দৈনিক ইত্তেহাদ
৩১শে জুলাই ১৯৫৭
মওলানা ভাসানী সম্পর্কে শেখ মুজিবরের মন্তব্য
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির জেনাঃ সেক্রেটারীর কঠোর সমালােচনা
এ,পি,পি-র খবরে প্রকাশ, জননেতা মওলানা ভাসানী সম্পর্কে জনাব মজিবর রহমান গত সােমবার যে সকল মন্তব্য করিয়াছেন তৎসমুদয় সম্পর্কে জনাব মাহমুদ আলী এক বিবৃতিতে বলেন যে, এতদিন মওলানা সাহেব সমস্ত কাজ আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা বলেই করিয়াছেন।
নিখিল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনে যােগদানকারী প্রতিনিধিদের সম্পর্কে তিনি বলেন যে, গণতন্ত্রীদলের ৩৫০ জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যােগদেন এবং ১০০০ জনের মত আওয়ামী লীগ, মুসলীম লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি এবং ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ পার্টি হইতে পদত্যাগী সদস্য ও বেশ কিছু সংখ্যক কর্মী উক্ত সম্মেলনে যােগ দেন। অতএব রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের “কমুনিষ্ট” “ধ্বংসাত্মক কার্যে লিপ্ত” বা “ভারতের চর” আখ্যা দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন যে, জনাব রহমান নিখিল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের উপর গুণ্ডাদলের আক্রমণের প্রতিবাদ করিতে অস্বীকার করিয়া নিজের দুর্বলতাই প্রকাশ করিয়াছেন। অধিকন্ত ক্ষমতায় আসীন থাকিয়াও তিনি ১৪৪ ধারা জারি সম্পর্কে তিনি যে যুক্তি দিয়াছেন তাহা ছেলেমানুষী ছাড়া আর কিছুই নহে।
তিনি বলেন যে, অতীতে শেখ সাহেব বা অন্য কোন দলকে পল্টন ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠান করিতে গিয়া যে অবস্থার সম্মুখীন হইতেছে হইয়া ইহা তাহারই অনুরূপ। অতএব ইহা মুসলীম লীগ রাজত্বের পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই নহে। অপরদিকে আই, জি, মিঃ আবদুল্যাহ সাহেব যখন গুণ্ডাদলকে বিতাড়িত করিয়া অবস্থা আয়ত্বে আনিলেন তখন সভা আরম্ভ হইবার পূর্ব মূহুর্তেই জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট অত্যন্ত অপ্রতাসিতভাবে পকেট হইতে ১৪৪ ধারা জারীর হুকুমনামা বাহির করিলেন। বেলা ৪ ঘটিকায় উক্ত আদেশ শহরের জন্য কোন স্থানে প্রচারণা করিয়া কেন ৫:৩০ মিনিটে একমাত্র সভাস্থলেই প্রচার করা হইল তাহা বুঝিতে সুখী সমাজের কোনই বেগ পাইতে হইবে না। হাজার হাজার লােকের সমাবেশের পণ্ড করার জন্যই এই হীন ষড়যন্ত্র তথাকথিত শান্তি রক্ষার জন্য নহে। এখন জিজ্ঞাসা ইহার পরেও কি জনাব রহমান জনসাধারণকে বিশ্বাস করাইতে চেষ্টা করিবেন যে, তিনি এবং তাহার দল ব্যক্তি স্বাধীনতার আদর্শকে পূর্ণ মৰ্য্যাদা দিয়া থাকেন ।