You dont have javascript enabled! Please enable it! ডা. লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান | মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক - সংগ্রামের নোটবুক

জীবনচিত্র        নামঃ ডা. লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান

Dr. Lft. Col. Abul Fazal Ziaur Rahman

পিতার নামঃ মোহাম্মদ মোসলেউদ্দিন ভূঁইয়া

পিতার পেশাঃ চেয়ারম্যান, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড, নারায়ণগঞ্জ

মাতার নামঃ বেগম মাসুমা চৌধুরী

ভাইবোনের সংখ্যাঃ দুই ভাই ও এক বোন। নিজক্ৰম-প্রথম।

ধর্মঃ ইসলাম

স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্ৰাম-নওগাঁ, উপজেলা-আড়াইহাজার,

জেলা-নারায়ণগঞ্জ।

 

শহীদ ডা. লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান

 

নিহত/নিখোঁজ হওয়ার সময় ঠিকানাঃ অফিসার্স স্টাফ কোয়ার্টার, সিলেট মেডিকেল কলেজ, সিলেট

জন্মঃ ২ ফেব্রুয়ারি ১৯২৬

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ

এমবিবিএসঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

শখঃ বাগান করা, নতুন নতুন গাড়ি কেনা

সমাজসেবাঃ রেডক্রস

ছাত্রাবস্থায় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাঃ আওয়ামী মুসলিম লীগের সমর্থনপুষ্ট ছাত্রলীগের জনপ্রিয় রাজনীতিক ছিলেন।

চাকরির বর্ণনাঃ ১৯৪৯ সালে পাকিস্তান আর্মি মেডিকেল কোরে যোগদান

সিএমএইচ, রংপুর সেনানিবাস, রংপুর, ১৯৪৯

সিএমএইচ, ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা

লে.কর্নেল (১৯৬৩), অধ্যক্ষ ও সুপারিনটেন্ডেন্ট, সিলেট মেডিকেল কলেজ, সিলেট, ১৯৬৮ (আমৃত্যু)

হত্যাকারীর পরিচয়ঃ পাকিস্তান সেনাবাহিনী

নিহত/নিখোঁজ হওয়ার তারিখঃ ১৪ এপ্রিল ১৯৭১

মরদেহঃ পাওয়া যায়নি। তবে মানিব্যাগ, চশমা, ঘড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, তাকে যে পাকসেনা হত্য করে সে ঘণ্টা তিনেক পরই মুক্তিযোদ্ধাদের কর্তৃক নিহত হয়

স্মৃতিফলক/স্মৃতিসৌধঃ বিএমএ কেন্দ্রীয় কাৰ্যালয় ভবন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ চিকিৎসক স্মৃতিফলকে নামাঙ্কিত আছে

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হিসেবে সাহায্য/দান/পুরুস্কারঃ পাননি

স্ত্রীর নামঃ ফেরদৌসী চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপিকা (অব.) বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, ঢাকা

সন্তান-সন্ততিঃ দুই পুত্র ও এক কন্যা

শাদ বিন জীয়াঃ এমবিএ, Computer programmer, কানাডা

শাহরীন রহমান(লুবনা) Graduation in Office Management, Singapore Airlines

খালেদ ইমতিয়াজ বিন জীয়াঃ বিবিএ

 

 

তথ্য প্রদানকারী

মাসুমা চৌধুরী(মরহুমা)

শহীদ চিকিৎসকের মাতা

১২৩, নিউ ইস্কাটন

ঢাকা

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ   ৬১

 

আমার সন্তান

শহীদ ডা. লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান

বেগম মাসুম চৌধুরী

 

 

