You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.22 | নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২২ নভেম্বর ১৯৭১ সম্পাদকীয় উপমহাদেশের জন্য সাহায্য অপ্রতুল - সংগ্রামের নোটবুক

নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২২ নভেম্বর ১৯৭১
সম্পাদকীয়
উপমহাদেশের জন্য সাহায্য অপ্রতুল

জাতিসংঘ ভারতীয় উপমহাদেশে একটি বিধ্বংসী ব্যর্থতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কারণ তারা আসলে মরণঘাতী ক্ষততে ব্যান্ড-এইড ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।

ভারত ও পাকিস্তান যখন সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছাকাছি চলে এসেছে, বিশ্ব সংস্থা তখন পূর্ববাংলার থেকে ভারতে পালিয়ে আসা আনুমানিক নয় কোটি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে তর্কবিতর্ক করছে এবং বিদ্রোহী বাহিনীর প্রদেশে প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বাঙালিদের পিছনে পরে আছে।

একথা প্রশ্নাতীত যে পূর্ববাংলার মানুষের মানবাধিকারের প্রয়োজন। যারা নিরন্তর পালিয়ে গিয়েছে, অথবা যারা নিষ্ঠুর সামরিক দমনের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে তাদের মানবতার বিবেকের উপর ভারী দাবি রয়েছে।

কিন্তু ইউ.এ. কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে কেবলমাত্র ত্রাণ সহায়তা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের তীব্র মানবিক সংকটের সমাধান করতে পারে না। সহকারী সেক্রেটারি-জেনারেল পল মার্ক হেনরি সাবধান করে দিয়েছিলেন যে পূর্ব পাকিস্তানে মানবিক প্রচেষ্টা ইতোমধ্যে সামরিক কার্যকলাপের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন। এটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হতে পারে। ইউএন এর হাইকমিশনার প্রিন্স সদরউদ্দীন আগা খান বলেন যে, উদ্বাস্তুদের যারা পালিয়ে গেছে তাদের প্রত্যাবাসন করতে পারলেই কেবল মাত্র বর্তমান সংকটের জন্য একটি “টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান” হবে।

বাঙালিদের মানবিক চাহিদার কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য, এই সমস্যাটির মূল কারণ সরাতে হবে আর তা হল – পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট। একটি রাজনৈতিক সমাধান অপরিহার্য। পাকিস্তান সেখানে সমস্যা শেষ করবে এবং শরণার্থীদের নিরাপত্তা ফিরে আসতে অনুমতি দেবে।

জাতিসংঘ এ পর্যন্ত এই কেন্দ্রীয় ইস্যুটি এড়িয়ে গেছে, যদিও সচিব-জেনারেল ইউ থান্ট কয়েক মাস আগে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে উপমহাদেশের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক শান্তি হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে- এই ভবিষ্যদ্বাণী বর্তমান ঘটনাগুলিতে ভারতীয় পাকিস্তানি সীমান্ত বরাবর ক্রমশ বেড়ে উঠেছে। থান্টের মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টা ভারত ফিরিয়ে দিয়েছে এবং সমস্যার উৎসের দিকে মনোনিবেশ করার জন্য পাকিস্তানে নিপীড়নের প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য বলেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই বলেছেন যে, যদি এই মৌলিক সমস্যাটির দিকে নজর দেওয়া হয় তবে ভারত জাতিসংঘের হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানবে।

যদি ইউনাইটেড নেশনস উপমহাদেশে শান্তি ও পুনর্বাসনের জন্য একটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে, তবে পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত নেতাদের সাথে একটি সমাধানে পৌঁছানোর জন্য বিশ্ব সংস্থা পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ঠেলে দেবে। বিশেষ করে কারাবন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপারে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক নিষ্পত্তির উন্নয়নের জন্য একটি নির্ধারিত প্রচেষ্টার প্রেক্ষিতে জাতিসঙ্ঘ ভারত-পাক সীমান্ত থেকে বাহিনী প্রত্যাহার এবং নির্যাতিত বাঙালিদের সহায়তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।