শিরোণাম |
সূত্র | তারিখ |
যুব অভ্যর্থনা শিবির পরিচালনার নির্দেশনাবলী | যুব শিবির কেন্দ্রীয় পরিচালনা বোর্ড, বাংলাদেশ সরকার | ৮ নভেম্বর, ১৯৭১ |
যুব অভ্যর্থনা শিবির পরিচালনার সাধারণ নির্দেশাবলী
উপদেষ্টা কমিটি:
১. প্রতিটি অভ্যর্থনা শিবিরে বোর্ড অব কন্ট্রোল, যুব শিবির অনুমোদিত একটি উপদেষ্টা কমিটি থাকবে। এটির কাজ হবে শিবিরের সার্বিক দেখভাল করা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা। এই কমিটিতে অন্তত তিন জন সাম্মানিত সদস্য থাকবে, যারা হবে এমএনএ/এমপিএ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী, যারা শিবির পরিচালনায় আগ্রহী এবং এই মুহূর্তে শিবিরের কাছাকাছি এলাকার অধিবাসী। যেসব শিবির ইতিমধ্যেই কাজ করছে, তাদের কমিটি গঠিত না হয় থাকলে, শিবিরের আরও উন্নতি ও অগ্রসরতা এবং শিবির কর্মীদের পর্যালোচনা ও নিয়মিতকরণের স্বার্থে, এই নির্দেশনা মোতাবেক উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে উপরিউক্ত ধারা অনুযায়ী উপদেষ্টা কমিটি গঠনের জন্য শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি সভা আহবান করবেন।
সদস্যদের মধ্য থেকে একজন চেয়ারম্যান ও একজন সচিব থাকবেন কমিটিতে। চেয়ারম্যান, সচিব ও অন্যান্য সদস্যের নাম সম্বলিত একটি তালিকা ১৫/৯/৭১-এর মধ্যে বোর্ড অব কন্ট্রোলের চেয়াম্যান বরাবর অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে। উপদেষ্টা কমিটি শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্বাচিত করবে।
শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক কার্যনির্বাহী হবেন এবং পদাধিকার বলে উপদেষ্টা কমিটিরও সদস্য হবেন। উপদেষ্টা কমিটি দিক-নির্দেশনা দেবে, আর শিবিরের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির দায়িত্ব হবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা। উপদেষ্টা কমিটির সভার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং অনুলিপি বোর্ড অব কন্ট্রোলের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট জোনের পরিচালকদের বরাবর পাঠাতে হবে। শিবিরের ব্যয় নির্বাহের জন্য একটি যথাযথ হিসাব রাখার দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার।
শিবিরের স্বীকৃতি পেতে হলে ন্যূনতম জনবল হতে হবে ২৫০ জন।
স্টাফ:
১. ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ শিবিরের সকল কর্মকর্তাকে শিবিরের বাসিন্দা হতে হবে।
২. উপদেষ্টা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও নির্বাচন করবেন ও নিয়োগ দেবেন।
(ক) একজন হিসাবরক্ষক: স্টোর ও ক্যাটেরিংসহ শিবিরের সব হিসাব মানসম্মত হিসাব কার্যপ্রণালীর অনুযায়ী বজায় রাখার দায়িত্বে থাকবেন।
হিসাবের বইসমূহ নিয়মিত বিরতিতে নিরীক্ষা করা হবে।
(খ) একজন সহকারী ক্যাম্প ইন চার্জ কাম সুপারভাইজার ইন চার্জঃ বাসস্থান, বিছানাপত্র, তাবু, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা ……..অর্থাৎ শিবিরের সাধারন পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকবেন, তিনি সরঞ্জামাদির বর্ননামুলক তালিকাও রাখবেন।
(গ) একজন কেটারিং সুপারভাইজারঃ তিনি রান্নাঘরের কেনাকাটা, রান্নার ব্যবস্থা, প্লেট, পানি ও জ্বালানি প্রভৃতির দায়িত্বে থাকবেন। তিনি হিসাব রক্ষকের কাছে তার দৈনন্দিন হিসাব জমা দেবেন।
(ঘ) একজন চিকিৎক কর্মকর্তা