কর্নেল এ. এফ. জীয়াউর রহমান শৈশবেই পিতৃহারা হন। তারা ছিল দুই ভাই ও এক বোন। পিতৃকুলে তাঁর আপন আর কেউ ছিল না, দূর সম্পর্কের আত্মীয় এবং মায়ের অভিভাবকত্বে গ্রামেই তাঁর স্কুল জীবনের পড়া সমাপ্ত হয়। সে জন্য গ্রাম ছিল তাঁর অতি প্রিয়, গ্রামের শ্যামল দৃশ্য ও স্নিগ্ধ ছায়া তাঁকে কৰ্মজীবনেও বারবার আকর্ষণ করতো; গ্রামের বাঁশঝাড় ও আম-কঁঠালের ছায়ায় বসে গ্রামের লোকদের সাথে সে আলাপ করতে ভালোবাসতো, তাদের সুখ-দুঃখের কথা, নানা সমস্যার কথা অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতোই শুনতো এবং সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতো, নিজের আন্তরিকতা দ্বারা পথের সন্ধানেও সে অনেক ক্ষেত্রেই পেয়েছে।

আর্মি অফিসার হয়েও সে অকুতোভয়ে পাকিস্তানের পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে বিসদৃশ ও বৈষম্যমূলক অন্যায় রাজনীতির নিন্দা করতো। গ্রামকে ভালোবাসতো বলেই দেশকে সে এত ভালোবাসতে পেরেছিল। সেই একনিষ্ঠ ভালোবাসার পরিণামে। পরবর্তীকালে বড় অসময়ে তাকে জীবনাহুতি দিতে হয়েছিল। ছাত্রাবস্থা থেকেই সে রাজনীতিতে জড়িত ছিল। দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও সততার পরিচয়ে সে তৎকালীন রাজনীতিবিদদের যেমন প্রিয়পাত্র ছিল, তেমনি প্রিয়পাত্র ছিল ছাত্রমহলে। ছাত্রমহলে সবার কাছে সে ছিল ‘জীয়া ভাই’, স্নেহশীল শ্রদ্ধাশীল মুক্তহস্তে ‘জীয়া ভাই’।

চাকরি জীবনে সে বাহ্যত রাজনীতি হতে দূরে সরে থাকলেও দেশের ঈপ্সিত মঙ্গলের জন্য তার অন্তর সর্বদাই উন্মুখ থাকতো। সেই উন্মুখতাই তাঁকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। সুনিশ্চিত মৃত্যু জেনেও সে দেশের সেবায় হাত দিল-স্কন্ধে বন্দুক নিয়ে নয়। গুলিবিদ্ধ আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়ে, গোপন আশ্রয় দিয়ে, কর্দমাক্ত রক্তাক্ত দেহে স্নেহের হাত বুলিয়ে, দেহে-মনে সাহস দিয়ে সুস্থ করে তুলতো। দেশের অবস্থা ভয়াবহ দেখে তারা জীয়াউর রহমানকে কেউ পালিয়ে ভারতে চলে যেতে বললে সে বলতো, পাকিস্তানিদের ভয়ে আত্মগোপন করলে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা নিশ্চিত আশ্রয় ভেঙে যাবে। মুক্তিযোদ্ধারা যদি প্রাণের ভয় ত্যাগ করে, গৃহের আরাম ও মায়ের স্নেহ ভুলে

 

 

৬২ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ

শহীদ ডা, লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান

 

দিনের পর দিন, মাসের পর মাস বনে-জঙ্গলে অনাহারে-অর্ধাহারে গেরিলা যুদ্ধ চালাতে পারে সে কেন নিজের প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গেল তাদের করা থেকে বঞ্চিত হবে।

ইতোমধ্যে ইসলামাবাদ গিয়ে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ এলো। জীয়াউর রহমান স্বার্থের প্রতি দৃষ্টিপাত করলো না, দেশের এই দুর্দিনে দেশকে সে ছেড়ে যেতে চাইলো না। নিজের ও পরিবারের সুখ-শান্তির বিপরীত দিকে সে চাইতো অবহেলিত বাংলা মায়ের ধূলিময় কোলে লুটাতে। সে মনস্থির করলো, যাবে না, উপরন্তু সে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে সিলেটেই রয়ে গেল। সেই বিপ্লবে আর্মি অফিসারদের কাজে যোগদানের অস্বীকৃতির যে  কী ভয়াবহ পরিণাম তা ভেবে সে শিহরিত হলেও লৌহমানবের মতো দৃঢ় থেকে যথাসাধ্য দেশের সেবায় রত রইলো।

