You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.16 | সমস্ত ট্রাজেডি | ১৬ জুন ১৯৭১, হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার একটি সম্পাদকীয় - সংগ্রামের নোটবুক

হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ১৬ জুন ১৯৭১
সম্পাদকীয়
সমস্ত ট্রাজেডি

দিন যায়, সপ্তাহ যায়। সময় সঙ্গে সঙ্গে শান্তি এবং স্বাধীনতাকামী বাংলার মানুষের মাঝে আশা জমা হয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খান এর আক্রমণ থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে যারা তাদের দুর্দশা অবর্ননীয়। তবুও, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, তাজউদ্দীন আহমেদ, বিশ্বের বড় শক্তিগুলোকে শরণার্থীদের দুঃখজনক সত্য উপলব্ধি করে এগিয়ে আসার আহবান করেছেন। তার সাম্প্রতিক বিশ্ববাসীকে দেয়া ভাষণে তিনি সমস্যার মূল দিকে আলোকপাত করেছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন বিশ্বের সচেতন সমাজ সম্ভবত ছুটি উদযাপন করছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে ধন্যবাদ জানান তার প্রতিকূল অবস্থার মাঝে এগিয়ে আসার কারণে। ভারত এটা অবশ্যই করেছে – বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়া থাকায় তাদের কাছ থেকে এটা কাম্য ছিল। কোন সন্দেহ নেই যে শরণার্থীদের বিপুল প্রবাহ ভারতের উপর অসাধারণ চাপ সৃষ্টি করেছে যাদের সীমিত সম্পদ রয়েছে। এখনও সীমান্তের অন্য পাশ থেকে আসা লোকদেরকে গেস্ট হিসাবে রিসিভ করা হচ্ছে। এখানে কোন প্রতিশ্রুতি দেয়া নেই যে যে রাষ্ট্র থেকে আসছে তারা এর খরচ যোগাবে – এমনই শরনার্থিরা কবে ফিরে যাবে সেই ব্যাপারও অনিশ্চিত। এটা সত্যিই দুঃখের ব্যাপার যে – যে আরব দেশগুলির জন্য ভারত সবসময়ই কথা বলেছিল, তারা নিন্দা করে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। তাদের এই নীরবতা ইসলামাবাদকে উপকৃত করেছে সন্দেহ নেই।

আরও বেদনাদায়ক হচ্ছে বিশ্বের বড় শক্তিগুলি মোটামুটি নিশ্চুপ আছে। ইসলামাবাদের দ্বারা নির্দয়ভাবে সংগঠিত ঘটনা, ঘরবাড়ি ও জীবন ধ্বংসের ঘটনায় তারা খোলাখুলিভাবে নিশ্চুপ আছে। তারা এখনো ইয়াহিয়াকে বলেনি যে তারা তাকে কোনও অস্ত্র বা আর্থিক সহায়তা দেবে না। খুব সহজ কারণেই তারা নিপীড়নের যন্ত্রের বিরুদ্ধে তা বলতে পারে। জনাব আহমেদ অভিজ্ঞতা থেকে জানেন এটা ক নিষ্ঠুর হতে পারে। এটা স্পষ্ট যে যে কোন দেশ যারা এখন ইয়াহিয়া খান শাসনের সহায়তায় আসবে তারা ধর্মের নামে গণতন্ত্র, শান্তি, মানবাধিকার ও অনুরূপ পবিত্র চেতনার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। যারা ইসলামাবাদ এর সামরিক চক্রের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে, তারা নিজেরাই মূলত গণহত্যার অস্ত্র।