(ঙ) একজন কম্পাউন্ডার।
(চ) এক সাধারণ সহকারী।
(ছ) চারজন প্রশিক্ষকঃ (৫০০ ছেলের একটি ক্যাম্পের জন্য)
৩। প্রশিক্ষকঃ
(ক) প্রেরণাদায়ী প্রশিক্ষক -প্রতি ২৫০ যুবকের জন্য একজন।
(খ) শারীরিক প্রশিক্ষক- প্রতি ২৫০ যুবকের জন্য একজন। অন্যান্য প্রশিক্ষণ সময় সময়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং তারপর উপযুক্ত নির্দেশাবলী দেওয়া হবে- যদি প্রয়োজন হয় এ ব্যাপারে নির্দেশাবলী যথাসময়ে অনুসরণ করা হবে।
৪। উপ ক্যাম্প ইনচার্জ সব বিষয়ে ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জকে সাহায্য করবেন এবং ক্যাম্প ইনচার্জের অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পের দায়িত্ব নেবেন ও পদাধিকার বলে উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করবেন।
৫। কর্মচারীদের জন্য বোর্ড / থাকার জায়গাঃ হাত খরচঃ
নিম্নলিখিত কর্মচারীরা শিবিরে বিনামূল্যে থাকাতে পারবেন। তারা কোন বেতন পাবেননা। তবে তাদেরকে এই সময়ের জন্য প্রতি মাসে ৫০ টাকা করে হাত খরচ দেওয়া হবে।
(1) ক্যাম্প ইনচার্জ।
(2) ডেপুটি ক্যাম্প-ইন-চার্জ (সুপারভাইজার)
(3) হিসাবরক্ষক
(4) স্টোর সুপারভাইজার
(5) কেটারিং সুপারভাইজার
(6-9) চারজন প্রশিক্ষক
(10) মেডিকেল অফিসার
(11) কম্পাউন্ডার
(12) সাধারণ সহকারী। (রান্নার তদারক ইত্যাদি ও ক্যাম্প ইন চার্জের দাওয়া অন্যান্য দায়িত্বের জন্য)
৬।রান্নার ও অন্যান্য কর্মীদেরঃ
এছাড়াও ক্যাম্প সেচ্ছা সেবক ও যুবকদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ দিবে, যেমন বাবুর্চি, সহকারী বাবুর্চি ইত্যাদি এবং তারা সাহায্যকারী হিসেবে আখ্যায়িত হবে। প্রয়োজনীয় কর্মীদের সংখ্যা ও কাজের ধরন উপদেষ্টা কমিটি দ্বারা নির্ধারিত হবে।
এমন সকল কর্মচারী ক্যাম্পে বিনামুল্যে থাকা ও খাওয়া পাবে এবং তাদের জন্য প্রতিমাসে ৫০ টাকা হাত খরচ প্রদান করা হবে।
৭) কার্য নির্দেশনাবলীঃ
উপদেষ্টা পরিষদ, ক্যাম্পের ইনচার্জের মাধ্যমে ক্যাম্পের দরকারি বিষয় গুলোর জন্য জোনাল পরিচালকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং ক্যাম্পের কার্যাবলি, হিসাব ইত্যাদি নিয়ে পাক্ষিক রিপোর্ট পেশ করবে। একটা কপি সরাসরি চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে এবং আরেকটি কপি পাঠাতে হবে তাদের নিজ নিজ পরিচালক(ডিরেক্টর) বরাবর।
সব অর্থ পরিশোধ এই সাপেক্ষে হতে হবে……………………………
যে এলাকায় ব্যাংক আছে, সেখানে এদের মধ্যে যেকোন ২ জন যৌথ ভাবে একাউন্ট চালাবে। ১) চেয়ারম্যান ২) ক্যাম্প ইনচার্জ ৩) হিসাবরক্ষক।
দিনের শুরুতে এবং দিন শেষে কতজন যুবক ক্যাম্পে উপস্থিত ছিল তার একটা তালিকার কপি প্রতিদিন চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা কমিটি এবং জোনাল পরিচালকের অফিসে পাঠাতে হবে।
অন্যান্য রিপোর্ট এবং হিসাব দাখিলের নির্দেশনা পরে পাঠানো হবে। এরমধ্যে এসকল রিপোর্ট সাদা পৃষ্ঠায় পাঠাতে হবে।
৮) শারীরিক প্রশিক্ষণঃ
শারীরিক প্রশিক্ষণ সিলেবাস এমন হবে যেন সংক্ষিপ্ত সময়ে যুবকেরা সর্বাধিক মনোবল অর্জন করতে পারে এবং কঠিন অপারেশনের জন্য শারীরিক ভাবে সক্ষম হয়। এই সিলেবাসের মধ্যে আড়াআড়ি মাঠে দৌড়ান এবং হাঁটা থাকবে। সম্পূর্ন সিলেবাস দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশিক্ষক তৈরী করবেন। সেখানে কোন কুচকাওয়াজ(ড্রিল) থাকবে না।
৯) ভর্তি প্রক্রিয়াঃ
