আক্কেলপুর উপজেলা
আমুট্ট মাঠ, আমুট্ট সিএন্ডবি পুকুর পাড় গণকবর। এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা অনেক। জয়পুরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্দার আফছার আলী জানান, জেলায় প্রায় সাড়ে ৮শ’ মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এর মধ্যে কেবল আক্কেলপুরেই মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৩শ’ ৮০ জন। ফলে আক্কেলপুরে ব্যাপক হত্যাসহ ধ্বংসযজ্ঞের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে পাকিস্তানি সৈন্যরা। যুদ্ধকালীন উপজেলা শহরের (তখনকার থানা শহর) দশন শ্রেণীর ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে পার্শবর্তী পাহাড়পুরের সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ধরে জয়পুরহাট শহরে (তখনকার মহকুমা শহর) নিয়ে যায়। তাকে হানাদারদের লরির পেছনে দড়ি দিয়ে বেঁধে সারা শহর টেনে হিঁচড়ে ঘোরানো হয়। পরদিন স্থানীয় শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে প্রকাশ্যে জনতার সামনে পাকিস্তানি মেজর আফজাল বেগ ও স্থানীয় রাজাকার আবদুল আলিম মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে দেখিয়ে বলেন, “যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করবে তাঁদের সকলের একই অবস্থা হবে”। এরপর তার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে শহরের পার্শবর্তী ছোট যমুনা নদীর উপরে সেতুতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গুলি করে তার লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ওই যুদ্ধে ঘটনাস্থলে আরও ৫জন শহীদ হন, যাদের ঐতিহাসিক পাহাড়পুরের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে পূর্ব-উত্তর কোণায় কবর দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর আক্কেলপুরে হানাদার বাহিনী শুরু করে নারকীয় তাণ্ডব। মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক সাধারণ মানুষকে খুন করে। যাদের ঠাই হয় আক্কেলপুরে মহিলা কলেজ সংলগ্ন আমুট্ট মাঠ, আমুট্ট সিন্ডবি পুকুর পাড় গণকবরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সঙ্গাব্দিক রবিউল ইসলাম রুবেল ও হারুন অর রশিদ জানান, আমুট্ট রেল গেইট ও মহিলা কলেজ সংলগ্ন গণকবরে মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী ৪০/৪৫ জন, আমুট্ট সিএন্ডবি গণকবরে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খোকনসহ (বগুড়ার সন্তান, যার নামানুসারে বগুড়ার খোকন পার্ক নামকরণ করা হয়) ৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে কবর দেওয়া হয়।