দি কমনার | কাঠমন্ডূ, ১ জুন ১৯৭১ | সম্পাদকীয় – একটি মানবিক দৃষ্টিকোণ
এটি কোনও লঙ্ঘন বা নেতিবাচকতা বা নিরপেক্ষতা এবং অ-বিন্যাসের সাথে জড়িত নয়। যখন মানুষের প্রয়োজন হবে, যেমন যারা গত কয়েক সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে পালিয়ে গেছে আমাদের অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে তাদের সাহায্য করার ব্যাপারে।
প্রেস রিপোর্ট বলেছে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ লোক ভারতে এসেছে। পেছনে তাদের সম্পত্তি ফেলে রেখে এসেছে। তারা ভারত-পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর বিভিন্ন পয়েন্টে উদ্বাস্তু শিবিরে অবস্থান করছে। স্বাভাবিকভাবেই এটি তাদের জন্য একটি সুখী জীবিকা নয়। সম্প্রতি, সংবাদ প্রতিবেদনগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পে নানা রোগ যেমন কলেরা, এবং গ্যাস্ট্রো-এন্টারটাইসিস শুরু হয়েছে। তাদের জীবন অনেক কষ্টের সম্মুখীন। এই ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক নয় যখন মানুষের এই ধরনের ব্যাপক প্রবাহ ঘটে। এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে ভারত যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু এই বোঝা শুধুমাত্র ভারতের কাঁধে প্রত্যাশা করা যাবে না। এই শরণার্থী কেবল ভারতের দায়িত্ব নয়। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে এবং যে কোনও সাহায্য দিয়ে এইসব লোককে সাহায্য করতে হবে।
এই বিষয়ে ইসলামাবাদের অনুভূতি পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা সম্পর্কিত। তবে আজ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবস্থা যাই হোক একথা বলা যায় না যে উদ্বাস্তুদের এই আগমন ভারতের উৎসাহে হয়েছে। এটা বোধগম্য নয় যে শুধু সুধু কেন ভারত বা কোন রাষ্ট্র স্বেচ্ছায় এত বড় বোঝাকে আমন্ত্রণ জানাবে। অনুরূপভাবে, এটি খুব স্পষ্ট যে, যখন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে পালিয়ে যেতে হবে তখন যাবার মত একমাত্র স্থান ছিল ভারত। ভৌগলিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা বিতর্ক ও রাজনীতির দ্বারা মুছে ফেলা যাবে না। তাই উদ্বাস্তু বোঝার জন্য ভারতকে দোষারোপ করা যায় না। এই বোঝা এভাবে কেউ সহ্য করতে পারেনা। যদিও এটা সুস্পষ্ট যে তার ইসলামাবাদের জন্য কোন সহানুভূতি নেই। তার উদ্বেগ প্রকাশ হচ্ছে। এই মুহুর্তে উদ্বাস্তুদের জন্য বিশ্বের কাছে সাহায্য চাইতে শুরু করেছে। কিন্তু যদি তার সমস্যা আরও জটিলতার দিকে না চলে, তবে এটাও দেখতে হবে, এমনকি পাকিস্তানের স্বার্থেও, যে এই লক্ষ লক্ষ লোককে তারা যেখান থেকে এসেছিল সেখানে কিভাবে ফিরিয়ে নেয়া যায়। কিভাবে উদ্বাস্তু সমস্যা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বসতি এবং শান্তি ব্যাহত করছে সেদিকে আমাদের নির্দেশ করতে হবে না।