বিশ্বের মুক্তিকামী সরকার বাংলার মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্র দিন
(রাজনৈতিক ভাষ্যকার) বাংলাদেশের মুক্তিযােদ্ধারা আজ দুর্বার দুর্জয়। প্রতিটি মুক্তিযােদ্ধা আজ এক একটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। পাক জঙ্গীশাহীর লেলিয়ে দেওয়া হানাদার বর্বর নরপশুগুলােকে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলার অসম সাহসী মুক্তিযােদ্ধারা। তাদের জীবনের একমাত্র পণ। হয় মুক্তি নয়তাে মৃত্যু। মৃত্যুকে আজ আর ভয় পায় না বাংলার তরুণ শক্তি। মৃত্যুকে জয় করেছে বাংলার মানুষ এক করুণ বাস্তবতার। মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ আজ মুক্তি পাগল । বাংলার মানুষ দেখেছে ইয়াহিয়ার নাৎসীবাহিনীর পৈশাচিক উল্লাস তাইতাে বাংলাদেশ আজ নাপাম বােমার মত জ্বলছে। জ্বলছে তাদের পুড়িয়ে মারবার জন্য, যারা সােনার বাংলাকে শ্মশান করেছে, যারা বাংলার ছায়াসুনীবিড় নীড় ভেঙ্গেছে, যারা বাংলার বুকে হিংস্র হায়ানার মত থাবা বিস্তার করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর এক একটি দুর্জয় ঘাঁটি। প্রতিটি ঘাটিতে আজ এক দারুণ উৎকণ্ঠা। প্রতিটি ঘাঁটির প্রতিটি মানুষ প্রতিক্ষায় উন্মুখ। বিশ্ব এগিয়ে আসবে তাদের পাশে, তাদের হাতে তুলে দেবে মারণাস্ত্র। আর তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে অসুর শক্তির উপর। যেমন করে দুর্গা অসুর শক্তি নিশ্চিহ্ন করেছিলেন ঠিক তেমনি ভাবে বাংলার বুক থেকে পশুশক্তি নিশ্চিহ্ন করবে। বাংলার শক্তি। বাংলার মানুষ অন্ন চায় না, বস্ত্র চায় না, চায় শুধু অস্ত্র। অস্ত্র পেলে বাংলার মানুষ দেখিয়ে দেবে কেমন করে স্বীকৃতি পাওয়া যায়। তাই বাংলার প্রতিটি মানুষের একমাত্র আবেদন বিশ্বের মুক্তিকামী জনতা এবং সরকারের কাছে যেন সবরকমের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে বাংলার মুক্তিকামী মানুষকে।
বিপ্লবী বাংলাদেশ । ৮।
১০ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