You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.02.06 | চরম ঔদ্ধত্য | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

চরম ঔদ্ধত্য

অবশেষে ভারতস্থিত পাকিস্তানী হাইকমিশনের দপ্তর থেকে তিন রাউণ্ড গুলি ছুড়তেও প্ররােচকরা দ্বিধা করে নি। পাক সৈন্যদের সাক্ষাতে দস্যুরা লাহােরে ভারতীয় বিমানটিকে ভস্মীভূত করলাে আর এখানে তাতে কোনাে বিক্ষোভই হবে না, প্ররােচকরা কি তাই ভেবেছে? দিল্লীর কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ ছাত্র বৃহস্পতিবার পাকিস্তান হাই কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করলে দপ্তরের অভ্যন্তর থেকে জনৈক দুবৃত্ত তিন রাউণ্ড গুলি করে। দুঃসাহস বটে। বিক্ষোভকারীরা উচ্ছল হয়েছিল এমন কোনাে প্রমাণ নেই আর তেমন কিছু ঘটে থাকলে তা প্রশমনের জন্য ভারতের পুলিস মােতায়েন ছিল। সুতরাং গুলি ছােড়ার একমাত্র উদ্দেশ্য প্ররােচনার দ্বারা উত্তেজনা আরাে বাড়ছে। আগের দিনও যদৃচ্ছ ইটপাটকেল ছুড়ে দশবারাে জনকে আহত করা হয়। এখানেই শেষ নয়। ভারতীয় ও বিদেশী সাংবাদিক ফটোগ্রাফাররা স্বচক্ষে দেখেছেন খাকি প্যান্ট ও টুপি পরা একজনকে হাই কমিশন দপ্তরের চত্তরে অবস্থিত মেটির গাড়িগুলির ক্ষতি করতে। সে ব্যক্তি পাকিস্তানী হাইকমিশনেরই একজন কর্মী। কিন্তু হাই কমিশনের জনৈক মুখপাত্র নির্জলা মিথ্যা বলতে একটু ও ইতস্তত করলেন না যে বিক্ষোভকারীরাই স্টাফ কোয়ার্টারে প্রবেশ করে তাঁদের গাড়ী ভেঙেচুরে দিয়েছে ও সাইকেলগুলি চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এমন ডাহা মিথ্যা কথা যারা বলতে পারে ভারত থেকে তাদের বিদায় দেওয়াই ভালাে।
প্ররােচনার পর প্ররােচনা সৃষ্টি করা হচ্ছে পাকিস্তানী হাই কমিশনের দপ্তরে বসে, অথচ পাক হাই। কমিশনার সাজ্জাদ হায়দার ভারতের পুলিস অফিসারদের কাছে গিয়ে এই বলে ভীতি প্রদর্শন করেছেন যে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনে আরাে অনেক বেশি লােক আছে দিল্লীর বিক্ষোভ সেখানে গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তার কণ্ঠে রয়েছে প্রতিশােধ গ্রহণের সুর, অর্থাৎ পাক কর্তৃপক্ষ যা-ই করুন ভারতকে তা নীরবে হজম করতে হবে, তা না করলে পাল্টা প্রতিশােধের হুমকি। এসব দেখেও আর সন্দেহ থাকে না যে বিমান ছিনতাই থেকে শুরু করে সমস্ত ঘটনার পেছনে রয়েছে পাক সরকারের উস্কানি।

সূত্র: কালান্তর, ৬.২.১৯৭১