ওয়াশিংটনে পাক কূটনীতিবিদের বাংলাদেশে যােগদান। নিউইয়র্ক, ১ আগস্ট-গত রাতে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, একজন পাকিস্তানী কূটনীতিবিদ সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এবং বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে দেড় কোটি লােক অনাহারে মারা যাবে। | ওই কূটনীতিবিদের নাম শ্রীআবদুল মুজিব। তিনি ওয়াশিংটনস্থ পাক দূতাবাসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। | শ্রীমুজিব আরও বলেছেন একটি আত্মহননকারী সরকারের সঙ্গে যুক্ত থাকা অসম্ভব ব্যাপার।
কেন আপনি পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন, এই প্রশ্নের উত্তরে শ্রীমুজিব বলেন, আমি প্রথমে ভেবেছিলাম প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশের সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু সে আশা বিলীন হয়ে গিয়েছে।
শ্রী মুজিব এই অভিযােগ করেন যে, পাকিস্তান সরকার দেশে এমন অবস্থা সৃষ্টি করেছে যে, বাঙালিদের বেঁচে থাকাটাই এক চরম বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শ্রী মুজিব আরও বলেন, পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে চরম অত্যাচার চালিয়ে এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অফিসার ও শ্রমিক আমদানি করে ওখানে একটি কলােনী’ বানাতে চাইছে। এই প্রচেষ্টা ‘পাগলামী ছাড়া আর কিছুই নয় ।।
কূটনীতিবিদ এই বলে অভিযােগ করেন, পাকিস্তান সরকার একই সঙ্গে পঃ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের রক্তমােক্ষণ করতে চাইছেন। সেখানে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শােনা যাচ্ছে। সমস্ত যােগাযােগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। ফলে খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য প্রয়ােজনীয় সামগ্রীর চলাচল ভীষণভাবে ব্যাহত হয়েছে।
শ্রী মুজিব বলেন, বাংলাদেশে অবিলম্বে শান্তি স্থাপন এবং ক্ষুধার্তদের খাদ্য যােগান এখন সরকারের অবশ্য কর্তব্য। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে প্রায় অর্ধ কোটি লােক মারা গিয়েছিল। কিন্তু এবার তার তিন গুণ লােক মারা পড়তে পারে বলে শ্রী মুজিব আশংকা প্রকাশ করেন।
রয়টার। ২ আগস্ট ‘৭১