শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
“বাংলার বাণী”- একটি লিফলেট | বাংলাদেশ সরকার,প্রচার দপ্তর | …………১৯৭১ |
বাংলার বাণী
বাংলার নির্যাতিত,নিপিরিত,মুক্তিপাগল সংগ্রামী ভাইয়েরা-
বাঙালী জাতি আজ এক চরম অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন। তথাকথিত পশ্চিমা বেনিয়া গোষ্ঠী শেষবারের মত বাঙালী জাতির উপর চরম আঘাত হেনেছে। তারা চায় বাঙালী জাতিকে চিরতরে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে উঠিয়ে দিতে বাঙালীর অপরাধ তারা আর শোষিত হতে চায় না। ইসলামের নামে মিথ্যে প্রহসন দিয়ে, তাই বলে চব্বিশটি বছর বাংলাদেশকে শোষণ করেছে। সাধিনতা-উত্তরকাল থেকে আমাদের উপর চলেছে শাসন আর শোষণের যাঁতাকল। ১৯৫২ সালে মায়ের ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি, পর্যায়ক্রমে ‘৬২সাল, ‘৬৬সাল, ‘৬৯সাল এ দেশে “লাল রক্তের” ইতিহাস হয়ে রয়েছে। কত মা তার পুত্রকে, কত বোন তার ভাইকে, কত স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়েছে। শহীদের আত্মা আজ বাঙলার পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তাই বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ একতাবদ্ধ। তারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। পৃথিবীর কোন শক্তিই তাদের আজ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শহীদের অতৃপ্ত আত্মাকে তারা তৃপ্ত করবেই। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, “রক্ত যখন দিয়েছি-আর রক্ত দেব,এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ”। ইতিহাস কখনও মিথ্যে হতে পারে না। আজ জাগরিত বাংলার মানুষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুহস আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ-বাংলাকে শাসন ও শোষণমুক্ত গণপ্রজাতান্ত্রিক “বাংলাদেশ” রুপে প্রতিষ্ঠা করবেই।
সতর্কবাণী
(এক শ্রেণীর দুষ্কৃতকারী যারা সব সময় বাংলার সাথে বেঈমানি করেছে, তাদের কাছ থেকে সাবধান)
(১) মুসলিম লীগ ও জামায়েতের দালালদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। মনে রাখবেন-তারা আমাদের বড় শত্রু
(২)অবাঙালি বা অপরিচিত লোকের কাছে গোপন তথ্য প্রকাশ করবেন না।
(৩) ঢাকা বেতারের গায়েবী আওয়াজে বিশ্বাস করবেন না।
নির্দেশ
(১) পশ্চিমা পশুদের খতম করার আগে নিজেদের বিসশাসঘাতকদের খতম করুন।
(২) পশ্চিমা এবং চীনের দ্রব্য-সামগ্রী ব্যাবহার বর্জন করুন।
(৩) অবাঙালীদের দোকানে যাতায়াত বন্ধ করুন।
(৪) বাংলার সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদের নাম তাকিলাভুক্ত করুন এবং নিকটস্ত ‘মুক্তিবাহিনী’ কে প্রদান করুন।
(৫) সরকারি কর্মচারী যারা আছেন তারা কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকুন।
“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”
-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান
জয় বাংলা