প্রথম জাতীয় বাজেট আলোচনাকালে পূর্ব বাংলার দাবিদাওয়ার প্রশ্নে বিতর্ক। পাকিস্থান গণপরিষদ
(আইনসভা) ১লা মার্চ, ১৯৪৮
জাতীয় বাজেট আলোচনা
পাকিস্থান গণপরিষদ(আইনসভা)
১লা মার্চ, ১৯৪৮
পাকিস্থান গণপরিষদ(আইনসভা)বিতর্ক
১৯৪৮ এর খন্ড ১
অধ্যাপক রাজকুমার চক্রবর্তী (পূর্ব বাংলা: সাধারণ): জনাব, আমি জনাব অর্থ সদস্যকে অভিবাদন জানাই তার প্রশংসনীয় বক্ত্যব্যের সাথে জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করার জন্য। এটা ছিল পাকিস্থানের প্রতি আবেগ ও অনুভূতিতে পরিপূর্ণ যা আমরা সকলেই ধারন করি। আমরা সম্মানিত অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে নিশ্চয়তা পেয়েছি যে, পরিহার্য কোন খাতে একটি পয়সাও খরচ করা হবে না। আমরা আরও জানতে পেরেছি যে, ভবিষ্যতের সকল ব্যায়ের জন্য তার অর্থ বিভাগের একান্ত মূলনীতি হবে অপরিহার্যতা।
জনাব, পাকিস্তান সরকারের প্রথম বাজেট উপস্থাপনে তার সমস্যার ব্যাপারটি আমরাও অনুধাবন করি যেমনটা তিনি বলেছেন যে আমরা প্রায় গোড়া থেকে শুরু করছি এবং আমাদের পাকিস্থানের যথাযোগ্য ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে হবে। কিন্তু জনাব, আমি তাকে তার বাজেটের বিষয়বস্তু এবং তিনি যেভাবে এই সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেছেন তার জন্য অভিবাদন জানতে পারছি না। বাজেটে বাস্তবতাবোধের ঘাটতি রয়েছে। আমি আরও বলতে চাই যে চূড়ান্ত স্বদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তিনি সম্পূর্ণভাবে বাজেট উপস্থাপনের পুরানো, সেকেলে পন্থা পরিহার করতে পারেননি। বাজেটটি হওয়া উচিত ছিল একটি ঘাটতি বাজেট কিন্তু তিনি এটিকে একটি উদ্বৃত্ত বাজেট হিসেবে দেখিয়েছেন এবং তাও আবার দরিদ্র, সাধারণ মানুষের স্বার্থের বিনিময়ে। জনাব, একটা বাজেটের সার্থকতা এতে নয় যে, এটি ঘাটতি কিংবা উদ্বৃত্ত বাজেট কি না। বাজেটের সার্থকতা এতে যে, এটা বৃহত্তর জনগণের জন্য বৃহত্তম কল্যাণের পথ সূচিত করে কি না, এর মধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু আছে কিনা এবং সেই আলোকে এই বাজেটটি কোন সফল বাজেট নয়। জনাব, সম্মানিত অর্থ সদস্য দরিদ্র মানুষের লবণের উপর কর বজায় রেখেছেন, যা তাদের অতি প্রয়োজনীয় নিত্য ব্যবহার্য পণ্য। তিনি হুক্কার তামাক, যেটা দরিদ্র মানুষের জীবনের একমাত্র সান্ত্বনা, এর উপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করেছেন, তিনি সুপরীর উপর আরগারি শুল্ক বৃদ্ধি করেছেন যেটা সাধারণ মানুষের আরেকটি আনন্দের উপষঙ্গ। তিনি আভ্যন্তরীণ পোষ্টকার্ডের উপর মুল্যহার বৃদ্ধি করেছেন যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এদেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ কেরোসিন ছাড়া চলতে পারে না এবং তাদের ঘরে বিদ্যুত নেই এটা জেনেও তিনি কেরোসিন এর উপর মাশুল বৃদ্ধি করেছেন। তিনি তৃতীয় শ্রেণীর রেলভাড়া বৃদ্ধি করেছেন এটা জানা সত্ত্বেও যে, তৃতীয় শ্রেনীর রেলযাত্রা আর যাই হোক আরামদায়ক না। তিনি দরিদ্র সাধারণ মানুষকে যে কোন স্বস্তি দেননি শুধু তাই না, তিনি তাদের রীতিমত আহত করেছেন, এমনকি ছুড়ে ফেলেছেন। তিনি যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন তাতে দরিদ্র মানুষ করের বোঝায় বছরজুড়ে ওষ্ঠাগত হবে। জনাব, তিনি একটি পুরানো প্রথাগত আমলাতান্ত্রিক বাজেট পেশ করেছেন।
