You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.28 | পাক সেনাদের সন্ত্রাসের ফলেই শরণার্থীরা ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছেন -জাতিসংঘে শরণ সিং | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পাক সেনাদের সন্ত্রাসের ফলেই শরণার্থীরা ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছেন
-জাতিসংঘে শরণ সিং

জাতিসংঘ নিউইয়র্ক ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনের বিতর্কে অংশগ্রহণ করে বলেন, বাঙলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্বই ৯০ লক্ষ শরণার্থীর ভারত আগমনের জন্য দায়ী। বাঙলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল এবং এখনও কায়েম রয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিনিধি আগা শাহী এবং সৌদি আরবের জমিল বলছি। বারুড়ী শরণ সিংয়ের বক্তৃতায় নানা অযুহাতে বাধার সৃষ্টি করলেও শ্রীসিং তার বক্তব্য থেকে বিচু্যত হননি। পরিষদের নব নির্বাচিত সভাপতি। ইন্দোনেশিয়ার আদম মালিক বক্তৃতা বন্ধের রুলিং না দিলেও শ্রীসিংয়ের বক্তব্য থেকে বাঙলাদেশের প্রসঙ্গটি হেঁটে বাদ দিতে বলেন। এমনকি জমিল বারুডি হুমকি দেন, বাঙলাদেশ প্রসঙ্গ বাদ না দিলে সভায় প্রচন্ড অরাজকতার সৃষ্টি হবে। শ্রীসিং শ্রী মালিকের আবেদন অগ্রাহ্য করেন। ইউ এন আই জানাচ্ছে, শ্রীসিং বলেন, “আমি প্রত্যেকটি শব্দ সতর্কতার সাথে প্রয়ােগ করছি। বিশেষ কিছুর উপর জোর দিচ্ছি না”। “সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলাে অনেক দুঃখজনক এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত করার জন্য শরণার্থী ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জাতিকে এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না করা হবে আমার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা। শ্রীসিং বলেন ভারত সরকার সাময়িকভাবে শরণার্থীদের আশ্রয় দিলেও তাদের অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে। শরণার্থী সমস্যা ভারতকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উদ্বেগজনক পরিস্থিতে ফেলেছে। স্কুল বন্ধ, নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যের মূল্যহার বেড়েছে এবং হাসপাতালগুলিতে ভিড় বেড়েছে। পাকিস্তানের জাতিসংঘস্থিত রাষ্ট্রদূত আগাশাহী বলেন, সাধারণ পরিষদে বাঙলাদেশ প্রশ্নটি তুলে জাতিসংঘ সনদ অমান্য করা হয়েছে। বাঙলাদেশ প্রশ্নটি পাকিস্তানের ‘আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে তিনি অভিহিত করেন। সৌদি আরবের জমিল বাড়ী শরণ সিংকে বক্তৃতা থেকে ঐ আংশটি ঘেঁটে দিতে বলেন। শ্রী মালিকও তাতে সায় দেন। কিন্তু শ্রীসিং ঐ সুপারিশ বাতিল করেন।

সূত্র: কালান্তর,২৮.৯.১৯৭১