শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিযুদ্ধে প্রকৌশলীদের ভূমিকা সম্পর্কে প্রেরিত একটি রিপোর্ট | বাংলাদেশ সরকার, ত্রাণ ও পুনবার্সন মন্ত্রণালয় | ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
মেমো নং : প্রকৌ ৩৯ (৪) /২, তারিখ: ২৮.০৯.১৯৭১
মুক্তিযুদ্ধ ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় প্রকৌশলীদের সেবার সদ্ব্যবহার
আর. আর ও এইচ. এ মন্ত্রী একটি প্রকৌশলী বিভাগ গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন ১৯৭১ সালের জুনে। তবে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এই প্রকল্প চালু না করতে। যাই হোক, প্রকৌশলীদের সেবা কাজে লাগানোর জন্য আরেকটি বিভাগ অনুমোদন পেয়েছিল এবং ১৫.০৯.১৯৭১ তারিখে আর. আর ও এইচ. এ মন্ত্রীর মাধ্যমে অর্থ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছিল আর্থিক সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে এবং মন্ত্রী পরিষদকে আশু অবহিতের জন্য।
স্বাধীনতা আন্দোলন, পরিকল্পনা কেন্দ্র, ত্রাণ ও যুব শিবিরে প্রকৌশলীদের কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো:
(১) স্বাধীনতা আন্দোলন :
প্রকৌশলীদের মুখ্য কর্মী থেকে শুরু করে অন্যদেরও প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ সামরিক অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রতিরক্ষা বিভাগই ব্যাপারটির কথা তুলেছে। চাওয়ামতোই প্রকৌশলী ও কারিগরদের তালিকা করা হয়েছে। এখন তাদের পদায়ন সম্পর্কিত সিন্ধান্তের অপেক্ষা।
(২) পরিকল্পনা কেন্দ্র:
সরকার সম্প্রতি একটি পরিকল্পনা কেন্দ্র গঠন করেছে, যেটির কাজ নিম্নরূপ:
১. লড়াইয়ে উদ্ভূত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা
২. নীতিপত্রের প্রস্তুতি ও সেসব বাস্তবায়নের ছক কাটা
৩. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা
৪. সংগ্রাম পরবর্তী অবস্থার পরিকল্পনা
৫. প্রস্তাবনা সম্পাদনের ফলো আপ করা
৬. সম্পাদনের সরু প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা
পরিকল্পনা কেন্দ্রে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন নিম্নলিখিত পরিপ্রেক্ষিতে:
পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য:
ক. পানির সরবরাহ ও শৌচাগারসহ বাস্তুচ্যুত মানুষের গৃহায়ন ও আবাসন
খ. স্থলপথ, রেলপথ ও জলপথের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা
গ. বিদ্যুৎ প্রবাহ ও শিল্প বিভা
ঘ. টেলিফোন, টেলিগ্রাফ ও ওয়্যারলেস সিস্টেম
ঙ. কৃষির জন্য সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যা পরবর্তীতে গ্রহণ করা হবে
পরিকল্পনার প্রস্তুতি ও খতিয়ানের জন্য মাঠ পর্যায়ে জরিপকারী প্রয়োজন। আর্থিক খতিয়ানের প্রস্তুতি ও বিভিন্ন ধাপের উন্নয়ন প্রকল্পের ছক কাটতে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন। মাঠ পর্যায়ে কাজ বাস্তবায়ন, পরিকল্পনা প্রস্তুত ও খতিয়ান করবে প্রকৌশলী বিভাগ আর পরিকল্পনা অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে পরিকল্পনা কেন্দ্র।
৩. যুব শিবির
সংক্ষিপ্ত আকারে মুক্তি বাহিনীর কারিগরি কৌশল সম্পর্কে ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের কাজে লাগানোকে প্রয়োজনঅয় বলে বিবেচিত হচ্ছে।
৪. ত্রাণ শিবির
বাস্তুচ্যুতদের দুর্ভোগ প্রশমিত করতে ত্রাণ শিবিরে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন। ঐক্যবদ্ধ সরকারের পুনর্বাসন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কর্নেল লুথরা সম্প্রতি এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গটি আমরা স্থানীয় সরকারেও নিয়ে যেতে পারি। উপরে উল্লেখিত বাস্তবতাগুলোর বিবেচনায়, আর. আর ও এইচ.এ. মন্ত্রী আমাকে বলেছেন বিষয়টি তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) সামনে উপস্থানের জন্য, যে বিভিন্ন বিভাগের প্রয়োজনের খাতিরে প্রকৌশরী বিভাগ গঠন করা হয়।
বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, প্রকৌশলীদের কাজে লাগানো নিয়ে আলাদা একটি নোট তাঁর সদয় অবগতির জন্য জমা দেওয়া হয়েছে
২০.৭.১৯৭১ তারিখে।
(মো. এমদাদ আলি)
প্রধান প্রকৌশলী
________________