তিনি সার্বিক পরিস্থিতির উপর সূক্ষ নজর দেননি বললেই চলে। তিনি জীবনের কোন ক্ষেত্রেই কার্যকরী নতুন কিছু উপস্থাপন করেননি, তা শিক্ষা, চিকিৎসা বা শিল্প কারখানা যাই হোক হোক না কেন, অথচ আমাদের প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি দেয়ে গেছেন কিন্তু তা পূরণ করেননি। তিনি বলেছেন যে, তিনি একটি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছেন অথচ এই পর্ষদ এখন পর্যন্ত কোন উন্নয়ন সাধন করেনি। তিনি বলেছেন যে, তিনি একটি পরিকল্পনা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন অথচ এই পরিষদ এখন পর্যন্ত কোন পরিকল্পনা গঠন করে নি, তিনি প্রস্তাব করেছেন যে, তিনি একটি শিল্প বিনিয়োগ কর্পোরেশন গড়ে তুলবেন অথচ এখনও এর বাস্তবায়ন হয় নি। তিনি বলেছেন যে, তিনি একটি শিল্প গবেষণা সংস্থা গড়ে তুলবেন অথচ তা এখনও বিবেচনাধীন, সুতরাং জনাব, এই বাজেট হচ্ছে একটি জল্পনা-কল্পনার বাজেট যার প্রকৃত কার্যক্ষমতা যৎসামান্যই। স্বাধীন পাকিস্থান প্রতিষ্ঠিত হবার পর তিনি ৬ মাস পার করেছেন অথচ আমাকে আফসোসের সাথে বলতে হচ্ছে, এর মধ্যে তিনি দৃশ্যমান পরিকল্পনা মাফিক কোন কিছুই করেননি যেখানে, পরিকল্পনার মূলমন্ত্রই হছে সময়। তিনি উল্লেখ করেছেন এবং আমরা সকলেও জানি যে, এই উপমহাদেশের ৭০ শতাংশেরও বেশী পাটজাত পণ্য পাকিস্থানে উৎপন্ন হয় অথচ পাকিস্থানে সেই মানের কোন পাটকল নাই। এ ব্যাপারে তিনি যে কিছু করেননি শুধু তাই না, তিনি পূর্ব পাকিস্তানের পাট উৎপাদন মোকাবিলা করার মত গঠনমূলক কোন পদক্ষেপও নেননি। তিনি বলেছেন এবং আপনারা সবাই জানেন পাকিস্তানে কিছু তুলা কারখানা আছে এবং পাকিস্থানে ব্যপক পরিমানে উন্নতমানের তুলা উদপাদিত হয়। আমি আশা করেছিলাম তিনি তুলা কারখানা প্রতিষ্ঠা বা তুলা কারখানার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কিছু করবেন যাতে আমদের সম্পদের অধিকতর সদব্যাবহার নিশ্চিত হয়। জনাব, বাজেটের উপর এই হল আমার প্রাথমিক অভিমত। বাজেটের পরবর্তী যে ব্যাপারে আমার আপত্তি আছে তা হল প্রাদেশিক সরকারের অধিকারের উপর অন্যায্য হস্তক্ষেপ। তিনি পরবর্তীতে প্রদেশসমূহ থেকে ভূসম্পদ শুল্ক আদায়ের প্রস্তাব করেছেন। জনাব, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যার জন্ম দেবে, এবং আমি মনে করি এই সংসদে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে, প্রাদেশিক ব্যাবস্থার কেন্দ্রের এই অনধিকার হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করা আমার দায়িত্ব। জনাব, আমরা পাকিস্থানের স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রসমূহের একটি রাষ্ট্রসংঘ পেতে চলেছি এবং মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এই করারোপ প্রস্তাব সেই রাষ্ট্রীয় স্বায়ত্তশাসনের নাভিমূলে আঘাত করেছে যা আমরা কোনভাবেই সন্তোষজনক ভাবে এবং স্বস্তির সাথে দেখতে পারি না। এই মর্মে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই যে, তারা যদি এভাবে অযাচিত হস্তক্ষেপ করতে থাকে তাহলে প্রাদেশিক সরকার এইসব উদ্যোগকে মাননীয় অর্থমন্ত্রীয় পদযাত্রার প্রথম পদক্ষেই হিসেবে দেখবে এবং আমি আশা করি তিনি তা বিবেচনা করবেন……
