হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড
নভেম্বর ৬, ১৯৭১
পশ্চিম পাকিস্তানের সুশীল সমাজ মুজিবের মুক্তি চান
লাহোর, নভেম্বর ৫। রয়টার জানাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে ৪২ জনের স্বাক্ষরিত এক আবেদনপত্র দেয়া হয়েছে যাতে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি ও গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ীদের দ্বারা সরকার গঠনের আবেদন করা হয়েছে।
স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন ইস্তিকলাল পার্টির নেতা সাবেক এয়ার মার্শাল আসগর খান এবং লেলিন শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কবি ফয়েজ আহমেদ। তাঁরা বলেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্হিতিশীলতার ওপরে হুমকি দূর করতে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনই শ্রেষ্ঠ উপায়।
বিভিন্ন নেতারা যেমন রাজনীতি, ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবী, সাংবাদিক, লেখক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রনেতা, এইসব স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন:- “শেখ মুজিবের মুক্তিই ন্যায়বিচারের ভিত্তি”। আবেদনপত্রটিতে আছে তাঁর মুক্তি যদি সম্ভব না হয় তবে দেশদ্রোহীতার যে অভিযোগে মুজিবের বিচার সামরিক আদালতে চলছে সেটা সঠিক বিচারের জন্য সাধারণ উন্মুক্ত আদালতে আনা উচিত।
আবেদনপত্রটি দিবার সময় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া তিন দিনের সফরে রাওয়ালপিন্ডি থেকে এখানে এসেছেন।
স্বাক্ষরকারীরা বলেন, সম্প্রতি আমেরিকান নিউজউইক-এ দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বলেছেন জাতি যদি চায় তবে তিনি শেখ মুজিবকে মুক্তি দেবেন, এই প্রেক্ষাপটে আবেদনপত্রটি দেয়া হয়েছে। সে পত্রে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্হিতিশীলতার ওপরে যে গুরুতর রাজনৈতিক হুমকি সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনই শ্রেষ্ঠ উপায়। গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা যেতে পারে।
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে প্রথম হলেন ইস্তিকলাল পার্টির নেতা সাবেক এয়ার মার্শাল আসগর খান। অন্যদের মধ্যে আছেন ইংরেজী দৈনিক পাকিস্তান টাইমস-এর প্রাক্তন সম্পাদক সোস্যালিস্ট পার্টির চৌধুরী আসলাম খান, পাকিস্তান ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মির্জা মুহম্মদ ইব্রাহীম এবং লেলিন শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কবি ফয়েজ আহমেদ। বেশীরভাগ স্বাক্ষরকারী বামপন্থী এবং লাহোরে, যে জায়গাটা পাকিস্তানে সবচেয়ে শক্তিশালী মুজিব-বিরোধী কেন্দ্র সেখানে প্রেসিডেন্টের প্রতি এই ধরণের আবেদনপত্র এই প্রথম।