যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বলছি
কৃত্তিবাস ওঝা
শনিবার ৩ এপ্রিল-স্বাধীন বাঙলাদেশের ছােট শহর চুয়ডাঙ্গায় পাক হার্মাদবাহিনী যখন নির্বিচারে নাপাম বােমা বর্ষণ করছিল তখন আমি সেই শহরে ছিলাম। শুধু এই বােমা ফেলার মুহূর্তটিতেই নয়-বােমা ফেলার আগে ও পরে পাকিস্তানের শােসক শ্রেণীর শিকল ছিড়ে যারা মুক্তাঞ্চল গঠন করেছে, যারা নিজেদের স্বাধীন। বলে ঘােষণা করেছে তাদের সেই স্বাধীনতা রক্ষার অভূতপূর্ব সংগ্রামও দেখেছি। দেখেছি সমগ্র নূরনগর গ্রামটি নাপাম বােমায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার পর গ্রামের মানুষগুলাের কী নিদারুণ ক্রোধ আর ক্ষোভ। ক্রোধে ফেটে পড়েছে মানুষগুলাে, কিন্তু তার মধ্যে সর্বস্ব হারাবার শােক ও বেদনার লেশমাত্র নেই। তাদের শুধু দুঃখ, যদি একটা কামান থাকত তাহলে ঐ বােমারু বিমানগুলােকে তারা ধরাশায়ী করতে পারত। তাদের দুঃখ এই বলে নয় যে তাদের বাড়ি ঘর, গােলা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, গােরু ছাগল মােষ মরে গেছে-তাদের দুঃখ এ জন্যে নয় যে তারা এখন যে গাছতলায় দাঁড়িয়ে আছে ঐ হলাে তাদের শেষ আশ্রয়। তাদের দুঃখ শুধু এই শত্রুবাহিনীর বিমান তাদের আকাশে এসে অক্ষত ও নিরাপদে ফিরে গেল। জোরকদমে এগিয়ে গেলাম দর্শনার দিকে। শুধু আমি একা নয়। আমার আগে পিছনে আরাে অনেক মানুষ যাচ্ছে দর্শনার দিকে। দর্শনার দি থেকেও আসছেন অনেকে গেদের দিক থেকে। মুখােমুখি হতেই একপক্ষ বলছেন জয় বাঙলা’- অপর পক্ষ সাড়া দিচ্ছেন ‘জয় বাঙলা’। নাে ম্যানস ল্যান্ড পেরিয়ে যেকানে আগে পাকিস্তান লেখা সাইনবাের্ড ছিল আজ সেখানে পাকিস্তান মুছে ফেলে লেখা হয়েছে বাঙলাদেশ। দর্শনায় পৌছে দেখলাম এক নতুন কর্মব্যস্ততায় সকলে ব্যস্ত। তার মধ্যেই খুঁজে বের করলাম স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রধানকে। তিনি আমাদের একখানা গাড়ি দিলেন। বললেন ‘যান চলে যান, দেখে আসুন স্বাধীন বাংলাদেশ। এগিয়ে চলেছি দর্শনা পিছনে ফেলে কুষ্টিয়ার পথে। আওয়ামী লীগ নেতা বলে দিলেন, ‘চলে যান যতদূর মন চায়। কিন্তু পথ কোথায়? এরা যে পথে প্রতিরােধ রচনা করে শত্রুর আক্রমণ পথকে রুদ্ধ করেছে নানাভাবে। কোথাও সুবিশার শিরীষ, আম,বট গাছ কেটে ফেলে রাস্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, কোথাও রাস্তাকে কেটে পরিখা খনন করে রেখেছে। পাঁচ মিনিট ও গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার উপায় নাই। বাধা শুধু পথে নয়। গাড়ি এগিয়ে যেতে যেতে বারে বারে ঘেরাও হতে হচ্ছে গ্রামের মানুষের কাছে। ছেলে বুড়াে যুবক শিশু ও মহিলারা পর্যন্ত পিছিয়ে নেই ঘিরে ধরছে গাড়ি। পরিচয় দিতে হবে যাওয়ার উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে হবে, তারপর পাওয়া যাবে। পরিচয় পাবার পর কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা চেহারা। তখন আবেগ অন্য খাতে প্রবাহিত। তখন বসতে হবে, না হয় দাঁড়িয়েও বলে যেতে হবে সব খবর । এগিয়ে চলেছি এইভাবে গ্রামের পর গ্রাম পেরিয়ে; গ্রাম নয়-গ্রাম বললে ভুল হবে, দূর্গ বলাই ভালাে। প্রতিটি গ্রাম হয়ে উঠেছে দুর্গ। শত্রুরা বিমান হতে বােমা ফেলতে পারে-তার জন্য খোঁড়া হয়েছে ট্রেঞ্চ। গাছের বড় বড় ডাল কেটে সেই ট্রেঞ্চ ঢাকা দেওয়া হয়েছে। ছােট ছােট পুল বা ব্রিজগুলাে এমন করে রাখা হয়েছে যে দশ মিনিট চেষ্টায় দরকার হলে ভেঙ্গে ফেলা যায়। সব ব্রিজের গােড়াতেই দিবারাত্র পাহারা বসছে। একটা বিরাট সামরিক শক্তিকে মােকাবিলা করার জন্য গ্রামের নিরীহ নিরস্ত্র মানুষগুলাে সর্বস্ব পনে নিজেদের প্রস্তুত করেছে। এদের আছে কত বন্দুক কামান ব্যাঙ্ক বিমান কিন্তু এরা হাতে তুলে নিয়েছে যে যা পেয়েছে তাই। দা কুড়ল বল্লম, তীর ধনুক, শাবল গাইতি চটি হাঁসুয়াও রেহাই পায় নাই। শিশু ও মহিলারাও পর্যন্ত গৃহস্থালীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অস্ত্র তুলে নিয়েছে। বন্দুক ও আছে। সব গ্রামেই দুই চারটে বন্দুক পাইপ গান দেওয়া হয়েছে। পরনে লুঙ্গি অথবা পাজামা, মাথায় তালপাতার টুপি, গাছের ডালে বসে আছে বন্দুক নিয়ে। এতটুকু বোেঝবার উপায় নেই, কিন্তু একটু লক্ষ করলেই দেখা যাবে গাছের পাতার আড়ালে চুপ করে বসে আছে কেউ না কেউ। তারপর দেখা যাবে প্রকৃত সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীকে। তারা রয়েছে কয়েকটা গ্রাম কেন্দ্র করে এক এক জায়গায়। রাস্তার পাশে বিরাট বিরাট ট্রেঞ্চ গাছ। লতা পাতায় ঢেকে বন্দুকের নলটা উচু করে চব্বিশ ঘণ্টা রয়েছে তারা। এরা পাকিস্তানের এক কালের বিধ্বস্ত সৈনিক ছিল, কিন্তু সেই প্রভুদের বিরুদ্ধেই বন্দুকের নল ঘুরিয়ে অপেক্ষা করছে। চুয়াডাঙ্গা শহরে ঢুকবার মুখে একটা সামরিক বাহিনী আমাদের পথ রােধ করলাে। তারপর পরিচয় প্রদান করতেই দৃশ্যটা সম্পূর্ণ বদলে গেল। কাঁধে বন্দুক, বন্দুকের মাথায় কিরিচ, কোমরে ছােরা বুকের সঙ্গে বা মাজায় বুলেট, মাথায় লােহার টুপি জাল জড়ানাে। ৬ ফুট সাড়ে ৬ ফুট লম্বা, ৪২ ইঞ্চি বুকের ছাতি। আবেগে একেবারে জড়িয়ে ধরলাে। যেন কত প্রবাসে থেকে আমি ফিরে এসেছি। যেন বহুদিন ধরে যােগাযােগ ছিল না, ছিল না চিঠিপত্রের আদান প্রদান, হঠাৎ বাড়িতে এসে পৌঁছেছি। বাঁধভাঙা আবেগে জড়িয়ে ধরেছে বড়ভাই –“কোথায় ছিলিরে এতদিন, কতদিন পরে এলি!” জীবনে সামরিক বাহিনীর লোেকদের সঙ্গে অতীতে মেশবার, তাদের জীবন দেখবার অনেক সুযােগ হয়েছে। কিন্তু সামরিক পােশাক পরা, কাঁধে বন্দুক এমনভাবে। কাউকে চোখের জল ফেলতে দেখিনি। এই আবেগ আরাে গভীর হলাে যখন তারা শুনলাে আমার জন্মভূমি, আমার দেশও এই আজকের স্বাধীন বাঙলার একটা গ্রামে।
এরা ই পি আর বাহিনীর লােক, এরা লড়াই করছে। এরা বুঝি এবার আসল শত্রুদের চিনতে পেরেছে, তাই সংগ্রামে এত দৃঢ়তা এত প্রত্যয়। যে সৈনিক এই চুয়াডাঙা-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহে মরণপণ লড়ছে তার হয়ত দেশ ছিল ঢাকা বা কুমিল্লা বা চট্টগ্রাম যশাের। এরা জানে না, বাড়িতে তাদের মা ভাই-বোেন। স্ত্রীপুত্রকন্যাকে কেমন আছে অথবা আছে কি নেই, সেই খোজ নেবার সময় নেই, সুযােগও নেই। মাসের প্রথম সপ্তাহে মাইনে পেয়ে বাড়ি পাঠালে বৃদ্ধ পিতা মাতার আহার জোটে, শিশু সন্তানের খাদ্য-ঔষধ সংগ্রহ হয়। কিন্তু আজ? কোথায় মাহিনা কেউ খোজ করছে না নিজেদের বেতন মাহিনার। বেতন নিয়া বেতন নিয়ে অনেতদিন চাকরি করেছে, আজ যে তারা মুক্তিযুদ্ধে নেমেছে, মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা