ফ্রন্টিয়ার পত্রিকা
২৪শে এপ্রিল, ১৯৭১
সীমান্তের ওপারে
পূর্ব বাংলার ঘটনাবলীর গতি-প্রকৃতি
সুমন্ত ব্যানার্জী কর্তৃক
আমাদের বাঙলা সংবাদপত্রে প্রকাশিত বাংলাদেশ সম্পর্কে আতিশয্যপূর্ণ প্রতিবেদনের জগাখিচুড়ির কল্যাণে, পূর্ব বাংলায় যা ঘটছে তার রাজনৈতিক তাৎপর্য হারিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের নেতৃত্ব দিচ্ছে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস-এর তরুণ সদস্যরা। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য, মুজাহিদেরা। আনসার বাহিনীর সদস্য এবং ছাত্ররা। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, যারা জনগণের দ্বারা কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সংসদের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রের আশেপাশে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। তারা আছেন কোলকাতা, দিল্লী, আগরতলা বা বনগাঁয়ে – কমিটি তৈরী বা সরকার গঠনে ব্যস্ত।
যদিও অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং সরকারী বিবৃতিগুলো মুক্তি বাহিনীকে মুজিবের বাহিনী হিসেবে বর্ণনা করতে বদ্ধপরিকর, আমি যে যোদ্ধাদের দেখেছি যশোর, খুলনা এবং অন্যান্য এলাকায় কে তাদের নেতা তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথাই নেই। তাদের জন্য এটা আধুনিক পৃথিবীর অন্যতম নির্দয় বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত .৩০৩ রাইফেল এবং অল্পকিছু হালকা স্বয়ংক্রিয়-অস্ত্র নিয়ে, তারা ট্যাঙ্ক, ভারী কামান এবং প্রায়শই বিমান আক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
দুইজন ইপিআর-এর সদস্য যাদের সাথে আমার দেখা হয় যশোর শহরের কাছে একটি জনমানবশূন্য গ্রামে আমাকে আক্ষেপের সাথে জানায় যে নেতারা গ্রামবাসীদেরকে অস্ত্রসজ্জিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন নইলে তারা হয়তো গ্রামেই থেকে যেত এবং মুক্তি বাহিনীকে সাহায্য করতো।
আমি যখন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে ভারতীয় সীমান্তের কাছে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় আওয়ামী লীগের সদরদপ্তরে আসি এবং একজন স্থানীয় নেতাকে জিজ্ঞেস করি যে কেন গ্রামবাসীদেরকে অস্ত্র দেয়া হয়নি, তিনি বলেন তারা দিতে পারেননি কেননা তাহলে গ্রামবাসীরা লুটপাট এবং নিজেদের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত হতে পারে।
গেঁয়ো লোকদের প্রতি মধ্যবিত্ত-শ্রেণীর অবিশ্বাস গ্রামের বেশীরভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সবসময় দুরেই রেখেছে। আশেপাশে কোথাও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখলেই সাথে সাথে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে গ্রামবাসীরা এই যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্তই নয়।
একটি স্বাধীনতা যুদ্ধ গুটিকয়েক ইপিআর সদস্য আর স্বেচ্ছাসেবক ছাত্র নিয়ে লড়া যায় না, তারা যতই বীরত্বপূর্ণ হোক না কেন। জনগোষ্ঠীর সিংহভাগ এই গেঁয়ো লোকগুলোকে – এর মধ্যে টেনে আনতে হবে।
যেখানে আওয়ামী লীগের নেতারা এখনো বিশ্বাস করেন জনসাধারণকে দূরে রাখতে হবে, এবং যুদ্ধক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারায় সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে এই যুদ্ধে জিততে হবে, যারা এই যুদ্ধে লড়ছে – ইপিআর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকরা, অতি দ্রুত বুঝতে পারছে গেরিলা যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা। এ থেকেই বোঝা যায় একজন নেতা এবং একজন যোদ্ধার মধ্যকার সূক্ষ্ম পার্থক্য।
আওয়ামী লীগের যতজন নেতার সাথে আমি কথা বলেছি তাদের প্রায় সবাই আশা করেন ভারত ভারী কামান, ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শক্তি মোকাবেলা করার জন্য। তারা ভারত সরকারের কাছে আবেদন করছে এইধরনের সাহায্যের জন্য। এই আচরনের ঠিক বিপরীত মনোভাব দেখলাম একজন তরুণ মিস্ত্রির মধ্যে – যার বয়স খুব বেশী হলে ২৫ বছর হবে – যে দিনাজপুর থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে একদিনের জন্য ভারতে এসেছে এবং একটি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়ার মত পর্যাপ্ত বিস্ফোরক জোগাড় করতে। নেতাদের তুলনায় বেশী বাস্তববাদী এবং প্রয়োগবাদী, সে বিস্তারিত বিবরণ দেয় কিভাবে যোদ্ধারা তাদের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছে এবং গেরিলা যুদ্ধের কৌশলের দিকে সরে যাচ্ছে, যেমন ফাঁদ পেতে অতর্কিতে শত্রু ট্যাঙ্ককে আক্রমণ করা।
রাজনীতি
যুদ্ধের কৌশল নিয়ে মতভেদ ছাড়াও, রাজনৈতিক মতভেদও দেখা দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের এমপিএ এবং এমএনএ-দের প্রতি অসন্তোষ, বিশেষ করে গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে, ক্রমে বেড়েই চলেছে। তারা মনে করছে যে তাদের কথা সবাই ভুলে গেছে। যোদ্ধাদের মধ্যেও মনোভাব রয়েছে যে তাদেরকে হতাশ করা হয়েছে। তারা মনে করছে যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়নি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে যেভাবে সুযোগ দেয়া হয়েছে ইপিআর এবং ইআরআর-এর উচ্চপদস্থ অফিসারদেরকে সরিয়ে দেয়ার, এমনকি যখন মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে আলোচনা চলছিল তখনও, এই ইংগিতই দেয় যে আওয়ামী লীগের নেতারা সামরিক যুদ্ধের আঙ্গিকে চিন্তাভাবনা করেননি আন্তরিকভাবে।
সব লক্ষন দেখে এটাই মনে হচ্ছে যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব তার সামর্থ্য নিঃশেষ করে ফেলেছে। অ-হিংস অ-সহযোগ আন্দোলনের সাফল্যের মাধ্যমে তারা সৌভাগ্যের সর্বোচ্চ বিন্দুতে উঠেছিল। জনসাধারণকে অ-সহযোগ আন্দোলনের পক্ষে যোগ দেয়ার ডাক দিয়ে, তারা তাদের তেজ প্রদর্শন করে এবং যা কিনা গান্ধীর চেয়েও উৎকৃষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের সময় আমাদের অ-সহযোগ আন্দোলনে এমন বিরুদ্ধাচরণ কখনই হয়নি যেমন ভিনদেশী শক্তির চাপিয়ে দেয়া একজন গভর্নরকে শপথবাক্য পাঠ করাতে সকল বিচারপতির অস্বীকৃতি জানানোর মতো। জাতীয়তাবাদের চেতনা পরিপূর্ণ হয়ে ছিল তখন।
আওয়ামী নেতৃবৃন্দ জনসাধারণকে অ-হিংস অ-সহযোগ আন্দোলনে সামিল করতে সক্ষম হলেও, তাদেরকে সশস্ত্র প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করার কথা নয়। তাদের মধ্যবিত্ত মানসিকতা জনসাধারণকে অস্ত্র সজ্জিত করতে বাধা দেয়। এর পরিবর্তে তারা ভরসা করেছিল ইপিআর এবং ইআরআর-এর তখনই ব্যবহারযোগ্য জীর্ন অস্ত্র যা অবশিষ্ট ছিল। গতানুগতিক যুদ্ধ ধারা এবং সম্মুখ যুদ্ধ কৌশলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, কিন্তু প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব এবং সাজসরঞ্জাম ছাড়া, অপেক্ষাকৃত প্রকৃষ্ট পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সামনে ইপিআর এবং ইআরআর প্রায় কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি।
এভাবে অ-সহযোগ আন্দোলনের শেষে এবং পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর, পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন পর্যায়ের সূচনা হয় – সশস্ত্র প্রতিরোধের পর্যায় – যেটির সঠিক নেতৃত্ব দিতে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ব্যর্থ হয়েছে।
আমাদের সরকারের ইচ্ছাপ্রসুত চিন্তা এবং শেখ মুজিবের নির্বাসিত সরকারের পক্ষে প্রচারণা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের আন্দোলনের নতুন পর্যায়ে নেতৃত্বের দ্রুত পরিবর্তন আসছে। আওয়ামী লীগের ভিতরে যেসব সমর্থকরা আন্তরিক তারা নেতাদের ব্যপারে মোহমুক্ত হচ্ছে। যশোর এলাকার একজন বিশিষ্ট নেতা, যার সাথে এক সপ্তাহ আগে কোলকাতায় আমার দেখা হয়, আমাকে জানায় কিভাবে সে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছে শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত এবং ফলশ্রুতিতে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের এগিয়ে আসার তার যুদ্ধরত সমর্থকদের সাহায্যার্থে, নিরর্থকভাবে, এবং অবশেষে নিজেই সিদ্ধান্ত নেয় কোলকাতায় “অন্যান্য সূত্রের” সাথে যোগাযোগ করার যশোরে ফিরে যাবার আগে।
বাংলাদেশে আর কোন রাজনৈতিক শক্তি কাজ করছে? মওলানা ভাসানির ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে না আমাদের পত্রপত্রিকায় এরকম অতিসুক্ষ প্রচারণা সত্ত্বেও, এনএপি (ন্যাপ) খুব ভালোভাবেই দৃশ্যে অবতীর্ণ আছে। এই দলের একজন বিশিষ্ট নেতা এবং সাধারণ সদস্যরা যারা দিনাজপুর এলাকায় যুদ্ধ করছে তাদের সাথে আমার দেখা হয়েছে।
এটা মনে রাখতে হবে যে মুজিবের অনেক আগেই, ভাসানিই স্বাধীন বাংলাদেশের ডাক দিয়েছেন। ন্যাপ দাবী করে যে যদিও সবাই মুজিবকেই ভোট দিয়েছে, তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবী থেকে একধাপ এগিয়ে পরিপূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে এসেছে ন্যাপের কল্যাণেই। আলোচনার সময় তারা যে সমাবেশগুলো পরিচালনা করে তাতে মুজিবের উপর চাপ সৃষ্টি হয় এবং কোন সমঝোতায় পৌঁছানো ব্যাহত হয়, ন্যাপের নেতৃবৃন্দ দাবী করেন।
তবে ন্যাপ স্বীকার করে যে তারাও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কাছে অপ্রস্তুত অবস্থায় ধরা পড়ে। জনগণকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত না রাখার দায় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি তাদেরও নেয়া উচিত।
সমন্বয়
ন্যাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা একটি সমন্বয়কারী কমিটি গঠন করবে অন্যান্য বামপন্থী দলগুলোর সাথে এবং মুজিবের নির্বাসিত সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং দীর্ঘ-মেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবে। এই দলটি বর্তমান এই সংগ্রামকে একটি জাতির স্বাধীনতার যুদ্ধ হিসেবে দেখছে এবং তারা চায় সর্বস্তরের জনগণকে এই যুদ্ধে সম্পৃক্ত করতে। আওয়ামী লীগের মতো গতানুগতিকধারার যুদ্ধের উপর নির্ভর না করে, ন্যাপ গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ন্যাপের যে নেতার সাথে আমার দেখা হয়েছিল সে পূর্ব বাংলার একমাত্র নেতা যে আমাকে সরাসরি বলেছিলঃ “আমরা তোমাদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা আশা করিনা। এটা আমাদের যুদ্ধ এবং আমরাই এটি লড়বো। খোদার দোহাই লাগে, তোমরা তোমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমাদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বলো”।
