দৈনিক ইত্তেফাক
২৪শে নভেম্বর ১৯৫৬
আওয়ামী লীগ বিভেদ সম্পর্কে স্বার্থন্বেষী মহলের জঘন্য প্রচার
প্রতিষ্ঠানের নিরঙ্কুশ অখণ্ডতা সম্পর্কে শেখ মুজিবুর রহমানের দৃপ্ত ঘােষণা
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতি দান প্রসঙ্গে বলেন যে, কতিপয় স্বার্থন্বেষী মহল আওয়ামী লীগের মধ্যে পাকিস্তানের বর্তমান পররাষ্ট্র নীতি লইয়া বিভেদ সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া যে প্রচার কার্য্য চালাইয়াছে, তাহা সর্বৈব মিথ্যা এবং বিদ্বেষপ্রসূত। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ কাউন্সিল, ওয়ার্কিং কমিটি ও আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পার্টির বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ সদস্যগণকে পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বিবৃতি দান না-করার অনুরােধ জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ইহা বড়ই দুঃখের বিষয় যে, আওয়ামী লীগের কতিপয় সদস্য পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দিতেছেন। ইহাতে জনসাধারণ-বিশেষ করিয়া আওয়ামী লীগ মহলে বিভ্রান্তি ও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হইয়াছে।”
“নিশ্চয় সকলে অবগত আছেন যে, শীঘ্রই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ওয়ার্কিং কমিটি ও আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পার্টির বৈঠক অনুষ্ঠিত হইবে। এই বৈঠকে বিষয়টি সম্পর্কে গভীরভাবে আলােচনার পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে। খাদ্যসমস্যা সমাধান ও আসন্ন উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা ব্যস্ত থাকায় বৈঠকটি পূর্বে অনুষ্ঠিত হইতে পারে নাই।” “সুতরাং, আমি আমাদের প্রতিষ্ঠানের সদস্যগণকে এ ব্যাপারে আর বিবৃতি প্রচার না করার অনুরােধ জানাইতেছি। “আমি পরিষ্কার করিয়া বলিতে চাই যে, বিভিন্ন পত্রিকায় এ-সম্পর্কে যে মত প্রকাশিত হইয়াছে তাহা আমাদের প্রতিষ্ঠানের মত নহে।” “পাকিস্তানের বর্তমান পররাষ্ট্র নীতি লইয়া আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া কতিপয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মহল যে বিদ্বেষপূর্ণ ও হীন প্রচারকার্য চালাইতেছে তদৃষ্টে আমি বিস্মিত হইয়াছি। কিন্তু আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলিতে চাই যে, এই প্রচারের ন্যায় অদ্ভুত ও কল্পনাপ্রসূত আর কিছুই নাই। একটি জঘন্য মিথ্যা।” “আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন বিভেদ ছিল না, এখনও নাই এবং ভবিষ্যতেও থাকিবে না। কারণ, আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা সুশৃঙ্খলাবদ্ধ প্রতিষ্ঠান।” প্রাদেশিক শিল্প সচিব শেখ মুজিবুর রহমান গতকল্য (শুক্রবার) রাত্রিতে সিলেট যাত্রা করেন। সেখান হইতে ২৫শে নভেম্বর তিনি কসবা যাত্রা করিবেন।