You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৫ ভাদ্র ১৩৭৮ বুধবার ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কলকাতার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন,  ‘স্বাধীন বাংলাদেশেই ভারতের অন্যতম লক্ষ্য।’ (সংবাদপত্র)

গীতালদহ ফুলবাড়ি সিনাইরুটে ফুলবাড়ি, লালমনিরহাট অ উলিপুরের বাংলাদেশ  লিবারেশন ফোর্স (মুজিববাহিনি) সদস্যদের ইনডাকশনের যাবতীয় দায়িত্ব মেজর রেড্ডি পালন করে।

  কুড়িগ্রাম মুসলিম লীগ নেতা অ পাঞ্জাবিদের দালাল পনির উদ্দিন আহমেদের পুত্র তাজুল ইসলাম চৌধুরী মুক্ত এলাকা থেকে পালিয়ে এসে পাকবাহিনীর সাথে মিলেমিশে কুড়িগ্রাম, কাঁঠালবাড়ি সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি তল্লাসি অভিযান দ্বারা নিরীহ মানুষের উপর বর্বর অত্যাচার শুরু করে। প্রায় আশিজন মানুষকে হত্যা করে। (উত্তর রণাঙ্গণেবিজয় পৃঃ ৯৫)

  প্যারিসের দৈনিক ‘লা ফিগারো’ পত্রিকার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন, ভারত পাকিস্তানী ভূখণ্ডের কোন অংশ দখলের চেষ্টা করলে পাকিস্তান পুরোপুরি যুদ্ধ করবে। তিনি আরো বলেন পুর্ব পাকিস্তানের সংকটকালে এটা ফাঁস হয়ে গেছে যে, তার দেশের বিরুদ্ধবাদীদের পুরোভাগে রয়েছে বৃটেন। পুর্ব পাকিস্তান সংকটে তিনি ফ্রান্স ও চীনের ভূমিকার প্রশংসা করেন। (দৈঃ পাঃ) তিনি বলেন, দেশের পুর্বাঞ্চলে সীমান্তের কোন কোন এলাকা ছাড়া সবকিছুই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি মোটেই শান্ত নয়।

   মুক্তিবাহিনীর সদর দফতর থেকে জানা যায় যে, সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিমাসে ২০ হাজার গেরিলাকে ট্রেনিং প্রদান করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেপ্টেম্বর থেকেই ভারতে ব্যাপক যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়। ডিভিশনাল এবং কোর হেডকোয়াটার গুলো অগ্রবর্তী স্থান সমুহে অবস্থান গ্রহণ করতে থাকে। সরবরাহ ব্যবস্থা ও রণ প্রস্তুতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্ভাব্য সংঘর্ষস্থল অভিমুখী সড়ক নির্মান,  সেতুগুলোর রক্ষণাবেক্ষন ও মেরামতে কাজ পূর্ণ উদ্যম শুরু করে। কতগুলো ইউনিট সীমান্তবর্তী সমূহে অবস্থান নেয়। (১০ খণ্ড পৃঃ ১৮)

-পাকিস্তান সামরিক সরকার এক ঘোষণায় জানায় যে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে মাত্র ২,০০২,৬২৩ জন পাকিস্তানী ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।

-দুস্কৃতকারী, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে লড়াই করার জন্য টিক্কা খান ও নিয়াজীরমত পাক জেনারেলও রাজাকারদের প্রসন্নবদন আত্মপ্রত্যয় ও উচ্চ মনোবল দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলেন। জামাতে ইসলামীর আমীর করাচীতে একইভাবে ব্যক্ত করলেন, পূর্ব পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করার জন্য দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজাকাররা খুবই ভালো কাজ করছে। (দৈঃ পাঃ)

-নয়াদিল্লীতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ মিশনের উদ্বোধন করা হয়। নয়াদিল্লীস্থ বাংলাদেশ মিশনের প্রধান জনাব কে এম শাহাবুদ্দিন স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

-চারজন অধ্যাপক, তেরজন সিএসপি অফিসারকে সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ। অধ্যাপকরা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), আব্দুর রাজ্জাক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), সারোয়ার মোর্শেদ (ইংরেজী), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরমাজাহারুল ইসলাম (বাংলা) ও বাংলা একাডেমীর আবু জাফর শামসুদ্দিন। সি এসপিরা হলে অর্থ দফতরের যুগ্ন সচিব খন্দকার আসাদুজ্জামান, পার্বত্য চট্টগ্রামের ডিসি এইচ, টি, ইমামা সিলেটের ডিসি আব্দুস সামাদ, পাবনার ডিসি নুরুল কাদের খান সৈয়দ আব্দুস সামাদ ( পার্বত্য চট্টগ্রাম) রাজশাহীর এডিসি কুদরতে এলাহী চৌধুরী, কিশোরগঞ্জের এসডিও মোঃ খসরুজ্জামান চৌধুরী, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার এসডিও কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, মাগুরার এসডিও অলিউল ইসলাম, হবিগঞ্জের এসডিও আকবর আলী খান, নড়াইলের এসডিও কামাল উদ্দিন সিদ্দিক, মেহেরপুরের এসডিও তৌফিক এলাহী চৌধুরী ও যশোরের কমিশনার সাদাত হোসেন। (দৈঃ পাঃ) (সাপ্তাহিক জয় বাংলা ১০/৯/৭১)

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী

error: <b>Alert:</b> Due to Copyright Issues the Content is protected !!