১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ঃ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান
বিকেলে জেনারেল অরোরা আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিমান ও নৌবাহিনীর চিফ অব স্টাফসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় পৌঁছান। নিয়াজি অভ্যর্থনা জানান যৌথ বাহিনীর কমান্ডারকে। তারা সেখান থেকে সরাসরি চলে যান অনুষ্ঠান স্থলে। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী অরোরাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে ক্ষুদ্র এক পাকিস্তানী ইউনিট। ঢাকা ক্লাব থেকে চেয়ার টেবিল আনা হয়। সবাই আসন গ্রহন করার পর ৩ ফর্দ আত্মসমর্পণ দলিল স্বাক্ষর দেয়া হয়। নিয়াজি অসম্পূর্ণ স্বাক্ষর দেন পরে তাদের কোলকাতা নেয়ার পর আবার নতুন করে স্বাক্ষর নেয়া হয়। নিয়াজি তার কোমরের বেল্ট, বেজ খুলে অরোরাকে দেন এবং তার ব্যাক্তিগত অস্রটিও অরোরার হাতে তুলে দেন। পুরা অনুষ্ঠানের ধারা বিবরণী প্রচার করে আকাশবাণী। ধারাভাষ্যকার হিসাবে ছিলেন বাংলায় দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইংরেজিতে ধারাভাষ্য দেন দূরদর্শনের সুরজিত সেন গুপ্ত। সুরজিত অনুষ্ঠান স্থলে চেয়ারে বসা তৃতীয় ব্যাক্তি। পাকিস্তানী বাহিনী তাদের নিরাপত্তার জন্য আরও কয়েকদিন অস্র সাথে রাখার অনুমতি চাইলে তা মঞ্জুর করা হয়।
Note ঃ বগুড়ায় সকাল থেকেই ধাপে ধাপেআত্মসমর্পণ চলছে। চট্টগ্রামে দুপুর বেলা, রংপুরে বিকেল তিনটায়, মাগুরায় বিকেল সাড়ে তিনটায়। ১৭ তারিখে ভৈরবে সকাল ১০ টায়, ফরিদপুরে সাড়ে ১০টায়, কুমিল্লার ময়নামতিতে ১১টায়, খুলনায় দুপুর ২টায়, সিলেটে বিকেল ৩ টায়, সৈয়দপুরে পৌনে ৪ টায়। ১৮ তারিখে বগুড়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে। নাটোর, পাবনা, ঈশ্বরদীতে ২১ তারিখ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়। উত্তরবঙ্গে (সাবেক রাজশাহী বিভাগ) সারেন্ডার করে প্রায় ২২০০০,উত্তরবঙ্গ (ময়মনসিংহ টাংগাইল) সারেন্ডার করে প্রায় ২৩০০ জন খুলনা বিভাগে প্রায় ৬৭০০ জন পূর্ববঙ্গে সারেন্ডার করে বাকীরা।