রাজশাহী পুলিশ লাইন গণকবর
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনের লড়াইয়ের মতো রাজশাহীর পুলিশ লাইনের সংঘর্ষের কথা বলা হয় না। পুলিশ লাইন মসজিদের তৎকালীন ইমাম হাফেজ মো. দেলওয়ার হোসেনের বর্ণনায় জানা যায়, ২৮ মার্চ রোববার সকাল ১০/১১টায় পুলিশ লাইনে হানাদারদের আক্রমণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ মো. দেলওয়ার হোসেন। পাকহানাদার বাহিনী বর্তমান গির্জার কাছ থেকে গোলা বর্ষণ করে ওয়ালেশ টাওয়ার ধ্বংস করে দেয়। পুলিশ বাহিনী অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বাংকারে অবস্থান নেয়। বাংকারে যাবার আগে হাফেজ মো. দেলওয়ার হোসেনকে চলে যেতে বলা হয়। উপর থেকে আবার গোলা এসে পড়ে। পুলিশ সদস্যরা মনে করেন উপর থেকে হামলা হতে পারে। কিন্তু যেখানে এখন শহীদ কামরুজ্জামান পার্ক তার আশেপাশে তখন গম ক্ষেত ছিল। তারই ভেতর দিয়ে হানাদাররা ক্রলিং করতে করতে একেবারে ছোট ছোট বাংকারগুলোর কাছে চলে আসে। পুলিশ বাহিনী গুলি করা শুরু করে। কিন্তু পাক হানাদারের ভারি অস্ত্রের সাথে পেরে ওঠে না তারা। গোলা বর্ষণের সঙ্গে ব্রাশ ফায়ার করতে থাকে পাক বাহিনী। রক্তের ভেসে যায় রাজশাহী পুলিশ লাইন। প্রতিটি পুলিশ সদস্য সেদিন নির্ভিকভাবে লড়াই করে জীবন দেন। তাঁদের মধ্যে পুলিশ লাইন গণকবরে শায়িত আছেন এনায়েত খান (পাঞ্জাবী), আব্দুর রহমান, আলিমুদ্দিন, ওসমান খান, আব্দুল আজিজ, সাদেকুল ইসলাম, আব্দুল হামিদ, আক্কাস আলী, রিছ উদ্দীন, জয়নাল আবেদীন, আলাউদ্দীন, আব্দুর রাজ্জাক, অপু ও ইলিয়াছ। এছাড়া নাম না জানা আরও অনেক পুলিশ সদস্য সেদিন শহীদ হন। (তথ্যসূত্র: হাফেজ মো. দেলওয়ার হোসেন, তৎকালীন ও বর্তমান ইমাম, পুলিশ লাইন মসজিদ)