে। যেহেতু ক্যাম্পটি জনাব আলি এম এন এর মত একজন সক্ষম এবং অবসরপ্রাপ্ত আর্মি ক্যাপ্টেন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে তাই ইয়থ ক্যাম্প অপারেশন থেকে আলাদা কোনো ডেপুটি ডিরেক্টর প্রেরন করা হয়নি।এই ক্যাম্পটিকে আলাদা ভাবে ইয়থ ক্যাম্প হিসেবে চেনা যায় কারন এটা মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী এভাবেই বিবেচিত বা গঠিত।
(৬) মোহনপুরঃ এই ক্যাম্পের বর্তমান জনক্ষমতাবল ৪৫০। জনাব শরীফুদ্দিন আহমেদ, এমপি এ এই ক্যাম্পের প্রধান। ক্যাম্পটি যথেষ্ট পরিমান বড় করার সুযোগ থাকা সত্যেও নির্মান জটিলতার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে না। ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জি এই ইয়থ ক্যাম্পের বর্তমান ডেপুটি ডাইরেক্টর হিসেবে বিষয়টিতে দৃষ্টিপাত করছেন।
(৭)সিলেটঃ বর্তমানে সিলেটে তিনটি ইয়থ ট্রানজিট রয়েছে,সেগুলো:
(ক)পথেরকান্দিঃ এখানে প্রায় ৫০০জন সক্ষম যুবক রয়েছ। জনাব আব্দুল মোমেন,সিলেট বিভাগের আওয়ামীলীগের কার্যনির্মাতা এই ক্যাম্পের প্রধান।
(খ)খোয়াইঃ এই ক্যাম্পটি সম্পূর্নভাবে সুগঠিত নয়। এর সক্ষমতা সংখ্যা ২০০জনের। কিন্তু প্রায় ১০০ বা তারও অধিক যুবক বাসস্থানের অভাবে বিভিন্ন বাড়িতে বা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই ক্যাম্পের প্রাধান হলেন জনাব মোস্তফা শহিদ এমপি এ।
ইন্ডিয়ান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী একজন অফিসার ক্যাপ্টেন ধর কে পাঠানো হয়েছে,এই ক্যাম্পটিকে সুগঠিত করার জন্যে।(যদিও রিপোর্টি প্রত্যাহার করা হয়েছে)। যদি এই জায়গার নির্মান কাজ দ্রুত ও সহজসাধ্য ভাবে করা যায় তাহলে এখানে প্রায় ১০০০ জন যুবার সংস্থান করা যাবে। এই একই সমস্যা যেমন নির্মানকাজ,পরিবহন,রেশন এবং প্রয়োজনীয় জিনিষের সরবরাহজনিত সমস্যা অন্যান্য ক্যাম্পগুলোর মতো এখানেও লেগে আছে।
(গ)কালিয়াশহরঃ গঠনগত সমস্যার কারনে এই ক্যাম্পটি এতটা সুসংগঠিত না। বর্তমানে বলা হচ্ছে যে এই ক্যাম্পটিতে প্রায় ৩০০ নতুন সক্ষম যুবক একত্রিত হয়েছে। জনাব মানিক চৌধুরী এম এন এ এই ক্যাম্পের প্রধান।
এই যাবতীয় ইয়থ ক্যাম্পের কার্যাবলীগুলো মূলত পূর্বে অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুসারে পরিকল্পিত যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ক্রমাগত বিপুল সংখ্যক ১৬-২৫ বছর বয়সীদের আগমন করছে,এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যে তাদের জন্যে ট্রানজিট ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা দরকার। ইয়থ ক্যাম্পের দ্বিতীয় বিভাগের কাজ হলো অভ্যর্থনা-পাশাপাশি-ট্রানজিট ক্যাম্প হিসেবে কাজ পুনঃপরিচালনা করা।
ক্যাম্পগুলো হলোঃ
(১)ধর্মনগরঃ এটা ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী দ্বারা অনুমোদিত এবং এটা বর্তমানে এটা ২০০ সক্ষম যুবা ধারনে সক্ষম যা সঠিক বাসস্থান ব্যবস্থা দ্বারা ১০০০ এ রূপান্তরিত করা যাবে। জনাব তাইমুজ আলি এম পি এই ক্যাম্পের প্রধান।
(২)নার্সিংতারঃ এই ক্যাম্পটি মূলত প্রায় ৬০০জন যুবক নিয়ে গঠিত যাদের গোকূলনগর ক্যাম্পে সরিয়ে নেয়া হবে কিন্তু কুমিল্লা,ঢাকা,ফরিদপুর থেকে বিপুল পরিমান যুবক আসার জন্যে আমরা এই ক্যাম্পটি বন্ধ করবো না এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ক্যাম্প বন্ধ করার চাপ থাকা সত্ত্বেও এখানে ক্রমাগত প্রশিক্ষন পরিচালনা চলবে। জনাব দেওয়ান আব্দুল এম এন এ এই ক্যাম্পের প্রধান।
(৩)বেলতলিঃ এই ক্যাম্পটি ৪০০জন যুবকের ক্ষমতা নিয়ে গঠিত(সক্ষমতা আর বৃদ্ধি সম্ভব নয়)।জনাব আনিসুর রাহমান এই ক্যাম্পটি মূলত তত্ত্বাবধান করতেন,কিন্তু বর্তমানে জনাব গাজী ফজলুল রহমান এই ক্যাম্পের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
(৪)কংগ্রেস ভবন(আগরতলা)ঃ এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আমাদের যুবকদের এখানে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দিতে হয়েছে। এই অস্বাভাবিক রকম স্বল্প ও অযোগ্য স্থানে পরিবর্তিতভাবে প্রায় ৩০০-৪০০জন যুবককে প্রায় বস্তাবন্দি অবস্থায় থাকতে হবে। যেহেতু এখানে রান্নার ব্যবস্থা নেই এবং আশেপাশে রান্নার ব্যবস্থাও করা সম্ভব না,যুবকদের তাদের খাদ্যের জন্যে ৩ মাইল দূরে বেলতলিতে যেতে হয়। এটা একপ্রকার অসহনীয় ব্যাপার যা আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেও লাঘব করতে পারি না।
প্রস্তাবিত ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনঃ
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি যাকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ,পূর্ব জোন নামকরন করা হয়েছে সেখান থেকে আগরতলাকে নিম্নলিখিত ট্রানজিট স্থাপনের জন্যে ও সেই অনুসারে কাজের সুপারিশ করা হচ্ছে।
(ক)কামালপুরঃ জনাব আলতাফুর রহমান এম এন এ কে ক্যাম্পটি্কে সুসংগঠিত করার জন্যের ক্যাম্পের প্রধান হিসেবে পাঠানো হলো।
(খ)হারিশামুখঃ (শ্রীনগর থেকে আম্রিঘাট)
জনাব ওবায়দুল মজুমদার এম এন এ এবং জনাব খায়রুদ্দিন এমপিএ কে ক্যাম্পটিকে সুসংগঠিত করার জন্যে অনুরোধ করা হলো।
(গ)শীলচরঃ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম পাহাড়ী জোনের প্রধানের সুপারিশে চট্টগ্রাম পাহাড়ী জোন থেকে আগত যুবকদের জন্যে একটি ট্রানজিট ক্যাম্প সমন্বিত করা হলো।
(ঘ)উদয়পুরঃ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যুবকদের কেন্দ্রিভূত করে ইয়থ ক্যাম্পে অথবা শরনার্থী শিবিরে পাঠানো হলো যা বাস্তব সমস্যা পর্যবেক্ষন করতে পারে। আল-হারুন এমপি কে প্রধান করে একটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্থাবনা দেয়া হলো।
(ঞ)একিনপুরঃ উদয়পুরের মত একই পরিস্থিতির জন্যে এখানেও একটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্থাবনা দেওয়া হলো। প্রস্তাবিত ট্রানজিটটি স্থাপন করতে হবে যাতে বিশেষভাবে বিবেচিত যুবকদের ক্যাম্পে আগমন সহজ হয় এবং অপেক্ষমান থাকতে না হয়।
একই রকম ট্রানজিট চাহিদা ও পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে ভবিষ্যতে স্থাপন করা যেতে পারে।
ইয়থ ক্যাম্প পরিচালনা করতে যেয়ে বহুল সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে,যেহেতু পর্যাপ্ত বাসস্থান,সঠিক রেশন(সম্প্রতি মাথাপিছু ৪০০ গ্রাম চাল কোটা ৩০০ গ্রামে সংকুচিত করা হয়েছে কিছু সংখ্যক ক্যাম্পে,যার মাথাপিছু হার ১.১০পয়সা করে)শয্যাস্থান,পরিধেয় কাপড় সঠিক ভাবে সরবরাহ করা যাচ্ছে না।এছাড়াও বিভিন্ন ন্যূনতম জীবনযাপনমূলক প্রয়োজনীয় বস্তু যেমন পানি সুবিধা,স্যানিটেশন সুবিধা পরিকল্পিত অনুমোদন অনুসারে এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এখন পর্যন্ত যুব শিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুমোদিত কোন কিছুই আমরা ঠিকমতো পাই নি।
আমাদেরকে প্রয়োজনীয় জিনিষের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং পাশাপাশি অসমৃদ্ধ তহবিল থেকে সবাইকে সম্পূরক খাদ্যের ব্যবস্থা যেমন সবার জন্যে .২৫ পয়সা নাস্তা বাবদ বরাদ্দ করতে হবে কারন যুবকরা শারীরিক কসরত আর তুলনায় পর্যাপ্ত খাবার পায় না। যদি অবস্থা এমনি চলতে থাকে তাহলে ক্যাম্প বন্ধ করে দিতে হবে কারন পরিস্থিতি সামলানোর মত আর খুবই সীমিত অয়োজন রয়েছে।
গোকূলনগরঃ ক্যাম্পটিকে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে স্থাপন করা হয়েছে,যেহেতু ইয়থ ক্যাম্প একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় পরিচালিত হয় তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী এটা কে ৩ টি ব্লকে সাজানো হবে, নিরাপত্তার সুবিধার্থে বর্ডারের গেইটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং এইসব সুবিধার দ্বারা ১ মাসের মধ্যেই যুবকদের প্রশিক্ষিত করতে হবে। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়েছে, সেটা গোকূ্লনগরে এবং যেখানে যুবকের সংখ্যা ১৪০০ থেকে ২০০০ এ উন্নীত করা হয়েছে, যদিও মূল পরিকল্পনায় ৪০০ জন যুবককে এই স্থানের একই ব্লকে গোকূলনগরে সম্বনয় করার কথা ছিল। মেজর মেহেতা তার দুই ক্যাপ্টেন- ক্যাপ্টেন মানসিং ও ক্যাপ্টেন রাওয়াতকে ক্যাম্পটি সুসংগঠিত করতে ও ক্যাম্প প্রধান জনাব সামসুল হক এমপিএ কে সহয়তা করার জন্যে পাঠিয়েছেন।ইয়থ ক্যাম্পের পরিকল্পনা অনুসারে এখনো পর্যাপ্ত জিনিশপত্র ও রেশন প্রেরন করা হয় নি। ৬০০০ জন ধারণ ক্ষমতার অন্য দুটি ক্যাম্প (প্রতিটিতে ৩০০০ করে) বারমুড়া ও পদ্মনগরে স্থাপনের প্রস্তাবনা করা হয়েছে যা এখনো স্থাপিত হয় নি, প্রকল্পগুলো পরিত্যক্ত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে,যদিও এখন পর্যন্ত ক্যাম্প ব্লক স্থাপনের ক্ষীন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ইয়থ ক্যাম্পের প্রশাসনিক ও ব্যবহারিক পরিস্থিতির অসুবিধাগুলো বিবেচনা করে ক্যাম্পগুলোকে পুনরায় সাজাতে হবে।সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে যথা সম্ভব দ্রুত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে অন্যথা ইয়থ ক্যাম্পের পরিকল্পনায় ভরাডুবি হবে।
এসডি/-
পরিচালক ও সমন্বয়কারী
পরিকল্পনা ও প্রোগ্রামিং
ইয়থ ক্যাম্প