তাঁর পাকিস্তানবিরোধী কার্যকলাপ পাকিস্তানিদের দৃষ্টি এড়ায়নি, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রারম্ভ হতেই এদিকে তাদের সজাগ দৃষ্টি পড়েছিল। জীয়াউর রহমান তা জানতো, কিন্তু চাকরির প্রলোভন, জীবনের মায়া, স্ত্রী-পুত্র-কন্যার মায়াবন্ধন, তাদের ভবিষ্যৎ, নিরাপত্তা সবকিছুর উর্ধে সে সগর্বে তুলে ধরেছিল দেশের সম্মান, দেশের প্রতি কর্তব্যজ্ঞান।

বিপ্লবের সময় সে আহত পাকিস্তানি সৈন্যদের চিকিৎসা করতে অনীহা প্রকাশ করে ফেরত পাঠাতো, অন্যদিকে নিজগৃহে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ক্ষুধায় অন্ন, তৃষ্ণায় পানীয় দিয়ে সাহায্য করতো। তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী চৌধুরী তখন বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা; ছুটি নিয়ে স্বামীর পাশে ছিল। দেড় বছরের শিশুপুত্র খালেদ ইমতিয়াজ বিন জীয়া ও পাঁচ বছরের কন্যা শাহরীন মায়ের আঁচল ছাড়তো না। সে কত দিন কত রাত অতর্কিতভাবে আশ্ৰয়প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাত রান্না করেছে! শেষে ভাতের ব্যঞ্জন পরিবেশন করা যায়নি; শুধু পাতলা ডাল আর ভাত ছিল তাদের কাছে অমৃত সমান।

পাকিস্তানিরা জীয়ার দেশপ্রেমের প্রতিশোধ নিতে শুরু করলো; ১৫ মার্চ থেকে তাকে স্বগৃহে অন্তরীণ করে রাখে। বাইরের সাথে যোগাযোগের অভাবে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিলো। কিন্তু চালের শেষ কণাটি থাকা পর্যন্ত দেশের ত্যাগী সাধক তরুণদের জন্য নিবেদন করতো। জীয়াউর রহমানের সহকর্মী ডা. শামসুদ্দীন আহমেদকে সিলেট হাসপাতালে প্রকাশ্যে গুলি করে পাকিস্তানিরা হত্যা করে। জীয়া বুঝতে পারলো পরবর্তী লক্ষ্য সেআর্মির সেক্টর কমান্ডার তখনও তাঁকে ইসলামাবাদ গিয়ে কাজে যোগদানের জন্য অনুরোধ করছিল। কিন্তু পর্বতের মতো অটল মনোভাব নিয়ে সে দেশের প্রতি চেয়ে রইলো। তাঁর সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্দশা, ক্ষত-বিক্ষত দেশ, কানে কামান ও বন্দুকের শব্দ, পেটে ক্ষুধার জ্বালা। কিন্তু সে প্রলোভনের কাছে কিছুতেই নতি স্বীকার করলো না।

