১৭ অগ্রহায়ণ ১৩৭৮ শনিবার ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
[মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর সব ক’টা কলাম কোথাও তারা সোজাসুজি পাক ঘাঁটিগুলির দিকে এগোলো না। মূলবাহিনী সর্বদাই ঘাঁটিগুলিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায়। যশোহর, হিলি, শ্রীহট্ট, কুমিল্লা ও ফেনীর শক্ত পাক-ঘাঁটির দিকে না গিয়ে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায়। ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর গোলাবর্ষণের বহর দেখে তখনও পাক সেনারা মূল সড়কগুলো আগলে বসে থাকে। এদিনে লেখককে কৃষ্ণনগরে শরণার্থীদের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের অনভিপ্রেত ঘটনার তদন্তের জন্য যেতে হয়। উক্ত ঘটনায় দু’জন শরণার্থীর মৃত্যু হয়।
পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রেডিও ভাষণে ভারতের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এদিকে বাংলাদেশের সকল রণক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। উল্লেখ্য, পাকবাহিনী সর্বত্রই পিছু হটছিল। তারা বুঝে উঠতে পারেনি মিত্রবাহিনী কোন পথে এগুবে। মিত্রবাহিনী কোথাও সোজাসুজি পাক ঘাঁটিগুলির দিকে এগিয়ে যায় নি। মূল বাহিনী পাকাটিগুলোকে পাশ কাটিয়ে যেতে লাগল। এই রণকৌশল পাকবাহিনী ধরতে পারেনি। তাছাড়া বাঙ্গালী জনগণ ছিল তাঁদের শত্রু। ইতিমধ্যে প্রথম দিকেই পাক বিমান বাহিনী পঙ্গু হয়ে পড়েছিল। সীমান্ত শহর দৰ্শনা তখন সম্মিলিত বাহিনীর দখলে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামের আকাশে চলছিল জোর বিমান যুদ্ধ। বিমান ডগফাইট। [লেখক ]
– ইয়াহিয়া খান রেডিও ভাষণে ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করে বলেনঃ
“Our enemy has once again challenged us…. march forward. Give the hardest blow of Allah ho Akbar to the enemy…. Pakistan Paindabad.”
ভারতীয় পূর্বাঞ্চল কমাণ্ডের লেঃ জেঃ জগজিৎ সিং অরােরার অধিনায়কত্বে গতরাতে বাংলাদেশ-ভারত যুক্ত কমাণ্ড ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য ২০ নভেম্বর ভারত-বাংলাদেশ মিত্রবাহিনী গঠনে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়নি। মুক্তিবাহিনীর সাথে ভারতীয় বাহিনী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে থেকে সরাসরি পাকবাহিনীর সাথে বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে মরণপণ যুদ্ধে রত বাংলাদেশ সশস্ত্র ও মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় নিম্নোক্ত রুটসমূহে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ক) ভারতীয় নবম ডিভিশন গরীবপুর-জগন্নাথপুর হয়ে যশোর ঢাকা মহাসড়কের পথে
অগ্রসর হয়।
খ) ভারতীয় চতুর্থ ডিভিশন মেহেরপুরের পাশ দিয়ে কালীগঞ্জ-ঝিনাইদহর দিকে অগ্রসর
হয়।
গ) ভারতীয় বিংশতিতম ডিভিশন দিনাজপুরের হিলিকে উত্তরে রেখে পূর্বদিকে অগ্রসর
হয়।
ঘ) ভারতীয় ষষ্ঠ ডিভিশন তেঁতুলিয়া থেকে ঠাকুরগাঁ পাটগ্রাম থেকে কালীগঞ্জ এবং
কোঁচবিহার থেকে নাগেশ্বরী-কুড়িগ্রাম অভিমুখে অগ্রসর হয়।
ঙ) উত্তরে মেঘালয় থেকে দুটো ব্রিগেড ডালু থেকে জামালপুর এবং হালুয়াঘাটের দিকে
অগ্রসর হয়।
চ) পূর্বদিকে অষ্টম, সাতান্ন এবং তেইশ নং ব্রিগেড সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে, হবিগঞ্জ
থেকে মৌলভীবাজার এবং আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়।
ছ) তেইশ নং ডিভিশন কুমিল্লা ও ময়নামতি পাশ কাটিয়ে দাউদকান্দির দিকে এবং
চৌদ্দগ্রাম থেকে লাকসাম ও চাঁদপুরের দিকে অগ্রসর হয়।
জ) একটি বাহিনী পূর্বদিকে বেলোনিয়া থেকে ফেনীর দিকে অগ্রসর হয়।
সিলেট সেক্টর কমাণ্ডার মেজর সি আর দত্তের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনী কানাইঘাট আক্রমণ করে। সিলেট দখলের জন্য কানাইঘাট পাকদখলদার বাহিনী মুক্ত করা প্রয়োজন। কানাইঘাটের যুদ্ধ এবং সাফল্য সিলেট সেক্টরের জন্য একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এ অপারেশনে লেঃ গিয়াস, মেজর রব, লেঃ জহিরের নেতৃত্বে চারটি কোম্পানী আখাউড়া মুক্তিবাহিনী মহাবিক্রমে কানাইঘাটের পাকবাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকবাহিনী ও রাজাকার হতাহত হয় শতাধিক। মুক্তিবাহিনীর শহীদ হন ১১জন ও আহত হন ১৫ জন। এই যুদ্ধে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার মোঃ আলম। (বীরশ্রেষ্ঠ)
ভারতীয় স্থল বাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মুক্তিবাহিনীর সাথে সম্মিলিত বাহিনী এই দিনে দর্শনা, ঠাকুরগাঁ, চরখাই, গাজীপুর, শমসেরনগর বিমানক্ষেত্র দখল করে নেয়।
সম্মিলিত বাহিনী বয়রা হিলি প্রভৃতি রণখণ্ডে এগিয়ে চলে এবং দ্রত যশোহরের সন্নিকটে উপনীত হয়।
মুক্তিবাহিনী এইদিন আখাউড়া রেল ষ্টেশন বাজার এবং গঙ্গাসাগর পাক সৈন্যের করতল মুক্ত করে।মুক্তিবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে যাত্রা করে। আখাউড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার মাঝপথে পাকবাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।
যশোর সেক্টরে মহেশকুণ্ডি ও জীবননগর এলাকায় এবং মেহেরপুর শহরে মুক্তিবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে বহু পাকসৈন্য হতাহত হয়। রংপুরে হিলি রণখণ্ডে তুমুল সংঘর্ষ হয়। বেনাপোলের দক্ষিণে বাগপাড়ায় পাকবাহিনীর এফ এফ ১৫ রেজিমেন্টের উপর সাতক্ষীরা সাব-সেক্টরের মুক্তিবাহিনী ব্যাপক আক্রমণ চালায়।
দিনাজপুর জেলার সমস্ত সীমান্ত বরাবর মুক্তিবাহিনী দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। পাকবাহিনী হিলি ও ফুলবাড়ি রেলওয়ে দখল রাখার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।
মুক্তিবাহিনী দিনাজপুরের বোদা অঞ্চল মুক্ত করে ঠাকুরগায়ে মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত বাহিনীর সাথে যোগ দেয়। রংপুরের নাগেশ্বরী থানার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুক্তিবাহিনী দখল করে ধরলা নদীর সমগ্র উত্তর অঞ্চলে তাঁদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করে। বগুড়া জেলার পাঁচবিবি, ধরাদিয়া, পুশনা ও আশেপাশের অঞ্চলও মুক্তিবাহিনী দখল করে নেয়। ময়মনসিংহ রণাঙ্গনের কামালপুর ফাঁড়ি যৌথ-বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে। ঠাকুগাঁও মুক্ত হয়।
ভারতীয় নৌ বাহিনীর ‘বিক্রম’ থেকে সকাল ১১ টায় ‘হোয়াইট টাইগার’ ও ‘কোবরা’ নামে সি হক ও আলী জীজ বিমান থেকে কক্সবাজারের উপর বোমাবর্ষণ করা হয়। বিমান বন্দরের কন্ট্রোল রুম, টাওয়ার, জ্বালানী ডিপো, দুটো গান বোট, ছ’টি মাৰ্চেন্ট শীপ বিধ্বস্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী অধিবেশন ডাকে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র চার্লস রে আশা প্রকাশ করেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন বা চীন কেউই ভেটো প্রয়োগ করে আলোচনার পথ রুদ্ধ করে দেবে না। উদ্দেশ্য পাক-ভারত যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে সৈন্যদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল লবিতে বক্তব্য পেশে ব্যর্থ হয়। চীনা প্রতিনিধি বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে ভারতের লেলায়িত বলে গালিগালাজ করে। অন্যদিকে পিকিং থেকে পাকিস্তানকে সার্বিক সহযোগিতা দানের ঘোষণা দেয়া হয়। আর ওয়াশিংটন ফতোয়া দেয়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বাধার ব্যাপারে ভারতই দায়ী। ভারতের লোকসভায় শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, বাংলাদেশে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানী ফৌজী সরকার এক বর্বর ও ঘৃণ্য অভিযান চালায়। এ সম্পর্কে বারবার বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও মনে হচ্ছে বিশ্বের সব সরকার রাজনৈতিক দিক থেকে একেবারে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
লোকসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী জগজীবন রাম বলেন, পাকিস্তানের কোনো জায়গা কেড়ে নেয়ার কোন মতলব ভারতের নেই। পাকিস্তানকে ভারতভুক্ত করার কোন অভিসন্ধি আমাদের নেই, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বেলা ১টা পর্যন্ত ভারতীয় ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক স্কোয়াড্রন বিমানের সাথে পাকিস্তানের ৪টি স্যাভয়ের বিধস্ত হয়।
‘দি ওয়াশিংটন পোষ্ট’ পত্রিকায় এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মিঃ চালর্স রে বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় অনুপ্রবেশের ফলে আমেরিকা ভারতে অস্ত্ৰ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর মার্কিন প্রতিনিধি জর্জ বুশ অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা, ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্য স্ব স্ব সীমান্তের ভিতরে ফিরিয়ে নেওয়া এবং সিদ্ধান্ত কার্যকর করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের মহাসচিবকে ক্ষমতা প্রদানের জন্য এক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবে আরো বলা হয় যে, বিশ্বশান্তি যাতে বিঘ্নিত হয়, এরকম কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিটি দেশের দৃষ্টি রাখা উচিৎ। ভারত ও পাকিস্তানকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নিজ নিজ সীমান্ত এলাকায় ফিরিয়ে নিতে আহ্বান জানান হয়। উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার খাতিরে জাতিসংঘ সেক্রেটারী জেনারেলের মধ্যস্থতার প্রতি সাড়া দেয়ার জন্য ভারত ও পাকিস্তানকে আবেদন জানানো হয়। বেলজিয়াম, ইটালী এবং জাপান নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাব আনয়ন করে। উক্ত প্রস্তাবে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের কাছে আহ্বান জানানো হয়।
নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবে তাঁরা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমাধান আশু প্রয়োজন।
আর্জেন্টিনা, নিকারাগুয়া, সিয়েরলিওন ও সােমালিয়া নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাবে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত লড়াই শুরু হওয়াতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং যুদ্ধবিরতি ও সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মুখপাত্রদের বিভিন্ন বক্তব্য সম্বন্ধে কিসিংস আরকাইভস লিখেছেঃ
“A senior state Department official asserted on Dec, 4 that India bore “a major responsibility” for the war. After admitting that “the beginning of the crisis can be fairly said to be the use of force by Pakistan,” the official maintained that “Indian policy”, in a systematic way, has led to the perpetuation of the crisis & depending of the crisis, and India bears a major responsibility for the broader hostilities which have ensured”. In support of this vice he said that India’s only response to offers by President Yahya Khan 10 talk with representatives of Bangladesh had been lo insist upon the release of Sheikh Mujib, which was “unrealistic” and something which the United States had never pressed for, and that India had rejected U.S. proposals for a mutual withdrawal of troops from the borders, When the Indian Prime Minster,Mrs Gandhi, had visited Washington in November President Nixon had informed her that President Yahya Khan was prepared to pull back his troops unilaterally, on the understanding that India would reciprocate later, but she had not only rejected this offer but had told the Indian Parliament that Pakistan should withdraw all its troops from East Pakistan. Finally, India had trained and supported the Bengali guerrillas, and had moved towards direct involvement using Indian military forces. The Indian Ambassador, Mr. Lakshmi Kant Jha. described the statement as “a distortion of facts” and said that the U.S. peace initiative had been “one sided.” (KCA. P. 25069)
An Indian External Affairs Ministry spokesman stated onDec.4 that India had invoked Article 9 of the Indo-Soviet Treaty of Peace, Friendship and Co-operation, which provides for consultations in the event of an attack or threatened attack upon either party. (KCA, pp. 25069)
FAILURE OF SECURITY COUNCIL TO REACH
AGREEMENT ON RESOLUTION
The Indian Government lodged a formal complaint that Pakistan had attacked India with the U.N.Secretary-General UThant, on Dec.3. An Extreme Affairs Ministry spokesman stated on the following day, however, that India did not propose to take the matter to the Security Council, as her past experience in approaching the U.N.over “previous Pakistani aggression” had no1 been happy.