ন্যাপ, মনে হচ্ছে, পূর্ব বঙ্গের তিনটি নকশালপন্থী দলের সহযোগিতা পেতে সফল হয়েছে। তোহা’র দল, যেটি অফিসিয়াল কম্যুনিস্ট পার্টি অব ইস্ট পাকিস্তান (মার্ক্সসিস্ট-লেনিনিস্ট) এর নেতৃত্ব দিচ্ছে সেটি এখনও সমন্বয় কমিটিতে যোগ দেয়নি।
পূর্ব বাংলার সিপি (এমএল) দলটি ভিন্ন ধারায় চিন্তা করছে, যদিও তারা এই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। তারা এই যুদ্ধ সম্পর্কে বলে যে এটি “সাম্রাজ্যবাদীদের সহযোগিতায় ভুয়া জাতীয়তাবাদের যুদ্ধ”। এই সংজ্ঞাটি খুব সম্ভবত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের প্রতি উদ্দিষ্ট। এই দলটি গুরুত্ব দেয় শ্রেণীসংগ্রামকে – জমিদারদের বিনাশ এবং জোতদার ও দরিদ্র গ্রামবাসীদের মধ্যকার বিরোধ দূর করতে। তারা চায় মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আসল রূপ উদ্ঘাটন করতে।
এই ক্ষেত্রে ন্যাপ সিপি (এমএল) এর সাথে ভিন্নমত পোষণ করে। যেখানে ন্যাপ মনে করে যে আসল বিরোধটি হচ্ছে একটি জাতি হিসেবে বাঙালী এবং আক্রমণকারী পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে, সেখানে সিপি (এমএল) বলতে চায় গ্রামাঞ্চলে এবং মেহনতি মানুষদের মধ্যকার সামন্ততান্ত্রিক বিরোধের কথা। তারা মনে করে যে আওয়ামী লীগের দ্বারা দরিদ্র গ্রামবাসীদের প্রতি অবহেলার কারণে, গ্রামবাসীদেরকে রাজনৈতিক শিক্ষা দেয়া এবং আওয়ামী লীগের আসল রূপ দেখানো সহজ হবে।
সিপি (এমএল) এর মতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং স্থানীয় সামন্ত জমিদারদের সাথে লড়াই একইসাথে পাশাপাশি চলবে। তারা আশা করে যে যে গ্রামবাসীরা আজকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে তারা আগামীকাল আবার ফিরে আসবে এবং অস্ত্র হাতে তুলে নেবে, প্রয়োজন হলে কেড়ে নেবে, নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য। সশস্ত্র সংগ্রামের এই কেন্দ্রগুলোতে রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা হবে।
এই পর্যায়ে আন্দাজ করা কঠিন বাংলাদেশে ভবিষ্যত ঘটনাবলী ঠিক কোন দিকে মোড় নেবে, বা কোন দলটি নেতৃত্বে থাকবে। কিন্তু এটুকু পরিস্কার যে পাতি বুর্জোয়া দলগুলো ধীরে ধীরে তাদের জায়গা হারাবে এবং অন্য দলগুলোকে পথ ছেড়ে দেবে, যুদ্ধরত দলগুলোর কাজ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। আসন্ন বর্ষাকালের কারণে, যুদ্ধক্ষেত্র কিছুটা শান্ত থাকতে পারে। এই সময়ে, ন্যাপ এবং অন্যান্য দলগুলো হয়তো তাদের কার্যক্রম সমন্বয় করার চেষ্টা করবে এবং প্রতিরোধ দল গড়ে তুলবে এবং গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবে। এই প্রতিরোধের ধারায় একসময়, সিপি (এমএল) এর কল্পিত এই শ্রেণী বিবাদ আরো ধারালো হবে।
ইতোমধ্যে, আমাদের পত্রিকাগুলো রোমাঞ্চকর প্রতিবেদন প্রকাশ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। আর কোন চমৎকার বিজয়ের সংবাদ থাকবে না। পরিদর্শনকারী সাংবাদিকের দৃষ্টির অনেক বাইরে চলতে থাকবে এই যুদ্ধ। মুক্তি যোদ্ধারাও বেঁচে যাবে আমাদের সাংবাদিকদের দায়িত্বজ্ঞানশুন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণে বিপদে পড়ার হাত থেকে, এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীও আমাদের পত্রিকায় প্রকাশিত বিজয়ের ভুয়া খবর নিয়ে আনন্দ উদযাপনের হাত থেকে রক্ষা পাবে।