ঢাকা শহরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত
৫ জুলাই-মুক্তিযােদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে গতকাল ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা পুরােপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মুক্তিযােদ্ধারা শহরের বেশ কয়েকটি গ্যাস পাইপ উড়িয়ে দেন। ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির ওপরও মুক্তিযােদ্ধারা প্রচণ্ড আক্রমণ চালান। ফলে, ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। শহর জুড়ে নেমে আসে ঘন অন্ধকার। মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে পাক সামরিক বাহিনীর যে সংঘর্ষ গত পরশু শুরু হয়েছিল, বাহ্যত গতকাল তা বন্ধ ছিল। গত পরশু ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথটি একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। গতকাল আবার যানবাহন চলতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে পরীক্ষা প্রহসনে পরিণত আগরতলা থেকে পি টি আই জানাচ্ছেন, পাক সামরিক শাসকেরাজোর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যাল পরীক্ষা নেবার চেষ্টা করলেও কার্যত পরীক্ষা প্রায় বন্ধই বলা চলে। কারণ, পরীক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে একেবারেই উৎসাহ দেখাচ্ছেন না।
সীমান্তের ওপার থেকে বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ঢাকাতে এস এস সি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। মােট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এগারাে হাজার। কিন্তু প্রথম দিনে দেখা গেল ওই পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র আটশ’জন পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তারপর থেকে উপস্থিতির সংখ্যা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য শহরের হালচাল আরও খারাপ। নারায়ণগঞ্জে পরীক্ষার্থীর অভাবে মােট ৪টি কেন্দ্রের মধ্যে দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। যে দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষা চালানাে হচ্ছিল সেখানেও উপস্থিতির হার একেবারেই নৈরাশ্যজনক। জানা যায়, ওই দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার ছিল শতকরা মাত্র দশজন। এ থেকেই বােঝাযায়, সামরিক বাহিনীর জোর করে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা কতখানি প্রহসনে পরিণত হয়েছে।
Reference:
২৬ জুলাই ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা