You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.27 | হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ২৭ মে ১৯৭১, শরনার্থী শিবিরে বাঙ্গালী নিধন - সংগ্রামের নোটবুক

হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ২৭ মে ১৯৭১
শরনার্থী শিবিরে বাঙ্গালী নিধন

২৫ শে মে – পূর্ব বাংলার একজন প্রকৌশলী, সম্প্রতি সুইডেন যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে এখানে এসেছেন। তিনি সামরিক প্রশাসন কর্তৃক জঘন্য কাজকর্মের কথা প্রকাশ করে বলেন এটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে নাৎসিদের দ্বারা সঙ্ঘটিত নিপীড়নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।

প্রকৌশলীর কাছের আত্মীয়রা যারা পদ্মা নদীর অন্য পার্শ্বে থাকেন তারা বন্দি ক্যাম্পে যেখানে বাঙালিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ও রাতের অন্ধকারে জবাই করা হচ্ছে সেসব কাহিনী বলেন। সামরিক কর্তৃপক্ষ, যারা পূর্ববঙ্গে “স্বাভাবিক জীবন” আছে বলার চেষ্টা করছেন – তারা আসলে দিনের বেলায় গোলাগুলির চাইতে ছুরি দিয়ে তাদের পেট কাটার পন্থা অবলম্বন করেছেন – এর কারণ হল গুলির আওয়াজে সবাই ভোয় পেয়ে যায় যাতে করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পরিবেশ বিনষ্ট হয়।

প্রকৌশলীর জানা মতে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গোদনাই ও টঙ্গিতে এরকম কমপক্ষে চারটি ক্যাম্প আছে।

তিনি বলেন যে যদিও ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের প্রায় বেশিরভাগ কারখানাই কাজ করে না, তবুও সৈন্যরা সাধারণ মানুষকে দিয়ে সেখানে বয়লারে ধোঁয়া উৎপন্ন করতে বলেছেন যাতে মনে হয় এগুলো স্বাভাবিকভাবে চলছে।

বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি খুব কম। এমন দৃষ্টান্ত আছে যে সরকারি কর্মকর্তাদের তাদের বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং কখনও আর তাদের দেখা যায়নি বা তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

অনেক সেনা কর্মকর্তাকে তাদের মৃত সৈন্যদের জন্য কফিন বানানোর আহ্বান জানানো হয় এবং যখন তারা সেটা করতে ব্যার্থ হয় তখন সৈন্যরা কোনও সামর্থ্যবান লোককে সেখানে নিয়ে আসে এবং তাদেরকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়।