মৈত্রেয়ী দেবীর অবদান
পশ্চিমবঙ্গের লেখিকা, সমাজকর্মী মৈত্রেয়ী দেবী প্রথম দিন থেকেই ছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তিনি শুধু জনমত গড়ে তুলতেই সাহায্য করেননি, প্রত্যক্ষভাবে সহায়তাও করেছেন। | যুদ্ধের আগেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচারে তারা একটি সমিতি করেছিলেন, নাম-কাউন্সিল ফর প্রমোশন অব কমিউনাল হারমনি’। এর অফিস ছিল ১৩/১ পাম অ্যাভেনিউ, কলকাতা। সমিতির সম্পাদক ছিলেন দু’জন-তিনি এবং গৌরী আইয়ুব। | সমিতি বনগাঁ সীমান্তে কাজ শুরু করেছিল। মূল লক্ষ্য ছিল উদ্বাস্তু, স্বেচ্ছাসেবী এবং বুদ্ধিজীবীদের মনোবল অটুট রাখতে সহায়তা করা। তারা যে সব কাজ হাতে নিয়েছিলেন১. বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী ও নেতাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া যেখানেতারা নিজেদের মানুষদের মনোবল ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতেকথা বলবেন। ২, বাংলাদেশের তরুণদের মাঝ থেকে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গড়ে তোলা হবেপ্রতিটি ক্যাম্পের জন্য যেখানে ক, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা এবং জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ | শেখাবে খ, ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের থেকে বাছাই করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ, এপ মিটিং করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মনোবল অক্ষুন্ন রাখা। ঘ, মেয়েদের কথা সেলাই, চরকা চালানো, ঝুড়ি বানানো বা হ্যান্ডিক্রাফটস | তৈরির শিক্ষা উ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সম্পর্কে শিক্ষা ও চ, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ।মৈত্রেয়ী দেবী বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে তো বটেই একাও অনেক করেছিলেন। তাদের এই সমিতি প্রকাশিত একটি পুস্তিকায় লিখেছিলেনবাংলাদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব সব ভারতীয়দের ওপরই বর্তেছে। কেননা তাদের প্রধান অপরাধ ছিল তারা মুক্ত চিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রকে বেছে নিয়েছিল, ভারত যার পক্ষে। সূত্র : Maitraye Devi, A Note on the Backgrownd Our Work, Calcutta, 1971.