রণাঙ্গন থেকে
মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর হইতে প্রচারিত বুলেটিনে প্রকাশ, গত দুই সপ্তাহে বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে কয়েকশত হানাদার সৈন্য খতম হইয়াছে। বিশেষত সিলেট, ময়মনসিং, ঢাকা, নােয়াখালি ও চট্টগ্রামে গেরিলাদের অবিরাম তৎপরতায় হানাদারদের নাভিশ্বাস উঠিয়াছে। গত সপ্তাহে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা মাইনের সাহায্যে বুড়িচং-এর কাছে ৩৪০ জন শত্রু সৈন্যকে খতম করে। চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনী গত ২৭শে সেপ্টেম্বর রাঙামাটি থানা ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করে ও থানার অস্ত্র শস্ত্র দখল করে। | সিলেট রণাঙ্গনে গত সপ্তাহে মুক্তিবাহিনী সুরমা নদীতে শত্রুপক্ষের দুইটি স্পীডবােট ধ্বংস করে। মুক্তিবাহিনী মাইনের সাহায্যে সিলেট শহরে একটি পাওয়ার সাব স্টেশন উড়াইয়া দেয় ও কয়েকটি সামরিক গাড়ী ধ্বংস করে। রাধানগর, জয়ন্তিয়াপুর, জাফলং, সুনামগঞ্জ ও সুরমা নদী পথে কয়েকটি তৎপরতায় গেরিলারা কমপক্ষে ৪০ জন পাক সেনা ও রাজাকারকে হত্যা করে। গত সপ্তাহে ময়মনসিংহ জেলার বিরিসিরি বিজয়পুর, বন্দর কাটটা ও শেরপুর এলাকায় ৯ জন শত্রু সৈন্য খতম হয়।
মুক্তিবাহিনী এই জেলায় ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব পাড়ে রাহুমারি ও মীরগঞ্জ এলাকায় নিজেদের দৃঢ় কর্তৃত্ব স্থাপন করিয়াছে। গত দুই সপ্তাহে বিভিন্ন অভিযানে মুক্তিবাহিনী নােয়াখালির ছাগলনাইয়ার ৫ জন, মনােহরপুর, আজমপুর ও জামবাড়িতে ২০ জন, কোটেশ্বরে ৩ জন ও ছদিয়া গ্রামে ১২ জন সহ বহুসংখ্যক শত্রু সৈন্যকে খতম ও আহত করিয়াছে। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর কুমিল্লার কসবার কাছে কাইউমপুরে শক্ত ঘাঁটির উপর মর্টার দ্বারা আক্রমণ চালাইয়া মুক্তিবাহিনী ৩৫ জন শত্রু সৈন্যকে খতম ও ১৫ জনকে আহত করে। কিছু অস্ত্রপাতি দখল করে। এই সংঘর্ষে মাত্র এক জন গেরিলা আহত হন।
মুক্তিযুদ্ধ। ১ : ১৪
১০ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