সিলেটে তাদের আত্মীয়-স্বজন কেউ ছিল না, তাঁর এই বিপদের সময় বন্ধুরা দূরে সরে গেল, পরিবারের পরিচারিকারী পর্যন্ত কে কোথায় গা ঢাকা দিল। সম্পূর্ণ জনহীন দ্বিতল বাড়িতে বদ্ধ পরিবেশে তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জন ও দুটি শিশু। কিন্তু তাদের আহার কোথায়? কয়েকদিন প্রায় অনাহারে থেকে ১৪ এপ্রিল সকালে স্ত্রীকে বললো, বড় ক্ষুধা পেয়েছে, একটু ভালো নাশতা তৈরি করতে পারবে? গত সন্ধ্যায় এক বিহারি ডাক্তার গৃহিণী কিছু চাল, ডাল, ময়দা ইত্যাদি দিয়ে গিয়েছিল। এটাই তাঁর শেষ খাওয়ার ইচ্ছা, সেই ইচ্ছাকে পূরণ করার জন্য স্ত্রী ফেরদৌসী স্বামীর জন্য আহার্য প্রস্তুতের শেষ প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ আল্লাহ ডাক্তার গৃহিণীর হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে নাশতা তাঁর আর খাওয়া হয়নি। গোসল শেষ করে ছেলেমেয়ে নিয়ে খাবার ঘরে প্রবেশ করার সময় তাঁর বাসভবনের সামনে এক ট্রাক বোঝাই রাইফেলধারী পাকিস্তানি আর্মি ও জিপ এসে দাঁড়ালো, একজন লেফটেন্যান্ট সামনে এসে স্যালুট করে অ্যাটেনশন নিয়ে দাঁড়ালো এবং বললো, ইন্টারোগেশনের জন্য নিয়ে যেতে এসেছি। জীয়া সন্তানদের হাত ছেড়ে দিলো। চুমু খেয়ে চলে যাওয়ার মুহুর্তে স্ত্রীর দিকে ফিরে চাইলো, হাত উঠিয়ে বিদায় নিয়ে চোখের অশ্রুকে গোপন করার জন্য দ্রুত প্রস্থান করলো। ফেরদৌসীর হাত হতে জীয়ার ক্ষুধার আহার্য ভর্তি থালা সশব্দে মেঝেতে পড়ে গেল। টেবিলে খাবার উন্মুক্ত পড়ে রইলো, ফেরদৌসীর পাশে তখন অবুঝ দুটি শিশুসন্তান। তারপর ফেরদৌসী আশায় আশায় প্রহর গুনছে, নিরাশায় হাতছানি দিয়ে গত হয়েছে তার কত দিন কত বছর। যুগ পার হওয়ার পর মিসেস জীয়া স্বামীর সন্ধান করা থেকে বিরত হলোজনশ্রুতি আছে, ঐ দিনই জীয়াকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তা মিসেস জীয়া

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ   ৬৩

৬৪ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ

 

শহীদ ডা, লে. কর্নেল আবুল ফজল জীয়াউর রহমান

 

বিশ্বাস করতে পারেননি।

    নারায়ণগঞ্জের নওগাঁ গ্রামের ১৯২৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কর্নেল এএফ জীয়াউর রহমানের জন্ম। পিতা মোহাম্মদ মোসলেউদ্দিন ভূঁইয়া ব্রিটিশ আমলে বহু বছর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং এলাকায় ছিল তাঁর খুব জনপ্রিয়তা। তিনি অল্প বয়সেই ইন্তেকাল করেন। জ্যেষ্ঠ পুত্র জীয়া তখন প্রাইমারী স্কুলের ছাত্র।

জীয়াউর রহমান ১৯৪৯ সালে পাকিস্তান আর্মি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও সুপারিন্টেনডেন্টের পদে নিযুক্ত হয় এবং ১৯৬৮ সালে সিলেট মেডিকেল নতুন কলেজ ভবন, হাসপাতাল পুনর্গঠন, ছাত্রাবাস, শিক্ষকদের বাসগৃহ ইত্যাদি নির্মান কাজ আরাম্ভ করে অধিকাংশ কাজ সমাপ্তির পথে নিয়ে আসে। ১৯৬৯-৭০ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের ‘ডিন অব দি ফাকালটি অব মেডিসিন’ এই সম্মানিত মর্যাদা প্রাপ্ত হয়১৯৭০ সালে নভেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী স্থান সামুদ্রিক জলোচ্ছাস ও ঝড়ে অতুলনীয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন মেডিকেল বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা হয়ে ১২ নভেম্বর ওইসব স্থানে ত্রাণসামগ্ৰী বিলি করে ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাইজদী কোর্টে অবস্থান করে ঢাকায় ফিরে আসে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ সপরিবারে কর্মস্থান সিলেট ফিরে যায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টার দিকে সে নিজে গাড়ি চালিয়ে রওনা হয়ে গিয়েছিল ১২৩ নিউ ইস্কাটনের আমার বাসা থেকে।

