বিচ্ছিন্ন, প্রেতনগরী ঢাকা সামরিক পাহারা পরিবৃত শহর ঢাকা এখন পূতিগন্ধময় নরক। রাজপথে ছড়ানাে মৃতদেহ। দুর্গন্ধে পথ চলা দায়। অবশ্য পথ চলার দায় থেকে নাগরিকরা সেখানে অনেকখানি মুক্ত। কারণ ইয়াহিয়ার ফৌজ শহরের ভেতর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। বার হতেও দিচ্ছে না। শহরে লােক নেই বললেই চলে।
ঢাকার এই চিত্রটি তুলে ধরেছেন কলকাতার সদ্য ঢাকা থেকে আগত জনৈক আবদুল হক। শ্রী হক লন্ডনে চাকুরি করেন।
শ্রীহকের হিসাব : ঢাকা শহরের জনসংখ্যা এখন শতকরা ৯০ ভাগ হ্রাস পেয়েছ। হয় তারা মৃত নয় তারা শহর ছেড়ে পালিয়েছে। মৃতের নগরী ঢাকাতে এখন পানীয় জল নেই, নেই বিদ্যুৎ।
বঙ্গবন্ধুর কোন খবর বলতে পারেন না শ্রীহক। কেউ জানেনা তিনি কোথায়। দুবার সেনা বাহিনী থেকে প্রচার করা হয় তাকে টেলিভিশনে হাজির করা হবে। কিন্তু করা হয়নি। শ্রীহকের বাড়ি বঙ্গবন্ধুর কয়েকটি বাড়ির পরেই। ২৫ মার্চ মধ্যরাত্রিতে ধানমন্ডীর সেই বিখ্যাত বাড়িটিতে আলােয় আলাে। কয়েকটি ট্যাঙ্ক এগিয়ে এল । তারপর বাড়িটি লক্ষ্য করে ফায়ারিং শুরু করল ।
সেই রাতে সেনা বাহিনী ঢাকার রাস্তায় যাকে বাংলা বলতে শুনেছে তাকেই গুলি করেছে। অনেকে প্রাণ বাঁচিয়েছে দু বলে।
৯ এপ্রিল ‘৭১
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা