You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.11 | পাকিস্তানকে শরণার্থীদের বাড়িঘরে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে দিতেই হবে | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পাকিস্তানকে শরণার্থীদের বাড়িঘরে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে দিতেই হবে

বিশ্বের সমস্ত মানবদরদী মানুষের কাছে সােভিয়েত প্রধানমন্ত্রী উদাত্ত আহ্বান
মস্কো, ১০ জুন (এপি) সােভিয়েত প্রধানমন্ত্রী শ্রীকোসিগিন বলেছেন, পূর্ববঙ্গ থেকে যে শরণার্থীরা বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে তাদের নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যাবার পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতেই হবে।
গােটা সােভিয়েত ইউনিয়নে এবং অন্যান্য দেশেও প্রচারিত এক টেলিভিশন বক্তৃতায় গতকাল তিনি এ দাবি জানিয়ে বলেছেন : মানবতার নীতিগুলিকে যারা মর্যাদা দেয় তাদের সবাইকে ঐ শরণার্থীদের পূর্ববঙ্গে বাড়িঘরে ফিরে যাবার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবার জন্য এবং সেখানে জীবনযাপন ও কাজকর্ম করার সম্ভাবনা গড়ে তােলার জন্য দাবি জানাতেই হবে।”
“আমাদের দৃঢ় ধারণা অবিলম্বে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষেরই তেমন ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা কর্তব্য।
“আমাদের প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে পাকিস্তানে সংঘটিত সুবিদিত ঘটনাবলীর দরুণ উত্তেজনাকর সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ায় সােভিয়েত সরকার উদ্বিগ্ন।”
তিনি বলেছেন, ইউরােপে অস্ত্র-শস্ত্র হ্রাস, একটি ইউরােপীয় নিরাপত্তা সম্মেলনের অনুষ্ঠান এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য পাঁচটি দেশের মধ্যে আলাপ আলােচনা আরম্ভ করার ব্যাপারে সােভিয়েত ইউনিয়নের নির্ভুল ও সুনির্দিষ্ট যেসব প্রস্তাব রয়েছে সেগুলির উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এমন কি যারা এসব প্রস্তাবের বিরােধী তারাও প্রকাশ্যে এগুলির বিরােধিতা করতে সাহস পাচ্ছে না। তবে এগুলি যাতে কার্যকর না হয় সেজন্য তারা সর্বতােভাবে চেষ্টা করছে। তাদের বক্তব্য হল সােভিয়েতের অমুক অমুক প্রস্তাব নাকি খুব জটিল, কাজেই পরীক্ষা করে দেখার জন্য সময় দাবি করে এবং নানারকমের পূর্বশর্ত আরােপ করে এসব সমস্যার সমাধান থেকে দূরে সরে থাকার মতলবে।
“আমরা অবশ্য এসব প্রশ্ন নিয়ে যত্ন সহকারে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রস্তুতি করার বিরােধী নই। তবে প্রসঙ্গ সম্পর্কে প্রস্তুতির চেষ্টা এবং প্রস্তুতির নাম করে শাস্তি প্রস্তাবগুলিকে বানচাল করার চেষ্টা। এদুয়ের মধ্যে তারতম্য করতেই হবে।”
সােভিয়েত ইউনিয়নের নির্মানকাণ্ড সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি এক বছরের প্রথম ৫ মাসের ফলাফলের উল্লেখ করে বলেন, ইতিমধ্যে শ্রমের উৎপাদনশীলতা পরিকল্পিত লক্ষ্য ছাড়িয়ে গিয়েছে শতকরা ১ ভাগেরও বেশী পরিমাণে। এটা সােভিয়েতের শ্রমজীবী মানুষের এক বড় রকমের জয়।

সূত্র: কালান্তর ১১.৬.১৯৭১