You dont have javascript enabled! Please enable it! সরদহ গণকবর - সংগ্রামের নোটবুক

সরদহ গণকবর

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল রাজশাহী পুলিশ একাডেমীর পিছনে পদ্মা নদীর তীরে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল পাকিস্তানি সৈন্যরা। সেদিন তারা এখানে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে। এ পৈশাচিক দৃশ্য সেদিন দূর থেকে যারা দেখেছেন তাঁদের একজন ইউসুফপুর কারিগর পাড়ার গোলাম মোস্তফা। সেই সময়ে তিনি ছিলেন স্কুল ছাত্র এবং মুদি দোকানদার। তিনি বলেন, ১৩ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদাররা সরদহ আক্রমণ করে। অস্ত্র ও জনবলের অভাবে বন্যার পানিতে খড়কুটোর মতো ভেসে যায় মুক্তিসেনাদের সামান্য প্রতিরোধ। ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে চালাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা গরু-ছাগলের মতো তাড়িয়ে পুরুষদের সরদহ পুলিশ একাডেমীর পিছনে পদ্মার তীরে জড়ো করে সবাইকে। ব্রাশ ফায়ার করে আর বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নরহত্যার এক উন্মাদনায় মেতে ওঠে তারা। সৈন্যরা চলে গেছে ভেবে যারা বেঁচে ছিল তারা উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এ সময় বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোকে একত্রিত করে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় তাঁদের শরীরে সেনারা। জীবন্ত দগ্ধ হতে থাকা মানুষের আর্ত চিৎকারে কেঁপে ওঠে আশপাশের গ্রামের মানুষ। পড়ে থাকা লাশ গুলোও পোড়ায় তারা। মানুষ পোড়ার গন্ধ ও এবং পাকিয়ে ওঠা কালো ধোয়ায় আশপাশের সমস্ত এলাকা ছেয়ে যায়। সেই ঘটনার পর এই এলাকায় বেড়ে যায় পাকিস্তানি সৈন্য, রাজাকার, আর আলবদরদের অত্যচার। বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা মানুষদের হত্যা করে পুঁতে রাখত সেই পদ্মার তীরে। (তথ্যসূত্র: ওয়ালিউর রহমান বাবু, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক)