প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের পর
–অজিত শাসমল
বাংলাদশের লড়াই শুরু হয়েছে প্রায় আটমাস। ইতিমধ্যে প্রায় এক কোটি শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে শরনার্থীদের দূর্বহ বােঝা বহন করতে হচ্ছে। এর জন্যে সরকার ডাক মাশুল ও সংবাদপত্রের ওপরও অতিরিক্ত কর আরােপ করতে বাধ্য হয়েছেন। বিদেশী সরকারগুলি যত বাগড়ম্বর করেছেন, তত সাহায্য দেননি। মুশকিল হচ্ছে, শুধু কথায় চিড়ে জোটেই না, ভেজাতাে দূরের কথা। সুতরাং, বহু সমসা-ভারাক্রান্ত একটি উন্নয়নশীল দেশ ভারতকেই এই চিড়ে জোটাতে এবং ভেজাতে হচ্ছে। কিন্তু ভারতের পক্ষে সেটা কতকাল সম্ভব হবে অথবা জনগণ কতােদিন হাসিমুখে বাড়তি করের শাকের আঁটি বহন। করবেন, অথবা আত্মীয়েরা নীরবে শরণার্থীদের অত্যাচার সহ্য করবেন, সে প্রশ্ন একান্তই প্রাসঙ্গিক। ইন্দিরাজী যখন প্রায় অপ্রত্যাশিত ভাবে নির্বাচনে বিপুল গরিষ্ঠতা অর্জন করে সবে মাত্র গুছিয়ে বসেছেনহয়তাে নানা সংস্কার কর্মে উদ্যােগী হতেন- ঠিক সেই সময়েই বাংলাদেশের বর্তমান লড়াই ও তজ্জনিত অভুতপূর্ব সমসার সম্মুখীন হলেন। তিনি সাধারণ মানুষের মতাে শিগগিরই একটা কিছু হয়ে যাবে’- এমন। আশা করেছিলেন কিনা, জানিনে; কিন্তু সম্প্রতি তিনিও সম্ভবত উদৃবিগ্ন হয়ে উপলব্ধি করেছিলেন যে, সময়, বয়ে যাচ্ছে, একটা-কিছু অবিলম্বে করা দরকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনুকূলে ভারতের জনমত যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ও জাগ্রত হয়েছে, তাতে আশঙ্ক। হয়, বাংলাদেশ সমস্যা তথা শরণার্থী সমস্যার একটু সুরাহা না হলে হয়তাে ইন্দিরাজীর জনপ্রিয়তা দলের। ভেতরে এবং বাইরে যথেষ্ট পরিমাণে খর্ব হবে। কিছুকাল আগে, কোনাে কোনাে সংবাদপত্র সিমলা কনফারেনসে স্বর্ণ সিং-এর উক্তি বিকৃত করে প্রচার করার পর দেখা গেলাে, চরম ডান এবং চরম বাম-সব দলই সমান নিন্দায় মুখর হয়ে উঠেছেন। সে থেকেই মনে হয়, বাংলাদেশ নীতি সফল না-হলে বিরােধী দলগুলাে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটা বড়ো রাজনৈতিক হাতিয়ার পেয়ে যাবেন এবং সাধারণভাবে জনমত বিশেষত পূর্ব ভারতের জনমত, তাঁর বিরুদ্ধে রুষ্ট হয়ে উঠবে।
সুতরাং অচিরেই ইশিরাজীকে বাংলদেশ সমস্যার একটা সন্তোষজনক সমাধান আবিষ্কার করতে হবে। এবং তার সন্ধানে মরীয়া হয়ে তিনি শুধু মন্ত্রীদের বিভিন্ন দেশে পাটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, শেষ পর্যন্ত চরম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজেও বিদেশ সফরে বেরিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আগাগােড়া একই কথা বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও জনগণের মনঃপূত রাজনৈতিক সমাধান চাই।’ গত ২৪ বছরের বিপুল শােষণ ও মারচ মাসের পরবর্তী নজিরবিহীন গণহত্যার পরে বাংলাদেশ নিশ্চয় পাকিস্তানের এক কাঠামাের অধীনে কোনােরূপ রাজনৈতিক আপােষরফা চাইবে না। তারা পঁচিশে মারচের আগে যে শর্তে রাজি হতে পারতেন, ইয়াহিয়া খার পক্ষে সে-শর্তে রাজি হওয়াই সম্ভব হয়নি। সুতরাং ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা প্রভৃতি কথা তাঁর কাছে একেবারে অবান্তর। | এত কাণ্ডের পর ইয়াহিয়া খা সত্যিই বাঙালিদের দাবি পূরণ করতে পারেন না। তাকে সরিয়ে দিয়ে নতুন সামরিক জান্টা হয়তাে পারে। অবশ্য কোনাে পশ্চিম পাকিস্তানীই বােধ হয় পারেন না, কেননা তাদের শরীরের বাড়তি মেদ এবং ভুড়ি বাংলাদেশ নিজে না খেয়ে দান করেছে। স্বেচ্ছায় এখন পশ্চিম পাকিস্তান উপােস করতে চাইবে, এটা বেশি আশা করা হবে। শ্রীমতী গান্ধী কি এসব কথা জানেন না? অথবা তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে গ্রহণযােগ্য সমাধান পাকিস্তান মেনে নেবে, কিংবা নিতে পারে? সত্যি-সত্যিই তিনি হয়তাে তা মনে করেন , এমন কি, এক পাকিস্তানের কাঠামাের অধীনে কোনাে রাজনৈতিক সমাধান আদৌ হয়তাে তার কাছে কাম্য নয়। তবু সেই সমাধানের জন্যে তিনি গত ছ’মাস নুড়িও পাক নাদিয়ে ফেলে রাখেননি। কিন্তু জগদ্দল পাথর যেখানে ছিলাে, এখনও সেখানেই আছে-অন্তত আপাতদৃষ্টিতে। কিন্তু কেন? উত্তরটি বােধহয় খুবই সােজা এছাড়া অন্য পথ কী? চিরশত্রু ও শক্রর মিত্র পাকিস্তান টুকরাে টুকরাে হয়ে যাক, বাংলাদেশ থাকুক ভারতের মিত্ররাষ্ট্র হয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে এটা ভারতের পক্ষে একান্তভাবে কাম্য ।
কিন্তু রাজনৈতিক পথ ছাড়া অন্য কী উপায়ে সেটা সম্ভব। বাংলাদেশের গেরিলাযােদ্ধাদের সংখ্যা এবং যােগ্যতা অত্যন্ত দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রতিদিন বহু সংঘর্ষে তারা পাকিস্তানি সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর যথেষ্ট ক্ষতি করছেন। যােগাযােগ ও অসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থাকে বিপর্যন্ত করছেন। কিন্তু তবু গত সাড়ে সাত মাস ইয়াহিয়া খা বহাল তবিয়তে গদিতে সমাসীন আছেন । এই গতিতে চললে পূর্ণ স্বাধীনতা আসতে কতােকাল লাগবে, কে জানে। স্বাধীনতা বিলম্বিত হলে আবার অনেক সমস্যার উদ্ভব হয় যেমন, ১। ভারতকে দীর্ঘকাল শরণার্থীদের বােঝা বহন করতে হবে। (২) জনগণের সঙ্গে যােগাযােগ হারিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান নেতাদের ক্ষমতা হ্রাস পাবে? (৩) বামপন্থীদের হাতে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব ও ক্ষমতা চলে যাবে, ইত্যাদি। শরণার্থীদের বােঝা বহন করা অথবা ভারতের বুকের ভেতর একটা কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের উত্থান-এর কোনােটাই বাঞ্ছনীয় নয়। সুতরাং মুক্তিবাহিনীর ওপর সবটা নির্ভর করে থাকে ভারতের পক্ষে শক্ত নয় কি? দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে, শরণার্থীদের জন্যে ভারত বাংলাদেশের খানিকটা এলাকা দখল নিতে পারে কিংবা বাংলাদেশের হয়ে পশ্চিমীদের হঠিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সেটা মিষ্টি কথায় সম্ভব নয় তার জন্যে পুরােদস্তুর একটা লড়াই আবশ্যক। এখন লড়াই এর আগে লাভ লােকসানের একটা হিসেবে করা অত্যন্ত স্বাভাবিক। শরণার্থীদের জন্যে ভারতের রােজ ব্যয় হলাে আড়াই কোটি টাকা সেটা কম নয়; কিন্তু লড়াইয়ে-নিতান্ত সংক্ষিপ্ত হলেও, কয়েকশ কোটি টাকা বেরিয়ে যাবে। ভারতের প্রায় সবটা যুদ্ধের সরঞ্জাম নিজের তৈরি, সুতরাং পাকিস্তানের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ করা তার পক্ষে সহজ এবং পাকিস্তানের তুলনায় তার ক্ষতিও কম হবে।
কিন্তু তাই বলে, ভারতের কম ব্যয় হবে না । অসামরিক জনগণের ক্ষতিও হয়তো যথেষ্ট হবে। যুদ্ধের ফলে পাকিস্তান যদি রসাতলে তলিয়ে যায়, তাহলে অবশ্য ভারতের বর্তমান লােকসান অদূর ভবিষ্যতে পুষিয়ে যাবে। কিন্তু সেখানে পুনরায় আর একটি অঙ্ক কষা দরকার। পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের সৈন্যবল ও অস্ত্রশস্ত্র যেহেতু অনেক বেশি, সুতরাং কিছু ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে সে নিশ্চয় পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করতে পারবে। প্রশ্ন হলাে, পাকিস্তান একা লড়বে না কি চীন তাতে মদত দেবে। চীন জড়িয়ে পড়লে ভারতের পক্ষে সবটা সামলানাে হয়তাে কঠিন হয়ে পড়বে। তবে শ্রীমতী গান্ধীকে লেখা চু এন লাইয়ের চিঠিতে তা মনে হয় না। যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়াকে মিত্র হিসেবে পেলে হয়তাে ভারত এ অবস্থাকে সৎসাহসের সঙ্গে মােকাবিলা করতাে। রাশিয়াকে মিরূপে লাভ করে সে নিশ্চয় কিছু উরস পাচ্ছে, কিন্তু পশ্চিমী দেশগুলােকে ওই সঙ্গে পেলে আরাে ভাল হতাে। অন্তত তারা পাকিস্তানকে সাহায্য করবে না, এ আশ্বাস পাওয়া অত্যাবশ্যক। সেই আশ্বাস লাভের আশায়ই হয়তাে ইন্দিরাজি এ দুঃসময়ে মােড়লদের নাড়ি বুঝতে গিয়েছিলেন। অবশ্য চীন বােধ হয় এমনিতেই এতটা জড়িয়ে পড়তে চাইবে না। মােড়লরা সবাই আবার পাকিস্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে উৎসাহী-বরং সোজা অঙ্কের হিসাব। পাকিস্তানী সৈন্যদের বর্বরতার জঘন্যতম দিক হচ্ছে, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মেয়েদের উপর বদিবিচারইনি উৎপীড়ন, পাশবিক অত্যাচার। তার সঙ্গে হত্যা নির্যতান । যার পৈশাচিক ধরণ সভ্য মানুষের কল্পনার বাইরে। বর্বরতার আর একটি দিক হচ্ছে, বিভিন্ন শিবিরে। শত শত মেয়েকে উলঙ্গ আটকে রাখা; পাছে কাপড় থাকলে তারা আত্মহত্যা করে বসে। এইসব হতভাগিনীদের মধ্যে আছে বিশ্ববিদালয়ের শত শত ছাত্রী । জীবন্ত মৃত্যুর এই নরকে তারা বেঁচে আছে দুঃসহ বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রশ্নচিহ্ন সমুখে। তাছাড়া হাজার হাজার গ্রাম পুড়িয়েছে পাকিস্তানী সৈন্যরা। কয়েক শ’ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবন-ধ্বংসের জন্য, পূর্ব কল্পিত পন্থায় নির্যাতনের এত রকম-নাৎসীদের কাছেও অজ্ঞাত ছিল। ব্লাডব্যাংকে সঞ্চয়ের জন্য রক্তমােক্ষণ মারফত সুঠামদেহ যুবকদের হত্যা। ইতিহাসে বর্বরতার রেকরড।
বাংলাদেশবাসীর কাছে এসব বিতাষিকার অভিজ্ঞতা এত প্রত্যক্ষ যে, তা থেকে রেহাইয়ের পথ কোন নেই। বাইরের লােক অজ্ঞতা বা বন্দী- যে কোন সূত্রেই হােক, এ সব ছােট করে দেখতে পারেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে তা অসম্ভব, সাধ্যের বাইরে। পাকিস্তানের শাসকবর্গ যে বেইজ্জতি এবং দাসের (প্রতিহিংসা) জগদ্দল বাংলাদেশবাসীর বুকের উপর। চাপিয়ে দিয়েছে, ইতিহাসে তা নজিরহীন। এই জঙ্গী জন্তুচক্র থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার পূর্বে বাংলাদেশের মানুষ আর কিছু ভাবতে নারাজ। ভারতীয় স্বাধীনতার প্রাক্কালে, উদ্দেশ্য-সাধনের সুবিধাজনক উপায় ঠাউরে পূর্ববঙ্গ মুসলিম লীগের লাহাের প্রস্তাব অনুযায়ী একটি স্বয়ংসিত রাষ্ট্ররূপে গঠিত হওয়ার বাসনায় পাকিস্তানে যােগ দিয়েছিল। সেই জায়গায় পূর্ব পাকিস্তান হয়ে উঠল পশ্চিমের উপনিবেশ। আর তার বাসিন্দারা অর্ধমনুষ্য এক ধরনের জীবরূপে বিবেচিত হতে লাগল- যাদের উপর কোন ব্যবহারই অসম্মানজনক নয়। স্বাধীন এবং সমান সমান অধিকারের দাবি নিয়ে যখন বাংলাদেশবাসী এগিয়ে এল, তখনই শাসকদের মুখােশ খসে পড়ল । নখরস্ততি তাদের প্রকৃত চেহারা আজ বিশ্ববাসীর নিকট বিদিত।
‘করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গা’- এমনই সংগ্রামে আজ বাংলাদেশবাসী লিপ্ত, তার দাম যা-ই হােক। বিদেশী শাসনের সহিত পূর্ণ অসহযােগিতা এবং হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরােধ- এই যমজ প্রক্রিয়া, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উৎসভূমি থেকে জাত। সেখানে অন্য পথ রুদ্ধ। এদিক ওদিক দোলাচলের প্রশ্ন অবান্তর। পিছু হাটার কোন কথাই অর্থহীন। এই স্বাধীনতার যুদ্ধ যতাে দীর্ঘসূত্ৰী বা দুঃখময় হােক না কেন, শেষ পর্যন্ত জয় অনিবার্য। সাড়ে সাত কোটি মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা পেছনে। তা কেনই বা বিলম্বিত হবে? এই পরিপ্রেক্ষিতে, রাজনৈতিক ফয়সালার কথা বাংলাদেশবাসীর নার্ভের উপর পীড়াদায়ক। তা কাটা ঘায়ে লবণ-ছিটানাের মত । যারা বাংলাদেশবাসীর প্রতি এত দরদ দেখাচ্ছেন, তাঁদের বলব ঃ কোন স্বাধীনতা। সংগ্রাম চলাকালীন অবস্থায় রাজনৈতিক সমাধানের প্রশ্ন কেউ কখনও তােলেনি। আলজেরিয়ার মুক্তিযুদ্ধের নজির ত সামনেই রয়েছে। গত সাত মাসে বাংলাদেশে সামগ্রিকভাবে যে রাজনৈতিক এবং মানসিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেদিকে দৃষ্টি ফেরানাের জন্যে হিতাকাঙ্খীদের অনুরােধ জানাই। জনসাধারণের কায়িক এবং নৈতিক সংঘবদ্ধতা থেকে তার স্পষ্ট পরিচয় মিলবে। গত সাত মাসের ঘটনাকে শিকেয় তুলে এবং এইভাবে মানুষের শ্রেয়বােধ, প্রেয়বেধকে পায়ের তলায় পিষে, রাজনৈতিক সমাধানের কথা হিতাকাঙ্ক্ষীদের মুখে মানায় না । ভারতে আশ্রিত শরণার্থীদের ফিরে যাওয়ার মত পরিবেশ সৃষ্টির কথাও তাদের মুখে বেমানান। ওই কথার মধ্যে সেই ইঙ্গিত প্রচ্ছন্ন যে বর্বর পাকিস্তানী সৈন্যদের পূর্ণ অপসারণ এবং স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকার গঠন ব্যতিরেকে তা সম্ভব। হিতাকাঙখীদের মদৎ আমরা গ্রহণ করব বইকি কিন্তু তা আমাদের অধিকার এবং স্বাধীনতা সংকল্পের বিনিময়ে নয়। “এই সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম”। শেখ মুজিবরের এই উক্তি বাংলাদেশবাসীর মুক্তিমন্ত্র । আমরা যুদ্ধে লিপ্ত যেন বর্তমান এবং পরবর্তী যুগের বাংলাদেশবাসী স্বাধীন রাষ্ট্রে, খাড়া শিরদাঁড়াসহ, আপন ভাগ্যনিয়ন্তারূপে মুক্ত নাগরিকের মত বাঁচতে পারে। ফয়সালার কথা না বলে, হিতাকাঙ্খীরা ওইটুকু স্মরণ রাখলেই আমরা তাদের কাছে অশেষ অশেষ কৃতজ্ঞ থাকব।
১৮ নভেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৮, আনন্দবাজার পত্রিকা