You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.23 | আন্তঃবিভাগীয় সচিবদের কার্যবিবরনী | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আন্তঃবিভাগীয় সচিবদের কার্যবিবরনী বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন ২৩শে অগাষ্ট, ১৯৭১

 
প্রধানমন্ত্রীর আদেশক্রমে, সচিব মহোদয়গনের আন্তঃবিভাগীয় আলোচনা ও সমন্বয় সভা প্রতি সোমবার সকাল ৯-০০টায় (বাতিলের নোটিস না জারী হলে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নিজে এসব সভায় সভাপতিত্ব করবেন, সকল সচিব মহোদয়কে অনুগ্রহ পূর্বক এই সভার যথাযথ গুরুত্ব বিবেচনা সহকারে তাদের এপয়নমেন্ট নির্ধারন করার আহবান জানানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আরো আশা প্রকাশ করেন যে প্রতিটি বিভাগ এই সভায় তাদের ওপর ন্যাস্ত দায়িত্বের অগ্রগতি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করবেন।
(এইচ টি ইমাম
মন্ত্রী পরিষদ সচিব)

নং…কেবিঃ তাং অগাষ্ট ১৯, ১৯৭১

প্রতি,
সকল সচিব
ব্যাক্তিগত সচিব, প্রধানমন্ত্রী
ব্যাক্তিগত সচিব, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি
২৩শে অগাষ্ট অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের সংক্ষিপ্ত কার্যবিবরনী ও সিদ্ধান্ত সমূহ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্বে নিম্ন বর্নিত সচিবগন অংশগ্রহন করেন।
১। সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
২। সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়।
৩। সচিব, অর্থ মন্ত্রনালয়।
৪। সচিব, জি, এ।
৫। সচিব, মন্ত্রী পরিষদ।
মাননীয় পরাষ্ট্র সচিব তার মন্ত্রনালয়ের গত কয়েক সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ন কার্যবিবরনী ব্যাখ্যা করেন। তিনি নিম্নলিখিত বিষয় সমূহ পেশ করেনঃ
১। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে কার্যরত পাকিস্তান মিশন সমূহের ২২ জন অফিসার ও ৮০ জন সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে।
২। পাকিস্তান পররাষ্ট্র বিভাগের নুতন প্রজন্ম(বাংগালী) আমাদের বাংলাদেশী চেতনায় আগের তূলনায় বেশী আকর্ষিত হচ্ছে।
৩। বিভিন্ন দেশের পাকিস্তান মিশন থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী পাকিস্তান পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের আনুগত্য প্রকাশ করায় পাকিস্তানী উচ্চ পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কূটনৈতিক মিশন সমূহে নানান পরিবর্তন আনছে।

৪। ইরান সরকার গভীরভাবে পাকিস্তান সরকারের পক্ষালম্বন করছে।
৫। শ্রীলংকায় পাঠানো আমাদের প্রতিনিধি দলের অগ্রগতি বেশ সন্তোষহজনক। আফগানিস্তান ও নেপালেও ২/১ দিনের ভেতর প্রতিনিধি দল প্রেরন করা হবে।
পরাষ্ট্র সচিব জাপান, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন, থাইল্যান্ড, সিংগাপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে ক্রমবর্ধমান জনমত বর্ননা করেন।
প্রধানমন্ত্রী সভার কার্যববিরনীতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি পূনরায় সচিবগনের আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভার গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো আশাবাদ ব্যাক্ত করেন যে লিখিত বিবরনী সভার পূর্বেই সব বিভাগ নিজেদের ভেতর আদান প্রদান করবে এবং জমা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ব্যাখ্যা করেন এবং পরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনায় রেখে তাদের পূর্নাংগ রিপোর্ট পেশ করবে বলে আশা প্রকাশ করেনঃ
১। পাকিস্তানে কার্যরত বিভিধ শক্তি।
২। পাকিস্তানের (পশ্চীম) বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং তাতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র দলের ভূমিকা।
৩। খান ওয়ালী খানের সাম্প্রতিক বক্তব্য।
৪। মাহমুদুল হক উসমানী, কবি আয়াজ, জিএম সৈয়দদের গ্রেফতার।
৫। বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকাশ্যে বিচার দাবী করে এয়ার মার্শাল আজগর খানের আহবান।
৬। ভূট্টোর ওপর বর্তমান সংকটের সম্পূর্ন দায় চাপিয়ে আইউব খুরোর বক্তব্য।
৭। সাধারন নির্বাচনে ভূট্টোকে জয়যুক্ত করার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর আশ্বাস প্রদান (সেনানিবাস এলাকায় তার ভাষন)।
৮। দক্ষিনপন্থী রাজনৈতিক দল সমূহের উত্থানের সম্ভাবনা।
৯। ইয়াহিয়ার বর্তমান সংকট সমূহ।
সভায় নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়ঃ
১। সকল বিভাগের সচিবগন নিজ নিজ বিভাগের কার্যকলাপের রিপোর্ট প্রস্তুত করবেন এবং মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে পাঠাবেন (রবিরারে ভেতর, যাতে করে সোমবার সকালের সভায় সেগুলি উত্থাপন করা যায়)।
২। সচিবগন মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে আন্তঃবিভাগীয় সিদ্ধান্ত এবং সমন্বয়ের জন্য প্রস্তুত রিপোর্টও রবিবারের মধ্যে পাঠাবেন।
৩। সভা প্রতি সোমবার সকাল ৯-০০ টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

(এইচ টি ইমাম
মন্ত্রী পরিষদ সচিব)