স্বধীকারের সংগ্রামের সঙ্গে তাে দেনা পাওনার কোনাে সম্পর্ক থাকে না। আজ সব চিন্তা ভাবনা হাতের বন্দুক নিয়ে এই কয়টি বুলেট সম্বল, এই দিয়েই রক্ষা করতে হবে মাটি, প্রাণ মারতে হবে, নিধন করতে হবে শত্রু বাহিনীকে। বেলা তখন বারােটা বাজতে কয়েক মিনিট। হঠাৎ আকাশে কয়েকখানা বিমনি দেখা দিল। জীপের আওয়াজে বিমানের গুড় গুড় আওয়াজ প্রথমে বুঝতে পারি নাই, কিন্তু যখন বিমানগুলাে ড্রাইভ দিয়ে নিচুতে নেমে এল, প্রায় নারকেল গাছের মাথার কাছে তখন দ্রুত জীপ থামিয়ে নেমে পড়লাম। সন্দেহ হচ্ছিল বিমান থেকে বুঝি লক্ষ্য আমাদের জীপ খানি তাই জীপ ছেড়ে বেশ কিছুটা দূরে জঙ্গলে নেমে পড়লাম। তখনও বুঝতে পারিনি ঘটনাটা কি ঘটতে চলেছে। এরপরই কানের পর্দা ফেটে যাবার মতাে একটা আওয়াজ। শুয়ে পড়লাম মাটিতে কান চেপে রাখলাম দুই হাত দিয়ে কিন্তু সেই শব্দ বুঝি শরীরের লােমকূপ দিয়ে প্রবেশ করে হৃদপিণ্ডে আঘাত করছে। একটু মাথা উচু করলাম, দেখি সামান্য দূরে শুধু আগুন, ধোয়ার কুণ্ডুলি আকাশে উড়ছে। চিৎকার শােনা যাচ্ছে মানুষের, আগুনের নিবন্ত ফুলকি আর ছাই এসে পড়ছে আমাদের শরীরে। বেশ কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলুম বিমানগুলাে অনেক উপরে উঠে ধীরে ধীরে পূব দক্ষিণ কোনে চলে গেল। তখন ঘড়িতে সাড়ে বারােটা। রওনা হলাম বােমা বিধ্বস্ত এলাকার দিকে। প্রথমেই পৌছলাম ই পি আর ব্যারাকে। বিরাট ব্যারাক বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলছে, দমকল এসে গেল জল ঢালতে শুরু করল সেই আগুনের মধ্যেই অনেকে চেষ্টা করলেন দেখতে ভিতরে কেউ আহত নিহত আছে কিনা। কয়েকজন আহতকে নিয়ে গাড়ি চলে গেল হাসপাতালে। আগুন নিভল কিন্তু দেখা গেল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে সব। ব্যারাকের কয়েকশত সৈনিকের যা কিছু ছিল সব কিছু শেষ। জীবনহানি হয় নাই কারণ বিমানগুলােকে আকাশে উড়তে দেখেই এঁরা ধরে নিয়েছিলেন একটা বিপদ আসছে। কথা বলছিলেন সামরিক বাহিনীর কয়েকজন লােক। বলছিলেন এই ক্যাম্পটার পর পাকবাহিনীর ভয়ানােক রাগ। কারণ এই ক্যাম্প থেকেই এই এলাকায় প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয়। এখানকার ই পি আর বাহিনী ই যশােহরে পাকবাহিনীকে আক্রমণে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে, কুষ্টিয়া মুক্ত করার মূলেও এই ক্যাম্পের অবদান সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া ওরা জানে এখানে মুক্তিবাহিনীর হাতে প্রচুর অস্ত্র, গােলা বারুদ আছে। ওরা আজ সব পথ হারিয়ে শুধু আকাশ পথকেই বেছে নিয়েছে। জানে পথ দিয়ে আসতে গেলে মরে যাবে, জানে ছত্রী সেনা নামালেও মরে যাবে, তাই বিমান থেকে ধ্বংস করে শ্মশানভূমিতে নেমে এসে ওদের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। পাক বাহিনীর নৃশংস আক্রমণ ও নির্যাতনের কাহিনি বর্ণনা করলেন। তিনি বললেন ওরা আজ বাঙালি মাত্র সকলকেই শত্রু হিসেবে গণ্য করেছে। শিশু, বৃদ্ধা, যুবা কাউকে রেহাই নেই।
