দি স্টেটসম্যান, জুলাই ২০, ১৯৭১
পাক সামরিক ডকুমেন্টসে লুটপাট ও ধর্ষণের প্রমাণ
আমাদের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট থেকে প্রাপ্ত
নয়া দিল্লি, জুন ১৯ – ভারত সরকার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দখল করা সামরিক নথিতে বাংলাদেশে ঘটা দুইটি বিশেষ কাজের প্রমাণ পেয়েছে। () বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুক্তিবাহিনীর অব্যাহত কর্ম এবং (2) সম্পত্তি লুটপাট , লাঞ্ছনা এবং পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নারী ধর্ষণ।
নথিগুলো পাক সেনারা ভারতের হাতে আত্মসমর্পণ করার সময় জমা দিয়ে তাদেরকে বিনিময়ে মুক্তি ফৌজের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাবার অনুরোধ করে।
লুটপাট, হামলা ও ধর্ষণ এত বিশাল মাপের হয়েছে যে পাক-সামরিক কর্তৃপক্ষ কে এই উদ্দেশ্যে বিচার আদালত স্থাপনের আদেশ জারী করতে বাধ্য করা হয়েছে ।
নথির কিছু বিশদ বিবরণ:
(1) লেঃ কর্নেল যহির সারওয়ার্দী, হেড কোয়ার্টার স্টাফ অফিসার এর একটি গোপন চিঠি., ৯ বিভাগ নং ১৬৬০৪/৪, তারিখ – ১০/৫/৭১, ৩০ পি বি , হেড কোয়ার্টার ফ্রন্টিয়ার কর্পস ঠিকানায়।
(2) এটা পরিষ্কারভাবে স্বীকার করেন যে মুক্তি ফৌজ গেরিলারা রেলপথ ও সড়ক সেতু উড়িয়ে দিচ্ছে এবং রাস্তায় মাইন পুতে রাখছে ও সামরিক যানবাহনের উপর লুকিয়ে অ্যামবুশ আক্রমণ করছে । এতে তারা হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যাবহার করছে ও স্নাইপিং করছে।
একই নথিতে অভিযোগ তারা ব্যাংক ও সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ লুট করে নিচ্ছে ও পুলিশ ও আর্মির কাছে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে।
(2) ব্রিগেডিয়ার মেজর এইচ জি . ১৩১ থেকে প্রাপ্ত একটি গোপন চিঠি- সিলেট নং ১০৯০৭০ / জি এস (ও পি এস) তারিখ – ৭ -৫-৭১
এই ডকুমেন্ট এ সম্পত্তি লুট এবং লাঞ্ছনা ও মেয়েদের ধর্ষণ এর প্রমাণ ছিল । কমান্ড্যান্ট এটি গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছে। কমান্ড্যান্টের নির্দেশ ছিল ভবিষ্যতে যদি কাউকে এই ধরনের অপরাধে দোষী পাওয়া যায় তাহলে তার শাস্তি হবে।
(নোট গ্রহণ করা যেতে পারে যে অতীতের গুলোর কোন বিচার হবেনা। শুধুমাত্র ভবিষ্যতে যারা এসবের সঙ্গে সংযুক্ত হবে তাদের বিচার করা হবে!)
(3) এইচ জি ৩১৩ এর ব্রিগেড মেজর জি আর ভাট্টি থেকে প্রাপ্ত একটা চিঠি, নং ২০০১/২০/এ (ও পি এস) তারিখ – ২-৫-৭১
দ্যার্থহিনভাবে প্রমাণিত এসব (হেডকোয়ার্টার ইস্টার্ন কমান্ড থেকে গৃহীত) লুট করা জিনিসপত্র ঢাকা ও করাচীতে নিয়ে আসা হয়। পূর্ব কমান্ডের সামরিক অফিসারদের এসবের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ রিপোর্টে আছে। জিওসি-ইন-সি, ইস্টার্ন কমান্ড, এবং জিওসি 9 নং বিভাগ এই ঘটনা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।
(4) সদর দপ্তর, ফ্রন্টিয়ার কর্প্সের একটি সংকেত বার্তা, তারিখ ৭-৫-৭১ ৩১৩ ব্রিগেড , নং জি ১২০, মেজর আমজাদ হোসেন ২ নং উইং বলেন যে ৩১৩ ব্রিগেড রিপোর্ট করে যে সেখানে র্যাঙ্কের গুরুতর অনিয়ম বিরাজ করছে।