যুগান্তর পত্রিকা
৬ মে, ১৯৭১
ইয়াহিয়ার বায়না- বাংলাদেশ মিশনের সঙ্গে গোপন বৈঠক চাইঃ
কূটনৈতিক বিনিময় কালও হয়নি
(বিশেষ প্রতিনিধি)
নয়াদিল্লী, ৫ মে- পাকিস্তানের একগুঁয়েমির ফলে আজও ভারতীয় এবং পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশন অফিসের কার্মচারীদের নিয়ে আসা, নিয়ে যাওয়া হয়নি। পাকিস্তান হাইকমিশনের দাবী, ডেপুটি হাইকমিশনার মিঃ মেহেদী মাসুদকে কলকাতা মিশনের সমস্ত কর্মচারীর সঙ্গে গোপনে এবং ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে দিতে হবে। ভারত সরকারের অভিমত, ব্যাপারটি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাঁরা কলকাতা মিশনের কাউকে এ ব্যাপারে বাধ্য করতে পারেন না। কাজেই পাকিস্তানের দাবী অবৈধ, অযৌক্তক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এ শুধু কর্মচারী বিনিময় দেরি করার মতলাব।
পাক হাইকমিশনারের প্রেস কাউন্সিলর মিঃ এম আই বাট আজ এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ভারত সরকারের কাছে তাঁরা উপরোক্ত প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন।
২৯শে এপ্রিলের নোটেও তাঁরা এই প্রতিশ্রুতি চেয়েছিলেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে নোটটি পেশ করা হয়েছিল।
নোটের সারাংশ পাঠ করে শোনানোর কালে একজন সংবাদদাতা প্রশ্ন করেন, ব্যাক্তিগতভাবে দেখা করার কথা তো ওই নোটে নেই। মিঃ বাট কথাটা এড়িয়ে যান। নোটে শুধু বলা হয়েছিল ভারত সরকার যেন মিঃ মাসুদ ও শ্রী হোসেন আলিসহ (বাংলাদেশ মিশনের প্রধান) কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেন।
মিঃ বাট বলেন, কলাকাতা মিশনের যে সব কর্মচারী পাকিস্তানে যেতে চান না- তাঁরা যে নিজেরাই স্বাধীনভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বিষয়ে পাকিস্তান নিশ্চিত হতে চায়। সকলের সঙ্গে একযোগে দেখা করলে বিষয়টা স্পষ্ট হবে না। গতকাল মিঃ মাসুদের সঙ্গে শ্রী হোসেন আলি ও অপর কয়েকজনের দেখা হয়েছে বলে যে খবর পাওয়া গেছে সে ব্যাপারে মিঃ বাট কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, মিঃ মাসুদ হাইকমিশনকে কিছু জানাননি।
পাকিস্তান এই সব শর্ত আরোপ করে ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশন অফিসের কর্মচারীদের নিয়ে আসার ব্যাপারে টালবাহানা করছেন,- এই অভিযোগ করা হলে মিঃ বাট তা অস্বীকার করেন।
প্রশ্ন করা হয়, ভারত সরকার কিভাবে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশনের কর্মচারীদের দেখা করতে বাধ্য করতে পারেন?
মিঃ বাট বলেন, তাঁরা একটা আপোষমূলক মনোভাবও দেখাতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, গতকাল মিঃ মাসুদ ওদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভারত সরকার কোন সুযোগ সুবিধা দেননি।