ক্যাম্পে ভর্তি প্রক্রিয়া ক্যাম্প ইনচার্জের তত্ত্বাবধানে হবে, যাকে এবিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ অথবা এ উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা পরিষদের গঠিত অন্য কোন দল নির্দেশনা দেবে।
ক্যাম্পে ভর্তি হওয়া যুবককে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং বাংলাদেশে তার স্থায়ী নিবাস ওই এলাকার MNA/MPA দ্বারা প্রত্যয়িত হতে হবে, যিনি এই মর্মে একটি লিখিত প্রমানপত্র প্রেরণ করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত MNA/MPA এর অনুপস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদ অথবা এ উপদেষ্টা পরিষদের গঠিত অন্য কোন দল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং তাকে অন্যান্য আবশ্যিক শর্ত ও পূরন করতে হবে।
তার অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতায় প্রশ্নাতীত আস্থা ও বিশ্বাস থাকতে হবে। তার কোন অতীত অপরাধমূলক কর্মকান্ডের রেকর্ড থাকবে না। তার অন্য দেশের প্রতি আনুগত্য থাকবে না।
ভর্তি প্রক্রিয়া জাত, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি নির্বিষেশে, জন্ম ও বাসস্থান এবং কঠোরভাবে ধর্ম নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে সকল সক্ষম যুবককে জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
একজন যুবককে অভ্যর্থনা শিবির ভর্তি করার পর যদি সে পর পর দুইবার যুব ক্যাম্পের বাছাইয়ে ফেইল করে তবে স্বাভাবিক ভাবেই তাকে ক্যাম্প থেকে বাদ দেওয়া হবে।
১০) নিরীক্ষা দলঃ
একজন হিসাবরক্ষক, একজন সহকারী হিসাবরক্ষক এবং পরিচালক কর্তৃক প্রেরিত সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্যাম্পের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্মচারী নিয়ে গঠিত নিরীক্ষা দল, হিসাব নিরীক্ষা এবং পুর্ব নিরীক্ষা সাপেক্ষ অগ্রিম পরিশোধ গুলো সমন্বয়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর অভ্যর্থনা শিবির পরিদর্শন করবে। টিম চেয়ারম্যান বরাবর পাঠাবে…………
(গোপনীয়)
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
ডিরেক্টর জেনারেল অফিস, ইয়ুথ ক্যাম্প
৬-১১-৭১ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহান্তে যুব ক্যাম্পে জনবলের তালিকা এবং যাদেরকে উচ্চ প্রশিক্ষনের জন্য ব্রিগ্রেডিয়ার মাষ্টারের
অফিস থেকে পাঠানো হয়েছে তাদের তালিকা
ক্যাম্পের নাম ৬-১১-৭১ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহান্তে উচ্চ ৬-১১-৭১ তারিখ পর্যন্ত ৬-১১-৭১ তারিখ পর্যন্ত
প্রশিক্ষনের জন্য পাঠানো যুবক সপ্তাহান্তে নতুন আসা যুবক সপ্তাহান্তে যুবকের সংখ্যা
১ পিতা – ১৪৫ ৯০০
২ বারাকপুর(শ্রীপল্লী) – ৬৪৫ ৮০০
৩ জমশেরপুর – ৩৮ ৮০০
৪ দাতাল ৩০০ – ৬০০
৫ চাপড়া(বাঙ্গালী) ২৯৭ – ৬৬৫
৬ পরিপল – – ৮০০
৭ গৌবাগান ৯১০ ৬৮ ৩৯০
৮ পত্তরাম – ৫৭ ৭৬০
৯ ধানছড়িগাও ৩১০ – ৯২০
১০ তপুরহাট ৬৭ – ৬৯৩
১১ গোকুলনগর-১ – ২৫৪ ১১৮০
১২ গোকুলনগর-২ – ২৭৩ ১২০০
১৩ চারিলাম-১ – ১৩৩ ১০০০
১৪ চারিলাম-২ – ৩০৮ ১২০০
১৫ কাঠালিয়াছড়া – ১৫০ ১০০০
১৬ মেনু ১৫২ – ৭২০
১৭ বাগেতা – ১০৫ ১০০০
১৮ কাইল্যাশহর(কালাই নগর) – ৩০০ ১০০০
১৯ হাসইন – ৫১ ৪২১
২০ লাবোউ ১৪০ – ৯৬০
২১ শলীন ২৮৫ – ১৭৩০
২২ দালু ১০১ – ১৯৭০
২৩ ক্লোভার হাউজ – – ২৯৫
৬-১১-৭১ তারিখ পর্যন্ত ২৫৭৭ ২৫৩০ ২০৯৬৪
সপ্তাহান্তে সর্বমোট