টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
সপ্তম নৌবহর সিঙ্গাপুরের পথে
নিউজ সার্ভিস, নিউ দিল্লি, ১৩ ডিসেম্বর
যে মুহুর্তে জাতিসঙ্ঘ অ্যামেরিকার ‘ভারতকে পাকিস্তান আক্রমণ না করার’ প্রস্তাব বিবেচনা করছিল সেই মুহুর্তে উত্তর ভিয়েতনাম থেকে পরমাণু শক্তিসম্পন্ন এয়ারক্র্যাফট ক্রুজার সিঙ্গাপুরের দিকে রওনা দিচ্ছিল।
একটি স্থানে চীনের চলাচলের খবর পাওয়া গেছে। এটা হতে পারে পিকিং এর সাথে ইসলামাবাদের সংহতির নিদর্শন।
সাইগণের রিপোর্ট থেকে জানা যায় সপ্তম নৌবহর টাস্কফোর্সে বিভিন্ন ডেস্ট্রয়ার আছে এবং এটিকে সিঙ্গাপুর অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। টাস্কফোর্সের জানায় ঢাকায় আটকে পড়া ইউ এস নাগরিকদের উদ্ধার করার জন্য এটিকে আনা হয়েছে।
একজন সরকারী মুখপাত্র আজ সন্ধ্যায় একটি ব্রিফিংএ প্রশ্নের জবাবে সপ্তম নৌবহর এর চলাচল সম্পর্কে জবাব দিতে গিয়ে বলেন – তারা আজ Vassil Kuznetsov, সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও তার মুখ্য সচিব, জনাব পি এন হাসকারের সাথে কথা বলেছনে।
মানসিক চাপ
সরকারি মুখপাত্র বলেন যে টাস্কফোর্স হয়ত ভারতের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তিনি সরাসরি কোন সমালোচনা না করে শুধু বলেছেন ঢাকায় আটকে পড়া সামান্য কজন নাগরিকের জন্য নৌবাহিনীর এত বড় আয়োজনের হয়ত কোন দরকার ছিলোনা।
মুখপাত্র উল্লেখ করেন যে, সিঙ্গাপুরে অবস্থিত ব্রিটিশ ঘাঁটি থেকে ৩ টি আর এ এফ এয়ারক্র্যাফট ও কানাডীয় সি -১৩০ বিমান দিয়ে গতকাল ভারতীয় সরকারি ব্যবস্থার অধীনে ঢাকা থেকে কয়েকশ বিদেশীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভারত সরকার একই রকম সুবিধা অ্যামেরিকাকে দিতে পারলে খুশী হবে।
এর পাশিপাশি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারত মহাসাগরে তার নৌ শক্তি পুনর্বহাল করছে।
এক রিপোর্টে সপ্তম নৌবহর কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে তারা বলেছেন যদি অন্য কোন ভাবে ঢাকায় আটকে পড়া আমেরিকানদের উদ্ধার করা যায় তাহলে হয়ত আমরা আমাদের বঙ্গোপসাগর মিশন বাতিল করতে পারি।
আকজের ব্রিফিংএ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন ইউ এস এবং চীনা উদ্দেশ্য উপমহাদেশে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি যে অ্যামেরিকা বা চীনের পরিস্থিতি জটিল করার কোন ইচ্ছা নাই।’
তিনি বলেন, সপ্তম নৌবহর দূরসমুদ্রে তার স্বাধীন ভ্রমণ চালাতে পারেন কিন্তু বন্দিদের উদ্ধারের কারণ ছাড়া অন্য কোন কারণ দেখাতে না পারলে তাদের সিঙ্গাপুরে অবস্থান করাটা যুক্তিযুক্ত হবেনা।
তার একটি টাস্ক ফোর্স পাঠানোর সিঙ্গাপুর বন্ধ দাঁড়াতে যদি না একটি নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা এই একইভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে চীনের এই পরিকল্পনা পরিকল্পিতভাবে ভারতকে ভয় দেখানোর জন্য। এর প্রয়োজনীয়তার কারণ আরও ভালো করে খুঁজে দেখা উচিৎ।