জনাব আবুল মাতিন চৌধুরী (পূর্ব বাংলাঃ মুসলিম): জনাব, আমি মাননীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কে পাকিস্থান সেনাবাহিনীর জাতীয়করণে তিনি ইতিমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন সেসবের জন্যে অভিনন্দন জানাই কিন্তু তার প্রতি আমার কিছু পরামর্শ আছে। জনাব, পাকিস্থানের সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে জনাবের উচিত যথাযথ নজর দেয়া যেন পূর্ব পাকিস্থানের প্রয়োজনীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। প্রতিরক্ষা, জনাব, দেশের রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান কর্তব্য এবং পূর্ব পাকিস্থানের লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে থেকে কর্মকর্তা পদে নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থীর কোন অভাব নাই। আমি যখন পূর্ব পাকিস্থানের কথা বলি তখন প্রদেশপ্রিতী থেকে বলি না। জনাব, আমি এই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি যে, পাকিস্থান রাষ্ট্রের স্বার্থ কোন খণ্ডিত, গন্ডিবদ্ধ অথবা প্রাদেশিক অন্যান্য সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে এবং আমাদের সকলের উচিত জীবনের সকল ক্ষেত্রে সংহতি বিনাশী মনোভাব অবদমিত রাখা যদি আমরা একটি সুসঙ্ঘত এবং সমজাতিক রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে চাই কিন্তু জনাব, এর জন্য দেশের অন্য অংশটির ক্ষোভ থেকে উদ্ভূত উন্নাসিকতাকে এক্ষেত্রে নিবারণ করতে হবে এবং এই অংশের অবস্থা সম্পর্কে আমদের সকলেরই বিশেষ জ্ঞান আছে।
জনাব, পূর্ব পাকিস্থান সৌভাগ্যবান যে এর বিশাল একটি জনগোষ্ঠী সমুদ্রে চলাচলকারী যারা সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং ফরিদপুর জেলা সমূহে বসবাস করে। বহুবছর ধরে এইসব জেলা কোলকাতা, বোম্বে এমনকি মোম্বাসা বন্দরের সমুদ্রগামী যানের জন্য নাবিক সরবরাহ করে আসছে। আমি আশা করি জনাব, নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণে এইসব মানুষের দক্ষতার সর্বোচ্চ সদব্যাবহার করা হবে। জনাব, আমি মনে করি করাচিতে প্রশিক্ষণালয় স্থাপন নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণে আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য ব্যাবহারের ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়। আমি আশা করি জনাব, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারগুলো বিবেচনায় রাখবে।
জনাব আজিজুদ্দিন আহমেদ (পূর্ব বাংলাঃ মুসলিম): জনাব, এটা খুবই সত্য যে পাকিস্থানের বর্তমান অবস্থানে এর একটি বিশাল প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী প্রয়োজন কিন্তু জনাব, আমি যখন বাজেটের দিকে তাকাই তখন দেখি যে পাকিস্তানের বিচ্ছিন্ন অংশ পূর্ব বাংলার সুরক্ষার জন্য কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি যেখানে পূর্ব বাংলা তিন দিক থেকে ভিন্নরাষ্ট্র এবং একদিক থেকে সমুদ্র প্রতিবেষ্টিত। আমি খুবই আশাহত হয়েছি।
জনাব, এটা আগেই বলা হয়েছে যে একসময় বাংলা ছিল অবহেলিত, ইতিপূর্বে একদিন আমার সম্মানিত সহকর্মী বেগম শায়েস্তা ইকারামুল্লাহ বলেছেন, ইদানীং বাংলাকে নিয়ে যদি কিছু বলাও হয় তা যেন দাক্ষিণ্য করে বলা হচ্ছে। জনাব, এখনকার পরিকল্পনা দেখে তাই মনে হচ্ছে। পূর্ব বাংলা অতিশয় অবহেলিত। আমাদের বন্ধুরা যারা এখনে সিন্দ, উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, বালুচস্থান এবং পাঞ্জাবের নিশ্ছিদ্র অঞ্চলে আছেন, তারা পাকিস্তানের এই অংশ থেকে ১,৫০০ মেইল দূরে অবস্থিত তিনদিক থেকে বিদেশী রাষ্ট্র, যাদের মধ্যে কখনো কখনো শত্রুভাবাপন্ন রাষ্ট্রও রয়েছে, এবং এক দিক থেকে সমুদ্র বেষ্টিত পূর্ব বাংলা সম্পর্কে যথেষ্ট সময় দেন না বা ভাবেন না বলেই মনে হয়। জনাব, আমি জানি না আমার সম্মানিত বন্ধু মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এ বিষয়ে কি বক্তব্য-এটা হয়ত পূর্ব বাংলাকে সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় কোন গোপন সূত্র! কিন্তু জনাব, জনগণকে আশ্বস্ত করা দরকার যে, অন্য কারও পক্ষে পূর্ব পাকিস্থানে সহিংসতা ঘটানো অথবা আঘাত হানার কোন অবকাশ নাই। সুতরাং জনাব, বাজেটের এই অংশ আমাদের পূর্ব বাংলার জনগণের জন্য অত্যন্ত হতাশাব্যাঞ্জক। উপরন্তু জনাব, পাকিস্তানে প্রচুর পরিমানে রাজস্ব আসে পাটের উপর শুল্ক থেকে কিন্তু জনাব, বর্তমান বাজেটে আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নের কোনধরনের কোন বিধানই খুজে পাই নি যাতে করে এই পণ্যের উপর আমাদের শুল্ক আরও বাড়ানো যায়। সেখানে জাহাজঘাট গুলোর ব্যাপক উন্নয়ন দরকার কিন্তু আমি মনে করি জনাব, আমাদের অর্থ ভান্ডারে আরও রাজস্ব যোগ করার জন্য চট্টগ্রাম এবং পাট রপ্তানীতে এর উন্নয়নের গুরুত্ব মাননীয় অর্থমন্ত্রী বেমালুম ভুলে গেছেন। তার উপর জনাব, যারা পাট উৎপাদন করেন সেই সব মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নেরই বা কি অবকাশ রাখা হয়েছে? তাদের জীবনের একমাত্র আয়েশ হল হুক্কা। তাদের কোন প্রেক্ষাগৃহ নাই, নাট্যমঞ্চ নাই, অবকাশ কেন্দ্র নাই; তাদের জীবনের একমাত্র বিনোদন যে হুক্কা তার উপরেও করারোপ করা হয়েছে…এছাড়াও আরেকটি জিনিস যা দরিদ্র চাষিরা উপভোগ করে তা হল পান। যার উপরেও জনাব ব্যাপক শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে দরিদ্র মানুষের জীবন নিতান্তই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। দরিদ্র মানুষেরা ইতিমধ্যেই কেরোসিনের প্রাপ্তি নিয়ে ঝামেলায় আছেন, এরমধ্যে কেরোসিনের উপর ভারী করারোপ তাদের সঙ্কট আরও বাডিয়ে দিয়েছে……
তারপর আবার জনাব, পূর্ব পাকিস্থানে কোন বস্ত্র কারখানার জন্য কোন ধরনের বরাদ্দ নেই। সম্ভবত ১,৫০০ মাইল দূরে এখানে বসে মাননীয় অর্থমন্ত্রী এই তথ্য সংগ্রহ করেননি যে, পূর্ব পাকিস্থানের দরিদ্র মানুষ বস্ত্রের অভাবে ভুগছে। যাইহোক, আমার বন্ধু খাজা নাজিমুদ্দিন দরিদ্র মানুষদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করতে পারেন এবং শুভকামনা করতে পারেন এবং পূর্ব বাংলার অর্থমন্ত্রী জনাব হামিদুল হক চৌধুরী নিজের ব্যর্থতার ব্যাপারে বলতে পারেন অথবা অন্যের উপর দোষ চাপাতে পারেন যে, গ্রামের মানুষের জন্য বস্ত্র সরবরাহ অন্য কারও দায়িত্ব কিন্তু এর মধ্যে বাস্তবতা হল সাধারণ মানুষের কাপড়ের অভাবে বিবস্ত্র হবার দশা। জনাব, পাকিস্থান সৃষ্টির আগে