You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.02 | স্বাধীন বাংলা কর্মী কর্তৃক আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা সচিব কে লিখিতএকটি চিঠি| বাংলাদেশ সরকার, প্রচার বিভাগ - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
স্বাধীন বাংলা কর্মী কর্তৃক আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা সচিব কে লিখিতএকটি চিঠি বাংলাদেশ সরকার, প্রচার বিভাগ ২ অক্টোবর ১৯৭১

 
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
নয়াদিল্লী ১৮,১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
২২ রোজ এভিনিউ ,নয়াদিল্লী – ১ ভারত ,টেলি –২৭৩৩৭৬/২৭১৯৪৬
গ্রাম – সত্যগ্রহ

বরাবর
প্রতিরক্ষা সচিব
বাংলাদেশ সরকার
মুজিবনগর

২অক্টোবর ১৯৭১
একান্ত গোপনীয়

মাননীয় মহাশয়,
আমি যখন নয়াদিল্লিতে গত মাস বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলাম, প্রতিনিধির অন্যতম জনাব রিচার্ড হাউজার, আমার কাছে এক বাংলাদেশী নাগরিককে প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে যা মানসিক যুদ্ধবিগ্রহের জন্য দরকারী।
এটি ছিলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাঁর অবদানের অংশ। ভদ্রলোক ইন্টারন্যাশনাল পিস একাডেমীর প্রেসিডেন্ট জেনারেল রিখায়ের তুলনায় ইন-কমান্ডে দ্বিতীয় ছিলেন অন্যথায় নিউইয়র্ক- লুমুম্বা-শম্বী সঙ্কটের সময় কঙ্গোতে জাতিসংঘবাহিনীর কমান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন হিফ্সী বামেনুহিনের এর সংগতকারী স্বামী, যিনি বিশ্ববিখ্যাত পিয়ানোবাদক ইয়াহু দিমেনুহিনের বোন। আমি এই সম্মেলনের অন্যান্য প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তিনি নিজের সম্পর্কে যা বিবরণ দিয়েছিলেন তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিলাম এবং আমি সন্তুষ্ট ছিলাম সত্যতা নিয়ে। এখানে তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব একজন মানুষ, যিনি না-খুব-তরুণ এবং তুলনামুলকভাবে গড় বুদ্ধিমত্তায় হবে অধিষ্ঠিত, হতে হবে সামর্থ্যবান এবং ইন্দ্রিয় সাংগঠনিক ধাত-বাঞ্ছনীয় এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের নজরে পড়েনি, এমন একজনকে লন্ডনে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের বিষয়ে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য মনোনীত করা উচিত। তারমতে, যুদ্ধ বিগ্রহের অংশ হিসাবে অস্ত্রের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধও গুরুত্বপূর্ণ। তার নিবিড় প্রশিক্ষণের পর মনোনীত ব্যক্তি কে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের একটি পুরো বিভাগের
ভার দেওয়া হতে পারে যে বিভাগে সামরিক অভিযানের এবং মিডিয়া অপপ্রচারের বিশেষত রেডিও সঙ্গে পূর্ণসমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তিনি প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় বা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরে গুরুত্বারোপ করেছেন যেহেতু পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তার পিছু লেগে থাকবে। প্রশিক্ষণের খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই খরচ সম্পূর্ণ রূপে প্রশিক্ষক বহন করবে। তারা ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণার্থীদের রিটার্ন ভাড়ার জন্য ১০০$ পর্যন্ত অবদান করতে ইচ্ছুক। তিনি চাইতেন না যে তার পরিচয় সব মানুষের কাছে প্রকাশ পাক, তাই তিনি আমার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন।
আমি আপনাকে স্মরণ করিয়ে উচিত যে জনাব হাউজার একজন ইহুদি ধর্মের লোক। উনার প্রস্তাবে ইসরায়েলের মতো একটি দেশের কি স্বার্থ থাকতে পারে তা আমার জানা নেই , আপনি যেমনটি জানেন , ক্রমাগতভাবে তারা বাংলাদেশ নাগরিকদের এখানে এবং বিদেশে ফ্রীলার পাঠানো হয়েছে যাতে তাদের কাছ থেকে সামরিক সাহায্যের জন্য আমরা যেকোন ধরনের সম্পর্কে রাজী হতে পারি। আমাদের সমর্থন করার পিছনে তাদের উদ্দেশ্য সম্ভবত আরব সমর্থনকারী দেশ-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের কৌশলের একটি অংশ। আমার মতে, প্রশিক্ষণ সূত্র যাই হোক না কেন সেখানে জড়িত শুধুমাত্র এক ব্যক্তিকে প্রকাশে কোন ক্ষতি নেই, নেই কোনো ঝুঁকি। আমরা যদি সত্যিই প্রশিক্ষিত হতে পারি, তাহলে আমাদের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় তিনি একটি মহান সম্পদ প্রমাণিত হবেবেন এটা নিশ্চিত। যেহেতু প্রস্তাবে নামমাত্র সীমাবদ্ধতা আছে, তাই আমি আশা করব যে একটি সিদ্ধান্ত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শীঘ্রই আপনার কাছ থেকে শুনতে প্রত্যাশী।

আপনার শুভাকাঙ্খী
(এ কবির) রেডিও বাংলাদেশ.