৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ হিলি ফ্রন্ট ( উত্তর)
৬ তারিখে ফুলবাড়ি থেকে ৬৬ ব্রিগেড প্রত্যাহার করে সেখানে ৩৪০ ব্রিগেড পাঠানো হয় ।এই দিনে ভারতীয় ৩৪০ ব্রিগেড পিরগঞ্জ দখল করে এবং আরও দক্ষিনে চাপ সৃষ্টি করে পলাশবাড়ীর দিকে অগ্রসর হয়। ১৬ ডিভিশন জিওসি নজর হোসেন শাহ ও ব্রিগেড কম্যান্ডার তাজাম্মুল রংপুর থেকে বগুড়া ফিরছিলেন সড়ক পথে। তারা পলাশবাড়ীতে ৩৪০ ব্রিগেড দ্বারা আক্রান্ত হলেন। তারা তাদের জীপ ফেলে গ্রাম্য পথে পালালেন। এক গ্রাম্য মওলানা তাদের রংপুর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিলেন। এই দুই শীর্ষ কম্যান্ডারকে রক্ষায় ৩২ বালুচ যুদ্ধে ৩৪০ ব্রিগেডকে ২৪ ঘণ্টা আটকিয়ে রেখেছিলেন। নজর এবং তাজাম্মুল ২ দিন নিখোঁজ ছিলেন। কোর জিওসি নিয়াজি নজরের স্থলে জামশেদকে সেখানে নিয়োগ দেন। জামশেদ হেলিকপ্টারে সেখানে যেতে রাতের বেলায় তিনি নামার স্থান ২৩ ব্রিগেড সদর সনাক্ত করতে ব্যার্থ হয়ে ঢাকা ফিরে আসেন। নিয়াজি সেখানে রাও ফরমানকে বদলি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু রাও ২-৩ দিন নিজেকে আড়াল করে রাখেন।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ছিল পাকিস্তানী ৩২ বালুচের সদর। পলাশবাড়ী সহ সম্পূর্ণ গাইবান্ধা তার অধিক্ষেত্র ভুক্ত এলাকা। ব্রিগেডিয়ার তাজাম্মুলের তিরস্কার শুনে লেঃ কঃ সুলতান ৭ তারিখ রাত্রেই এক কোম্পানি সৈন্য নিয়ে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেন। রাতে তিনি পলাশবাড়ীর উত্তরে প্রবেশ করেন এলাকাটি ভারতীয় বাহিনী দখলে নিয়াছে তা তিনি জানতেন না ফলে একতরফা যুদ্ধে তিনি নিহত হলেন। ৩২ বালুচের সেই কোম্পানি দক্ষিনে সরে আসে। ভারতীয় বাহিনীর অগ্রযাত্রা ঠেকাতে তাজাম্মুল সেখানে ৮ বালুচ ও ৩২ পাঞ্জাবের এক কোম্পানি পাঠালেন আর সাথে দিলেন কিছু ফিল্ড গান।
৬ ডিসেম্বর সকালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি বিমান গাইবান্ধা রেলস্টেশনের পাশে বোমা ফেলে এবং বিকালে ট্যাংক নিয়ে মিত্রবাহিনী প্রবেশ করে শহরে। পাক বাহিনী পশ্চাদপসরণ করে গোবিন্দগঞ্জে ব্যাটেলিয়ন এর সাথে যোগ দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা ৭ ডিসেম্বর সকালে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। গোবিন্দগঞ্জ ছাড়া গাইবান্ধা মুক্ত হয়।