সাধারণ মানুষের সমস্যা যদি থেকে থাকে তবে তা এখন আরও প্রকট হয়েছে, এইসব মানুষের কোন শিক্ষা নাই, বাজেটে তাদের শিক্ষার ব্যাবস্থা করার জন্য কোন বরাদ্দও নেই, এই অবস্থায় তারা পাকিস্থানকেই দোষারোপ করবে যদি তাদের এখন বিবস্ত্রও হতে হয়, যদি তাদের লজ্জা নিবারণের জন্য পোশাক না থাকে, যদি তাদের মরদেহ দাফনের জন্য কাপড় না থাকে। পূর্ব পাকিস্থানে এমন ঘটনাও ঘটেছে যে কাপড়ের অভাবে মৃতদেহ কে বিবস্ত্র অবস্থায় দাফন করা হয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি, মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেটের এই অংশটিও হতাশাজনক কারণ বাজেটে পূর্ব পাকিস্থানে কিছু বস্ত্রকল চালু করে আমাদের অতিরিক্ত কিছু কাপড়ের যোগান দেবার জন্য কোন বরাদ্দ রাখা নেই। জনাব, আমি আনন্দিত যে, আপনি চুরুট এবং সিগারেট ও মোটরযান এবং বেতারযন্ত্রের উপর করারোপ করেছেন, কিন্তু আমি মনে করি আপনি দরিদ্র সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরও লাঘব করতে পারতেন যদি চক্রযান এবং দ্বিচক্রযানের উপরেও করারোপ করতেন। জনাব, বাংলায় আমাদের চক্রযান এবং রিক্সা আছে, জনাব, আমি মাননীয় অর্থমন্ত্রী কে অনুরোধ করব যেন তিনি এই করকে কেন্দ্রীয় সম্পদে পরিণত না করে চক্রযানের উপর করারোপ করেন। নিদেনপক্ষে, আমার পূর্ব বাংলা বন্ধুরা তাদের বিক্রয় করের অংশ হারিয়েছেন………।
মাননীয় জনাব লিয়াকত আলী খানঃ না জনাব, আপনারা তা হারাননি। আপনারা সবকিছুই ফিরে পাবেন।
জনাব আজিজুদ্দিন আহমেদঃ কিন্তু জনাব, ক্ষতিপূরণ এতই সামান্য যে তা গুরু মেরে জুতাদানের সামিল। সুতরাং জনাব, যদি বিক্রয় কর কেন্দ্রের হাতে চলে যায়, আয়করও চলে যায় যা ইতিমধ্যেই প্রদেশের মধ্যে থাকত না, এবং যদি কৃষিজ আয় করও কেন্দ্রের কাছে চলে যায় তাহলে দরিদ্র মানুষের ভ্যাগের উন্নয়নের জন্য কি ই বা আর করার থাকবে, সম্ভবত প্রাদেশিক সরকারের কাছে করারোপের জন্য আর কোন উপাদান ই বাকী থাকবে না।
জনাব গিয়াসউদ্দিন পাঠান (পূর্ব বাংলাঃ মুসলিম): জনাব, মাননীয় প্রতিরক্ষা কে প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাকে শক্তিশালী এবং পুনর্গঠিত করায় তার সৎ প্রচেষ্টার জন্য আমার আন্তরিক সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি আমি কিছু বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এতে কোন সন্দেহ নাই নতুন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্থানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন এবং শক্তিশালী করা অত্যন্ত প্রয়োজন। বলাবাহুল্য, পাকিস্থানের দুটি অংশের মধ্যে পূর্ব অংশটি সব দিক থেকে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রতিবেষ্টিত। এটা একটি সমতল ভূমি যেখানে বর্ষাকালে পানির বাঁধা ছাড়া বহিঃআক্রমণের বিরুদ্ধে কোন প্রাকৃতিক বাঁধা নেই। সংখ্যা এবং ঘনত্বের দিক থেকে আমাদের জনসংখ্যা সর্বাধিক। প্রাক-ব্রিটিশ শাসনামলের ভারতের ইতিহাস টেনে আমি বলব যে, বাঙ্গালীরা ছিল যোদ্ধার জাতি যারা যুদ্ধক্ষেত্রে বহুবার বিজয়মাল্য ছিনিয়ে এনেছে। ব্রিটিশদের দমননীতির ফলে বাঙ্গালীদের মধ্যে থেকে সেনাবাহিনী গঠন বন্ধ হয়ে যায়।
এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে স্বাধীনতা আন্দোলনে ইন্ডিয়ার রাজ্যগুলোর মধ্যে বাংলা থেকে সবথেকে বেশি মানুষ অংশগ্রহন করার কারনে তাদের সেনাবাহিনীতে প্রবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।স্বাধীনতা অর্জনের সাথে সাথে আমাদের পুরাতন প্রভুদের পুরাতন দৃষ্টিভংগি পরির্বতন করা উচিত ছিল। পাশাপাশি সর্বশেষ যুদ্ধে সামরিক এবং অসামরিকদের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি এবং বাংলাসহ ইন্ডিয়ার সকল রাজ্য থেকে নিয়োগ করা হয়েছিল যা স্থল ও বিমান বাহিনীতে ভূমিকা রেখেছিল। আর নৌ বাহিনীর কথা বলতে গেলে, পূর্ব বাংলা সমুদ্রগামী একটি জাতি হিসেবে গর্বিত, যা বহু শতাব্দী আগে থেকেই স্বনামধন্য। ইন্ডিয়ান নাবিকরা যারা মুলত পূর্ব বাংলার নাবিক, তারা পৃথিবীর সবধরনের রুক্ষ এবং মসৃন জলপথে প্রবেশ করে বিদেশী নৌসেনাপতীদের প্রশংশা পেয়েছে। সেইজন্য সরকারের উপর অবশ্যদায়িত্ত পূর্ব বাংলার মানুষদের নৌ প্রশিক্ষন সুবিধা দেওয়া এবং চ্রট্রগ্রামকে নৌ প্রশিক্ষন কেন্দ্র হিসাবে উন্নত করা। বিমান বাহিনীতে লোকবল সংগ্রহের সময় পূর্ব বাংলার সাথে সৎ মায়ের মত আচারন করা হয়েছে। পশ্চিম পাকিস্থানে যখন ছয় অথবা সাত টা নিয়োগ কেন্দ্র সেখানে পূর্ব বাংলায় মাত্র একটা। এটা সকল পাকিস্থানি নাগরিকদের সমান সুবিধা দিচ্ছে না, আবার পূর্ব বাংলায় কোন প্রশিক্ষন কেন্দ্র খোলা হয়নি এবং যেসব ছেলেরা নিয়োগ পেয়েছে তাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষনের জন্য কমপক্ষে দুই হাজার মাইল যেতে হয়। এটা অনুপ্রেরনাদায়ী নয়। সেই জন্য অনতিবলম্বে পূর্ব বাংলায় বিমান প্রশেক্ষন কেন্দ্র খোলা অত্যাবশ্যক এবং পূর্ব বাংলা যেহেতু পাকিস্থানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই এটিকে অবশই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অংশ করা উচিত কারন পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্থানের মধ্যে বিশাল দূরত্ব। পতিরক্ষা ও যে কোন উন্নয়নের জন্য পূর্ব বাংলাকে কখনো সাধারনভাবে দেখা উচিত হবে না, যা পশ্চিম পাঞ্জাব, সিন্দু, সীমান্ত প্রদেশ ও বেলুচিস্তানের জন্য প্রযোজ্য কারন এগুলো একটি নিশ্ছিদ্র ভৌগোলিক অঞ্চল। পূর্ব বাংলা যেহুতু আলাদা অংশে অবস্থিত তাই এটিকে একটি পৃথক অংশ হিসেবেই দেখতে হবে এবং প্রতিরক্ষা এবং যে কোন উন্নতি পাকিস্থান রাষ্ট্রের পূর্ব এবং পশ্চিম উভয় অঞ্চলেই সমান ভাবে করা উচিত। আপনাদের অবশই সব দিক থেকেই পূর্ব বাংলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে।
স্যার, প্রতিরক্ষা প্রসঙ্গে আলোচনা শেষ করার পুর্বে আমি বলব, আমি অবশই জোর দিতে চাই পূর্বাঞ্চলে অতিদ্রুত একটি কামান কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য। এটা চিন্তা করা বোকামি হবে যে যুদ্ধের সময় পশ্চিম অঞ্চল পূর্ব অঞ্চলকে পর্যাপ্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করতে পারবে। সম্পূর্ণ বাজেট বক্তৃতা জুড়ে স্বিকার করা হয়েছে যে, পূর্ব বাংলার জরুরি প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা বাবস্থার অভাব রয়েছে। তারপরেও আমি খুশি যে পাকিস্থান সরকার অনেকগুলো নতুন প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠান যেমন মিলিটারি একাডেমি, কারিগরী ও প্রশাসনিক স্কুল, বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক প্রকৌশল সেন্টার খোলার কথা ভাবছে এবং যথেষ্ট বরাদ্দ দিয়েছে নির্দিষ্ট কিছু কারখানায় পরবর্তী বছরে অপরিহার্য যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য। এতে অবশ্যই কামান ও গোলাবারুদ বিভাগ অন্তর্ভুক্ত হবে। আমি পরিষদের গোচরে আনতে চাই যে, এইসব প্রতিষ্ঠানের কিছু পূর্ব বাংলায় স্থাপন করা উচিত উপরে বর্ণিত কারনগুলোর জন্য। আমার মতে এ ধরনের একটি পদক্ষেপ দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অংশ। সমস্যা, অজুহাত বা মামুলী যুক্তি ব্যাবহার করে পূর্ব বাংলাকে ইতিমধ্যে উল্লেখিত সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত করা যেতে পারে। কিন্তু এই ধরনের পদক্ষেপ হবে অপরিণামদর্শী এবং এটা পাকিস্থানের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করবে। এই মনোভাব এরই মধ্যে বিরাজমান এবং যত দ্রুত নেতারা এটা বুঝবেন এবং এই অবস্থার সমাধান করবে, সবার জন্য তা তত মঙ্গলজনক হবে।
জনাব মাহনুইদ হুসাইন (পূর্ব বাংলা: মুসলিম): জনাব, আমার মতে, বাজেটের ভারসাম্য রক্ষা পদ্ধতিতে এমন দুটি বিষয় আছে যা আপত্তিকর। একটি খুবই মৌলিক। এবং এর মধ্যে আমি প্রাদেশিক অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসনের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি। এটা খুবই মৌলিক এবং বড় একটি প্রশ্ন যা গভিরভাবে চিন্তার বিষয়। আমি আমার এই অল্প সময়ের মধ্যে এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না। কিন্তু আমার বিবেচনা মতে পাকিস্তান বিভিন্ন স্বশাসিত ইউনিট নিয়ে গঠিত। ভৌগলিক কারন, ভাষাগত পার্থক্য, জাতিগত পার্থক্য, আমাদের থেকে প্রায় ১৫০০ মাইল দূরে অবস্থান এসব কারন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্থান কে পৃথক করেছে, এমনকি পশ্চিম পাকিস্থানের অভ্যন্তরেও কিছু বিভেদ আছে যা এড়িয়ে যাওয়া যায় না এবং তা এড়িয়ে যাওয়া উচিতও না, তাই আমি মনে করি আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নতি প্রদেশগুলোর সম্পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের ভিত্তিতে করা উচিত। এটাই একমাত্র পদ্ধতি যা দিয়ে আমরা পাকিস্তানকে চালাতে পারি। এটাই মূলতত্ত্ব। আমার মতে, এই বাজেটে এর দেখা মোটেই মেলেনি বরং প্রাদেশিক সম্পদের উপর অন্যায় হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এটা আসলে আমাদের সাহায্য করে না, কারন আপনারা সবাই প্রদেশগুলো থেকে কিছু টাকা নিয়ে কেন্দ্রে খরচ করেন। এটা আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা তখনই সমাধান হবে যখন আমরা আমাদের জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারব। আমরা আমাদের আয়ের উৎস পুনর্বিন্যাস এবং এখানকার টাকা ওখানে দিয়ে আমাদের জীবনযাপন মানসম্মত করতে পারব না। এটা আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। আমার অভিযোগ এই যে আমাদের অর্থমন্ত্রী আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি।এই সমস্যার মুখোমুখি হওয়া তার কর্তব্য এবং এটার সমাধান বের করাও তার কর্তব্য। তার কর্তব্য কমপক্ষে কিছু শুরু করা, তিনি আমাদের কমপক্ষে তার ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু ধারনা দিতে পারতেন যে, এটা হল তার পরিকল্পনা যা দিয়ে তিনি আমাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন……………
মাননীয় খাজা নাজিমুদ্দিন (পূর্ব বাংলা, মুসলিম) [২ মার্চ, ১৯৪৮]ঃ স্যার, আমি বলতে চাই, যে সকল রাষ্ট্রে প্রদেশ আছে সেইসকল প্রদেশের মানুষের উন্নতি সমান ভাবে করা খুব প্রয়োজন কারন একটা ঘোড়ার গাড়ি এক জোড়া ঘোড়া টেনে নিয়ে যায় কিন্তু সেখানে যদি একটা শক্তিশালী আর একটা যদি ক্ষীন ও দুর্বল হয় তাহলে এটার কোন কার্যকারিতা থাকে না, সেই দলও কাজ করবে না। সেইভাবে প্রদেশগুলো একই সাথে সমান ভাবে উন্নতি করা দরকার এবং যদি আমাদের একটা প্রদেশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়, সেই প্রদেশের মানুষও সম্পদশালী হবে না, এটা গোঁটা রাষ্ট্রের উপর প্রভাব ফেলবে এবং দৃষ্টিকোণ থেকে আমি কিছু দাবি জানাতে চাই কেদ্রিয় সরকারের সামনে। তাদের মধ্যে প্রথম এবং গুরুত্তপুর্ন হল, পুর্ব পাকিস্তানের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অবশ্যই পাকিস্থানের অস্ত্রধারী বাহিনীতে নিরপেক্ষ ও সমান অংশিদারিত্ব তৈরি করতে হবে। এটা আমি অপরিহার্য বলে মনে করি এবং এটা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে অনেক কারনেই পুর্ব পাকিস্তানের মানুষদের অস্ত্রধারী বাহিনীর বাইরে রাখা হয়েছে এবং আপনি যদি এখন অস্ত্রধারী বাহিনীর নতুন নিয়োগের একটি অংশ হিসেবেও পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের নিয়োগ দেন তাহলেও আপনি বুঝতে পারছেন যে, পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব পেতে কত সময় লাগবে।
আমাদের সামরিক বাহিনীর প্রধান পুর্ব পাকিস্তান প্রদর্শন কালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি বা দুটি ব্যাটালিয়নের নিয়োগপ্রাপ্তদের দেখে অভিভূত হয়েছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন যে পুর্ব বাংলা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে সরবরাহের ব্যপক সম্বাভনা রয়েছে। কিন্তু যদি ন্যায় সঙ্গত ও যথাযথ অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে, পূর্ব পাকিস্থানের পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব নিচ্চিত করা কঠিন হয়ে পরবে।
পরিশেষে, আমি আবারো অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে চাই এবং তাকে মনে করিয়ে দেতে চাই যে আমরা পুর্ব পাকিস্তানে অপূর্ণতায় ভুগছি। আমরা কেদ্রিয় সরকারের থেকে অনেক দূরে এবং আমরা তাদের স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছি। আমরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের সংহতি রক্ষা করার জন্য সম্ভ্যাব্য সকল সাহায্য করার জন্য মুখিয়ে আছি। আমরা বেশিরভাগই দরিদ্র মানুষ এবং এটাই পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিশেষত্ব। পাকিস্তান রাষ্ট্র দরিদ্র মানুষের পক্ষে। এটা এখন জনগনের সরকার এবং এটা অন্য কোন ধরনের সরকার না, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত তাদের দাবির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া।
————–