An emergency session of the Security Council was called on Dec.4 at the request of Argentina, Belgium, Burundi, Italy, Japan, Nicaragua, Somalia, the United Kingdom and the United States.
At the beginning of the meeting the Soviet and Polish representatives proposed that representatives of Bangladesh should be invited to address the Council. This proposal was strongly opposed by Mr. Huang Hua (China). Who declared that participation of “this rebellious organization” would be tantamount to interfering in Pakistan’s domestic affairs. After Seder Carlos Ortiz de Rozas (Argentina) had pointed out that the Bangladesh delegation had asked to be heard in the capacity of representatives of “the Government of Bangladesh” Mr. Jacob Malik (Soviet Union) agreed that the matter needed further consultations.
Mr. Agha Shahi (Pakistan) declared that India had not only launched aggression against Pakistan, but had openly demanded that Pakistan should dismember itself and give up the territory containing most of its population. The situation was one of a breach of the peace, and Pakistan’s internal Problems were outside the purview of the council. He added that if the Bangladesh movement were invited to address the Security council Pakistan would have to “ponder seriously” its co-operation with the council and the United Nations.
Mr. Samar Sen (India) said that it was necessary to press for a cease-fire between the Pakistan Army and the people of Bangladesh, who had become the victims of a reign of terror by the military regime in West Pakistan. The entry of Indian units into Pakistani territory had been a retaliatory step forced upon India by the many cases of shelling of Indian territory by Pakistani artillery. It was not India which was breaking up Pakistan, but Pakistan itself which was breaking up Pakistan and committing aggression against India in the process. India was trying to help the people of Bangladesh against oppression, and is that was to regarded as a crime and India was to be told to step doing so, India would deliberately and resolutely Mr. George Bush (United States) submitted a resolution calling upon India and Pakistan to take all steps required for an immediate cease-fire and the immediate withdrawal of armed personnel to their own sides of the borders; authorizing the Secretary General at the request of either Government to place observers along the border to report on the implementation of the cease-fire and troop with drawls; calling upon India and Pakistan to create a climate conducive to the voluntary return of refugees to East Pakistan ; and inviting them to respond affirmatively to the Secretary-General’s offer of his good-offices.
Mr. Malik (U.S.S.R) said that the resolution was one-sided, as it evaded the root cause of the fighting, the West Pakistani military suppression of East Bengal, and equaled India and Pakistan, India had become the victim of of a political crisis for whose emergence and aggravation the Pakistani authorities were to blame, and it would be wrong to pin responsibility on the Indian Government for the situation that had been created.
Mr. Huang Hua maintained that India had openly invaded East Pakistan, and demanded that the
Council should “strongly condemn the aggressive acts of the Indian Government and demand that the Indian Government immediately and unconditionally withdraw all the Indian armed forces from Pakistan.” (KCA, PP.25070)
বাংলাদেশে ভারতীয় বাহিনীর অপারেশনের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক লেঃ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এদিন সংবাদিকদের বলেনঃ
‘পূর্ববঙ্গ দখল করা ভারতীয় বাহিনীর উদ্দেশ্য নয়।
‘ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রধানত ও সামরিক ঘাটি, লক্ষ্যবস্তু এবং বিশেষ করে বিমান ঘাঁটির উপরই আক্রমণ চালিয়েছে।’
‘ভারতের সামরিক অভিপ্রায় সম্পর্কে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশে মোতায়েম পাক সৈন্য বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করাই আমার লক্ষ্য। বাংলাদেশে সংগ্রামরত পাকবাহিনী যুদ্ধ থেকে বিরত এবং আত্মসম্পণ না করা পর্যন্ত আমাদের সামরিক অভিযান চলবে।’ (আঃ বাঃ পঃ ৫.১২.৭১)
পাকিস্তান নৌবাহিনীর গৌরব আমেরিকা প্রদত্ত সাবমেরিন গাজী বিশাখাপত্তম বন্দরের কাছে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং বিরাট বিস্ফোরণে সলিল সমাধি ঘটে। সাবমেরিনে ৮৯ জন অফিসার ছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী ৩টি মরদেহ পেয়েছিলেন। তাদেরকে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে সমুদ্র বক্ষে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। (সংবাদপত্র)
পদ্মা নদীর দক্ষিণ ও মেঘনানদীর পশ্চিমে দক্ষিণ-পশ্চিম সেক্টরে ফরিদপুর এবং খুলনাকে মুক্ত করবার জন্য মিত্র ও মুক্তিবাহিনী একটি দ্বিমুখী আক্রমণ চালিয়েছিল। জীবন নগর, দর্শন, ঝিনাইদহ, মাগুরা সীমানায় মিত্র বাহিনীর এক ডিভিশন সৈন্য অবিরাম সংঘর্ষে লিপ্ত হন। উল্লেখ্য চার দিনের মধ্যে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল।
মিত্রবাহিনী অন্য একটি ডিভিশন বয়রা, যশোহর, খুলনা সীমানা দিয়ে প্রবেশ করে। মুক্তি বাহিনীর সর্বাত্মক সহযোগিতায় অবিরাম সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উল্লেখ্য, মাত্র তিন দিনে যশোর এবং এক সপ্তাহে দৌলতপুর ও খুলনা মুক্ত করেন।
রাওয়ালপিণ্ডিতে পাকিস্তানী সরকারের মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন দিবে বলে চীন ওয়াদা করেছে। (সংবাদপত্র)
আনন্দবাজার পত্রিকায় ৮ কলাম শিরোনাম ‘ঢাকা চট্টগ্রাম করাচি-শত্রুর ঘাঁটিতে ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ’ উপশিরোনাম ‘বাংলাদেশে চতুর্দিক থেকে জওয়ানরা আগুয়ান’ প্রতিবেদক বরুণ সেনগুপ্ত লিখেছেনঃ “যুদ্ধের প্রথম দিনেই ভারতীয় সেনা, নৌ, এবং বিমান বাহিনী বাংলাদেশে দখলদার পাক বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়েছে। চতুর্দিক থেকে ভারতীয় সেনা বাহিনী এগোচ্ছে। চূড়ান্ত লক্ষ্য ঢাকা দখল এবং পাক বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। প্রথম দিনের প্রাথমিক ধাক্কাতেই বিভিন্ন সেক্টরে পাক বাহিনী বিপর্যস্ত এবং জলপথে তারা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ।সর্বত্র ভারতীয় বাহিনীর সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বীর মুক্তিবাহিনী। (আঃবাঃ পঃ ৫।১২।৭১) একই পত্রিকার নাম ফলকের ওপরে স্বতন্ত্র শিরোনাম দিয়ে ‘স্থলে আন্তরীক্ষে জলে’ তাতে লিখেছেনঃ শনিবার পাকিস্তানের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের চাপে পাকিস্তান নিজেই বিপর্যস্ত হয়েছে। আমাদের স্থলবাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নানাদিক থেকে। আমাদের লক্ষ্য তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। অন্তরীক্ষে পূর্ব খণ্ডে ঢাকা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং নারায়ণগঞ্জ ছিল আমাদের আঘাতের প্রধান লক্ষ্য। বাংলাদেশে পাক বিমান আর বিশেষ নাকি থাকার কথা নয়। অবশিষ্ট আছে দুটি কি তিনটি। ভারতের বিমান বহরের গেছে ১১টি, দুটি পশ্চিম ভাগে, পাঁচটি বাংলাদেশে। জলপথে আমাদের নৌবহর চুপ করে দাঁড়িয়ে নেই, আঘাত হানছে চট্টগ্রাম আর কক্সবাজার, চট্টগ্রামের কনট্রোল টাওয়ারটি একেবারে শেষ। আর সেখানকার পেট্রল আর জ্বালানীর গুদাম দাউ দাউ করে জ্বলছে।
পূর্বখণ্ডের প্রধান সেনাপতি লেঃ জেঃ অরোরা কলকাতায় বলেছেন যে, ভারতীয় সৈন্যদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনী এখন এক হয়ে গেল। কেননা এ যুদ্ধ বাংলাদেশের, এ যুদ্ধ আমাদের।(আঃ বাঃ পঃ ৫।১২।৭১)
৪ ডিসেম্বর সকালে ভারতের প্রতিরক্ষা দফতরের প্রধানরা আলোচনায় বসে দেখলেন ভারতীয় বাহিনী পূর্বখণ্ডে ঠিক ঠিকই এগিয়েছে।
প্রথমত, তারা কোথাও শহর দখলের জন্য অগ্রসর হয়নি।
দ্বিতীয়ত কোথাও শক্ত পাক ঘাঁটির সঙ্গে বড় লড়াইয়ে আটকে পড়েনি।
তৃতীয়ত পাকিস্তানী সমর নায়কেরা তখনও বুঝতে পারেনি ভারতীয় বাহিনী ঠিক কোন দিয়ে ঢাকা পৌঁছতে চাইছে।
চতুর্থত ব্যাপক বিমান এবং স্থল আক্রমণে শত্ৰুপক্ষকে একেবারে বিহবল করে দেয়া গিয়েছে।
পঞ্চমত পাক বিমানবাহিনীকে অনেকটা ঘায়েল করে ফেলা হয়েছে। তাদের বিমান ঘাঁটিগুলিও বিধ্বস্ত।
ষষ্ঠত পাকিস্তানের প্রধান নৌবন্দরগুলি অর্থাৎ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চালনা, চাঁদপুর এবং নারায়নগঞ্জে জাহাজ বা ষ্টীমার ভিড়াবার ব্যবস্থাও অনেকটা বিপর্যস্ত। এবং
সপ্তম বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক এবং বাড়িঘরও মোটেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সেনা বিমান এবং নৌবাহিনী তাই যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনেও পূর্ব লক্ষ্য মতই এগিয়ে চলে।
পশ্চিম দিক থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী সব কটা কলাম পূর্বে এগিয়ে চলল।কিন্তু কোথাও তারা সোজাসুজি পাক ঘাঁটিগুলির দিকে এগোলো না। মূল বাহিনী সর্বদাই ঘঁটিগুলিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলল। এবং ঘঁটিতে অপেক্ষমান পাকবাহিনী যাতে মনে করে যে ভারতীয় বাহিনী তাদের দিকেই এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে সেইজন্য প্রত্যেক পাক ঘাঁটির সামনে ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর কিছু কিছু লোক রেখে যাওয়া হল।
অন্য দিকে মূল ভারতীয় বাহিনী যে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানীরা সে খবর পেল না। কারণ, প্রথমত তাদের সমর্থনে দেশের লোক ছিলনা যারা খবরাখবর দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত তাদের বিমানবাহিনীও তখন বিধ্বস্ত। সর্বত্র উড়ে পাক বিমান ভারতীয় বাহিনীর অগ্রগতির খবরাখবর পাক সেনাবাহিনীকে জানাতে পারল না।
তৃতীয়ত বাংলাদেশে পাক বাহিনীর বেতারে খবরাখবর পাঠাবার ব্যবস্থাও তেমন ভাল ছিল না। সুতরাং, নিজস্ব ব্যবস্থায়ও তারা খবরাখবর পেল না।
তাই ভারতীয় বাহিনী যখন সোজাসুজি যশোর হিলি, শ্ৰীহট্ট, কুমিল্লা, ফেনী প্রভৃতি শক্ত পাক ঘাঁটির দিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেল তখন পাক বাহিনীর অধিনায়কেরা তা মোটেই বুঝতে পারল না। বরং ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর গোলাবর্ষণের বহর দেখে তখনও তারা মনে করছে ভারতীয় বাহিনী সোজাসুজিই এগোবার চেষ্টা করছে।সেইজন্য তখনও তারা মূল সড়কগুলি আগলে বসে রইল। সীমান্তের কাছাকাছি শহরগুলিতে তখনও পাক বাহিনী অধিস্থিত-একমাত্র কুষ্টিয়া জেলার দর্শনা ছাড়া। দর্শনা যে মুহূর্তে ভারতীয় ৪নং পার্বত্য ডিভিশনের কামানের পাল্লার মধ্যে এসে গেল পাকিস্তানী বাহিনী অমনি ব্যুহ ছেড়ে আরও পশ্চিমে পালাল। (স্বাধীনতা যুদ্ধ ইতিহাস দলিল পত্র ১০ খণ্ড পৃঃ ৭৮০-৮১)
৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এক জরুরী লিপিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, পাকিস্তানের সর্বশেষ আক্রমণের সমুচিত জবাব প্রদানে ভারতীয় বাহিনী এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর মিলিত ভূমিকা সফলতর হতে পারে, যদি এই দুইদেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কুটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। (বিডি- ২পৃঃ ৫৮৭) উল্লেখ্য ভারত ও বাংলাদেশ স্থল বাহিনীর মিলিত প্রত্যাঘাত ভারতীয় বিমান বাহিনীর আক্রমণ ও নৌবাহিনীর অবরোধের মাধ্যমে পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধের চরিত্র ৪ ডিসেম্বর থেকেই আমুল পরিবর্তিত হয়। (মূলধারা ৭১ পৃঃ ১৯৭)
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্ৰীমতী ইন্দিরা গান্ধী লোকসভায় যে বিবৃতি দেন তাতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ভারতীয়দের উপর চাপিয়ে দেয়া শরণার্থী সমস্যা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জনগণের প্রতি আবেদনই ছিল তাঁর বিবৃতির মুখ্য বিষয়। ইংরেজী ভাষণটি ছিল নিম্নরূপঃ
“This Morning, according to the news, the Government of West Pakistan have declared war upon us. Last evening the West Pakistan Air Force violated our air space wantonly and attacked a large number of airfields. Simultaneously their ground forces shelled our positions along the Western border. Their propaganda media have made totally baseless allegations that India had launched an attack and assault.
The news reached me just as I was leaving Calcutta. Immediately on my return I took counsel with my colleagues and with the leaders of the Opposition parties. We were all of one mind, united in our resolve that the nation’s freedom should be defended and unanimous that the aggressor should be beaten back. I am sure the same sense of solidarity will mark our work in the difficult days ahead. A state of Emergency has been proclaimed. We are approaching the House to adopt the Defense of India Bill. Our feeling is one of regret that Pakistan did not desist from the ultimate folly and sorrow that at a time when the greatest need of this sub-continent is development, the peoples of India and Pakistan have been pushed into war. We could have lived as good neighbors but the people of West Pakistan have never had a say in their destiny. In this grave hour our own dominant emotion is one of confidence and faith. For over nine months the military regime of West Pakistan has barbarously trampled upon freedom and basic human rights in Bangladesh. The Army of occupation has committed heinous crimes unmatched for their vindictive Ferocity. Many millions have been uprooted, ten millions have been pushed into our country.
We repeatedly drew the attention of the world to this annihilation of a whole people, to this menace lo our security. Everywhere the people showed sympathy and understanding for the economic and other burdens and the danger to India. But Governments seemed morally and politically paralyzed. Belated efforts to persuade the Islamabad regime to take some step which would lead to a insting solution fell on deaf cars.
The wrath of the West Pakistan Amy has been aroused because the people of Bangladesh have stood and struggled for values which, The Army is unable to comprehend and which it has impressed in every province of Pakistan. As the Mukti Bahinis effectiveness increased, the west Pakistan Army became more desperate — So the anger has been turned upon us.”
এ দিনের ভারতের লোকসভার বিশেষ অধিবেশন সম্বন্ধে কিসিং আরকাইভস লিখেছেঃ
“ An Emergency session of the Indian Parliament on Dec 4 approved without division the Defense of India Bill, which empowered the Government to adopt measures for preventing espionage, publication of Information Prejudicial to the national interest and other activities which might undermine the defense effort, and to requisition any property or vehicle for defense purposes.” [KCA, pp 25053]
পূর্ববর্তী সাত সপ্তাহ ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরবচ্ছিন্ন তৎপরতা এবং ভারত বাংলাদেশের মিলিত বাহিনীর তীব্রতর সীমান্ত চাপের ফলে পাকসেনারা স্বচ্ছ রাজনৈতিক লক্ষ্য ও সামরিক সাফল্যের অভাবে হতোদ্যম হয়ে পড়ে। তাদেরকে যুদ্ধ পরিশ্রান্ত ও হতোদ্যম করার পর সম্যক অভিযান শুরু হয়। চারটি অঞ্চল দিয়ে মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনী মুক্তিসংগ্রামকে জয়যুক্ত করার জন্য প্রবেশ করে। কিসিং কন্টেপরারী আরকাইভস এই আক্রমণের বিবরণ লিখেছেঃ
“The Indian Army, linking up with the Mukti Bahini entered East Pakistan on Dec, 4 from five
main directions, (1) in the Comilla sector, cast of Dacca ; (2) in the Sylhet Sector, in the north-cast of the province; (3) in the Mymensingh (Nasirabad) sector, in the north; (4) in the Rangpur Dinajpur sector in the north west; (5) in the Jessore sector, south – west of Dacca, the aim of the Indian strategy was to divide the Pakistan units stationed round the border and to prevent them from uniting in defense of Dacca, which occupies a strong strategic position protected by the complex river system at the mouth of the Ganjes and the Brahmaputra. The Indian Forces therefore advanced on some 23 different salients, some units turning to the left or the right to cut off Pakistani units while other drop straight on towards Dacca, by passing and isolating the garrisons of towns near the border.” (KCA, pp, 25053)
— ডিসেম্বর ৪ মিত্রবাহিনীর আক্রমণের বিবরণ দিয়ে, কিসিং কন্টোম্পরারী আরকাইভ লিখেছেঃ
“On Dec 4 the Indian armed forces launched an integrated ground, air and naval offensive against East Pakistan Aircraft operating from the carrier Vikrant bombed the airfield at Cox’s Bazar and destroyed two Pakistani gunboats, fuel pumps and hangers at Chittagong, whilst Indian aircraft bombed Dacca every half hour.” (KCA. pp 25053)
১নং সেক্টরে উইং কমাণ্ডার বাশারের অধিনায়কত্বে সেক্টর বাহিনী পাঁচভাগে বিভক্ত হয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। মুক্তিবাহিনীর চারটি কোম্পানী অমরখানা থেকে অভিযান শুরু করে, তিনটি কোম্পানী টিলহাটী থেকে ডোমার এবং নীলফামারী, চারটি কোম্পানী পাটগ্রাম থেকে লালমনিরহাটের দিকে, চারটি কোম্পানী কুড়িগ্রাম হয়ে রংপুরের দিকে এবং চারটি কোম্পানী মোগলহাটি থেকে লালমনিরহাটের দিকে অগ্রাভিযান চালায় এবং মিত্র বাহিনীর সঙ্গে একযোগে পাক-বাহিনীর আত্মসমর্পণ করার পূর্বেই রংপুর শহর ছাড়া রংপুর ও দিনাজপুর জেলার সমগ্র অঞ্চল মুক্ত করে ফেলে। [বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম/রফিকুল ইসলাম পৃঃ ১৬৭]
পিকিং থেকে নিউ চায়না নিউজ এজেন্সি কর্তৃক প্রচারিত এক সংবাদে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য ভারত সরকার এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। পাকিস্তানকে দ্বিধাবিভক্ত এবং পূর্ব পাকিস্তানকে দখল করে নিজেদের সম্প্রসারণমূলক আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করাই ভারতের মূল উদ্দেশ্য। (মর্নিং স্টার, ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১)
গত সপ্তাহের শেষে লণ্ডনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ পরিচালনার জন্য পাকিস্তানের সামরিক চক্রের তীব্র নিন্দা করা হয়। ওয়ালি খান ও মুজাফফর আহমদের নেতৃত্বে পরিচালিত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। (স্বঃসংঃপ্রঃবাঃ পৃ-১৯৫)
বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে স্থল ও আকাশপথে আখাউড়া ও কসবা আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর মতিন, মেজর মতিউর, ক্যাপ্টেন মুর্শেদ, লেঃ ইব্রহীম, লে: বদিউজ্জামান লেঃ সলিম প্রমুখ কোম্পানী কমাণ্ডাররা অংশ গ্রহণ করে। লেঃবদিউজামান, সিপাহী রুহুল আমিন ও সিদ্দীকুর রহমানসহ বহু মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী