You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.02 | ১৭ আষাঢ়, ১৩৭৮ শুক্রবার, ২ জুলাই ১৯৭১ | একাত্তরের দশ মাস - রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী - সংগ্রামের নোটবুক

১৭ আষাঢ়, ১৩৭৮ শুক্রবার, ২ জুলাই ১৯৭১

বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানের কাছে বিভিন্ন সূত্রে এদিন ৪৫ প্রিন্সেস ষ্ট্রীটস্থ দপ্তরে খবর পোঁছেযে, জাতীয়,/ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সর্বজনাব আমিনুদ্দিন, আমজাদ হোসেন, মশিউর রহমান, নাজমুল হক সরকার, আব্দুল হক। ডাঃ জিকারুল হক, সৈয়দ আনোয়ার আলী, এবং এ কে সরদার পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম অন্যদেরকে মুক্তি সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রেরণা দিয়েছিল। (লেখক)

 সিরিয়া ও গাম্বিয়া পাকিস্তানের অখন্ডতার স্বপক্ষে তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘোষণা করে পাকিস্তান সরকার বাণিজ্য সংক্রান্ত ছাড়া সকল প্রকার বেসরকারী পর্যায়ের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করে দেয়। (সংবাদপত্র)

পাকিস্তান সশস্ত্র ব্যক্তিদের (মুক্তিযোদ্ধা) সীমান্ত লংঘনের বিরুদ্ধে ভারতের কাছে প্রতিবাদ জানায়।

  সিনেটর চার্লস এ্যাথিয়ান ও সিনেটর বেডফোর্ড মোর্সে পাকিস্তানে নতুন করে সমরাস্ত্র সরবরাহের লাইসেন্স প্রদান বন্ধ এবং মঞ্জুরীকৃত লাইসেন্স বাতিল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উভয় পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপনকরেন। (সংবাদপত্র)

পাকিস্তানের-তেহরিক-ই-ইশতেকবাল পার্টি প্রধান এয়ার  মার্শাল (অবঃ) অসাগর খান সপ্তাহব্যপী সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ করেন। ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে তেহরিক প্রধান বলেন, পাকিস্তানের ভবিষ্যতের  জন্য আগামী তিনমাস সংকট পূর্ন। সরকারের জনগণের ন্যায্য দাবি- দাওয়া মিটিয়ে দিতে হবে। কে সরকার গঠন করবে তা বড় সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে আদৌ কোন সরকার গঠন করা যাবে কিনা এবং দেশে গণতন্ত্র টিকবে কিনা। (সংবাদ পত্র)

  ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব জাহেদী বলেন, পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য ইরান প্রয়োজনে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াবে। (সংবাদপত্র)

যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে পরিচালনার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘ইয়থ ট্রেনিং কন্ট্রোল বোর্ড’ গঠন করেন। কেন্দ্রীয় সাহায্য ও পুনর্বাসন কমিটির সচিব অধ্যাপক মুহম্মদ ইউসুফ আলী এই বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। উহং কমান্ডার মির্যা ফ্লাইট লেঃ আহমেদ রেজা যুব নিয়ন্ত্রন বোর্ডের মুখ্য দায়িত্ব পালন করেন। এই যুব শিবিরগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ চালানো হত। উল্লেখ্য, যুদ্ধের খরচের ব্যাপারে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতেন বিপ্লবী বাংলাদেশ সরকারের সুযোগ্য মন্ত্রীপরিষদ। যুব নিয়ন্ত্রন বোর্ডের দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কাম্পপ্রধান, উপ-কাম্প প্রধান, ক্যাম্প তত্ত্বাবধায়ক, ছাত্র প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য অফিসার, পলিটিক্যাল মটিভেটর, ফিজিক্যাল পদ সৃষ্টি করা হয়। এইসব যুব ক্যাম্পের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়-দায়িত্ব সাধারন্তঃ বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের ওপরই ন্যস্ত ছিল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একজন এমপিএ অথবা এম এন এ ক্যাম্পের প্রধান /উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। উল্লেখ্য, যুব অভ্যর্থনা কেন্দ্রের সব যুবকদের উচ্চতর অস্ত্র প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়া সম্ভব ছিল না। যাদের উপযুক্ত শিক্ষাসহ শারীরিক, মানসিক ও প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক যোগ্যতা ছিল তাদেরকেই সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠান হয়। এভাবে পঞ্চাস হাজার যুবককে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে বলে সরকারী সূত্রে এদিন জানা যায়। (লেখক)

ভারতের প্রবীন নেতা শ্রী জয় প্রকাশ নারায়ণ বলেন, বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর দ্বারা ইয়াহিয়া খানকে চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধির কছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ভারত সরকারের কৌশল খুব একটা কাজে আসেনি। ভারতকে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মার্কিন সরকার কর্তৃক পাকিস্তানকে অস্ত্রপ্রদান সংক্রান্ত এক প্রশ্নোত্তরে শ্রী নারায়ণ বলেন, মিঃ হেনরী কিসিঞ্জারসহ মার্কিন কর্মকর্তা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, পাকিস্তানকে আর কোন অস্ত্র সরবারহ করা হবে না। (সংবাদপত্র)  শালদা নদীর পাশে রেল ষ্টেশনে হানাদারের সুদৃঢ় ঘাঁটি দখল করতে জেয়ে সুবেদার বেলায়েত অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করে শহীদ হন। (সংগ্রহ)

Reference:

একাত্তরের দশ মাসরবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী