আজাদ
২২শে মার্চ ১৯৫৮
আওয়ামী লীগের অন্তর্বিরােধ
জনাব সােহরাওয়ার্দী কর্তৃক মিমাংসার চেষ্টা
আজাদের করাচী অফিস থেকে
২১ শে মার্চ।-পূর্ব পাকিস্তানের উজিরে আলা জনাব আতাউর রহমান খান এবং পাটি প্রধান শেখ মুজিবর রহমানের বিরােধ মীমাংসার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ নেতা জনাব এইচ, এস, সােহরাওয়ার্দী গতরাত্রে ঢাকা যাত্রা করিয়াছেন। তাহাদের বিরােধ বর্তমানে চরম আকার ধারণ করিয়াছে। মুজিবর রহমান-আতাউর রহমান বিরােধ গুরুতর আকার ধারণ করার ফলেই জনাব সােহরাওয়ার্দী তাঁহার ইউরােপ সফর সংক্ষেপ করিয়াছেন এবং করাচী পৌছার পর। কেন্দ্রীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনরূপ মনােযােগ না দিয়াই দ্রুত ঢাকা রওয়ানা হইয়া গিয়াছেন।
এইরূপ আশঙ্কা করা হইতেছে যে, উপরােক্ত নেতৃদ্বয়ের বিরােধ মীমাংসা না হইলে জনাব আতাউর রহমান আওয়ামী লীগ ত্যাগ করিতে পারেন এবং ইহার ফলে আওয়ামী লীগ দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হইয়া পড়িতে পারে। মুজিবর-আতাউর রহমান বিরােধের কারণ সম্পর্কে জানা গিয়াছে যে, ইহা ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিরােধ। এখানকার আওয়ামী লীগ মহলে শােনা যাইতেছে যে, শেখ মুজিবর রহমান জনাব আতাউর রহমানকে সরাইয়া দিয়া স্বয়ং উজিরে আলা হইতে চাহেন।
জনাব আতাউর রহমান ইহা মানিয়া লইতে রাজী নহেন। ফলে শেখ মুজিবর রহমান প্রায়ই সরকারী কার্যে হস্তক্ষেপ করিতেছেন।
উপরােক্ত নেতৃদ্বয়ের বিরােধ মীমাংসা করিতে গিয়া জনাব সােহরাওয়ার্দীকে অসুবিধার সম্মুখীন হইতে হইবে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরােধের সঙ্গে সঙ্গে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও কৃষক শ্রমিক পার্টির শক্তিবৃদ্ধিও তাহার উদ্বেগের কারণ হইয়া উঠিয়াছে। কৃষক শ্রমিক পার্টির আজিজুল হক গ্রুপ ও সরকার গ্রুপের মধ্যে সমঝােতা হওয়ার ফলে এই দলটি অত্যন্ত শক্তিশালী হইয়া উঠিয়াছে। এদিকে কেন্দ্রীয় পরিস্থিতির প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য জনাব সােহরাওয়ার্দীকে শীঘ্রই করাচী প্রত্যাবর্তন করিতে হইবে …।