দি স্টেটসম্যান, ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
প্রথমত সেনাবাহিনীকে যেতে হবে, বলেছেন বাংলাদেশের মন্ত্রী
নয়া দিল্লী, ৯ই সেপ্টেম্বর – মিঃ খন্দকার মুশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে পাকিস্তানের সাথে আপোসরফার জন্য যেকোনো রাজনৈতিক নিষ্পত্তি করার আগে বাংলাদেশ থেকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সম্প্রতি গৃহীত এক বিশেষ টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন আপোসরফার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
“আপোসরফার সুযোগ সবসময়ই রয়েছে, কিন্তু আপোসরফার মাধ্যমে নিষ্পত্তির খাতিরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই”, তিনি বলেন।
এই টিভি সাক্ষাৎকারটি আজ রাতে “সংবাদ পরিপ্রেক্ষিত” নামক একটি পাক্ষিক অনুষ্ঠানে প্রচারিত হয়। এই অনুষ্ঠানে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকিস্তান বিষয়ক শিক্ষার সহযোগী অধ্যাপক, ডঃ মোহাম্মেদ আইয়ুব কর্তৃক গৃহীত নয়া দিল্লীতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধান, মিঃ কে. এম. শিহাবউদ্দিনের একটি সাক্ষাৎকারও প্রচার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে মিঃ শিহাবউদ্দিন বলেন আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ সভার অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল পাঠানোর ব্যপারে কোন সিধান্ত নেয়া হয়নি। তিনি বলেন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ একইসাথে কূটনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। পূর্ব বাংলার বেসামরিক প্রশাসক হিসেবে ডঃ এ. এম. মালিক-এর নিয়োগ ছিল “বাগাড়ম্বর শুধুমাত্র বিশ্ব জনমতকে ধোঁকা দেয়ার জন্য”। তিনি ডঃ মালিককে “বিশ্বাসঘাতক” হিসেবে অভিহিত করেন।
মিঃ শিহাবউদ্দিন বলেন বিশ্ব ব্যাংক গঠিত সঙ্ঘ থেকে কোন সাহায্য না পাওয়াতে ইসলামাবাদ অর্থনৈতিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। “আমি নিশ্চিত বিশ্ববাসী পাকিস্তানী প্রেসিডেন্টের কুকর্ম সম্পর্কে অবগত আছে”।
মিঃ শিহাবউদ্দিন ধারণা করেন যে পিপলস পার্টির সভাপতি মিঃ জেড. এ. ভূট্টো এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যকার জ্ঞাপিত মতবিরোধ পরিণামে পাকিস্তানের ধ্বংস ডেকে আনবে। তাঁর মতে, এই দুই জনের মধ্যকার দ্বন্দ্ব আসলে “দুইজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী পুরুষের”।
তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিচারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সকল রাষ্ট্রপ্রধান ও জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি শেখ মুজিব এবং তাঁর পরিবারের নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হস্তক্ষেপ করার জন্য আহ্বান জানান।