1972.01.13 | আবু সাঈদ চৌধুরী রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় জাতিসংঘ মহলে আনন্দ ও বিস্ময়
জাতিসংঘ। জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ আনন্দমিশ্রিত বিস্ময়ের সাথে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পদে নিযুক্তির সংবাদ শ্রবণ করেন। সাধারণ পরিষদের গত অধিবেশনকালে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘের লবিমহলে একজন পরিচিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। সেই সময়ে তিনি জাতিসংঘস্থ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনী কিরূপ বর্বর হত্যাকান্ড চালায় সেই সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচারকার্য চালাতেন। জনাব চৌধুরী দাবি করেন যে, নিরাপত্তা পরিষদে উপমহাদেশের সংকটের বিষয় আলোচিত হলে সেখানে তাঁর বক্তব্য শুনতে হবে। রুশ প্রতিনিধি মিস্টার জ্যাকব মালিক তাঁর দাবির প্রতি জোর সমর্থন দেন। ভারতের প্রতিনিধিদল বিচারপতি চৌধুরীর দাবির প্রতি সমর্থন দেন। চীন উক্ত দাবির প্রতি তীব্র বিরোধিতা করে। লন্ডনে অবস্থানকালে বিচারপতি চৌধুরী বাংলাদেশের জনগণের ওপর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রদের ওপর জেনারেল ইয়াহিয়ার বর্বরোচিত হামলার সংবাদ শ্রবণের পর তিনি বিচারপতি পদ ত্যাগ করেন সেই সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পশ্চিম দেশসমূহে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে অবস্থান করতে থাকেন। জাতিসংঘ ভবনে বিচারপতি চৌধুরীর উপস্থিতির বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানে কূটনীতিবিদরা তীব্র আপত্তি করতে থাকে। কিন্তু তৎসত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল মহলের সহযোগীতায় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথেও সাক্ষাৎকার অব্যাহত রাখেন এবং বাংলাদেশের বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। পাকিস্তান সরকারের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করার পূর্বে তিনি জাতিসংঘ মানবিক অধিকার কমিশনের একজন সদস্য ছিলেন।১৪
Reference:
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
ইত্তেফাক, ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২
Unicoded by আরবিনা রহমান