আমাকে তাঁর শেষ সম্বোধন—‘আম্মা যাই।’ দেশের কাছে তাঁর স্ত্রী,  দেড় বছরের শিশু পুত্র, পাঁচ বছরের শিশুকন্যা এবং অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত জ্যেষ্ঠপুত্র সাদ বিন জীয়াকে রেখে গেল। হয়তো মৃত্যুর আগে দেশমাতাকে উদ্দেশ করে বলেছিল-‘তোমারই মঙ্গল কামনা করে আমি নিঃশব্দে চলে গেলাম, আমার প্রিয়জনদের রেখে গেলাম তোমারই ছায়াতলেতুমি তাদের ছায়াদান করো হে দেশমাতা।’

 

(*রশীদ হায়দার সম্পাদিত স্মৃতি ১৯৭১ থেকে সঙ্কলিত)

 

প্রাসঙ্গিক উল্লেখযোগ্য তথ্যসূত্রঃ

 

ক. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকা; তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; প্রকাশকালঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২।

খ. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক তালিকা; বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যালয় বিএমএ ভবনে(তোপখানা রোড, ঢাকা) শোভিত স্মৃতিফলকে উৎকীর্ণ। (পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য)

গ. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেঃ দলিলপত্র; সম্পাদনাঃ হাসান হাফিজুর রহমান; প্রকাশনাঃ তথ্য মন্ত্রণালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; প্রকাশকালঃ আষাঢ় ১৩৯১; জুন ১৯৮৪; ৮ম খণ্ড; পৃ. ৭০৭ ।

ঘ. প্রথম পুনর্মিলনী স্মরণিকা, আর্মি মেডিকেল কোর; প্রকাশনাঃ আর্মি মেডিকেল কোর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী; প্রকাশকালঃ ১৯৩৫ বাংলা, ১৯৮৯ ইংরেজী।

ঙ. বাংলাদেশ ডাক বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিট; ৩য় পর্যায়; ১৯৯৪ (পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য)

চ. *স্মৃতি ১৯৭১; সম্পাদনাঃ রশীদ হায়দার; প্রকাশনাঃ বাংলা একাডেমী; ১ম খণ্ড, ২য় পুনর্মুদ্রণ, প্রকাশকালঃ অগ্রহায়ণ ১৪০৬, ডিসেম্বর ১৯৯৯; পৃ. ৪০

ছ. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক স্মৃতিকথা; সম্পাদনাঃ প্রকৌশলী ইফতিখার কাজল; প্রকাশনাঃ রক্তঋণ; প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২; পৃ. ৯৬

জ.  শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ; সম্পাদনাঃ রশীদ হায়দার, প্রকাশনাঃ বাংলা একাডেমী, প্রকাশকালঃ আগ্রহায়ণ ১৩৯২, ১৪ ডিসেম্বর ১৯৮৫; পৃ. ৩৩

ঝ. দৈনিক সংবাদ বিশেষ সংগ্রাহক সংখ্যা-৩, যেসব হত্যার বিচার হয়নি; পরিকল্পনায়ঃ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। প্রকাশকালঃ সোমবার ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৮; পৃ. ৯, ৪৩।

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ   ৬৫

Reference:  মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ – বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