You dont have javascript enabled! Please enable it! 1958.07.09 | আওয়ামী লীগ-ন্যাপ সমঝােতা | সংবাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংবাদ
৯ই জুলাই ১৯৫৮
আওয়ামী লীগ-ন্যাপ সমঝােতা

জনাব,
৯৩ ধারা প্রবর্তনে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি পাকিস্তানীই মর্মাহত হইয়াছে। যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার অজুহাতে কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৩ ধারা প্রবর্তন করিয়াছে, তাহা ন্যাপদল কর্তৃক নিরপেক্ষ ভূমিকা ত্যাগ করিয়া আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকারকে সমর্থন ও জনাব আবু হােসেন সরকারের বিরুদ্ধে শেখ মুজিবর রহমান কর্তৃক আনীত অনাস্থা প্রস্তাব ১৪ ভােটের আধিক্যে গৃহীত হওয়ার পর দূরীভূত হইল। রাজনৈতিক আকাশে যখন দুর্যোগের ঘনঘটা ছিল না, তখন কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৩ ধারা প্রবর্তন করিয়াছে। আতা মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহালের সুযােগ দিয়া কেন্দ্রীয় সরকার পাক শাসনতন্ত্র ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনােভাবের পরিচয় দিতে পারিতেন। অনেকে এমনকি জনাব সােহরাওয়ার্দী পর্যন্ত বলিয়াছেন যে, এই কার্যের পেছনে কোন অদৃশ্য হস্ত কাৰ্য্য করিতেছে। কেহ কেহ ইহাকে সাধারণ নির্বাচন বানচাল, বিপ্লবী পরিষদ গঠনের পথে প্রথম পদক্ষেপ এবং দেশে এক নায়কত্ব প্রতিষ্ঠার পূর্বাভাস বলিয়া অভিহিত করিতেছেন। গৃহীত পন্থা দুষ্ট সন্দেহ করা স্বাভাবিক। মনে হয়, ইহা দুরভিসন্ধিমূলক। এই কার্য্যের কিছুদিন পূৰ্বেই পেশােয়ার রিপাবলিকান পার্টির এক সভায় সাধারণ নির্বাচন না করিয়া সমস্ত শাসন ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হস্তে গ্রহণ করিবার জন্য জনাব ইসকান্দার মির্জাকে অনুরােধ করিয়া এক প্রস্তাব গৃহীত হয়। বিপ্লবী পরিষদ গঠনের কথা অনেক আগেই শােনা গিয়াছে। কিন্তু গণতন্ত্রী পাকিস্তানী জনসাধারণ এই প্রকার যে কোন কার্যকে বানচাল করিবার জন্য শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগ্রাম করিবে। দেশকে এই প্রকার পরিস্থিতির মুখে ঠেলিয়া না দিয়া, অবিলম্বে ১৯৩ ধারা প্রত্যাহার, পূৰ্ব্ব পাকিস্তানে আতা মন্ত্রিসভার পুনর্বহাল ও প্রতিশ্রুত সময়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ সমীপে আবেদন জানাইতেছে। এই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ-ন্যাপ সমঝােতাকে অভিনন্দন জানাই। পাকিস্তানে মুসলিম লীগ শাসনের সময় যখন গণতন্ত্রের কবর রচনা করিবার প্রচেষ্টা চলিত, তখন এই প্রগতিশীল কর্মীরাই গণতন্ত্রকে রক্ষা করিবার জন্য পূৰ্ব্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসনের জন্য, রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের জন্য একত্রে সংগ্রাম করিয়াছে। মধ্যপথে কোন প্রশ্নে দ্বিধা-বিভক্ত হয়। আবার সমঝোতায় আসাতে আমরা সুখী হইয়াছি।
-মােহাম্মদ আবু হামেদ এম, এ, সহ-সম্পাদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আওয়ামী লীগ, ত্রিপুরা।