নুরনগর এই গ্রামটার উল্লেখ রবীন্দ্রনাথের যােগাযােগ উপন্যাসে। যেখানে বাড়ির নববধুর উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে এখানে নূরনগরী চাল চলবে না। নূরনগর ছােট্ট গ্রাম কিন্তু বেশিরভাগ বাড়ি পাকা। বােমা পড়েছে। সেই পাকা বাড়িগুলাে লক্ষ্য করে, ধ্বংস করে দিয়েছে বাড়িগুলাে। এখানেও প্রাণহানি বেশি হয় নাই। কারণ এখানেও বিমান আসতে দেখে ঘরের মানুষগুলাে সব বাহিরে জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। মারা পড়ছে গােরু ছাগল ঘােড়া। বােম বিধ্বস্ত গ্রাম দেখে আপনার চোখে জল আসবে কিন্তু যারা গ্রামের মানুষ তাদের চোখে কিন্তু জল নেই। সমগ্র বােমা বিধ্বস্ত গ্রামগুলাে ঘুরে দেকলাম কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব স্বাভাবিক হয়ে গেল। সকলেই আবার যে যার কাজে, সময় নাই বসবার সময়নাই দাড়াবার, শােক করবার সময়নাই। মােটর সাইকেল ভ্রাম্যমাণ ব্যক্তি বেরিয়ে পড়লেন রাস্তায়-সর্বত্র জানিয়ে দিতে হবে বােমাবর্ষণে কোনও ক্ষতি করতে পারেনাই পাক হানাদার। মাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাে শহর প্রচারের উদ্দেশ্যে। নইলে নানা গুজব ছড়াতে পারে। টেলিফোন খবর দেয়া হলাে সম্ভাব্য সকল স্থানে ঘটনার বিবরণ দিয়ে।
স্বাধীন সরকার চলছে চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়া মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের কিছু অঞ্চল নিয়ে। সরকারের আঞ্চলিক মন্ত্রি পরিষদ গঠিত হয়েছে। যার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রধান হিসেবে কাজ করছেন আসাদুল হক। অন্য মন্ত্রিদের মধ্যে আছেন আবজালুউর রশিদ, ইউনিস আলি, ব্যারিস্টার আব্দুল রশিদ। সেনা বাহিনী তথা প্রতিরক্ষা ও শান্তি রক্ষার দায়িত্বে আছেন মেজর ওসমান। জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে অনেককে, সেখানে স্থানে দেওয়া হয়েছে পাঞ্জাবী ও বিহার ও উত্তর প্রদেশের কিছু মুসলমানকে অন্য কোন কারণে নয়’ এরা অনেকে পঞ্চম বাহিনীর কাজ করতে পারে। এস ডি ও ইকবাল সাহেবকে আটকে রাখা হয়েছে মেহেরপুরে। এস ডি ও সাহেবের স্ত্রী-পুত্র কন্যাকে নিরাপদে রাখা হয়েছে তাদের কোয়াটারে । প্রশ্ন করেছিলাম এদের আটকে না রেখে চলে যাবার সূযােগ দিলে হতাে না। জবাব দিলেন একজন হয়ত হতাে কারণ রাখতে যেয়ে আমাদের অনেক খাদ্য খরচ হচ্ছে, কিন্তু অন্য ফলও হতে পারতাে। জাননে এইভাবে নীলফামারীর বাঙালি এস ডি ও ছেড়ে দিয়েছিলেন কিছু পাঞ্জাবী ও অন্যান্যকে। পরে তারাই যখন পাক হানাদারদের সঙ্গে এসে শহর দখল করে তখন তারাই এস ডি ও সাহবেকে বেধে তার সামনে তার দুই কন্যা, তাঁর এক শালিকা কে ১৪/১৫ জন ধর্ষণ করেছিল। এস ডি ও সাহেবের প্রায় বৃদ্ধা স্ত্রীকে … কথা শেষ করলেন না। শুনবেন না সেইসব কথা তবে আমরা এখানকার এস ডি ও কে শুধু নিরাপদ রেখেছি তাই নয়, তাঁর পরিবারের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করেছি সর্বোতভাবে।
যখন ফিরে আসবার সময় হলাে তখন আমার হাতে একটা পতাকা তুলে দিলেন। বললেন পতাকাটি দিবেন কলকাতা ফিরে আপনাদের মূখ্যমন্ত্রী শ্রীঅজয় মুখােপাধ্যায়কে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আমাদের সংগ্রামকে যেভাবে একাত্মভাবে গ্রহণ করেছে—এই পতাকা হলাে তারই স্মারক। আর আপনাদের বেতার কেন্দ্রের ভাইদের আমাদের লাখ লাখ সালাম জানিয়ে বলবেন, তারা যেন “আমার সােনার বাঙলা” এই গানটি যত পারে বাজায়।
সূত্র: সপ্তাহ, ৯ এপ্রিল ১৯৭১