You dont have javascript enabled! Please enable it! 1956.11.21 | নির্লজ্জ বঞ্চনার ইতিহাস- শেখ মুজিবুর কর্তৃক লীগ ‘যুক্তফ্রন্টের কুকীর্তি বর্ণনা | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক ইত্তেফাক
২১শে নভেম্বর ১৯৫৬
নির্লজ্জ বঞ্চনার ইতিহাস
শেখ মুজিবুর কর্তৃক লীগ ‘যুক্তফ্রন্টের কুকীর্তি বর্ণনা

স্টাফ রিপাের্টার
গতকল্য (মঙ্গলবার) প্রাদেশিক বাণিজ্য ও শিল্প দফতরের মন্ত্রী জনাব শেখ মুজিবুর রহমান সেক্রেটারীয়েটে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে গত ৯ বৎসর যাবৎ কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে বঞ্চনার ইতিহাস বর্ণনা করেন। এই বঞ্চনার নজির উল্লেখ করিয়া তিনি বলেন, গত ছয় মাসের শিপিং পিরিয়ডে একটি ক্ষেত্রে বিদেশ হইতে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আমদানীকৃত ২ কোটি টাকার দ্রব্যাদিপূর্ণ জাহাজ চট্টগ্রামে পৌছানাের পর উক্ত জাহাজগুলিকে করাচীতে প্রেরণ করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান যে, সম্প্রতি তাঁহার করাচী সফরকালে তিনি এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সহিত আলােচনা করেন এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী অবিলম্বে এই ব্যাপারে তদন্ত করার আশ্বাস প্রদান করিয়াছেন। জনাব রহমান বলেন, ভবিষ্যতে এইরূপ ব্যাপার আর হইবে না এবং প্রয়ােজন মত আইন করিয়া ইহা বন্ধ করা হইবে।
তিনি বলেন, গত নয় বৎসর যাবৎ প্রদেশের প্রাক্তন ‘যুক্তফ্রন্ট’ ও মুসলিম লীগ সরকার কেন্দ্রের নিকট প্রতিটি ব্যাপারে একটির পর একটি করিয়া পূৰ্ব্বঙ্গের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়াছে। ফলে প্রদেশ মােটেই শিল্পায়িত হয় নাই এবং প্রদেশবাসী তাহাদের খাদ্যদাবী হইতে বঞ্চিত হইয়াছে। তিনি বলেন, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকার জন্য প্রদেশে নতুন শিল্প মােটেই গড়িয়া উঠে নাই। উপরন্তু যে সকল শিল্প রহিয়াছে, তাহার কাচামাল ও সম্প্রসারণের জন্য প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানী করিতে না দেওয়ায় প্রদেশে শ্রমিক অসন্তোষ বিরাজ করিতেছিল। প্রাদেশিক সরকারের বাণিজ্য দফতরটি কেবল নামেমাত্র রাখা হইয়াছে। পূর্ববঙ্গ বিদেশ হইতে প্রাপ্ত সাহায্যের শতকরা ১০ ভাগের বেশী লাভ করে নাই এবং বৈদেশিক মুদ্রা বণ্টনের ব্যাপারে এই প্রদেশকে চরমভাবে বঞ্চিত করা হইয়াছে। তিনি বলেন, এই সকল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকার শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়টি প্রদেশের আওতাধীনে আনার জন্য সাফল্যজনক প্রচেষ্টা। চালাইয়াছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারও বর্তমানে পূর্ববঙ্গের অবস্থা সম্পূর্ণ উপলব্ধি করিয়া এইসব দাবী মানিয়া লইয়াছেন। জনাব রহমান আরও বলেন,অতঃপর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের জন্য একটি বাজেট প্রণয়ন করা হইবে এবং এই বাজেট মােতাবেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রদেশের মধ্যে বণ্টন করা হইবে। সুতরাং প্রদেশকে তুরিতভাবে শিল্পায়িত করার সকল ব্যবস্থাই করা হইয়াছে।