আনন্দবাজার পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১
পাকিস্তান হার মানল
নিয়াজির বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ
বাংলাদেশ দখলদার পাক ফৌজ বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করেছে। এবং আত্মসমর্পণ করেছে বিনাশর্তে। ঐ ফৌজের সর্বাধিনায়ক লে জে নিয়াজি আত্মসমর্পণের শর্তাদি নিয়ে আলোচনার জন্য ইস্টার্ন কমান্ডের অধ্যক্ষ মে জে জেকবকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। জে জেকব তদানুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালেই হেলিকপ্টারে ঢাকা রওনা হয়ে যান।
এই সম্পর্কে নয়াদিল্লী থেকে এক সরকারী ঘোষণায় বলা হয়েছেঃ জেনারেল মানেকশ আত্মসমর্পণের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন আজ সকালে লে জে নিয়াজি তাতে সাড়া দেন। ঢাকা থেকে মাইক্রয়েভ মারফত তিনি আত্মসমর্পণে রাজি হওয়ার কথা জানান।
জেনারেল মানেকশ আত্মসমর্পণের সময় সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা। কিন্তু তখন পর্যন্ত জে নিয়াজির কাছ থেকে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় ভারতীয় বিমান বহর ঢাকার সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলির উপর বোমাবর্ষন শুরু করে। এর কিছু পরেই পাওয়া যায় আত্মসমর্পণের খবর।
জেনারেল নিয়াজির কাছ থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পাওয়া গিয়েছে তাতে তিনি আরোও ৬ ঘণ্টা বোমাবর্ষন বন্ধের জন্য আর্জি জানিয়েছেন। সেই আর্জিতে সায় দিয়ে বেলা তিনটা পর্যন্ত বোমাবর্ষন মুলতুবি রাখা হয়েছে।
সকাল পর্যন্ত চুপচাপ
জেনারেল ম্যানকশ আত্মসমার্পণের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা। কিন্তু জেনারেল নিয়াজি তখন পর্যন্ত কোন উচ্চবাচ্চ করেননি। ফলে ভারতীয় ফৌজ নয়টার পর ফের গোলাগুলি বর্ষণ শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে বিমান থেকে গোলাবর্ষণ। পাক সেনাপতির তখন চৈতন্যোদয় হয়। আত্মসমর্পণে তিনি রাজি হন, মানকেশ’র কাছে বার্তা পাঠান এবং আত্মসমর্পণের শর্তাদি নিয়ে আলোচনার জন্য জেনারেল জেকবকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানান।